মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
পৃথিবীতে মানুষ, জন্তু জানোয়ার, গাছপালা, পাখি, এমনকী কীটপতঙ্গ একে অপরের পরিপূরক। পুরোটাই প্রাণ বৈচিত্র্যের এক অঙ্গ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতিনিয়ত কমছে পৃথিবীর কীটপতঙ্গ। এভাবে কীটপতঙ্গ কমতে থাকলে এক সময় খাদ্য সংকটে পড়তে হতে পারে পৃথিবীবাসীকে।
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের সিনিয়র কিউরেটর বলেছেন, পৃথিবীর সব কীটপতঙ্গকে যদি আমরা মেরে ফেলি, তাহলে আমরাও মারা যাব। কীটপতঙ্গ না থাকলে আমাদের বিষ্ঠা আর মৃত প্রাণীর মধ্যে বসবাস করতে হতো। জৈবিক বর্জ্য পচনের সাহায্য করে কীটপতঙ্গ। পৃথিবী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে কীটপতঙ্গ। বিভিন্ন প্রাণী বা উদ্ভিদ মারা গেলে তার ওপর কীটপতঙ্গ হামলে পড়ে। এর ফলে এসব প্রাণী বা উদ্ভিদের পচন প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। এর ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
অন্য প্রাণীর খাদ্য জোগান দিতেও রয়েছে কীটপতঙ্গ। মেরুদন্ডী প্রাণীর ৬০ শতাংশই বেঁচে থাকার জন্য কীটপতঙ্গের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং পোকামাকড় না থাকলে পাখি, বাদুড়, ব্যাঙ এবং সুমিষ্ট পানির মাছও অদৃশ্য হয়ে যাবে। তারা নিজেরা কখনও হয় অন্যের খাদ্য, কখনও তারা হয়ে ওঠে ইকোসিস্টেমের সেবক।
কিন্তু এ ছাড়াও আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে কীটপতঙ্গ, সেটি হলো পরাগায়ন; যা ফসল, সবজি, ফল উৎপাদনের জন্য অত্যাবশ্যক।
গবেষকরা বলছেন, সাধারণত চোখে পড়ে না, এমন সব কীটপতঙ্গ এক জায়গায় করে যদি তার ওজন করা হয়, তা হবে পৃথিবীর সম্মিলিত মানুষের ওজনের চাইতেও ১৭ গুণ বেশি। সংখ্যায় এত বেশি হলেও কীটপতঙ্গরা গণহারে বিলুপ্ত হওয়ায় ঝুঁকি থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
জার্মানি, ব্রিটেন এবং পুয়েত্রো রিকো- এমন তিনটি দেশ, যেখানে গত ৩০ বছর ধরে কীটপতঙ্গের সংখ্যার ওপর গবেষণা চালানো হচ্ছে। তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর ২.৫ শতাংশ করে পতঙ্গের সংখ্যা কমছে। এই হারে সংখ্যা কমতে থাকলে এক শতাব্দীর মধ্যে কীটপতঙ্গের প্রজাতিগুলোর ৪১ শতাংশের বেশি অদৃশ্য হয়ে যাবে। এই গণবিলুপ্তির অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম মোবাইল, ইন্টারনেট টাওয়ারের রেডিয়েশন এবং রাতের শহর আলোকিত করার জন্য ব্যবহৃত উজ্জ্বল আলো। বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে মানব সমাজকেই। নচেৎ ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার।
লিয়াকত হোসেন খোকন
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
পৃথিবীতে মানুষ, জন্তু জানোয়ার, গাছপালা, পাখি, এমনকী কীটপতঙ্গ একে অপরের পরিপূরক। পুরোটাই প্রাণ বৈচিত্র্যের এক অঙ্গ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতিনিয়ত কমছে পৃথিবীর কীটপতঙ্গ। এভাবে কীটপতঙ্গ কমতে থাকলে এক সময় খাদ্য সংকটে পড়তে হতে পারে পৃথিবীবাসীকে।
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের সিনিয়র কিউরেটর বলেছেন, পৃথিবীর সব কীটপতঙ্গকে যদি আমরা মেরে ফেলি, তাহলে আমরাও মারা যাব। কীটপতঙ্গ না থাকলে আমাদের বিষ্ঠা আর মৃত প্রাণীর মধ্যে বসবাস করতে হতো। জৈবিক বর্জ্য পচনের সাহায্য করে কীটপতঙ্গ। পৃথিবী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে কীটপতঙ্গ। বিভিন্ন প্রাণী বা উদ্ভিদ মারা গেলে তার ওপর কীটপতঙ্গ হামলে পড়ে। এর ফলে এসব প্রাণী বা উদ্ভিদের পচন প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। এর ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
অন্য প্রাণীর খাদ্য জোগান দিতেও রয়েছে কীটপতঙ্গ। মেরুদন্ডী প্রাণীর ৬০ শতাংশই বেঁচে থাকার জন্য কীটপতঙ্গের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং পোকামাকড় না থাকলে পাখি, বাদুড়, ব্যাঙ এবং সুমিষ্ট পানির মাছও অদৃশ্য হয়ে যাবে। তারা নিজেরা কখনও হয় অন্যের খাদ্য, কখনও তারা হয়ে ওঠে ইকোসিস্টেমের সেবক।
কিন্তু এ ছাড়াও আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে কীটপতঙ্গ, সেটি হলো পরাগায়ন; যা ফসল, সবজি, ফল উৎপাদনের জন্য অত্যাবশ্যক।
গবেষকরা বলছেন, সাধারণত চোখে পড়ে না, এমন সব কীটপতঙ্গ এক জায়গায় করে যদি তার ওজন করা হয়, তা হবে পৃথিবীর সম্মিলিত মানুষের ওজনের চাইতেও ১৭ গুণ বেশি। সংখ্যায় এত বেশি হলেও কীটপতঙ্গরা গণহারে বিলুপ্ত হওয়ায় ঝুঁকি থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
জার্মানি, ব্রিটেন এবং পুয়েত্রো রিকো- এমন তিনটি দেশ, যেখানে গত ৩০ বছর ধরে কীটপতঙ্গের সংখ্যার ওপর গবেষণা চালানো হচ্ছে। তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর ২.৫ শতাংশ করে পতঙ্গের সংখ্যা কমছে। এই হারে সংখ্যা কমতে থাকলে এক শতাব্দীর মধ্যে কীটপতঙ্গের প্রজাতিগুলোর ৪১ শতাংশের বেশি অদৃশ্য হয়ে যাবে। এই গণবিলুপ্তির অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম মোবাইল, ইন্টারনেট টাওয়ারের রেডিয়েশন এবং রাতের শহর আলোকিত করার জন্য ব্যবহৃত উজ্জ্বল আলো। বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে মানব সমাজকেই। নচেৎ ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার।
লিয়াকত হোসেন খোকন