alt

মতামত » চিঠিপত্র

নারী ফুটবল ও সামাজিক সংকীর্ণতা

: বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

দিনাজপুরের হাকিমপুর এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে সংঘটিত ঘটনাগুলো আমাদের সমাজের একটি সংকীর্ণ ও পশ্চাৎপদ মানসিকতার প্রতিচ্ছবি। ‘তৌহিদী জনতা’ নামে একটি গোষ্ঠীর বাধা এবং মাঠে হামলার ঘটনা শুধু নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণের অধিকারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং এটি আমাদের সামাজিক অগ্রগতির পথে একটি বড় বাধা। নারী ফুটবল খেলা বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষ এবং মাঠের বেড়া ভাঙচুরের মতো ঘটনাগুলো আমাদের ভাবতে বাধ্য করেÑ আমরা কি সত্যিই একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পেরেছি?

দিনাজপুরের হাকিমপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারী ফুটবলাররা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনেন, তাদের এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়া উচিত নয়। অন্যদিকে, ‘তৌহিদী জনতা’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নারীদের এই ধরনের ক্রীড়া কার্যক্রম ইসলামবিরোধী। এই যুক্তি কতটা যৌক্তিক?

ইসলাম নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না, বরং ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়কে সমানভাবে সম্মান ও মর্যাদা দেয়। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণকে ধর্মের নামে বাধা দেয়ার চেষ্টা একটি সংকীর্ণ ব্যাখ্যা মাত্র।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নারী ফুটবল মাঠের বেড়া ভাঙচুরের ঘটনাও একই রকমের সংকীর্ণ মানসিকতার প্রতিফলন। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ নারী ফুটবল খেলা বন্ধের দাবিতে মাঠে হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং নারী ক্রীড়াবিদদের মনোবল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ কি সত্যিই কোনো অপরাধ? নারীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা অপরিসীম। নারী ফুটবলাররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। তাদের এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়ার অর্থ হলো দেশের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করা।

এই ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছেÑ সমাজের একটি অংশ এখনও নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকারের বিষয়ে সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ, শিক্ষা অর্জন এবং কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখার অধিকারকে তারা ধর্ম ও সংস্কৃতির নামে বাধা দিতে চায়। কিন্তু এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নারীদের সমান অধিকার এবং তাদের সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া আমাদের সবার দায়িত্ব।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই ধরনের ঘটনাগুলোতে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণের অধিকার রক্ষায় আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, সমাজের সব স্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ধর্ম ও সংস্কৃতির নামে নারীদের অধিকার হরণের চেষ্টাকে প্রতিহত করতে হবে। নারী ফুটবলাররা যেন নির্বিঘেœ তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

tab

মতামত » চিঠিপত্র

নারী ফুটবল ও সামাজিক সংকীর্ণতা

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুরের হাকিমপুর এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে সংঘটিত ঘটনাগুলো আমাদের সমাজের একটি সংকীর্ণ ও পশ্চাৎপদ মানসিকতার প্রতিচ্ছবি। ‘তৌহিদী জনতা’ নামে একটি গোষ্ঠীর বাধা এবং মাঠে হামলার ঘটনা শুধু নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণের অধিকারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং এটি আমাদের সামাজিক অগ্রগতির পথে একটি বড় বাধা। নারী ফুটবল খেলা বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষ এবং মাঠের বেড়া ভাঙচুরের মতো ঘটনাগুলো আমাদের ভাবতে বাধ্য করেÑ আমরা কি সত্যিই একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পেরেছি?

দিনাজপুরের হাকিমপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারী ফুটবলাররা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনেন, তাদের এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়া উচিত নয়। অন্যদিকে, ‘তৌহিদী জনতা’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নারীদের এই ধরনের ক্রীড়া কার্যক্রম ইসলামবিরোধী। এই যুক্তি কতটা যৌক্তিক?

ইসলাম নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না, বরং ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়কে সমানভাবে সম্মান ও মর্যাদা দেয়। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণকে ধর্মের নামে বাধা দেয়ার চেষ্টা একটি সংকীর্ণ ব্যাখ্যা মাত্র।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নারী ফুটবল মাঠের বেড়া ভাঙচুরের ঘটনাও একই রকমের সংকীর্ণ মানসিকতার প্রতিফলন। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ নারী ফুটবল খেলা বন্ধের দাবিতে মাঠে হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং নারী ক্রীড়াবিদদের মনোবল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ কি সত্যিই কোনো অপরাধ? নারীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা অপরিসীম। নারী ফুটবলাররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। তাদের এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়ার অর্থ হলো দেশের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করা।

এই ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছেÑ সমাজের একটি অংশ এখনও নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকারের বিষয়ে সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ, শিক্ষা অর্জন এবং কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখার অধিকারকে তারা ধর্ম ও সংস্কৃতির নামে বাধা দিতে চায়। কিন্তু এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নারীদের সমান অধিকার এবং তাদের সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া আমাদের সবার দায়িত্ব।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই ধরনের ঘটনাগুলোতে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। নারীদের ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণের অধিকার রক্ষায় আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, সমাজের সব স্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ধর্ম ও সংস্কৃতির নামে নারীদের অধিকার হরণের চেষ্টাকে প্রতিহত করতে হবে। নারী ফুটবলাররা যেন নির্বিঘেœ তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

back to top