alt

উপ-সম্পাদকীয়

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার বাড়াতে

ইসতিয়াক আহমেদ হিমেল

: বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪

বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকৃত। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলিতে নারীসমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে সক্রিয় ও কার্যকরী অবদান রেখে চলেছে। নারী ও পুরুষের সহাবস্থানের মাধ্যমেই উন্নয়নের চরম শিখরে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছে উন্নত বিশ্ব।

নারী শুধু তৈরি পোশাক শিল্প, প্রবাসী আয়, কৃষিকাজ, উদ্যোক্তা ও কুটির শিল্পেই নয়, তারা দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন জায়গায় সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে৷ কর্পোরেট সেক্টরেও এখন নারীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য৷ দেশের ওষুধ শিল্পে পুরুষের পাশাপাশি নারীও দুর্বারগতিতে এগিয়ে চলছে। ১৯৯২-৯৩ সালে প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ৫১টি দৈনিকে পুরুষের বিপরীতে ১.৪ শতাংশ নারী সাংবাদিক রয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে সাংবাদিকতা পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ বহুগুণে বেড়েছে। এখন প্রায় সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ সাংবাদিকতা পেশায় আসছেন। তাছাড়া নারী শিক্ষাক্ষেত্র, ওষুধ শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, চা শিল্প, প্রশাসন খাত, সামরিক ও বেসামরিক খাত, স্বাস্থ্য খাত, প্রযুক্তিগত খাত, ব্যাংক ও এনজিওতে তাদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ও অবদানের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখছে। দেশের অর্থনীতিতে নারীসমাজের সর্বব্যাপী অবদানের পরেও প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে নারী শ্রমিক সংখ্যা কমছে। যা আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য এক গভীর সংকেত৷ ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর ২য় কোয়ার্টার (এপ্রিল-জুন) অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীতে নারীর সংখ্যা ক্রমহ্রাসমান। শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ (বার্ষিক) অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত মোট ৭০ দশমিক ৪৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নারী মাত্র ২৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ৷ দুঃখের ব্যাপার হলো, শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ ২য় কোয়ার্টারে পুরুষের কর্মে নিয়োজিত থাকার হার বাড়লেও নারীর হার নেমেছে ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশে। তাছাড়া নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ও উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ ২য় কোয়ার্টারে নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৩৯ দশমিক ২০ শতাংশ, যা ২০২২ সালের বার্ষিক জরিপ অনুযায়ী ছিল ৪২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

নারীর কর্মে নিয়োজিত থাকার হার ও শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার কমার কারণগুলো কি? কথায় আছে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। নারী ঘরের সাথে ঘরের বাইরেও সমানতালে কাজ করেন। কিন্তু আজও বাইরে কাজ করার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়নি নারীর। মজুরি বৈষম্য, অধিক কর্মঘণ্টা, কর্মক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার, পর্যাপ্ত ছুটির অভাব, নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদিসহ আরও বিভিন্ন কারণে নারী আজ শ্রমবিমুখ। কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন তারা৷ নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি। নারী বাচ্চা জন্ম দেয়ার মেশিন, নারী শুধু ঘরের কাজ করবে, নারী বেশি বোঝে, নারীর বুদ্ধিতে কিছু করা যাবে না, নীতিনির্ধারণী আলোচনায় নারীর কোন ঠাঁই নেই, নারী থেকে সাবধান, নারী এটা করতে পারে না, নারী ওটা করতে পারে না ইত্যাদিসহ বিভিন্ন বুলি আওড়ায় আমাদের সমাজ৷ নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেয় আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তথাকথিত নিয়মাবলী।

