মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শহর আমাদের আধুনিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে প্রতিদিন গড়ে ওঠা নতুন নতুন স্থাপনা, রাস্তা এবং শিল্প-কারখানা আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করছে ঠিকই, কিন্তু একই সঙ্গে প্রকৃতির ভারসাম্যও নষ্ট করে চলেছে। নগরায়ণের এই ধারাবাহিকতায় গাছপালা, উদ্যান এবং খোলা জায়গাগুলো ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। শহরের মানুষের জীবন থেকে প্রকৃতির সংস্পর্শ হারিয়ে যাওয়ার ফলে মানসিক চাপ, স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং পরিবেশগত সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যেই শহরের সবুজায়নের গুরুত্ব বারবার উঠে আসছে। এটি একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে নাগরিক জীবনকেও করে তোলে আরও মানসম্মত।
শহরের সবুজায়নের পথে প্রধান বাধা হলো অপ্রতুল জমি এবং নগরায়ণের বাড়তি চাপ। শহরে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং জমির চাহিদা সবুজ জায়গাগুলোকে সংকুচিত করছে। অনেক সময় নগর উন্নয়নের নামে উদ্যান ধ্বংস করে বড় বড় স্থাপনা তৈরি করা হয়। এর ফলে গরমের তীব্রতা বাড়ে, বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং বায়ুদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং নাগরিক সচেতনতার ঘাটতি এই সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
তবে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে শহরের অব্যবহৃত জমিগুলোকে সবুজ করার প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে। ছাদ বাগান এবং উল্লম্ব বাগান তৈরির জন্য প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। এগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে একটি টেকসই সবুজায়ন উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, জাপানের টোকিও শহরে ছাদবাগান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
শহরের সবুজায়ন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও একটি শক্তিশালী অস্ত্র। এটি শহরের বন্যা সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখে, কারণ গাছপালা ও সবুজ এলাকা বৃষ্টির পানি শোষণ করে এবং জলাবদ্ধতা কমায়। সবুজ জায়গাগুলো প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস এবং বায়ুর গতিবেগ কমাতেও সহায়ক। পাশাপাশি এটি শহরে স্থানীয় পাখি, প্রজাপতি এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করে।
হালিমা আক্তার হানী
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শহর আমাদের আধুনিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে প্রতিদিন গড়ে ওঠা নতুন নতুন স্থাপনা, রাস্তা এবং শিল্প-কারখানা আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করছে ঠিকই, কিন্তু একই সঙ্গে প্রকৃতির ভারসাম্যও নষ্ট করে চলেছে। নগরায়ণের এই ধারাবাহিকতায় গাছপালা, উদ্যান এবং খোলা জায়গাগুলো ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। শহরের মানুষের জীবন থেকে প্রকৃতির সংস্পর্শ হারিয়ে যাওয়ার ফলে মানসিক চাপ, স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং পরিবেশগত সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যেই শহরের সবুজায়নের গুরুত্ব বারবার উঠে আসছে। এটি একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে নাগরিক জীবনকেও করে তোলে আরও মানসম্মত।
শহরের সবুজায়নের পথে প্রধান বাধা হলো অপ্রতুল জমি এবং নগরায়ণের বাড়তি চাপ। শহরে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং জমির চাহিদা সবুজ জায়গাগুলোকে সংকুচিত করছে। অনেক সময় নগর উন্নয়নের নামে উদ্যান ধ্বংস করে বড় বড় স্থাপনা তৈরি করা হয়। এর ফলে গরমের তীব্রতা বাড়ে, বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং বায়ুদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং নাগরিক সচেতনতার ঘাটতি এই সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
তবে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে শহরের অব্যবহৃত জমিগুলোকে সবুজ করার প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে। ছাদ বাগান এবং উল্লম্ব বাগান তৈরির জন্য প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। এগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে একটি টেকসই সবুজায়ন উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, জাপানের টোকিও শহরে ছাদবাগান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
শহরের সবুজায়ন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও একটি শক্তিশালী অস্ত্র। এটি শহরের বন্যা সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখে, কারণ গাছপালা ও সবুজ এলাকা বৃষ্টির পানি শোষণ করে এবং জলাবদ্ধতা কমায়। সবুজ জায়গাগুলো প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস এবং বায়ুর গতিবেগ কমাতেও সহায়ক। পাশাপাশি এটি শহরে স্থানীয় পাখি, প্রজাপতি এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করে।
হালিমা আক্তার হানী
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ।