alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : সহিংসতার পারস্পারিক সম্পৃক্ততা

: বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

সহিংসতা শব্দটি যতটা কঠিন এর প্রয়োগ ততটাই নিত্তনৈমিত্তিক ও সহজ। শান্তি কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়। শান্তি গবেষণা ও সদিচ্ছার দ্বারা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আগে বুঝতে হবে সহিংসতা কিভাবে হচ্ছে। সহিংসতা বলতে বোঝায় যে কোনো ক্রিয়াকর্ম; যা আমাদের শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হত্যাকান্ড ও ছিনতাই এগুলোকে সহিংসতা বলা যায়।

গবেষণা বলছে- এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও যদি অর্থ উপার্জনের জন্য শারীরিক শ্রম দেয়া আবশ্যক হয় তবে তা কাঠামোগত সহিংসতা। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবো আমরা প্রতিদিন, মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী, চলাচলের জন্য কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়বার রিকশা বদল করি। অর্থাৎ আমাদের চোখের সামনেই প্রতিদিন এভাবে কাঠামোগত সহিংসতা হচ্ছে, আমরা কি সেই সম্পর্কে অবগত?

প্রাত্যহিক জীবনে আমরা অনেক কিছু প্রত্যাশা করি। কিন্তু সামাজিক কাঠামোর সীমাবদ্ধতার জন্য আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়ে যায়। এই যে ফারাক এটাই আমার ও আপনার সঙ্গে হয়ে যাওয়া সহিংসতা।

প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মাঝে যে বিরাট বৈসাদৃশ্য এটাও একটা সহিংসতা। আমার পারিপার্শ্বিক কাঠামোর জন্য আমি এই সহিংসতার স্বীকার হচ্ছি। এজন্য এটাকে বলা হচ্ছে কাঠামোগত সহিংসতা। ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হলে সেটা যেমন সহিংসতা, অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যুও সহিংসতা কিংবা মানবেতর জীবনযাপন করাও সহিংসতা। তবে আশার কথা হচ্ছে এই সহিংসতাগুলো পরিহার্য। আমাদের সামাজিক চর্চাগুলো বদলানো গেলে আমরা এই সহিংসতাগুলোকে পরিহার করতে পারি আর সবাই সুন্দর পরিবর্তনের পেছনে সব থেকে বেশি ভূমিকা পালন করে অনুধাবন।

নেতিবাচক শান্তিকেই যদি আমরা সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসাবে মেনে নেই সেক্ষেত্রে ধরেই নিতে হবে আমাদের আধুনিকায়ন এখনো অনেক বাকি। মনে রাখতে হবে সহিংসতা সহিংসতার জন্ম দেয়। একটি সরাসরি সহিংসতার কারণ বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো কাঠামোগত সহিংসতার আত্মপ্রকাশ ঘটে।

তাই আলোচনায় যাতে কেবল একটি এজেন্ডা না থাকে সে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সহিংসতার পারস্পারিক সম্পৃক্ততাগুলো শনাক্ত করতে হবে। মৃত্যু সহজাত সত্য হলেও বর্তমানে অগণিত মৃত্যু সংঘটিত হচ্ছে কাঠামোগত সহিংসতা হিসাবে যেমন মাতৃ ও শিশুমৃত্যু। এটাকে দৈব ঘটনা হিসাবে মেনে না নিয়ে খতিয়ে দেখা উচিত মায়ের গর্ভকালীন সময়ে তাকে সঠিক যত্ন করা হয়েছিলো কিনা। টিকাসহ অন্যান্য ঔষধের সরবরাহ সঠিকভাবে করা হয়েছিলো কি না। এমনকি ২০২৩ সালে এসে যদি কেউ যক্ষায় মৃত্যবরণ করে সেটাও সহিংসতা।

প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়েছে এমন যেকোনো রোগে মৃত্যু হলেই (বার্ধক্যজনিত কারণ ব্যতিত) তা সহিংসতা। ধরে নেই ‘ক বিশ্ববিদ্যালয়ের’ একদল শিক্ষার্থী শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত। এটি নিঃসন্দেহে একটি সহিংসতা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কেবল কি একটি মাত্র সহিংসতা? আরেকটি বড় জনগোষ্ঠী সহিংসতার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত দামী ডিগ্রিধারী বেকার! ‘লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে’- এই প্রবাদে কোথাও লেখা নেই প্রায়োগিক দক্ষতার কথা! কোথাও লেখা নেই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতার কথা।

কাঠামোটাই এমন যে পড়াশোনা শেখাচ্ছেই কেবল বেকার তৈরির জন্য। কাঠামোগত সহিংসতার সমাধানে কোনো আইন নেই। আপনি বেকার, কেনো ২৫ বছর পড়াশোনা করার পর আপনি চাকরি পাচ্ছেন না। এ সমস্যার সমাধান করতে কোনো প্রশাসন আসবে না। তাই এখন থেকে বারংবার নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে। বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নিজেকে চিন্তা করতে হবে। আমি কি মাঝারিদের দলে, অগ্রগামীদের দলে নাকি পশ্চাৎপদদের দলে?

