alt

উপ-সম্পাদকীয়

“আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

“হেঃ হেঃ হেঃ সুকুমার রায়ের আইন কানুন সর্বনেশের থ্যেইক্কা মাইরা লিখছেন আইনুন কাইনুন সর্বনেশে... ক্যা সরাসরি আইন কানুন সর্বনেশে লিখলে কি হইতো। যতই চালাকি খাটান সুকুমার রায়ের আবোল তাবোলের কথা সবাই জানে, তাই কই কি, টুকলি মারলে একটু ইংরেজি সাহিত্য থ্যেইক্কা মাইরেন তাহলে অনেকে ধরতে পারবো না।”

“আরে বারো লক্ষ টাকার রাম ছাগল, তুই যদি শ্রদ্ধেয় জনাব আইনুন নিশাতরে জনাব আইন নিশাত বইল্লা ডাকস তাইলে হ্যের পিতা বিখ্যাত আইনজীবী শ্রদ্ধেয় গাজী সামসুর রহমান স্যারে কী কইবো ক? আমার পোলার ২৩ টাকা দামের ছাগলমারা আকিকার কি হইবো??”

“হেঃ হেঃ হেঃ কথাটা ঠিক। আকিকায় রাখা নামটা বদল হইবো। জনাব আইনুন নিশাতরে তো আর জনাব আইন নিশাত কওন যাইবো না। তয় ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল!! কন কী? এখনতো ১২০০ টাকা ছাগলের এক কেজি গোস্তের দাম!! গাঞ্জা না খাইলে কেউ কইবো ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল?”

“না তোর কথা ঠিক, ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল হয় না কথাটা ঠিক। তয় ২৩ রুপিতে আস্ত ছাগল পাওয়া যাইতো। কারণ জনাব আইনুন নিশাত যখন জন্মাইছে, তখন পাকিস্তান আমল। বাজারে বিনিময় মুদ্রার নাম তখন রুপি, টাকা না। তাই তোর কথা ঠিক, ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল হয় না। আস্ত ছাগল হয় মাত্র ২৩ রুপিতে।”

“হেঃ হেঃ তয়লে আমাগো পাকিস্তানই ভালা আছিলো কত সস্তায় জীবনযাপন।”

“তোদের অনেকেরই একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে, পাকিস্তান ভালো ছিলো। একটা কথা তুই ভুলে যাচ্ছিস কেনো যে পাকিস্তান আমলে বাঙালিরাও, তোর ভাষায়তো আবার বাঙালি না, বাংলাদেশিদের ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করতো। তোরা বাঙালিরা ছিলি পরাধীন। কথাশিল্পী শওকত ওসমান তার “ক্রীতদাসের হাসি” উপন্যাসে অনেক সাহস করে তৎকালীন বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছিলেন। তাই এই লেখককে আজও সারা বাংলার বাঙালিরা হৃদয়ের শ্রদ্ধার মণিকোঠায় ধারণ করে। আর পাকিস্তান যদি ভালোই ছিলো তাহলে, পাকিস্তান ভাঙলো ক্যেনো??”

“কিন্তু ভাই যাই বলেন, বর্বর পাকিস্তানি বাঙালিদের সম্মান করতো না! কিন্তু তখন তো সমাজে আইন কানুন ছিলো। ন্যায়বিচার ছিলো। তখন কোনো পুঁপ... পুঁপ... বিচারকদের পয়সা দিয়া কিনতে পারতো না। রুপি দিয়া রায় ঘুরাইতে পারতো না। পাকিস্তানইতো ভালো ছিলো।”

“ভাই তোর মাথায় ক্যেলা ঢুকতাছে না যে, মনে কর তোর পোলা রিশকা চালায়। তখন একদিন এক প্রতিবেশী তোর পোলার জমান টাকা আর তার টাকা মিলায়া তোর পোলারে একটা এক্সিও সিডান কার কিন্না দিলো। আর কইলো অহন থ্যেইক্কা তোমারে আর রিশকা বাওন লাগবো না, তুমি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা শুরু করো বেশি ট্যাকা কামাইবা, আর রোইদে-বৃষ্টিতে অতো কষ্ট করতে হইবো না।”

