alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : টেকসই ও সাশ্রয়ী ক্লিন এনার্জি

: রোববার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রসায়নবিদ রিচার্জ স্মোলি ২০ বছর আগে মানবজাতির জন্য প্রধান দশটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। যেগুলো হলো- এনার্জি, পানি, খাদ্য, পরিবেশ, দারিদ্র্য, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ, রোগ ব্যাধি, শিক্ষা, গণতন্ত্র ও জনসংখ্যা।

প্রথম কয়েকটি চ্যালেঞ্জ এনার্জির সাথে সম্পর্কিত। পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ পানি দ্বারা বেষ্টিত। কিন্তু এই পানি খাওয়া বা ব্যবহার করা বেশ কঠিন অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে। আবার যার নির্লবণীকরণের জন্য এনার্জি প্রয়োজন। এরপর আসে খাদ্য। বৈশ্বিক খাদ্য গ্রহণের ৮০% আসে আধুনিক চাষাবাদ থেকে। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কৃত্রিম সার, সমন্বিত চাষাবাদ ইত্যাদি। এছাড়াও হিমায়িতকরণ, গুদামজাতকরণ, পরিবহন সবকিছুতেই এনার্জির ব্যবহার রয়েছে।

পর্যাপ্ত ক্লিন এনার্জি এই সব ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। তার ধারণামতে, ১০ বিলিয়ন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ৬০ টেরাওয়াট ক্লিন এনার্জির প্রয়োজন। এদিকে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২৬ টেরাওয়াট এনার্জি ব্যবহৃত হয় যার মধ্যে প্রায় ৮ টেরাওয়াট হল বৈদ্যুতিক শক্তি।

টিকে থাকার জন্য আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ এনার্জিকে হতে হবে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা। এখন প্রশ্নটা এসেই যাচ্ছে, আমরা কিভাবে ১০ বিলিয়ন মানুষের জন্য ৬০ টেরাওয়াট এনার্জির যোগান পাব। পৃথিবী প্রতিদিন সূর্য থেকে ১, ৬৩, ০০০ টেরাওয়াট শক্তি গ্রহণ করে। অর্ধেকটা মহাকাশে ফেরত যাওয়ার পর বাকি থাকে ৮০ হাজার টেরাওয়াট; যা পৃথিবীতে নানাভাবে পৌঁছে এবং আমরা তা ব্যবহার করতে পারি। যেমন বাতাস, মাটি, সমুদ্র প্রায় ৮৭০ টেরাওয়াট এনার্জি বায়ুশক্তিতে রূপান্তরিত করে, যেটা অবশ্যই ৬০ টেরাওয়াট এর চেয়ে বেশি।

আমাদের কাছে কেবল সৌর এবং বায়ুশক্তিই না বরং আমাদের কাছে ভূতাপীয় শক্তি, জলশক্তি, পরমাণু শক্তি ইত্যাদি রয়েছে। সর্বশ্রেষ্ঠ বেশ কিছু সম্পদের উৎস হলো পৃথিবীর দক্ষিণাঞ্চল। এই জায়গাগুলো কেবলই পরিবেশ বিপর্যয়ের ভুক্তভোগী নয় বরং সুপ্ত এনার্জি বা শক্তির পরাশক্তি। আর এর কিছু কিছু বিকাশ আমরাই ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করতে পারছি।

যদি আমরা চিলির দিকে তাকাই, তাহলে দেখব দেশটি সৌর, জল এবং বায়ু শক্তিতে পরিপূর্ণ এবং চাহিদা অনুযায়ী গ্রীন ইলেকট্রন তৈরিতে সক্ষম। যার মধ্যে অনেকটা গ্রিন ইলেকট্রন হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়াতে রূপান্তরিত হয়, যেটা সার তৈরির একটি প্রধান উপাদান। এটি একটি ভালো জ্বালানি। বিশ্বব্যাপী ক্লিন এনার্জি পরিবহনের একটি অন্যতম মাধ্যম।

