বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোল করে আর্জেন্টিনার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন আলভারেস। ম্যাজিক ম্যান মেসির জোগান দেয়া বলে তার দায়িত্ব ছিল শুধু বলে পা ছোঁয়ানো।
প্রায় গোল লাইন থেকে ৪৫ ডিগ্রি কোনাকুনি ব্যাক পাসটা বাড়িয়েই মেসি বুঝে গিয়েছিলেন ফলাফল। গোলপোস্টের পিছনে সমর্থক ভর্তি গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়ে থামলেন। আর একটা ম্যাচের শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে। সেই ম্যাচ, যা তাকে দিতে পারে অধরা বিশ্বকাপ।
মেসির আর্জেন্টিনাও ৩৬ ম্যাচ জুড়ে ছুটে আসার পর একটু থমকে ছিল প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে। তার পরে ডানা মেলে শুধুই উপরে উঠে চলেছে আর্জেন্টিনা। সেই ডানার নাম মেসি।
ফুটবল বিশ্ব তাকে আদর করে ডাকে এলএম১০ বলে। আদর তার বাঁ-পায়ের জন্য। কথা তো বলে ‘ডান পা’ও। ডান পায়ের পদক্ষেপ বোকা বানায় প্রতিপক্ষকে। বাঁ-পা শাসন করে বল। এই যুগলবন্দি সবার থাকে না। বড় ফুটবলার হলেই মেসি হওয়া যায় না। দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপের মাঝারি মানের একটা দলকে ফাইনালে তুলে দেয়া যায় না। একবার নয়, একাধিক বার। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনাল শেষে টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়লো দিয়েগো ম্যারাডোনার ছবি। ম্যারাডোনাও আর্জেন্টিনাকে দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছিলেন। একবার চ্যাম্পিয়ন করেছেন। নিজের খেলা দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন ফুটবলবিশ্বকে। যোগ্য উত্তরসূরিকেই তিনি তুলে দিয়েছেন প্রিয় আর্জেন্টিনার আর্মব্যান্ড। মেসি চাইলে স্পেনের হয়ে খেলতে পারতেন। স্পেন ছোট্ট লিওনেলকে বানিয়েছে মেসি রূপে।
ম্যারাডোনার পাশে একজন বাতিস্তুতা ছিলেন। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সব থেকে বেশি ১০ গোল করার রেকর্ড ছিল তার। মঙ্গলবার সেই বাতিস্তুতাকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপে মেসির গোল সংখ্যা হলো ১১। ম্যারাডোনার আট গোলের নজির কাতারেই টপকেছেন তিনি। বিশ্বকাপের ২১টি ম্যাচ খেলে ম্যারাডোনা সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছিলেন আটটি। অর্থাৎ, ১৬টি গোলে তার অবদান ছিল। মেসি ২৫টি ম্যাচে ১১টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আটটি। ১৯টি গোলে রয়েছে তার অবদান। ম্যারাডোনার হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি উঠেছে। মেসি এখনও পারেননি। আগামী রোববার সেই খালি হাত ভরার সুযোগ।
ফুটবল নিয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার রেষারেষির কথা অজানা নয় ফুটবলপ্রেমীদের। বিশ্বকাপ জয়ের নিরিখে ব্রাজিল এগিয়ে ৫-২ ব্যবধানে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের নিরিখে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা।
পেলে ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ দিয়েছেন। তিনি পাশে পেয়েছিলেন সে সময়ের একঝাঁক সেরা ফুটবলারকে। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে অক্ষত তার একাধিক রেকর্ড।
পেলে, ম্যারাডোনা নিঃসন্দেহে নিজেদের সময়ের সেরা। মেসিও তা-ই। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, নেইমাররা যতই তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলুন আর্জেন্টিনার অধিনায়কের মতো হতে পারেননি। মেসি মাঠে থাকা মানেই প্রতিপক্ষের চার-পাঁচ জন ফুটবলার তাকে অনুসরণ করবেন। অনুসরণ করেন তার সতীর্থরাও। অনুকরণ না করার সাধ্য কার!
