alt

সম্পাদকীয়

ভবদহের জলাবদ্ধতা ও আত্মঘাতী প্রকল্পের বিপর্যয়

: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ভবদহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের জীবনের দুর্দশার এক মর্মান্তিক উদাহরণ। ছয়ের দশক থেকে প্রকৃতির ওপর ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ, ভুল প্রকল্প গ্রহণ এবং অনিয়মিত নদী ব্যবস্থাপনার কারণে ভবদহ আজ পরিণত হয়েছে এক বিশাল জলাবদ্ধ বেসিনে, যেখানে মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছে বেঁচে থাকার জন্য। প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে, নদীশাসন ও বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে যে আত্মঘাতী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল এখন ভবদহবাসীর জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভবদহ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নাম করে হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, কিন্তু তাতে জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রকৃতির নিয়ম মেনে না চলা এবং অযথা বাঁধ, সøুইস গেটের মতো কৃত্রিম সমাধান এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

এমন অভিযোগ রয়েছে যে, প্রকৃতির প্রাকৃতিক ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, তা তাদের জীবনযাত্রা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্রকৃতির পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে যে সøুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছিল, তা আজ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভবদহে সøুইস গেট পলি জমে অচল, ফলে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি, রাস্তা, মসজিদ-মন্দির, স্কুল, বাজার সবকিছু পানিতে তলিয়ে যায়।

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী প্রস্তাব হিসেবে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের কথা বারবার উঠে এসেছে। এটি একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি যেখানে নদীর জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া সচল করা হয়। টিআরএম বাস্তবায়িত হলে একদিকে বিল ও নদীর পলি অপসারণ হবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে। স্থানীয় কৃষকরাও এই পদ্ধতিকে সমর্থন করে। কিন্তু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে টিআরএম প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হয়েছে। এরপর ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যার টেকসই সমাধান রয়েছে টিআরএম প্রকল্পের মধ্যে। এছাড়া নদীগুলো খনন করে তাদের পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করতে হবে। একের পর এক ভুল প্রকল্প আর অর্থের অপচয় বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব এবং বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভবদহের জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের মতামতকেও প্রাধান্য দিতে হবে।

প্রকৃতির নিয়ম ভঙ্গ করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিণাম হিসেবে ভবদহ আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এখন সময় এসেছে প্রকৃতি ও মানুষের জীবনের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে সেই ভুলের সংশোধন করার।

অবৈধ ইটভাটা : আইনের অমান্যতা ও প্রশাসনের নীরবতা

চায়না দুয়ারী জাল : জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি

চাল সংরক্ষণের সাইলো : অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

ইরামতি খাল ও রক্তদহ বিলের জলাবদ্ধতা : কৃষকদের দুর্দশার শেষ কোথায়?

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : টেকসই মৎস্যসম্পদ রক্ষার চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা

জলাবদ্ধতার প্রভাব ও শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষা : জরুরি সমাধান প্রয়োজন

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা

ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই পদক্ষেপ নিন

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি : সমাধান কোন পথে

উত্তরা মেইল ট্রেন পুনরায় চালু করুন

হাটবাজারে অবৈধ দখলের অবসান চাই

পশু জবাইয়ে অবকাঠামোর অভাব ও তদারকির ঘাটতি : স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

খাল রক্ষার সংকট : সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীনতা

টাঙ্গাইল পৌরসভার জলাবদ্ধতার সমাধান করুন

সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা, এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : ক্রমবর্ধমান হুমকি

বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তা বাড়ান

চশমা পরা ও মুখপোড়া হনুমান রক্ষায় উদ্যোগ চাই

উন্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান

নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করা দরকার

শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দিন

দ্রব্যমূল্যে স্বস্তি নেই

মৌসুমি জলাবদ্ধতা থেকে ছৈয়ালবাড়ী ও মানিক্যপাড়ার বাসিন্দাদের মুক্তি দিন

হাতি যাবে কোথায়, খাবে কী?

হাওরে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

বেকারত্ব সমস্যা : সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি

ওএমএসের পণ্য বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

পাহাড়ে আবার গণপিটুনিতে হত্যা

আশুলিয়ায় শ্রমিকের মৃত্যু : তদন্ত সুষ্ঠু করা জরুরি

ধর্মীয় গোষ্ঠীর চাপে সমন্বয় কমিটি বাতিল, একটি মন্দ নজির

কারিগরি শিক্ষার পথে বাধা দূর করুন

মধ্যপ্রাচ্য সংকট : বিশ্বনেতাদের শান্তির পথ খুঁজে বের করতে হবে

বন্যার পানি নামেনি অনেক এলাকায়, দুর্ভোগে মানুষ

রামু হামলার বিচারে আর কত অপেক্ষা

আবারও গণপিটুনিতে হত্যা

tab

সম্পাদকীয়

ভবদহের জলাবদ্ধতা ও আত্মঘাতী প্রকল্পের বিপর্যয়

বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ভবদহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের জীবনের দুর্দশার এক মর্মান্তিক উদাহরণ। ছয়ের দশক থেকে প্রকৃতির ওপর ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ, ভুল প্রকল্প গ্রহণ এবং অনিয়মিত নদী ব্যবস্থাপনার কারণে ভবদহ আজ পরিণত হয়েছে এক বিশাল জলাবদ্ধ বেসিনে, যেখানে মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছে বেঁচে থাকার জন্য। প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে, নদীশাসন ও বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে যে আত্মঘাতী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল এখন ভবদহবাসীর জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভবদহ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নাম করে হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, কিন্তু তাতে জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রকৃতির নিয়ম মেনে না চলা এবং অযথা বাঁধ, সøুইস গেটের মতো কৃত্রিম সমাধান এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

এমন অভিযোগ রয়েছে যে, প্রকৃতির প্রাকৃতিক ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, তা তাদের জীবনযাত্রা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্রকৃতির পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে যে সøুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছিল, তা আজ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভবদহে সøুইস গেট পলি জমে অচল, ফলে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি, রাস্তা, মসজিদ-মন্দির, স্কুল, বাজার সবকিছু পানিতে তলিয়ে যায়।

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী প্রস্তাব হিসেবে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের কথা বারবার উঠে এসেছে। এটি একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি যেখানে নদীর জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া সচল করা হয়। টিআরএম বাস্তবায়িত হলে একদিকে বিল ও নদীর পলি অপসারণ হবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে। স্থানীয় কৃষকরাও এই পদ্ধতিকে সমর্থন করে। কিন্তু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে টিআরএম প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হয়েছে। এরপর ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যার টেকসই সমাধান রয়েছে টিআরএম প্রকল্পের মধ্যে। এছাড়া নদীগুলো খনন করে তাদের পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করতে হবে। একের পর এক ভুল প্রকল্প আর অর্থের অপচয় বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব এবং বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভবদহের জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের মতামতকেও প্রাধান্য দিতে হবে।

প্রকৃতির নিয়ম ভঙ্গ করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিণাম হিসেবে ভবদহ আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এখন সময় এসেছে প্রকৃতি ও মানুষের জীবনের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে সেই ভুলের সংশোধন করার।

back to top