মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বাংলাদেশে এক সময় পুকুর ছিল গ্রামাঞ্চলের মানুষের পানির অন্যতম উৎস। পুকুরগুলো শুধু পানীয় জল, সেচ ও মাছ চাষের জন্যই ব্যবহৃত হতো না, বরং স্থানীয় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। তবে সাম্প্রতিককালে নগরায়ণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, এবং অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবহারের কারণে পুকুর ভরাটের প্রবণতা বেড়েছে। গ্রামে-শহরে আবাসন, দোকানপাট ও শিল্প স্থাপনের জন্য পুকুরগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
পুকুর ভরাটের ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার ফলে পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতি আরও তীব্র করেছে। একই সঙ্গে, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, ফলে কৃষিকাজ ও দৈনন্দিন জীবনে পানির সংকট তৈরি হচ্ছে। মাছ চাষের সম্ভাবনাও হ্রাস পেয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এ অবস্থায়, পুকুর সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। পুরনো পুকুরগুলোর পুনরুদ্ধার, নতুন পুকুর খনন, এবং পুকুর সংরক্ষণে প্রণোদনা দেওয়া উচিত। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগগুলো জরুরি।
আবার পুকুর এর সল্পতার জন্য বাংলাদেশের অনেক পুকুরে একসঙ্গে গোসল, মাছ চাষ, কাপড় ধোয়া, এবং গবাদি পশুর গোসল করা হয়। এ ধরনের অপরিকল্পিত এবং বহুমুখী ব্যবহার পুকুরের পানিকে দূষিত করে তুলছে। পুকুরের পানি পরিষ্কার না থাকায় এতে রোগজীবাণুর বিস্তার ঘটে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
পানির দূষণের ফলে ত্বক রোগ, পেটের পীড়া, টাইফয়েড, এবং পানিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাছ চাষে ব্যবহার করা রাসায়নিক ও খাবারের অবশিষ্টাংশ পানিতে মিশে দূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। তদুপরি, গবাদি পশুর গোসলের মাধ্যমে বর্জ্য পুকুরে মিশে পানি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।
এ সমস্যা সমাধানে পুকুর ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা জরুরি। পুকুরের পানি নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, মাছ চাষের জন্য আলাদা পুকুর ব্যবহার করা, এবং জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুকুর ব্যবহারের সুষ্ঠু নীতি গ্রহণ করা গেলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।
হালিমা আক্তার হানি, শিক্ষার্থী রাজশাহী কলেজ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশে এক সময় পুকুর ছিল গ্রামাঞ্চলের মানুষের পানির অন্যতম উৎস। পুকুরগুলো শুধু পানীয় জল, সেচ ও মাছ চাষের জন্যই ব্যবহৃত হতো না, বরং স্থানীয় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। তবে সাম্প্রতিককালে নগরায়ণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, এবং অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবহারের কারণে পুকুর ভরাটের প্রবণতা বেড়েছে। গ্রামে-শহরে আবাসন, দোকানপাট ও শিল্প স্থাপনের জন্য পুকুরগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
পুকুর ভরাটের ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার ফলে পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতি আরও তীব্র করেছে। একই সঙ্গে, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, ফলে কৃষিকাজ ও দৈনন্দিন জীবনে পানির সংকট তৈরি হচ্ছে। মাছ চাষের সম্ভাবনাও হ্রাস পেয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এ অবস্থায়, পুকুর সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। পুরনো পুকুরগুলোর পুনরুদ্ধার, নতুন পুকুর খনন, এবং পুকুর সংরক্ষণে প্রণোদনা দেওয়া উচিত। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগগুলো জরুরি।
আবার পুকুর এর সল্পতার জন্য বাংলাদেশের অনেক পুকুরে একসঙ্গে গোসল, মাছ চাষ, কাপড় ধোয়া, এবং গবাদি পশুর গোসল করা হয়। এ ধরনের অপরিকল্পিত এবং বহুমুখী ব্যবহার পুকুরের পানিকে দূষিত করে তুলছে। পুকুরের পানি পরিষ্কার না থাকায় এতে রোগজীবাণুর বিস্তার ঘটে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
পানির দূষণের ফলে ত্বক রোগ, পেটের পীড়া, টাইফয়েড, এবং পানিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাছ চাষে ব্যবহার করা রাসায়নিক ও খাবারের অবশিষ্টাংশ পানিতে মিশে দূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। তদুপরি, গবাদি পশুর গোসলের মাধ্যমে বর্জ্য পুকুরে মিশে পানি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।
এ সমস্যা সমাধানে পুকুর ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা জরুরি। পুকুরের পানি নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, মাছ চাষের জন্য আলাদা পুকুর ব্যবহার করা, এবং জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুকুর ব্যবহারের সুষ্ঠু নীতি গ্রহণ করা গেলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।
হালিমা আক্তার হানি, শিক্ষার্থী রাজশাহী কলেজ