alt

মতামত » চিঠিপত্র

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বাংলাদেশের কেন্দ্রবিন্দু হলো প্রাণের শহর ঢাকা। কিন্তু সেই প্রাণের শহরই আজ প্রাণ কেড়ে নেয়ার মূল উপজীব্যে পরিনত হয়েছে। কারণ পরিবেশ দূষণে ঢাকা অন্যান্য জেলার তুলনায় সবচেয়ে এগিয়ে। প্রতিনিয়ত ব্যাপক হারে দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। যেখানে বায়ুু দূষণ হলো অন্যতম। বিশ্বে বায়ু দূষণে শীর্ষক শহর হিসেবে পরিচিত পেয়েছে ঢাকা। গতকাল অর্থাৎ শনিবার ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় সকাল ৯.০৯ মিনিটে, ঢাকার এআইকিউ স্কোর ছিল ১৭৭, যা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শনিবার এআইকিউ সূচক অনুসারে, ঢাকার বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, ফুসফুস, ক্যান্সার, স্ট্রোক ও এলার্জিজনিত রোগ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া মানসিক রোগ বায়ুদূষণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বায়ু দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগও দেখা দেয়। তার মধ্যে রয়েছে ডিমেনশিয়া, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন/বিষণœতা ইত্যাদি। একইসঙ্গে বাতাসে বেনজিন ও কার্বণ মনো অক্সাইডের উপস্থিতি সিজোফ্রেনিয়া রোগের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এছাড়াও পানি দূষণের ফলে দূষিত নদীগুলো জলজ প্রাণী বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা, বাড়ছে যানবাহন আর শিল্প কারখানা। যান্ত্রিকতা নির্ভর আধুনিক সমাজে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ফুয়েল বা জ্বালানির ভূমিকা অপরিহার্য। বলতে গেলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমরা নির্ভরশীল। জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরশীলতা বর্তমানে আমাদের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পরিবেশ দূষণ ও অন্যতম কারণ হলো জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন ও ব্যবহার। জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাৎ, গ্যাস কয়লা, তেল ব্যবহারের ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয় ফলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

জীবাশ্ম জ্বালানিবিহীন ও দূষণমুক্ত পৃথিবীর কথা চিন্তা করতে গেলে প্রথমেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যুৎ তৈরিতে বায়ু, পানি, সূর্যের আলো, শহরে আবর্জনা ইত্যাদি নবায়ুনযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি প্রয়োজন। তাছাড়া বায়ু দূষণের প্রধান উৎস ক্ষতিকারক ফুয়েল গ্যাসের পরিবর্তে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ জরুরি। শুধু জল আর তাপকে উপজাত হিসেবে ব্যবহার করে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এটি কাজ করে। ফলে জ্বালানি দহন কমবে এবং পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাবে। এছাড়াও মানুষ ও পশুপাখির বিষ্ঠা ও আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করা যায় যা রান্নায় বা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য। দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিবেশ দূষণের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি সুতার ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। যা সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। যদিও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গতবছর ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন শপিং ব্যাগ ও পলিপ্রপিলিনের ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

সর্বোপরি, পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হলে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা। দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি নাগরিককে পরিবেশ দূষণ ও তার ফলাফল সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া প্রয়োজন। সেইসঙ্গে প্রয়োজন দূষন হ্রাসের করণীয় সম্পর্কে অবগত রাখা। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বিভিন্ন নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। পরিবেশের স্বার্থে আইন প্রণয়নে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যেতে পারে।

সবশেষ, পরিবেশ রক্ষার্থে সবকে এগিয়ে আসতে হবে। পৃথিবীকে প্রতিটি প্রাণীর বসবাসযোগ্য করে তুলতে হবে।

রিতিকা

শিক্ষার্থী, আধুনিক ভাষা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

নীরবতা নয়, বলতে শেখ

সুন্দরবনে টেকসই পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও করণীয়

প্রথার নামে প্রথাগত শোষণ: উচ্চ কাবিনের ফাঁদ

শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা

মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক জায়ান্টদের মাস্টার প্ল্যান

গার্মেন্টস শ্রমিকের মৃত্যু কেন কেবলই সংখ্যা?

