মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
ক্লাসে প্রথম হলেই মেধাবী হওয়া যায় না। অনেকে ভেবে থাকেন দেশে যত পাশের হার বাড়ছে, ততই শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে। পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয়, এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুন্ঠিত হই। প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বহু আগেই এ কথা বলে গিয়েছিলেন। আমরা মেধা ও পরীক্ষার ফলাফল এক সূত্রে গেঁথে ফেলেছি। প্রকৃতপক্ষে দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি নয়। পরীক্ষায় ভালো ফল করা একটি মেধা, কিন্তু এর বাইরেও মেধা ও মেধাবীর রকমফের রয়েছে।
আমরা যখন কোনো শিক্ষার্থীকে মেধাবী বলে পরিচয় করিয়ে দেই, তখন তার মানদন্ড কী তা নিয়ে ভাবতে হবে। ব্যক্তির মেধা ও মেধার স্বরূপ যদি যাচাই করা না যায় বা এর যাচাই প্রক্রিয়ায় যদি ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে কোনওদিনই সেই ব্যক্তির মেধা প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।
মেধা বিকশিত হওয়ার জন্য কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হল, যেমন- এক. ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক অবস্থা; দুই. মেধা যাচাইয়ের পদ্ধতি। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বও এক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে। কারণ, ব্যক্তি যদি লাজুক স্বভাবের হয় এবং মিশতে লজ্জাবোধ করে, তাহলে তার মেধার দিকটি একরকম অন্ধকারেই থেকে
যায়।
মেধা বিকাশের একটি ক্রম প্রয়োজন হয় এবং ধীরে ধীরে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ লাভ করে। বলা হয়ে থাকে, একজন শিক্ষকের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীর সুপ্ত মেধা বিকাশে সহায়তা করা। কিন্তু আজকাল কি সেই দায়িত্ব পালিত হচ্ছে?
তার প্রধান দায়িত্ব থাকে পরীক্ষায় সন্তান যেন ভালো ফলাফল করতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখা। মেধা নিরূপণ করার সহজ একটি পদ্ধতি হল শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থীর মূল্যায়নে নেয়া পরীক্ষা। এ পরীক্ষা পদ্ধতি একজনের সত্যিকারের মেধা বের করতে পারছে কি না বা যাচাই করার সর্বোত্তম পন্থা কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা পদ্ধতি মেধা যাচাই করার একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে, তবে তা মেধার বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য নয়। কারণ সেক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, সব মানুষই প্রতিভাবান, কিন্তু আপনি যদি একটা মাছকে তার গাছে ওঠার ক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন, তাহলে সে নিজেকে সারাজীবন মুর্খই ভেবে যাবে। এজন্য কোন মানদন্ডে মেধার মূল্যায়ন করা হয় বা আমরা যে পদ্ধতিতে মেধাবীদের চিহ্নিত করছি তা কতটুকু বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যুক্তসঙ্গত, তা আলোচনার দাবি রাখে।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যত ভালো ফলাফল করছে, তাকে তত মেধাবী বলে গণ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রকৃত মেধার স্ফূরণ ঘটবে তখনই, যখন তারা নিজ নিজ কার্যক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে মেধার প্রয়োগ করতে পারবে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
ক্লাসে প্রথম হলেই মেধাবী হওয়া যায় না। অনেকে ভেবে থাকেন দেশে যত পাশের হার বাড়ছে, ততই শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে। পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয়, এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুন্ঠিত হই। প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বহু আগেই এ কথা বলে গিয়েছিলেন। আমরা মেধা ও পরীক্ষার ফলাফল এক সূত্রে গেঁথে ফেলেছি। প্রকৃতপক্ষে দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি নয়। পরীক্ষায় ভালো ফল করা একটি মেধা, কিন্তু এর বাইরেও মেধা ও মেধাবীর রকমফের রয়েছে।
আমরা যখন কোনো শিক্ষার্থীকে মেধাবী বলে পরিচয় করিয়ে দেই, তখন তার মানদন্ড কী তা নিয়ে ভাবতে হবে। ব্যক্তির মেধা ও মেধার স্বরূপ যদি যাচাই করা না যায় বা এর যাচাই প্রক্রিয়ায় যদি ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে কোনওদিনই সেই ব্যক্তির মেধা প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।
মেধা বিকশিত হওয়ার জন্য কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হল, যেমন- এক. ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক অবস্থা; দুই. মেধা যাচাইয়ের পদ্ধতি। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বও এক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে। কারণ, ব্যক্তি যদি লাজুক স্বভাবের হয় এবং মিশতে লজ্জাবোধ করে, তাহলে তার মেধার দিকটি একরকম অন্ধকারেই থেকে
যায়।
মেধা বিকাশের একটি ক্রম প্রয়োজন হয় এবং ধীরে ধীরে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ লাভ করে। বলা হয়ে থাকে, একজন শিক্ষকের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীর সুপ্ত মেধা বিকাশে সহায়তা করা। কিন্তু আজকাল কি সেই দায়িত্ব পালিত হচ্ছে?
তার প্রধান দায়িত্ব থাকে পরীক্ষায় সন্তান যেন ভালো ফলাফল করতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখা। মেধা নিরূপণ করার সহজ একটি পদ্ধতি হল শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থীর মূল্যায়নে নেয়া পরীক্ষা। এ পরীক্ষা পদ্ধতি একজনের সত্যিকারের মেধা বের করতে পারছে কি না বা যাচাই করার সর্বোত্তম পন্থা কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা পদ্ধতি মেধা যাচাই করার একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে, তবে তা মেধার বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য নয়। কারণ সেক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, সব মানুষই প্রতিভাবান, কিন্তু আপনি যদি একটা মাছকে তার গাছে ওঠার ক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন, তাহলে সে নিজেকে সারাজীবন মুর্খই ভেবে যাবে। এজন্য কোন মানদন্ডে মেধার মূল্যায়ন করা হয় বা আমরা যে পদ্ধতিতে মেধাবীদের চিহ্নিত করছি তা কতটুকু বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যুক্তসঙ্গত, তা আলোচনার দাবি রাখে।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যত ভালো ফলাফল করছে, তাকে তত মেধাবী বলে গণ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রকৃত মেধার স্ফূরণ ঘটবে তখনই, যখন তারা নিজ নিজ কার্যক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে মেধার প্রয়োগ করতে পারবে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।