তাসমিয়া ফেরদৌস তিতলী

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : সহিংসতার পারস্পারিক সম্পৃক্ততা

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

সহিংসতা শব্দটি যতটা কঠিন এর প্রয়োগ ততটাই নিত্তনৈমিত্তিক ও সহজ। শান্তি কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়। শান্তি গবেষণা ও সদিচ্ছার দ্বারা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আগে বুঝতে হবে সহিংসতা কিভাবে হচ্ছে। সহিংসতা বলতে বোঝায় যে কোনো ক্রিয়াকর্ম; যা আমাদের শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হত্যাকান্ড ও ছিনতাই এগুলোকে সহিংসতা বলা যায়।

গবেষণা বলছে- এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও যদি অর্থ উপার্জনের জন্য শারীরিক শ্রম দেয়া আবশ্যক হয় তবে তা কাঠামোগত সহিংসতা। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবো আমরা প্রতিদিন, মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী, চলাচলের জন্য কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়বার রিকশা বদল করি। অর্থাৎ আমাদের চোখের সামনেই প্রতিদিন এভাবে কাঠামোগত সহিংসতা হচ্ছে, আমরা কি সেই সম্পর্কে অবগত?

প্রাত্যহিক জীবনে আমরা অনেক কিছু প্রত্যাশা করি। কিন্তু সামাজিক কাঠামোর সীমাবদ্ধতার জন্য আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়ে যায়। এই যে ফারাক এটাই আমার ও আপনার সঙ্গে হয়ে যাওয়া সহিংসতা।

প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মাঝে যে বিরাট বৈসাদৃশ্য এটাও একটা সহিংসতা। আমার পারিপার্শ্বিক কাঠামোর জন্য আমি এই সহিংসতার স্বীকার হচ্ছি। এজন্য এটাকে বলা হচ্ছে কাঠামোগত সহিংসতা। ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হলে সেটা যেমন সহিংসতা, অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যুও সহিংসতা কিংবা মানবেতর জীবনযাপন করাও সহিংসতা। তবে আশার কথা হচ্ছে এই সহিংসতাগুলো পরিহার্য। আমাদের সামাজিক চর্চাগুলো বদলানো গেলে আমরা এই সহিংসতাগুলোকে পরিহার করতে পারি আর সবাই সুন্দর পরিবর্তনের পেছনে সব থেকে বেশি ভূমিকা পালন করে অনুধাবন।

নেতিবাচক শান্তিকেই যদি আমরা সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসাবে মেনে নেই সেক্ষেত্রে ধরেই নিতে হবে আমাদের আধুনিকায়ন এখনো অনেক বাকি। মনে রাখতে হবে সহিংসতা সহিংসতার জন্ম দেয়। একটি সরাসরি সহিংসতার কারণ বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো কাঠামোগত সহিংসতার আত্মপ্রকাশ ঘটে।

তাই আলোচনায় যাতে কেবল একটি এজেন্ডা না থাকে সে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সহিংসতার পারস্পারিক সম্পৃক্ততাগুলো শনাক্ত করতে হবে। মৃত্যু সহজাত সত্য হলেও বর্তমানে অগণিত মৃত্যু সংঘটিত হচ্ছে কাঠামোগত সহিংসতা হিসাবে যেমন মাতৃ ও শিশুমৃত্যু। এটাকে দৈব ঘটনা হিসাবে মেনে না নিয়ে খতিয়ে দেখা উচিত মায়ের গর্ভকালীন সময়ে তাকে সঠিক যত্ন করা হয়েছিলো কিনা। টিকাসহ অন্যান্য ঔষধের সরবরাহ সঠিকভাবে করা হয়েছিলো কি না। এমনকি ২০২৩ সালে এসে যদি কেউ যক্ষায় মৃত্যবরণ করে সেটাও সহিংসতা।

প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়েছে এমন যেকোনো রোগে মৃত্যু হলেই (বার্ধক্যজনিত কারণ ব্যতিত) তা সহিংসতা। ধরে নেই ‘ক বিশ্ববিদ্যালয়ের’ একদল শিক্ষার্থী শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত। এটি নিঃসন্দেহে একটি সহিংসতা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কেবল কি একটি মাত্র সহিংসতা? আরেকটি বড় জনগোষ্ঠী সহিংসতার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত দামী ডিগ্রিধারী বেকার! ‘লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে’- এই প্রবাদে কোথাও লেখা নেই প্রায়োগিক দক্ষতার কথা! কোথাও লেখা নেই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতার কথা।

কাঠামোটাই এমন যে পড়াশোনা শেখাচ্ছেই কেবল বেকার তৈরির জন্য। কাঠামোগত সহিংসতার সমাধানে কোনো আইন নেই। আপনি বেকার, কেনো ২৫ বছর পড়াশোনা করার পর আপনি চাকরি পাচ্ছেন না। এ সমস্যার সমাধান করতে কোনো প্রশাসন আসবে না। তাই এখন থেকে বারংবার নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে। বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নিজেকে চিন্তা করতে হবে। আমি কি মাঝারিদের দলে, অগ্রগামীদের দলে নাকি পশ্চাৎপদদের দলে?

তাসমিয়া ফেরদৌস তিতলী

back to top