alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : মরণোত্তর চক্ষুদান

: বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানে জাগরণ তৈরি হয়েছে। তবে মরণোত্তর চক্ষুদান সেভাবে এখনো সাড়া পায়নি। দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ‘সন্ধানী’। প্রতিষ্ঠানটি একই সঙ্গে রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি চক্ষু ব্যাংক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

মরণোত্তর স্বেচ্ছায় প্রণোদিত চক্ষু অন্যে ব্যবহার করে ভুবন উপভোগ করতে পারে। এজন্য সন্ধানী কার্যকারী উৎসাহদাতা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ‘সন্ধানী’র দুটি শাখা রয়েছে। একটি সন্ধানী ডোনার ক্লাব; যা ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরটি ‘সন্ধানী চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষু ব্যাংক’। যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে।

রক্ত বা চক্ষুর মতো অপরিহার্য উপাদানগুলো কল-কারখানায় তৈরি হয় না। তৈরি হয় না বড় বড় ল্যাব ও গবেষণাগারেও। বিজ্ঞানীদের নিরসল চেষ্টা সত্ত্বেও এখনো রক্তের বিকল্প দ্বিতীয় কোনো উপাদান তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তি রক্ত দিতে পারেন। ওজন ৫০ কেজি বা তার বেশি (কখনো সর্বনিম্ন ওজন ৪৫ কেজিও ধরা হয়) তারা রক্ত দিতে পারবেন। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে রক্ত দেয়া যাবে না। (পুরুষদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ডেসিলিটার ও নারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১১ গ্রাম/ডেসিলিটার থাকতে হবে)। রক্তবাহিত রোগ থাকলে রক্ত দেয়া যাবে না। যেমন- হেপাটাইটিস বি বা সি, জন্ডিস, সিফিলিস, গনোরিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি। নারী ডোনারদের ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ও সন্তান জন্মের এক বছরের মধ্যে রক্ত দান করা ঝুঁকিপূর্ণ।

রক্তদানে রক্তদাতার কোন সমস্যা হয় না। সুস্থ মানুষের শরীরে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রক্ত থাকে। যার দশ ভাগের এক ভাগ ২৫০ থেকে ৪০০ মিলি লিটার দান করা হয়। রক্তের মূল উপাদান পানি, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ হয় পর্যাপ্ত পানি পানে। নিয়মিত রক্তদানকারীর হার্ট ও লিভার ভালো থাকে। স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায়। বছরে তিনবার রক্তদানে শরীরে লোহিত রক্তকণিকাগুলোর প্রাণ-প্রবণতা বাডিয়ে তুলে ও নতুন রক্ত কণিকা তৈরির হার বাড়ায়।

দেশে প্রায় নয় লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। যার ৯০% পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের মাধ্যমে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্লাড ব্যাংকের মাধ্যমে রক্ত বিক্রি করা হয় অধিক মূল্যে। রক্তদাতা সংগঠনগুলো রক্ত সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে বলেও শোনা যায়। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদানের সময় সরাসরি রোগীকে রক্ত দান করাই উত্তম।

জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকারের মাধ্যমে রক্তদানের মতোই আরেকটি মানবতার দান হচ্ছে মরণোত্তর চক্ষুদান। মরণোত্তর চক্ষুদান হচ্ছে মৃত্যুর পর কর্নিয়া দান করার জন্য জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকার করে যাওয়া। মৃতের চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করে অন্যের চোখে ব্যবহারের সম্মতি মূলত ‘মরণোত্তর চক্ষুদান’।

রক্তদানের মতো এখনো মরণোত্তর চক্ষুদান বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গদান করার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়। এতে উৎসাহ ও সচেতনতা প্রয়োজন। কিডনি, হৃৎপিন্ড, ফুসফুস দানে একটি জীবন্ত মানুষ পেতে পারে সুস্থ জীবন।

রক্তদানের মতো মরণোত্তর চক্ষু এবং অঙ্গদানে সবাইকে সচেতন ও উৎসাহ প্রদান করতে হবে। আর এ বিষয়ে ব্যক্তি, সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবক, গণমাধ্যমকে উদ্যোগ নিতে হবে।