“কতাটা তো হানড্রেড পার্সেন্ট সত্য। আর রিশকাওয়ালারে গাড়ি কিন্না দিছে, এ তো বিরাট ব্যাপার, হালার রিশকাওয়ালার চৌদ্দগুষ্টির কপাল।”

“হ, গাড়ি পাওয়া রিশকাওয়ালার চৌদ্দগুষ্টির কপাল। এখন মনে কর ওই রিশকাওয়ালা যদি নিজেই ড্রাইভিং করতে যায় তাইলে গাড়ি চলবো??”

“না না, রিশকাওয়ালা ক্যেমনে গাড়ি চালাইবো! হালায় তো ড্রাইভিং জানে না। হালায় চালাইলে অ্যাকসিডেন্টতো হইবোই!!”

“কিন্তু রিশকাওয়ালা যদি গাড়ি চালাতে যেয়ে অ্যাক্সিডেন্ট করে তাহলে যে প্রতিবেশী গাড়িটা কিনে দিলো, তার কি দোষ হবে, না কি গাড়িটার দোষ হবে??”

“না না, দোষ হালা ওই রিশকাওয়ালার, হালা ড্রাইভার না রাইক্কা নিজে চালাইতে গেলো ক্যান! যেই কাজ যে পারে তারে সেই কাজ দেন। যোগ্য লোক আনেন। গাড়ি চালাইতে পারে না, এইডা হালা পুরা রিশকাওয়ালার দুষ।”

“জি, তুমি যদি গাড়ি চালাতে না পারো, তাহলে সেটা গাড়িরও দোষ না, আর যারা তোমাকে গাড়ি কিনতে সাহায্য করেছে, এটা তাদেরও দোষ না। দোষ তোমার। তুমি বুকা...”

“ওরে বাব্বারে এইটা আপনে কি বললেন, তার মানে আমাদের স্বাধীনতা একটা বিরাট ব্যাপার, আমরা দেশ পরিচালনা মানে গাড়ি ঠিকমতো চালাতে না পারলে, স্বাধীনতার কি দোষ!! আরে এই সামান্য জিনিস না বুইজ্যা আমরা রিশকাওয়ালার মতুন কোই, হে হে পাকিস্তানই ভালো আছিলো!! আসলেই ভাই কবি ঠিকই কইছেন, বাঙালি আমরা নহিতো মেষ।”

“তুই মেষ মোষ, যাই হোস না ক্যেনো, এমনি অযোগ্য অভব্য অশিক্ষিত আনপড় পুঁপ...পুঁপ-এর পোলা দিয়া দেশ চালাইলে, দেশ এ্যমনেই চলবো। ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় যারা প্রাণ হারালেন, তাদের হত্যাকরীদের পুলিশ আজও ধরতে পারলো না। মাঝখান থ্যেইক্কা খামাখায় কতগুলা নিরীহ বাঙালি ধইরা জেলে পচায়া মারলো!! প্রথম প্রথম খুব ফুটানী মারছিলা, “আমরা সাগর রুনি, ত্বকী, তনু, শেফালী, কাশফিয়া, বাবলী, ননী, মুনিরা, মোব্বাসেরা সায়রা, আঁখিসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার করমুই করমু।

ও হো রে কি লম্বা আস্ফালন, কি রকম ফালটানা পাড়লো। অহন হালায় ব্যবহার করা পোত্যাইন্না রাবার ক্যাপের মতো, ল্যাত-প্যাতা হয়া ডাস্টবিনে হুয়া আছে। হালায় ইলিয়াডের হেক্টারের মতো লম্বা লম্বা কথা, আর কামের নামে ঢু ঢু। হালায় পুঁপ... পুঁপের পোলা। হালায় জিদ্দে গা জ্বলে।”

“কি করবেন কন, বাস্তব আপনে মাইন্না নিবেন না!! আইজ বাঙালি হয়া বাঙালি মারতাছেন, খালি কিছু ট্যাকার লাইগ্গা, আপনেরা আর মানুষ হোইবেন না। ট্যাকা দিয়া কি করবেন তাও জানেন না, খাটের নিচে বস্তায় ভইরা ট্যাকা রাইখা দিলে তয় ট্যাকা কামায়া লাভ কী??”

