alt

opinion » mail

আমাদের কেন একজন রতন টাটা নেই

: রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতি রতন টাটা মৃত্যুবরণ করেছেন। শিল্পপতি বা ধনকুবের কারো মৃত্যুতে আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের সচরাচর যে ভর্ৎসনা বা তাচ্ছিল্যের বহিঃপ্রকাশ কিংবা অবৈধপথে অর্জিত সম্পদের ফিরিস্তি বের হতে দেখা যায়, রতন টাটার ক্ষেত্রে ঘটেছে তার উল্টো চিত্র। শোকে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা দেশ। শিল্পপতি হিসেবে যতটা পরিচিত তিনি, ঠিক ততটাই সমাদৃত তার জনহিতৈষী কাজের জন্য। তিনি কঠোর অধ্যবসায় ও গভীর দূরদৃষ্টির মাধ্যমে পারিবারিক ব্যবসাকে পরিণত করেছিলেন ব্যবসায়িক জগতের এক সাম্রাজ্যে। এতদসত্ত্বেও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের তালিকায় তার নাম উঠেনি। আসলে তার আয়ের অধিকাংশই ব্যয় হতো জনহিতকর কাজে। কথিত আছে, টাটা গ্রুপের কর্তধার মহান এই মানুষটির আয়ের ৬০-৬৫ শতাংশই চলে যেতো বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও জনসেবামূলক কাজে। শিল্পপতি হয়েও জনহিতকর কাজ ও দূরদর্শী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্য হয়ে উঠেছিলেন ভারতের অমূল্য রতন।

আমাদের দেশেও কিন্তু টাটা গ্রুপের মতো বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর অভাব নেই। অভাব রয়েছে শুধু একজন রতন টাটার। আমাদের টাটারা কেবল নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তারা দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, করফাঁকি, টাকা পাচার ও ঋণখেলাপিতে একেকজন অপ্রতিরোধ্য। যখন যে শাসক ক্ষমতায় গিয়েছে, এই বুর্জোয়া শ্রেণী খোলস পাল্টে তার সাথে গিয়েই স্বার্থসিদ্ধির ফিকিরে মত্ত থেকেছে। দেশের সংকটময় মুহূর্তগুলোতে, জাতির সেবায় তাদের অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায় না।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে যত আন্দোলন, সংগ্রাম কিংবা বিপ্লব-বিদ্রোহ হয়েছে তার সিংহভাগ কৃতিত্ব মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মধ্যবিত্ত দেশে অনিয়ম ভেঙেছে, বিদ্রোহ করেছে, বিপ্লব এনেছে। বুর্জোয়ারা সবসময় থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অনেক ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের অর্জিত বিজয়গুলো বুর্জোয়া শ্রেণী নিজেদের স্বার্থে ভাগিয়ে নিয়েছে। রাজনীতিতে তাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ, সুস্থধারার বিপরীতে দুর্বৃত্তপনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। ফলে, শাসক শ্রেণী যতটা না সাধারণ জনগণের হতে পেরেছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে বুর্জোয়া শ্রেণীর। এতে সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন খুব কমই হয়েছে।

স্বাধীনতার পঞ্চাশোর্ধ্ব পেরোনো বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার চলার পথে নানা আন্দোলন, সংগ্রাম ও সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে, সেখানে বুর্জোয়া শ্রেণীর নতুন আঙ্গিকে ভাবনার সময় হয়েছে। রতন টাটার মতো তারাও যদি দেশ ও সমাজের বৃহৎ স্বার্থে এগিয়ে আসেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক কাঠামোতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

রমজান মিয়া

শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শিশুর হাতে মোবাইল নয়, চাই জীবনের মাঠে ফেরার ডাক

মতিঝিল-গুলিস্তান রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস : শৃঙ্খল ও স্বস্তির সম্ভাবনা

ভাঙ্গা-খুলনা সড়ক দ্রুত চার লেনে উন্নীত করুন

ডিজিটাল উপনিবেশ : অদৃশ্য শৃঙ্খলের শাসন

বাউফল থেকে লোহালিয়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা

পরিবেশ বিপর্যয়ের অজানা মুখ

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

tab

opinion » mail

আমাদের কেন একজন রতন টাটা নেই

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতি রতন টাটা মৃত্যুবরণ করেছেন। শিল্পপতি বা ধনকুবের কারো মৃত্যুতে আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের সচরাচর যে ভর্ৎসনা বা তাচ্ছিল্যের বহিঃপ্রকাশ কিংবা অবৈধপথে অর্জিত সম্পদের ফিরিস্তি বের হতে দেখা যায়, রতন টাটার ক্ষেত্রে ঘটেছে তার উল্টো চিত্র। শোকে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা দেশ। শিল্পপতি হিসেবে যতটা পরিচিত তিনি, ঠিক ততটাই সমাদৃত তার জনহিতৈষী কাজের জন্য। তিনি কঠোর অধ্যবসায় ও গভীর দূরদৃষ্টির মাধ্যমে পারিবারিক ব্যবসাকে পরিণত করেছিলেন ব্যবসায়িক জগতের এক সাম্রাজ্যে। এতদসত্ত্বেও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের তালিকায় তার নাম উঠেনি। আসলে তার আয়ের অধিকাংশই ব্যয় হতো জনহিতকর কাজে। কথিত আছে, টাটা গ্রুপের কর্তধার মহান এই মানুষটির আয়ের ৬০-৬৫ শতাংশই চলে যেতো বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও জনসেবামূলক কাজে। শিল্পপতি হয়েও জনহিতকর কাজ ও দূরদর্শী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্য হয়ে উঠেছিলেন ভারতের অমূল্য রতন।

আমাদের দেশেও কিন্তু টাটা গ্রুপের মতো বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর অভাব নেই। অভাব রয়েছে শুধু একজন রতন টাটার। আমাদের টাটারা কেবল নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তারা দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, করফাঁকি, টাকা পাচার ও ঋণখেলাপিতে একেকজন অপ্রতিরোধ্য। যখন যে শাসক ক্ষমতায় গিয়েছে, এই বুর্জোয়া শ্রেণী খোলস পাল্টে তার সাথে গিয়েই স্বার্থসিদ্ধির ফিকিরে মত্ত থেকেছে। দেশের সংকটময় মুহূর্তগুলোতে, জাতির সেবায় তাদের অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায় না।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে যত আন্দোলন, সংগ্রাম কিংবা বিপ্লব-বিদ্রোহ হয়েছে তার সিংহভাগ কৃতিত্ব মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মধ্যবিত্ত দেশে অনিয়ম ভেঙেছে, বিদ্রোহ করেছে, বিপ্লব এনেছে। বুর্জোয়ারা সবসময় থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অনেক ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের অর্জিত বিজয়গুলো বুর্জোয়া শ্রেণী নিজেদের স্বার্থে ভাগিয়ে নিয়েছে। রাজনীতিতে তাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ, সুস্থধারার বিপরীতে দুর্বৃত্তপনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। ফলে, শাসক শ্রেণী যতটা না সাধারণ জনগণের হতে পেরেছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে বুর্জোয়া শ্রেণীর। এতে সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন খুব কমই হয়েছে।

স্বাধীনতার পঞ্চাশোর্ধ্ব পেরোনো বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার চলার পথে নানা আন্দোলন, সংগ্রাম ও সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে, সেখানে বুর্জোয়া শ্রেণীর নতুন আঙ্গিকে ভাবনার সময় হয়েছে। রতন টাটার মতো তারাও যদি দেশ ও সমাজের বৃহৎ স্বার্থে এগিয়ে আসেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক কাঠামোতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

রমজান মিয়া

শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

back to top