আফিয়া সুলতানা একা

গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষির অবদান

শহরের পাখিরা যখন মরার প্রহর গুনে

ধর্মের নামে বর্বরতা

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : মরণোত্তর চক্ষুদান

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানে জাগরণ তৈরি হয়েছে। তবে মরণোত্তর চক্ষুদান সেভাবে এখনো সাড়া পায়নি। দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ‘সন্ধানী’। প্রতিষ্ঠানটি একই সঙ্গে রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি চক্ষু ব্যাংক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

মরণোত্তর স্বেচ্ছায় প্রণোদিত চক্ষু অন্যে ব্যবহার করে ভুবন উপভোগ করতে পারে। এজন্য সন্ধানী কার্যকারী উৎসাহদাতা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ‘সন্ধানী’র দুটি শাখা রয়েছে। একটি সন্ধানী ডোনার ক্লাব; যা ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরটি ‘সন্ধানী চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষু ব্যাংক’। যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে।

রক্ত বা চক্ষুর মতো অপরিহার্য উপাদানগুলো কল-কারখানায় তৈরি হয় না। তৈরি হয় না বড় বড় ল্যাব ও গবেষণাগারেও। বিজ্ঞানীদের নিরসল চেষ্টা সত্ত্বেও এখনো রক্তের বিকল্প দ্বিতীয় কোনো উপাদান তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তি রক্ত দিতে পারেন। ওজন ৫০ কেজি বা তার বেশি (কখনো সর্বনিম্ন ওজন ৪৫ কেজিও ধরা হয়) তারা রক্ত দিতে পারবেন। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে রক্ত দেয়া যাবে না। (পুরুষদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ডেসিলিটার ও নারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১১ গ্রাম/ডেসিলিটার থাকতে হবে)। রক্তবাহিত রোগ থাকলে রক্ত দেয়া যাবে না। যেমন- হেপাটাইটিস বি বা সি, জন্ডিস, সিফিলিস, গনোরিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি। নারী ডোনারদের ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ও সন্তান জন্মের এক বছরের মধ্যে রক্ত দান করা ঝুঁকিপূর্ণ।

রক্তদানে রক্তদাতার কোন সমস্যা হয় না। সুস্থ মানুষের শরীরে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রক্ত থাকে। যার দশ ভাগের এক ভাগ ২৫০ থেকে ৪০০ মিলি লিটার দান করা হয়। রক্তের মূল উপাদান পানি, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ হয় পর্যাপ্ত পানি পানে। নিয়মিত রক্তদানকারীর হার্ট ও লিভার ভালো থাকে। স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায়। বছরে তিনবার রক্তদানে শরীরে লোহিত রক্তকণিকাগুলোর প্রাণ-প্রবণতা বাডিয়ে তুলে ও নতুন রক্ত কণিকা তৈরির হার বাড়ায়।

দেশে প্রায় নয় লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। যার ৯০% পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের মাধ্যমে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্লাড ব্যাংকের মাধ্যমে রক্ত বিক্রি করা হয় অধিক মূল্যে। রক্তদাতা সংগঠনগুলো রক্ত সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে বলেও শোনা যায়। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদানের সময় সরাসরি রোগীকে রক্ত দান করাই উত্তম।

জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকারের মাধ্যমে রক্তদানের মতোই আরেকটি মানবতার দান হচ্ছে মরণোত্তর চক্ষুদান। মরণোত্তর চক্ষুদান হচ্ছে মৃত্যুর পর কর্নিয়া দান করার জন্য জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকার করে যাওয়া। মৃতের চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করে অন্যের চোখে ব্যবহারের সম্মতি মূলত ‘মরণোত্তর চক্ষুদান’।

রক্তদানের মতো এখনো মরণোত্তর চক্ষুদান বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গদান করার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়। এতে উৎসাহ ও সচেতনতা প্রয়োজন। কিডনি, হৃৎপিন্ড, ফুসফুস দানে একটি জীবন্ত মানুষ পেতে পারে সুস্থ জীবন।

রক্তদানের মতো মরণোত্তর চক্ষু এবং অঙ্গদানে সবাইকে সচেতন ও উৎসাহ প্রদান করতে হবে। আর এ বিষয়ে ব্যক্তি, সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবক, গণমাধ্যমকে উদ্যোগ নিতে হবে।

আফিয়া সুলতানা একা

back to top