বাল্যবিয়ে: সমাজের এক নীরব অভিশাপ

মনোস্বাস্থ্যের সংকটে তরুণরা: নীরবতার আড়ালে এক ভয়াবহ বাস্তবতা

ধূমপানের প্রভাব

ইসলামী ব্যাংকগুলোতে সার্ভিস রুল অনুযায়ী নিয়োগ

শিশুর হাতে মোবাইল নয়, চাই জীবনের মাঠে ফেরার ডাক

মতিঝিল-গুলিস্তান রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস : শৃঙ্খল ও স্বস্তির সম্ভাবনা

ভাঙ্গা-খুলনা সড়ক দ্রুত চার লেনে উন্নীত করুন

ডিজিটাল উপনিবেশ : অদৃশ্য শৃঙ্খলের শাসন

বাউফল থেকে লোহালিয়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা

পরিবেশ বিপর্যয়ের অজানা মুখ

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

tab

মতামত » চিঠিপত্র

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের কেন্দ্রবিন্দু হলো প্রাণের শহর ঢাকা। কিন্তু সেই প্রাণের শহরই আজ প্রাণ কেড়ে নেয়ার মূল উপজীব্যে পরিনত হয়েছে। কারণ পরিবেশ দূষণে ঢাকা অন্যান্য জেলার তুলনায় সবচেয়ে এগিয়ে। প্রতিনিয়ত ব্যাপক হারে দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। যেখানে বায়ুু দূষণ হলো অন্যতম। বিশ্বে বায়ু দূষণে শীর্ষক শহর হিসেবে পরিচিত পেয়েছে ঢাকা। গতকাল অর্থাৎ শনিবার ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় সকাল ৯.০৯ মিনিটে, ঢাকার এআইকিউ স্কোর ছিল ১৭৭, যা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শনিবার এআইকিউ সূচক অনুসারে, ঢাকার বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, ফুসফুস, ক্যান্সার, স্ট্রোক ও এলার্জিজনিত রোগ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া মানসিক রোগ বায়ুদূষণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বায়ু দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগও দেখা দেয়। তার মধ্যে রয়েছে ডিমেনশিয়া, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন/বিষণœতা ইত্যাদি। একইসঙ্গে বাতাসে বেনজিন ও কার্বণ মনো অক্সাইডের উপস্থিতি সিজোফ্রেনিয়া রোগের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এছাড়াও পানি দূষণের ফলে দূষিত নদীগুলো জলজ প্রাণী বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা, বাড়ছে যানবাহন আর শিল্প কারখানা। যান্ত্রিকতা নির্ভর আধুনিক সমাজে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ফুয়েল বা জ্বালানির ভূমিকা অপরিহার্য। বলতে গেলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমরা নির্ভরশীল। জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরশীলতা বর্তমানে আমাদের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পরিবেশ দূষণ ও অন্যতম কারণ হলো জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন ও ব্যবহার। জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাৎ, গ্যাস কয়লা, তেল ব্যবহারের ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয় ফলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

জীবাশ্ম জ্বালানিবিহীন ও দূষণমুক্ত পৃথিবীর কথা চিন্তা করতে গেলে প্রথমেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যুৎ তৈরিতে বায়ু, পানি, সূর্যের আলো, শহরে আবর্জনা ইত্যাদি নবায়ুনযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি প্রয়োজন। তাছাড়া বায়ু দূষণের প্রধান উৎস ক্ষতিকারক ফুয়েল গ্যাসের পরিবর্তে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ জরুরি। শুধু জল আর তাপকে উপজাত হিসেবে ব্যবহার করে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এটি কাজ করে। ফলে জ্বালানি দহন কমবে এবং পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাবে। এছাড়াও মানুষ ও পশুপাখির বিষ্ঠা ও আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করা যায় যা রান্নায় বা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য। দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিবেশ দূষণের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি সুতার ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। যা সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। যদিও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গতবছর ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন শপিং ব্যাগ ও পলিপ্রপিলিনের ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

সর্বোপরি, পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হলে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা। দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি নাগরিককে পরিবেশ দূষণ ও তার ফলাফল সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া প্রয়োজন। সেইসঙ্গে প্রয়োজন দূষন হ্রাসের করণীয় সম্পর্কে অবগত রাখা। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বিভিন্ন নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। পরিবেশের স্বার্থে আইন প্রণয়নে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যেতে পারে।

সবশেষ, পরিবেশ রক্ষার্থে সবকে এগিয়ে আসতে হবে। পৃথিবীকে প্রতিটি প্রাণীর বসবাসযোগ্য করে তুলতে হবে।

রিতিকা

শিক্ষার্থী, আধুনিক ভাষা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

back to top