মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
চার দশকে কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। আর এটা প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলই বলা চলে। এ অগ্রগতিতে কৃষি ফসলি জমিতে ফসলকে ক্ষতিকর পোকা ও কীট থেকে বাঁচাতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার থেকে শুরু করে ইঁদুরের উপদ্রব থেকে বাঁচাতে পেতেছেন নানা ফাঁদ। তবে ইঁদুর নিধনের প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে কৃষকরা একরকম অজ্ঞাত। প্রকৃতপক্ষে তারা জানে না কৃষিজমির জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধনকারী ইঁদুরই বশ হয় দাঁড়াশ সাপের কাছে।
যেখানে দেশে ইঁদুর নিধন সপ্তাহে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়, সেখানে একটি দাঁড়াশ সাপ বছরে কয়েকশ ইঁদুর খেয়ে মেরে ফেলে। অথচ অধিকাংশ কৃষকই তা জানে না এই দাঁড়াশ সাপ তাদের কতটুকু উপকার করে। তারা দাঁড়াশ সাপ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না রাখার কারণে তাদের দেখামাত্রই আক্রমণ করে, হত্যা করে মুহূর্তেই।
এক জরিপের তথ্য জানাচ্ছে, ইঁদুর প্রাণীটি বছরে ৭ লাখ টন খাদ্যশস্যের ক্ষতি করে। পাশাপাশি প্রাণীটি ধানের পাক ধরার সঙ্গে সঙ্গে ফসলের ক্ষেতে আক্রমণ চালায়। ধানের শিষ কেটে দেয়। এছাড়া গুদামে সংরক্ষণ করা ধানের ৫ থেকে ১০% নষ্ট করে; যা কৃষক সমাজ তথা দেশের কৃষি ফসল উৎপাদন সংস্থার জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। কৃষি জমির ক্ষতি সাধনকারী এই প্রাণীটিকেই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন দাঁড়াশ নামের এই সাপটি।
প্রায় ৩৫০ সেন্টিমিটারের লম্বা এই সাপটি আবাসস্থলের আশপাশে প্রায় ৩ একর এলাকায় বিচরণ করে এবং এই জায়গায় খুঁজে খুঁজে ইঁদুর শিকার করে। ফলে ইঁদুরের কারণে যে ফসলহানি ঘটে তা থেকে রক্ষা মেলে। গ্রামের অনেক মানুষ এখনো বিশ্বাস করে, দাঁড়াশ সাপ গরুকে আক্রমণ করে। গরুর দুধ চুষে খায়; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা আর ভুল ধারণা।
লোকমুখে এদের বিষধর বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এদের শরীরে কোনো বিষ নেই। এরা কাউকে আক্রমণ কিংবা কাটলেও মানুষের মোটেই ক্ষতি হবে না। এ বিষহীন কৃষকের বন্ধু নামে পরিচিত সাপটিকে তাই আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে এদের হত্যা রোধে।
মানুষকে সাপটি সম্পর্কে রাখা ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন চালাতে হবে। সাপটির উপকারের কথা কৃষক তথা মানুষকে অবহিত করতে হবে। তাতেই রক্ষা পাবে কৃষক সমাজ, কৃষি জমি। রক্ষা পাবে কৃষকের নীরব বন্ধুখ্যাত দাঁড়াশ সাপ।
তৌহিদ-উল বারী
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
চার দশকে কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। আর এটা প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলই বলা চলে। এ অগ্রগতিতে কৃষি ফসলি জমিতে ফসলকে ক্ষতিকর পোকা ও কীট থেকে বাঁচাতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার থেকে শুরু করে ইঁদুরের উপদ্রব থেকে বাঁচাতে পেতেছেন নানা ফাঁদ। তবে ইঁদুর নিধনের প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে কৃষকরা একরকম অজ্ঞাত। প্রকৃতপক্ষে তারা জানে না কৃষিজমির জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধনকারী ইঁদুরই বশ হয় দাঁড়াশ সাপের কাছে।
যেখানে দেশে ইঁদুর নিধন সপ্তাহে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়, সেখানে একটি দাঁড়াশ সাপ বছরে কয়েকশ ইঁদুর খেয়ে মেরে ফেলে। অথচ অধিকাংশ কৃষকই তা জানে না এই দাঁড়াশ সাপ তাদের কতটুকু উপকার করে। তারা দাঁড়াশ সাপ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না রাখার কারণে তাদের দেখামাত্রই আক্রমণ করে, হত্যা করে মুহূর্তেই।
এক জরিপের তথ্য জানাচ্ছে, ইঁদুর প্রাণীটি বছরে ৭ লাখ টন খাদ্যশস্যের ক্ষতি করে। পাশাপাশি প্রাণীটি ধানের পাক ধরার সঙ্গে সঙ্গে ফসলের ক্ষেতে আক্রমণ চালায়। ধানের শিষ কেটে দেয়। এছাড়া গুদামে সংরক্ষণ করা ধানের ৫ থেকে ১০% নষ্ট করে; যা কৃষক সমাজ তথা দেশের কৃষি ফসল উৎপাদন সংস্থার জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। কৃষি জমির ক্ষতি সাধনকারী এই প্রাণীটিকেই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন দাঁড়াশ নামের এই সাপটি।
প্রায় ৩৫০ সেন্টিমিটারের লম্বা এই সাপটি আবাসস্থলের আশপাশে প্রায় ৩ একর এলাকায় বিচরণ করে এবং এই জায়গায় খুঁজে খুঁজে ইঁদুর শিকার করে। ফলে ইঁদুরের কারণে যে ফসলহানি ঘটে তা থেকে রক্ষা মেলে। গ্রামের অনেক মানুষ এখনো বিশ্বাস করে, দাঁড়াশ সাপ গরুকে আক্রমণ করে। গরুর দুধ চুষে খায়; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা আর ভুল ধারণা।
লোকমুখে এদের বিষধর বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এদের শরীরে কোনো বিষ নেই। এরা কাউকে আক্রমণ কিংবা কাটলেও মানুষের মোটেই ক্ষতি হবে না। এ বিষহীন কৃষকের বন্ধু নামে পরিচিত সাপটিকে তাই আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে এদের হত্যা রোধে।
মানুষকে সাপটি সম্পর্কে রাখা ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন চালাতে হবে। সাপটির উপকারের কথা কৃষক তথা মানুষকে অবহিত করতে হবে। তাতেই রক্ষা পাবে কৃষক সমাজ, কৃষি জমি। রক্ষা পাবে কৃষকের নীরব বন্ধুখ্যাত দাঁড়াশ সাপ।
তৌহিদ-উল বারী