ট্রফি, পুরস্কারের সংখ্যা মাপকাঠি হলেও পিছিয়ে নেই মেসি। বিশ্বকাপ নেই তো নেই। সে তো নেইমার, রোনালদোদেরও নেই। মেসির প্রজন্মের বা আগের প্রজন্মের যাদের বিশ্বকাপ আছে, তাদের প্রায় সবাই ক্রীড়ানৈপুণ্যে তার কাছাকাছি নন। ৩৫ বছরের মেসি কাতার বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষের তিন-চার জন ফুটবলারকে একাই সামলে নিচ্ছেন। প্রতিপক্ষে খেলোয়াড়দের শত চেষ্টার পরও আটকানো যাচ্ছে না, গোল করছেন। নিশ্চিত গোলের জন্য পাস দিচ্ছেন সতীর্থদের, প্রতি ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে।
মেসি আগেই বলেছিলেন, কাতারেই শেষ বিশ্বকাপ খেলবেন। সেমিফাইনালের পরেও একই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অধরা বিশ্বকাপের জন্য খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোল করে আর্জেন্টিনার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন আলভারেস। ম্যাজিক ম্যান মেসির জোগান দেয়া বলে তার দায়িত্ব ছিল শুধু বলে পা ছোঁয়ানো।
প্রায় গোল লাইন থেকে ৪৫ ডিগ্রি কোনাকুনি ব্যাক পাসটা বাড়িয়েই মেসি বুঝে গিয়েছিলেন ফলাফল। গোলপোস্টের পিছনে সমর্থক ভর্তি গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়ে থামলেন। আর একটা ম্যাচের শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে। সেই ম্যাচ, যা তাকে দিতে পারে অধরা বিশ্বকাপ।
মেসির আর্জেন্টিনাও ৩৬ ম্যাচ জুড়ে ছুটে আসার পর একটু থমকে ছিল প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে। তার পরে ডানা মেলে শুধুই উপরে উঠে চলেছে আর্জেন্টিনা। সেই ডানার নাম মেসি।
ফুটবল বিশ্ব তাকে আদর করে ডাকে এলএম১০ বলে। আদর তার বাঁ-পায়ের জন্য। কথা তো বলে ‘ডান পা’ও। ডান পায়ের পদক্ষেপ বোকা বানায় প্রতিপক্ষকে। বাঁ-পা শাসন করে বল। এই যুগলবন্দি সবার থাকে না। বড় ফুটবলার হলেই মেসি হওয়া যায় না। দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপের মাঝারি মানের একটা দলকে ফাইনালে তুলে দেয়া যায় না। একবার নয়, একাধিক বার। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনাল শেষে টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়লো দিয়েগো ম্যারাডোনার ছবি। ম্যারাডোনাও আর্জেন্টিনাকে দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছিলেন। একবার চ্যাম্পিয়ন করেছেন। নিজের খেলা দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন ফুটবলবিশ্বকে। যোগ্য উত্তরসূরিকেই তিনি তুলে দিয়েছেন প্রিয় আর্জেন্টিনার আর্মব্যান্ড। মেসি চাইলে স্পেনের হয়ে খেলতে পারতেন। স্পেন ছোট্ট লিওনেলকে বানিয়েছে মেসি রূপে।
ম্যারাডোনার পাশে একজন বাতিস্তুতা ছিলেন। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সব থেকে বেশি ১০ গোল করার রেকর্ড ছিল তার। মঙ্গলবার সেই বাতিস্তুতাকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপে মেসির গোল সংখ্যা হলো ১১। ম্যারাডোনার আট গোলের নজির কাতারেই টপকেছেন তিনি। বিশ্বকাপের ২১টি ম্যাচ খেলে ম্যারাডোনা সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছিলেন আটটি। অর্থাৎ, ১৬টি গোলে তার অবদান ছিল। মেসি ২৫টি ম্যাচে ১১টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আটটি। ১৯টি গোলে রয়েছে তার অবদান। ম্যারাডোনার হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি উঠেছে। মেসি এখনও পারেননি। আগামী রোববার সেই খালি হাত ভরার সুযোগ।
ফুটবল নিয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার রেষারেষির কথা অজানা নয় ফুটবলপ্রেমীদের। বিশ্বকাপ জয়ের নিরিখে ব্রাজিল এগিয়ে ৫-২ ব্যবধানে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের নিরিখে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা।
পেলে ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ দিয়েছেন। তিনি পাশে পেয়েছিলেন সে সময়ের একঝাঁক সেরা ফুটবলারকে। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে অক্ষত তার একাধিক রেকর্ড।
পেলে, ম্যারাডোনা নিঃসন্দেহে নিজেদের সময়ের সেরা। মেসিও তা-ই। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, নেইমাররা যতই তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলুন আর্জেন্টিনার অধিনায়কের মতো হতে পারেননি। মেসি মাঠে থাকা মানেই প্রতিপক্ষের চার-পাঁচ জন ফুটবলার তাকে অনুসরণ করবেন। অনুসরণ করেন তার সতীর্থরাও। অনুকরণ না করার সাধ্য কার!
ট্রফি, পুরস্কারের সংখ্যা মাপকাঠি হলেও পিছিয়ে নেই মেসি। বিশ্বকাপ নেই তো নেই। সে তো নেইমার, রোনালদোদেরও নেই। মেসির প্রজন্মের বা আগের প্রজন্মের যাদের বিশ্বকাপ আছে, তাদের প্রায় সবাই ক্রীড়ানৈপুণ্যে তার কাছাকাছি নন। ৩৫ বছরের মেসি কাতার বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষের তিন-চার জন ফুটবলারকে একাই সামলে নিচ্ছেন। প্রতিপক্ষে খেলোয়াড়দের শত চেষ্টার পরও আটকানো যাচ্ছে না, গোল করছেন। নিশ্চিত গোলের জন্য পাস দিচ্ছেন সতীর্থদের, প্রতি ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে।
মেসি আগেই বলেছিলেন, কাতারেই শেষ বিশ্বকাপ খেলবেন। সেমিফাইনালের পরেও একই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অধরা বিশ্বকাপের জন্য খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।