কেনিয়ায় রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎপাদনশীল বায়ু খামার। দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ভূতাপীয় প্রকল্প এবং যা ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় কার্বন ভ্যালি। যেখানে খুব শীঘ্রই এমন একটি এনার্জি ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে যা হবে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা।

কার্বন ডিরেক্টের চিফ সাইন্টিস্ট জুলিও ফ্রিডম্যানের মতে, তিনটি উপাদান রয়েছে এর সমাধানের জন্য। প্রথমত, অবকাঠামো। আমাদের আরো পরিবহন লাইন, সড়ক পথ, বন্দর, রেলপথ, জ্বালানি স্টেশন প্রয়োজন। এছাড়াও আমাদের ব্যাপক প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, আবিষ্কার। আনন্দের ব্যাপার হলো, ইতোমধ্যেই উন্নত দেশগুলো একক এবং যৌথভাবে বেশ কিছু আবিষ্কার করছে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা ক্লিন এনার্জি অর্জনের লক্ষ্যে। যেমন- বৈদ্যুতিক যানবাহন অথবা ক্লিন হাইড্রোজেন উৎপাদন ইত্যাদি।

তৃতীয়ত, বিনিয়োগ। তিনি একক প্রজেক্টে বিনিয়োগের চেয়ে একটি সিস্টেমেটিক বিনিয়োগের দিকে সবাইকে উৎসাহিত করেন। জলবায়ু সম্পর্কিত প্রজেক্ট এবং তার বিনিয়োগের একটি সুশৃঙ্খল মেকানিজম থাকা আবশ্যক।

১০ বিলিয়ন মানুষের জন্য পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা ক্লিন এনার্জি উৎপাদনে আমরা বেশ আশাবাদী হতে পারি। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ। অবকাঠামো, উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগ হতে পারে এর অনন্য চাবিকাঠি।

নুসরাত জাহান পন্নি

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : টেকসই ও সাশ্রয়ী ক্লিন এনার্জি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

রোববার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রসায়নবিদ রিচার্জ স্মোলি ২০ বছর আগে মানবজাতির জন্য প্রধান দশটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। যেগুলো হলো- এনার্জি, পানি, খাদ্য, পরিবেশ, দারিদ্র্য, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ, রোগ ব্যাধি, শিক্ষা, গণতন্ত্র ও জনসংখ্যা।

প্রথম কয়েকটি চ্যালেঞ্জ এনার্জির সাথে সম্পর্কিত। পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ পানি দ্বারা বেষ্টিত। কিন্তু এই পানি খাওয়া বা ব্যবহার করা বেশ কঠিন অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে। আবার যার নির্লবণীকরণের জন্য এনার্জি প্রয়োজন। এরপর আসে খাদ্য। বৈশ্বিক খাদ্য গ্রহণের ৮০% আসে আধুনিক চাষাবাদ থেকে। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কৃত্রিম সার, সমন্বিত চাষাবাদ ইত্যাদি। এছাড়াও হিমায়িতকরণ, গুদামজাতকরণ, পরিবহন সবকিছুতেই এনার্জির ব্যবহার রয়েছে।

পর্যাপ্ত ক্লিন এনার্জি এই সব ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। তার ধারণামতে, ১০ বিলিয়ন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ৬০ টেরাওয়াট ক্লিন এনার্জির প্রয়োজন। এদিকে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২৬ টেরাওয়াট এনার্জি ব্যবহৃত হয় যার মধ্যে প্রায় ৮ টেরাওয়াট হল বৈদ্যুতিক শক্তি।

