alt

চিঠিপত্র

চিঠি : গ্রাম ও শহরের স্বাস্থ্যসেবার পার্থক্য ঘুচুক

: বুধবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনও শহরের মতো উন্নত নয়। বিশ্বের অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশই এই সংকটে আক্রান্ত। মানবসভ্যতার ১৫ হাজার বছরের ইতিহাসে এটা প্রমাণিত যে গ্রাম আছে বলেই শহরের জন্ম হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি শহরের বেঁচে থাকার খোরাক জোগায়।

দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। গ্রামে বাস করে ১১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ২৪৫ জন। আর শহরে বাস করে ৫ কোটি ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭১ জন। শতাংশের হিসেবে ৬৮.৩৪ শতাংশ গ্রামে এবং ৩১.৬৬ শতাংশ শহরে বাস করে। মোট জনসংখ্যার ৬৮.৩৪ শতাংশ গ্রামে থাকে। তারা আধুনিক চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত। অথচ বাকি ৩১.৬৬ শতাংশের জন্য আধুনিক জীবনযাত্রার সব উপকরণ ও সেবা নিয়োজিত রয়েছে। এই বৈষম্যের দায় কার?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করার জন্য ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন-প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, তথ্য-উপাত্ত, সেবাদানের সঠিক নির্দেশিকা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা। ‘স্বাস্থ্যসেবা’ বাংলাদেশের সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্র এই ছয়টি নিয়ামকের সঠিক বরাদ্দ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে শহুরে ও গ্রাম্য স্বাস্থ্যকাঠামোর মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কমবে বলে আশা করা যায়।

শুধু চিকিৎসক নন, দক্ষ পেশাজীবীদের অধিকাংশই গ্রামে থাকতে অনিচ্ছুক। যারা ইচ্ছুক তারা চাইলেও থাকতে পারেন না। এরপরও যারা নানা প্রতিকূলতা মেনে নিয়ে গ্রামে আছেন, তাদের সাধুবাদ জানাতে হয়। ভালো বাসস্থান, নিরাপত্তা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা শহুরে সাহেবেরা যেভাবে নিজেদের জন্য সাজিয়ে রেখেছেন, গ্রামে তার কিছুমাত্র নেই।

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার নীতি অনুসারে, যদি কোনো কর্মচারীর জীবনের উন্নতির সঙ্গে পেশাকে সমান্তরালে রাখা যায়, তাহলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন। যেমন ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানের পড়ালেখা নিয়ে ভাবনা কম। এই সময়টাতে একজন চিকিৎসককে চাকরি দিয়ে গ্রামে পদায়ন করলে তার পক্ষে সেবা দেয়া সহজতর হয়।

স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য চিকিৎসক যেমন প্রয়োজন, নার্স ও অন্যান্য জনবলের গুরুত্বও কিছুমাত্র কম নয়। কীভাবে সব পেশার দক্ষ ও তারুণ্যদীপ্ত জনবলকে গ্রামের মানুষের সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি কাজ করলে এই তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞ বয়োজ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের দক্ষতা যোগ করা যেতে পারে। সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। ধরা যাক একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নবজাতক বিশেষজ্ঞ নেই, কিন্তু যে চিকিৎসক আছেন, তিনি শহরে নবজাতক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে রোগের খুঁটিনাটি আলাপ করে আধুনিক চিকিৎসা দিতে পারেন।

আইসিইউ এবং কিছু অত্যাধুনিক সুবিধা ছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা এভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেয়া সম্ভব। এসব বিকল্প ব্যবস্থায় কিভাবে শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়া যায়, সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের দেশে প্রচুর না হলেও অতীতের তুলনায় পর্যাপ্ত ডাক্তার ও অন্যান্য জনবল আছে। ওষুধ-যন্ত্রপাতিও আছে কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক সেবা সঠিক জায়গায় সঠিক উপায়ে পাওয়ার আয়োজনটি নেই। চূড়ান্ত বৈষম্যে ভরা এই কাঠামোতে প্রতিদিন যত মৃত্যু হচ্ছে, আমরা কেউই তার দায় এড়াতে পারি না।

ইসরাত জাহান

চিঠি : ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল

চিঠি : ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট নিয়োগ চাই

চিঠি : বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে কেন

চিঠি : দাঁড়াশ সাপ শত্রু নয়, বরং কৃষকের বন্ধু

চিঠি : অ্যালকোহল সেন্টাল অ্যাব্রেশন পদ্ধতিতে হৃদরোগ চিকিৎসা

চিঠি : প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা

চিঠি : দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর

চিঠি : কেন বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

চিঠি : মাদক নিয়ন্ত্রণে চাই সম্মিলিত প্রয়াস

চিঠি : ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা

চিঠি : ভিক্ষুক মুক্ত দেশ চাই

চিঠি : রাস্তাটি সংস্কার জরুরি

চিঠি : সুখী দেশ

চিঠি : ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অলিগলি

চিঠি : শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে

চিঠি : কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য খাতের সাফল্য

চিঠি : অনলাইন বিনিয়োগে সতর্ক হোন

চিঠি : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : যাতায়াতে মিলবে স্বস্তি