“থাক ভাই আর মন খারাপ করিস না, আয় আমরা সবাই মিলে সেই ব্রিটিশ আমলের সুকুমার রায়ের লেখা, আবোল তাবোলের একুশে আইন কবিতার মতো কোরাশে গাই, “শিব ঠাকুরের আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে, যে সব লোকে পদ্য লেখে, তাদের ধরে খাঁচায় রেখে, কানের কাছে নানান সুরে নামতা শোনায় এক’শ উড়ে, সামনে রেখে মুদির খাতা হিসাব কষায় একু’শ পাতা...”।

“ভাই আপনে ঠিকই কোইছেন সুকুমার রায়ের কবিতার মতো, বর্তমানে আমাদের দেশের আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

জীবন ফিরে আসুক বাংলার নদীগুলোতে

কান্দন সরেন হত্যা ও ভূমি বিরোধ কি এড়ানো যেত না

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র: রাষ্ট্র বিনির্মাণে সমস্যা কোথায়?

মানবাধিকার দিবস : মানুষের অধিকার নিয়ে কেন এত কথা?

আমলাতান্ত্রিক স্বচ্ছতা : সংস্কারের পথে নাকি পুনরাবৃত্তি?

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কিছু কথা

ছবি

বেগম রোকেয়া : নারী জাগরণের অগ্রদূত

দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তার বন্ধ করতে হবে

মা তোর বদনখানি মলিন হলে

ব্যবসায়ী নেতৃত্বশূন্য ই-ক্যাব

মূল্যস্ফীতির হিসাব নির্ণয়ে নতুন পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা

মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা চায়

সবার উপরে মানুষ সত্য

এইচএসসিতে ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় কেন, করণীয় কী

ছবি

নিরাপদ এবং সুষম পরিবেশের পরিকল্পনা

ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার সংস্কার প্রয়োজন

মশার কয়েলের প্রভাব : জনস্বাস্থ্যের অদৃশ্য হুমকি

কুষ্ঠজনিত প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি ও করণীয়

এই সর্বনাশের দায় কার?

জ্ঞানই শক্তি

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস : জোর দিতে হবে প্রতিরোধে

ঋণ ব্যবস্থা : তেলা মাথায় ঢালো তেল, ন্যাড়া মাথায় ভাঙো বেল

বিচারকের ওপর হামলা কেন

বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার কবলে রোহিঙ্গা ইস্যু

আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবস

বৈষম্য ঘোচাতে চাই একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়

রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ

সমস্যার সূতিকাগার

ছবি

বাংলাদেশে আলু চাষে আধুনিক উৎপাদন পদ্ধতি

দলীয় লেজুড়বৃত্তির শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের পথ কী?

ব্যাংক সংস্কার : কাটবে কি অন্ধকার?

ছবি

নিত্যপণ্যের দামে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

রম্যগদ্য: ম্যাড় ম্যাড়ে সোনা-কাহিনী

রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগার

কেন এত ধ্বংস, কেন এত মৃত্যু

জলবায়ু সম্মেলন থেকে আমরা কী পেলাম

tab

উপ-সম্পাদকীয়

“আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

“হেঃ হেঃ হেঃ সুকুমার রায়ের আইন কানুন সর্বনেশের থ্যেইক্কা মাইরা লিখছেন আইনুন কাইনুন সর্বনেশে... ক্যা সরাসরি আইন কানুন সর্বনেশে লিখলে কি হইতো। যতই চালাকি খাটান সুকুমার রায়ের আবোল তাবোলের কথা সবাই জানে, তাই কই কি, টুকলি মারলে একটু ইংরেজি সাহিত্য থ্যেইক্কা মাইরেন তাহলে অনেকে ধরতে পারবো না।”