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার বাড়াতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত৷ নারী-পুরুষের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম যদি সমান হয় সেখানে তাহলে মজুরি বৈষম্য থাকতে পারে না। মজুরি বৈষম্য দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ও সেটার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারী কোনরূপ হেনস্তার শিকার হলে হেনস্তাকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দীর্ঘ কর্মঘণ্টার সংস্কার প্রয়োজন। নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার বাইরে কাজ করালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করা। কর্মস্থলের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো জরুরি। নারীর অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে সচেতনতা তৈরি। মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ পর্যাপ্ত ছুটির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কাজের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করা। শিল্পবিপ্লবের যুগে নারী যদি প্রযুক্তিগত জ্ঞানে পিছিয়ে থাকে তাহলে কোন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অসম্ভব প্রায়। তাই প্রযুক্তিগত জ্ঞানে নারীকে এগিয়ে নিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এজন্য সামগ্রিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি হলো, আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তন। কিন্তু এক্ষেত্রে নারীদের শিক্ষাগ্রহণ বা সচেতনতা জরুরি মনে করছি না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ি পেরোনো পুরুষদের বেকারত্বের হার ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যেখানে নারীদের হার ১৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। নারীশিক্ষা অবশ্যই অত্যন্ত জরুরি। সঙ্গত কারণেই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি দিব। সেজন্যই নারীদের শিক্ষিত হওয়ার চেয়ে আমাদের সমাজের শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন বেশি, আমাদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তনের প্রয়োজন বেশি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ]

গার্মেন্টস খাতে সংকট

সরকারি হাসপাতালের টয়লেট ব্যবস্থাপনায় করুণ দশা

ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় কী

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির দুর্বলতা

ইরানের কেন কৌশলগত পরিবর্তন

শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন একে অন্যের পরিপূরক

রামু ট্র্যাজেডির এক যুগ

প্রত্যাশিত শিক্ষা কমিশনের প্রস্তাবিত রূপরেখা

ব্যাংক খাতের সংস্কার

শিক্ষার একটি স্থায়ী কমিশন সময়ের দাবি

ছবি

ক্ষমতা এখন ‘মব’-এর হাতে

উচ্চ ফলনশীল বারি মসুর-৮

শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে বামপন্থির উত্থান

আমন ধানে আগাম ফুল আসার কারণ

উচ্চ ফলনশীল বারি মসুর-৮

কী হবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনীতি

রম্যগদ্য : ‘বল করে দুর্বল...’

মধ্যপ্রাচ্যে প্রযুক্তিগত যুদ্ধ

বন্যাপরবর্তী কৃষি উৎপাদনে সময়োপযোগী সহায়তা প্রদান

গুণগত উন্নয়নই সমাজের প্রকৃত উন্নতির চাবিকাঠি

বিশেষ শিশু ও বিশেষ শিক্ষালয়

বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার অধিকার

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি

প্রসঙ্গ : আনসার বাহিনী

শান্তির সংস্কৃতি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

মব লিঞ্চিং আইনের শাসনের পরিপন্থি

মব জাস্টিসের মতো বর্বরতা বন্ধ হোক

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে রাজনীতি

জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক

জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক

ভূমি অধিগ্রহণে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কী করবেন?

ছবি

নিবেদিত প্রাণ এক কৃষিবিজ্ঞানী

জনমনে স্বস্তি ফিরুক

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার সুযোগ

মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে হবে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার বাড়াতে

ইসতিয়াক আহমেদ হিমেল

বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪

বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকৃত। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলিতে নারীসমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে সক্রিয় ও কার্যকরী অবদান রেখে চলেছে। নারী ও পুরুষের সহাবস্থানের মাধ্যমেই উন্নয়নের চরম শিখরে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছে উন্নত বিশ্ব।