চিঠি : চুয়েট : গৌরবময় পথচলা

চিঠি : ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা

চিঠি : লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হোক

চিঠি : বিদ্যুৎ খাতে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করুন

চিঠি : দক্ষ জাতি গড়তে কারিগরি শিক্ষা জরুরি

চিঠি : সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বোঝা নয়

চিঠি : মাদককে না বলুন

চিঠি : গাছপালা নেই, আছে অট্টালিকা

চিঠি : সিলেটে ক্যান্সারের পেটসিটি মেশিন চাই

চিঠি : ‘নজরুল স্টাডিস’ কোর্স

চিঠি : ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে স্পিড ব্রেকার চাই

চিঠি : বানভাসিদের কষ্ট লাঘবে প্রয়োজন সহায়তা

চিঠি : পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে করণীয়

চিঠি : যানজটমুক্ত শহর গড়তে প্রয়োজন মুক্ত ফুটপাত

চিঠি : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভাগ বৈষম্য বন্ধ হোক

চিঠি : ভিক্ষাবৃত্তি কি বন্ধ হবে না?

চিঠি : চার টাকার সমাধান করবে কে?

চিঠি : সরকারি সম্পত্তির ব্যক্তিগত ব্যবহার বন্ধ হোক

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : গ্রাম ও শহরের স্বাস্থ্যসেবার পার্থক্য ঘুচুক

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বুধবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনও শহরের মতো উন্নত নয়। বিশ্বের অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশই এই সংকটে আক্রান্ত। মানবসভ্যতার ১৫ হাজার বছরের ইতিহাসে এটা প্রমাণিত যে গ্রাম আছে বলেই শহরের জন্ম হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি শহরের বেঁচে থাকার খোরাক জোগায়।

দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। গ্রামে বাস করে ১১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ২৪৫ জন। আর শহরে বাস করে ৫ কোটি ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭১ জন। শতাংশের হিসেবে ৬৮.৩৪ শতাংশ গ্রামে এবং ৩১.৬৬ শতাংশ শহরে বাস করে। মোট জনসংখ্যার ৬৮.৩৪ শতাংশ গ্রামে থাকে। তারা আধুনিক চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত। অথচ বাকি ৩১.৬৬ শতাংশের জন্য আধুনিক জীবনযাত্রার সব উপকরণ ও সেবা নিয়োজিত রয়েছে। এই বৈষম্যের দায় কার?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করার জন্য ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন-প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, তথ্য-উপাত্ত, সেবাদানের সঠিক নির্দেশিকা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা। ‘স্বাস্থ্যসেবা’ বাংলাদেশের সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্র এই ছয়টি নিয়ামকের সঠিক বরাদ্দ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে শহুরে ও গ্রাম্য স্বাস্থ্যকাঠামোর মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কমবে বলে আশা করা যায়।

শুধু চিকিৎসক নন, দক্ষ পেশাজীবীদের অধিকাংশই গ্রামে থাকতে অনিচ্ছুক। যারা ইচ্ছুক তারা চাইলেও থাকতে পারেন না। এরপরও যারা নানা প্রতিকূলতা মেনে নিয়ে গ্রামে আছেন, তাদের সাধুবাদ জানাতে হয়। ভালো বাসস্থান, নিরাপত্তা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা শহুরে সাহেবেরা যেভাবে নিজেদের জন্য সাজিয়ে রেখেছেন, গ্রামে তার কিছুমাত্র নেই।

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার নীতি অনুসারে, যদি কোনো কর্মচারীর জীবনের উন্নতির সঙ্গে পেশাকে সমান্তরালে রাখা যায়, তাহলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন। যেমন ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানের পড়ালেখা নিয়ে ভাবনা কম। এই সময়টাতে একজন চিকিৎসককে চাকরি দিয়ে গ্রামে পদায়ন করলে তার পক্ষে সেবা দেয়া সহজতর হয়।

স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য চিকিৎসক যেমন প্রয়োজন, নার্স ও অন্যান্য জনবলের গুরুত্বও কিছুমাত্র কম নয়। কীভাবে সব পেশার দক্ষ ও তারুণ্যদীপ্ত জনবলকে গ্রামের মানুষের সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি কাজ করলে এই তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞ বয়োজ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের দক্ষতা যোগ করা যেতে পারে। সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। ধরা যাক একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নবজাতক বিশেষজ্ঞ নেই, কিন্তু যে চিকিৎসক আছেন, তিনি শহরে নবজাতক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে রোগের খুঁটিনাটি আলাপ করে আধুনিক চিকিৎসা দিতে পারেন।

আইসিইউ এবং কিছু অত্যাধুনিক সুবিধা ছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা এভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেয়া সম্ভব। এসব বিকল্প ব্যবস্থায় কিভাবে শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়া যায়, সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের দেশে প্রচুর না হলেও অতীতের তুলনায় পর্যাপ্ত ডাক্তার ও অন্যান্য জনবল আছে। ওষুধ-যন্ত্রপাতিও আছে কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক সেবা সঠিক জায়গায় সঠিক উপায়ে পাওয়ার আয়োজনটি নেই। চূড়ান্ত বৈষম্যে ভরা এই কাঠামোতে প্রতিদিন যত মৃত্যু হচ্ছে, আমরা কেউই তার দায় এড়াতে পারি না।

ইসরাত জাহান

back to top