alt

সম্পাদকীয়

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

: বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

রাজশাহীর তানোরসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশ আজ এক গভীর সংকটে। কখনো প্রকাশ্যে, কখনো নীরবেÑবছরের পর বছর ধরে মাটি খুঁড়ে চলেছে এক সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। চিরচেনা উর্বর কৃষিজমি এখন যেন মৃত্যুপুরী। প্রকৃতি, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্যÑসবই আজ এই ‘মাটিখেকোদের’ লোভের শিকার।

কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কাটা আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু তানোরের গোয়ালপাড়া, হাপানিয়া, ঝিনাখৈর বা নেজামপুরে রাতভর চলছে মাটি কাটা, পরিবহন আর বিক্রি করা হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ তো আছেই। অথচ প্রশাসন বলছে, তারা অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়!

এই চিত্র শুধু তানোরের নয়Ñরাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাগমারা ও গোদাগাড়ী উপজেলার মাঠেরও একই চিত্র। উঁচু জমির টিলা আকৃতির অস্বাভাবিক পরিবর্তন, উর্বর টপসয়েল কেটে সরাসরি ইটভাটায় সরবরাহ, পুকুর খননের নামে মাটি বাণিজ্যÑসব মিলিয়ে বরেন্দ্র অঞ্চল যেন এক নিঃশব্দ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী ইটভাটা মালিক বা রাজনৈতিক নেতার ছত্রচ্ছায়ায় নির্বিঘেœ চলছে মাটিখেকোদের ‘ব্যবসা’। এমনকি যখন প্রশাসন অভিযান চালায়, তা যেন শুধু দিনের আলোর ‘শোডাউন’। রাত হলেই আবার ফিরে আসে আগের চিত্র।

এই অবস্থা যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, তা শুধু প্রাকৃতিক দিক থেকেই নয়Ñসামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও স্পষ্ট। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মুখ খুলছেন, বলছেন ‘মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই।’

প্রশাসনের দায়িত্ব শুধু তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া নয়, বরং তথ্য সংগ্রহ করাও প্রশাসনের কর্তব্য। জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের উচিত সমন্বিতভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটিখেকো সিন্ডিকেট নির্মূলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্যে কিছু আশার আলো দেখা গেলেও, শুধু অভিযানের প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। প্রশাসনকে স্বচ্ছ ও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। মাটিখেকো সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের, তাদের রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা যাই থাকুক, আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে, ইটভাটার মাটির চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ এবং কৃষিজমি সংরক্ষণে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

মাটি কাটার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ সংগঠিত করাও এখন সময়ের দাবি। কৃষিজমি নষ্ট হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে দেখা দেবে দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ। আর এই দায় কেউ এড়াতে পারবে না।

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

বালু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা জরুরি

হিমাগার সংকট : কৃষকের দুর্ভোগ আর কতদিন?

স্বাধীনতা দিবস : একাত্তরের স্বপ্ন পুনর্জাগরণের প্রত্যয়

আজ সেই কালরাত্রি

হাওরের বুকে সড়ক : উন্নয়ন না ধ্বংস?

সুন্দরবনে আবার অগ্নিকাণ্ড

চাল-সয়াবিনের দামে অস্থিরতা, সবজিতে স্বস্তি

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

কড়াই বিলের গাছ কাটা প্রকৃতির প্রতি অবহেলা

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তবতা ও সম্ভাবনার দ্বন্দ্ব

অস্থির চালের বাজারে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা

রমজানের নামে নিগ্রহ : কারা এই ‘নৈতিকতার ঠিকাদার’?

সেতু নির্মাণে গাফিলতি : জনদুর্ভোগের শেষ কোথায়?

ধর্ষণ, মব ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা : শুধু যেন কথার কথা না হয়

নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

গাছের জীবন রক্ষায় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশ্যে ধূমপান, মবের সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বয়ান

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

tab

সম্পাদকীয়

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

রাজশাহীর তানোরসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশ আজ এক গভীর সংকটে। কখনো প্রকাশ্যে, কখনো নীরবেÑবছরের পর বছর ধরে মাটি খুঁড়ে চলেছে এক সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। চিরচেনা উর্বর কৃষিজমি এখন যেন মৃত্যুপুরী। প্রকৃতি, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্যÑসবই আজ এই ‘মাটিখেকোদের’ লোভের শিকার।

কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কাটা আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু তানোরের গোয়ালপাড়া, হাপানিয়া, ঝিনাখৈর বা নেজামপুরে রাতভর চলছে মাটি কাটা, পরিবহন আর বিক্রি করা হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ তো আছেই। অথচ প্রশাসন বলছে, তারা অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়!

এই চিত্র শুধু তানোরের নয়Ñরাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাগমারা ও গোদাগাড়ী উপজেলার মাঠেরও একই চিত্র। উঁচু জমির টিলা আকৃতির অস্বাভাবিক পরিবর্তন, উর্বর টপসয়েল কেটে সরাসরি ইটভাটায় সরবরাহ, পুকুর খননের নামে মাটি বাণিজ্যÑসব মিলিয়ে বরেন্দ্র অঞ্চল যেন এক নিঃশব্দ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী ইটভাটা মালিক বা রাজনৈতিক নেতার ছত্রচ্ছায়ায় নির্বিঘেœ চলছে মাটিখেকোদের ‘ব্যবসা’। এমনকি যখন প্রশাসন অভিযান চালায়, তা যেন শুধু দিনের আলোর ‘শোডাউন’। রাত হলেই আবার ফিরে আসে আগের চিত্র।

এই অবস্থা যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, তা শুধু প্রাকৃতিক দিক থেকেই নয়Ñসামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও স্পষ্ট। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মুখ খুলছেন, বলছেন ‘মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই।’

প্রশাসনের দায়িত্ব শুধু তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া নয়, বরং তথ্য সংগ্রহ করাও প্রশাসনের কর্তব্য। জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের উচিত সমন্বিতভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটিখেকো সিন্ডিকেট নির্মূলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্যে কিছু আশার আলো দেখা গেলেও, শুধু অভিযানের প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। প্রশাসনকে স্বচ্ছ ও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। মাটিখেকো সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের, তাদের রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা যাই থাকুক, আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে, ইটভাটার মাটির চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ এবং কৃষিজমি সংরক্ষণে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

মাটি কাটার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ সংগঠিত করাও এখন সময়ের দাবি। কৃষিজমি নষ্ট হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে দেখা দেবে দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ। আর এই দায় কেউ এড়াতে পারবে না।

back to top