নারী শুধু তৈরি পোশাক শিল্প, প্রবাসী আয়, কৃষিকাজ, উদ্যোক্তা ও কুটির শিল্পেই নয়, তারা দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন জায়গায় সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে৷ কর্পোরেট সেক্টরেও এখন নারীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য৷ দেশের ওষুধ শিল্পে পুরুষের পাশাপাশি নারীও দুর্বারগতিতে এগিয়ে চলছে। ১৯৯২-৯৩ সালে প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ৫১টি দৈনিকে পুরুষের বিপরীতে ১.৪ শতাংশ নারী সাংবাদিক রয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে সাংবাদিকতা পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ বহুগুণে বেড়েছে। এখন প্রায় সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ সাংবাদিকতা পেশায় আসছেন। তাছাড়া নারী শিক্ষাক্ষেত্র, ওষুধ শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, চা শিল্প, প্রশাসন খাত, সামরিক ও বেসামরিক খাত, স্বাস্থ্য খাত, প্রযুক্তিগত খাত, ব্যাংক ও এনজিওতে তাদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ও অবদানের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখছে। দেশের অর্থনীতিতে নারীসমাজের সর্বব্যাপী অবদানের পরেও প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে নারী শ্রমিক সংখ্যা কমছে। যা আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য এক গভীর সংকেত৷ ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর ২য় কোয়ার্টার (এপ্রিল-জুন) অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীতে নারীর সংখ্যা ক্রমহ্রাসমান। শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ (বার্ষিক) অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত মোট ৭০ দশমিক ৪৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নারী মাত্র ২৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ৷ দুঃখের ব্যাপার হলো, শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ ২য় কোয়ার্টারে পুরুষের কর্মে নিয়োজিত থাকার হার বাড়লেও নারীর হার নেমেছে ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশে। তাছাড়া নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ও উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ ২য় কোয়ার্টারে নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৩৯ দশমিক ২০ শতাংশ, যা ২০২২ সালের বার্ষিক জরিপ অনুযায়ী ছিল ৪২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

নারীর কর্মে নিয়োজিত থাকার হার ও শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার কমার কারণগুলো কি? কথায় আছে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। নারী ঘরের সাথে ঘরের বাইরেও সমানতালে কাজ করেন। কিন্তু আজও বাইরে কাজ করার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়নি নারীর। মজুরি বৈষম্য, অধিক কর্মঘণ্টা, কর্মক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার, পর্যাপ্ত ছুটির অভাব, নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদিসহ আরও বিভিন্ন কারণে নারী আজ শ্রমবিমুখ। কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন তারা৷ নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি। নারী বাচ্চা জন্ম দেয়ার মেশিন, নারী শুধু ঘরের কাজ করবে, নারী বেশি বোঝে, নারীর বুদ্ধিতে কিছু করা যাবে না, নীতিনির্ধারণী আলোচনায় নারীর কোন ঠাঁই নেই, নারী থেকে সাবধান, নারী এটা করতে পারে না, নারী ওটা করতে পারে না ইত্যাদিসহ বিভিন্ন বুলি আওড়ায় আমাদের সমাজ৷ নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেয় আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তথাকথিত নিয়মাবলী।

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার বাড়াতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত৷ নারী-পুরুষের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম যদি সমান হয় সেখানে তাহলে মজুরি বৈষম্য থাকতে পারে না। মজুরি বৈষম্য দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ও সেটার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারী কোনরূপ হেনস্তার শিকার হলে হেনস্তাকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দীর্ঘ কর্মঘণ্টার সংস্কার প্রয়োজন। নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার বাইরে কাজ করালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করা। কর্মস্থলের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো জরুরি। নারীর অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে সচেতনতা তৈরি। মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ পর্যাপ্ত ছুটির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কাজের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করা। শিল্পবিপ্লবের যুগে নারী যদি প্রযুক্তিগত জ্ঞানে পিছিয়ে থাকে তাহলে কোন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অসম্ভব প্রায়। তাই প্রযুক্তিগত জ্ঞানে নারীকে এগিয়ে নিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এজন্য সামগ্রিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি হলো, আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তন। কিন্তু এক্ষেত্রে নারীদের শিক্ষাগ্রহণ বা সচেতনতা জরুরি মনে করছি না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ি পেরোনো পুরুষদের বেকারত্বের হার ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যেখানে নারীদের হার ১৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। নারীশিক্ষা অবশ্যই অত্যন্ত জরুরি। সঙ্গত কারণেই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি দিব। সেজন্যই নারীদের শিক্ষিত হওয়ার চেয়ে আমাদের সমাজের শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন বেশি, আমাদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তনের প্রয়োজন বেশি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ]

back to top