মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। অথচ সেই দুর্ঘটনাই ঘটছে অহরহ, অবিরত। দেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়েই চলছে। প্রতিদিন রক্তাক্ত হচ্ছে সড়ক। ঝরছে অসংখ্য প্রাণ। প্রতিদিন টিভি বা পত্রিকার পাতা উল্টালে অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনার খবর চোখে পড়ে। দুর্ঘটনা রোধে আইনকানুন ও বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকলেও তা প্রতিরোধ করা সম্ভর হচ্ছে না।
সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের অতিরিক্ত গতি এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব। এছাড়া ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত অমান্য করা, অদক্ষ চালক ও হেলপার দিয়ে যানবাহন চালানো, চালকরা অনেক সময় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালায়। ফলে একসময় নিজের অজান্তেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে।
চালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা সড়ক দুর্ঘটনার আরো একটি অন্যতম কারণ। এভাবেই নীরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন শতশত মানুষ। এই দায়ভার কাদের! আর কত প্রাণ শেষ হলে আমরা সতর্ক হব। প্রতিনিয়ত সড়ক রক্তাক্ত হচ্ছে কেন!
তবে আমরা সড়কে আর মৃত্যু দেখতে চাই না। এজন্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেক্ষেত্রে, সিট বেল্ট বাঁধাতে হবে। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য মনোযোগ থাকতে হবে। একটু অমনোযোগী ড্রাইভিংয়ের কারণে ঘটতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। কারণ বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে অদক্ষ চালকের জন্য।
হুটহাট গাড়ির গতি বাড়ানো বা কমানোর ফলে বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অনেক সময় ওভারটেকিং করার জন্য প্রতিযোগিতা করে অনেক ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে থাকেন। এটি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। প্রত্যেকটি গাড়ির দুটি লুকিং গ্লাস থাকতে হবে। গাড়ি চালানোর সময় অনেক চালক নেশাগ্রস্ত থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পাবলিক বাসের দুর্ঘটনার কারণ নেশাগ্রস্ত চালক। তাই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে।
সড়ক পরিবহন আইনের ৮৪ ধারায় অবৈধভাবে মোটরযানের আকৃতি পরিবর্তনে শাস্তির কথা বলা হয়েছে, ৯৮ নম্বর ধারায় ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালানোর শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ১০৫ নম্বর ধারায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা কতটুকু কার্যকর!
সড়ক পরিবহন আইন এর পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তবে অনেকক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অসতর্কতা এবং অসচেতনতার জন্য দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই শুধু আইনের বাস্তবায়ন নয় নাগরিকদের সচেতনতা সেইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ, চালক, শ্রমিক ও যাত্রী সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।আমাদের মনে রাখা উচিত, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
সাকিবুল হাছান
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ, ঢাকা
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। অথচ সেই দুর্ঘটনাই ঘটছে অহরহ, অবিরত। দেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়েই চলছে। প্রতিদিন রক্তাক্ত হচ্ছে সড়ক। ঝরছে অসংখ্য প্রাণ। প্রতিদিন টিভি বা পত্রিকার পাতা উল্টালে অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনার খবর চোখে পড়ে। দুর্ঘটনা রোধে আইনকানুন ও বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকলেও তা প্রতিরোধ করা সম্ভর হচ্ছে না।
সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের অতিরিক্ত গতি এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব। এছাড়া ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত অমান্য করা, অদক্ষ চালক ও হেলপার দিয়ে যানবাহন চালানো, চালকরা অনেক সময় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালায়। ফলে একসময় নিজের অজান্তেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে।
চালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা সড়ক দুর্ঘটনার আরো একটি অন্যতম কারণ। এভাবেই নীরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন শতশত মানুষ। এই দায়ভার কাদের! আর কত প্রাণ শেষ হলে আমরা সতর্ক হব। প্রতিনিয়ত সড়ক রক্তাক্ত হচ্ছে কেন!
তবে আমরা সড়কে আর মৃত্যু দেখতে চাই না। এজন্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেক্ষেত্রে, সিট বেল্ট বাঁধাতে হবে। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য মনোযোগ থাকতে হবে। একটু অমনোযোগী ড্রাইভিংয়ের কারণে ঘটতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। কারণ বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে অদক্ষ চালকের জন্য।
হুটহাট গাড়ির গতি বাড়ানো বা কমানোর ফলে বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অনেক সময় ওভারটেকিং করার জন্য প্রতিযোগিতা করে অনেক ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে থাকেন। এটি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। প্রত্যেকটি গাড়ির দুটি লুকিং গ্লাস থাকতে হবে। গাড়ি চালানোর সময় অনেক চালক নেশাগ্রস্ত থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পাবলিক বাসের দুর্ঘটনার কারণ নেশাগ্রস্ত চালক। তাই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে।
সড়ক পরিবহন আইনের ৮৪ ধারায় অবৈধভাবে মোটরযানের আকৃতি পরিবর্তনে শাস্তির কথা বলা হয়েছে, ৯৮ নম্বর ধারায় ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালানোর শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ১০৫ নম্বর ধারায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা কতটুকু কার্যকর!
সড়ক পরিবহন আইন এর পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তবে অনেকক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অসতর্কতা এবং অসচেতনতার জন্য দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই শুধু আইনের বাস্তবায়ন নয় নাগরিকদের সচেতনতা সেইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ, চালক, শ্রমিক ও যাত্রী সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।আমাদের মনে রাখা উচিত, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
সাকিবুল হাছান
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ, ঢাকা