টিকে থাকার জন্য আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ এনার্জিকে হতে হবে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা। এখন প্রশ্নটা এসেই যাচ্ছে, আমরা কিভাবে ১০ বিলিয়ন মানুষের জন্য ৬০ টেরাওয়াট এনার্জির যোগান পাব। পৃথিবী প্রতিদিন সূর্য থেকে ১, ৬৩, ০০০ টেরাওয়াট শক্তি গ্রহণ করে। অর্ধেকটা মহাকাশে ফেরত যাওয়ার পর বাকি থাকে ৮০ হাজার টেরাওয়াট; যা পৃথিবীতে নানাভাবে পৌঁছে এবং আমরা তা ব্যবহার করতে পারি। যেমন বাতাস, মাটি, সমুদ্র প্রায় ৮৭০ টেরাওয়াট এনার্জি বায়ুশক্তিতে রূপান্তরিত করে, যেটা অবশ্যই ৬০ টেরাওয়াট এর চেয়ে বেশি।

আমাদের কাছে কেবল সৌর এবং বায়ুশক্তিই না বরং আমাদের কাছে ভূতাপীয় শক্তি, জলশক্তি, পরমাণু শক্তি ইত্যাদি রয়েছে। সর্বশ্রেষ্ঠ বেশ কিছু সম্পদের উৎস হলো পৃথিবীর দক্ষিণাঞ্চল। এই জায়গাগুলো কেবলই পরিবেশ বিপর্যয়ের ভুক্তভোগী নয় বরং সুপ্ত এনার্জি বা শক্তির পরাশক্তি। আর এর কিছু কিছু বিকাশ আমরাই ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করতে পারছি।

যদি আমরা চিলির দিকে তাকাই, তাহলে দেখব দেশটি সৌর, জল এবং বায়ু শক্তিতে পরিপূর্ণ এবং চাহিদা অনুযায়ী গ্রীন ইলেকট্রন তৈরিতে সক্ষম। যার মধ্যে অনেকটা গ্রিন ইলেকট্রন হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়াতে রূপান্তরিত হয়, যেটা সার তৈরির একটি প্রধান উপাদান। এটি একটি ভালো জ্বালানি। বিশ্বব্যাপী ক্লিন এনার্জি পরিবহনের একটি অন্যতম মাধ্যম।

কেনিয়ায় রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎপাদনশীল বায়ু খামার। দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ভূতাপীয় প্রকল্প এবং যা ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় কার্বন ভ্যালি। যেখানে খুব শীঘ্রই এমন একটি এনার্জি ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে যা হবে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা।

কার্বন ডিরেক্টের চিফ সাইন্টিস্ট জুলিও ফ্রিডম্যানের মতে, তিনটি উপাদান রয়েছে এর সমাধানের জন্য। প্রথমত, অবকাঠামো। আমাদের আরো পরিবহন লাইন, সড়ক পথ, বন্দর, রেলপথ, জ্বালানি স্টেশন প্রয়োজন। এছাড়াও আমাদের ব্যাপক প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, আবিষ্কার। আনন্দের ব্যাপার হলো, ইতোমধ্যেই উন্নত দেশগুলো একক এবং যৌথভাবে বেশ কিছু আবিষ্কার করছে পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা ক্লিন এনার্জি অর্জনের লক্ষ্যে। যেমন- বৈদ্যুতিক যানবাহন অথবা ক্লিন হাইড্রোজেন উৎপাদন ইত্যাদি।

তৃতীয়ত, বিনিয়োগ। তিনি একক প্রজেক্টে বিনিয়োগের চেয়ে একটি সিস্টেমেটিক বিনিয়োগের দিকে সবাইকে উৎসাহিত করেন। জলবায়ু সম্পর্কিত প্রজেক্ট এবং তার বিনিয়োগের একটি সুশৃঙ্খল মেকানিজম থাকা আবশ্যক।

১০ বিলিয়ন মানুষের জন্য পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সস্তা ক্লিন এনার্জি উৎপাদনে আমরা বেশ আশাবাদী হতে পারি। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ। অবকাঠামো, উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগ হতে পারে এর অনন্য চাবিকাঠি।

নুসরাত জাহান পন্নি

back to top