“আরে বারো লক্ষ টাকার রাম ছাগল, তুই যদি শ্রদ্ধেয় জনাব আইনুন নিশাতরে জনাব আইন নিশাত বইল্লা ডাকস তাইলে হ্যের পিতা বিখ্যাত আইনজীবী শ্রদ্ধেয় গাজী সামসুর রহমান স্যারে কী কইবো ক? আমার পোলার ২৩ টাকা দামের ছাগলমারা আকিকার কি হইবো??”

“হেঃ হেঃ হেঃ কথাটা ঠিক। আকিকায় রাখা নামটা বদল হইবো। জনাব আইনুন নিশাতরে তো আর জনাব আইন নিশাত কওন যাইবো না। তয় ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল!! কন কী? এখনতো ১২০০ টাকা ছাগলের এক কেজি গোস্তের দাম!! গাঞ্জা না খাইলে কেউ কইবো ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল?”

“না তোর কথা ঠিক, ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল হয় না কথাটা ঠিক। তয় ২৩ রুপিতে আস্ত ছাগল পাওয়া যাইতো। কারণ জনাব আইনুন নিশাত যখন জন্মাইছে, তখন পাকিস্তান আমল। বাজারে বিনিময় মুদ্রার নাম তখন রুপি, টাকা না। তাই তোর কথা ঠিক, ২৩ টাকায় আস্ত ছাগল হয় না। আস্ত ছাগল হয় মাত্র ২৩ রুপিতে।”

“হেঃ হেঃ তয়লে আমাগো পাকিস্তানই ভালা আছিলো কত সস্তায় জীবনযাপন।”

“তোদের অনেকেরই একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে, পাকিস্তান ভালো ছিলো। একটা কথা তুই ভুলে যাচ্ছিস কেনো যে পাকিস্তান আমলে বাঙালিরাও, তোর ভাষায়তো আবার বাঙালি না, বাংলাদেশিদের ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করতো। তোরা বাঙালিরা ছিলি পরাধীন। কথাশিল্পী শওকত ওসমান তার “ক্রীতদাসের হাসি” উপন্যাসে অনেক সাহস করে তৎকালীন বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছিলেন। তাই এই লেখককে আজও সারা বাংলার বাঙালিরা হৃদয়ের শ্রদ্ধার মণিকোঠায় ধারণ করে। আর পাকিস্তান যদি ভালোই ছিলো তাহলে, পাকিস্তান ভাঙলো ক্যেনো??”

“কিন্তু ভাই যাই বলেন, বর্বর পাকিস্তানি বাঙালিদের সম্মান করতো না! কিন্তু তখন তো সমাজে আইন কানুন ছিলো। ন্যায়বিচার ছিলো। তখন কোনো পুঁপ... পুঁপ... বিচারকদের পয়সা দিয়া কিনতে পারতো না। রুপি দিয়া রায় ঘুরাইতে পারতো না। পাকিস্তানইতো ভালো ছিলো।”

“ভাই তোর মাথায় ক্যেলা ঢুকতাছে না যে, মনে কর তোর পোলা রিশকা চালায়। তখন একদিন এক প্রতিবেশী তোর পোলার জমান টাকা আর তার টাকা মিলায়া তোর পোলারে একটা এক্সিও সিডান কার কিন্না দিলো। আর কইলো অহন থ্যেইক্কা তোমারে আর রিশকা বাওন লাগবো না, তুমি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা শুরু করো বেশি ট্যাকা কামাইবা, আর রোইদে-বৃষ্টিতে অতো কষ্ট করতে হইবো না।”

“কতাটা তো হানড্রেড পার্সেন্ট সত্য। আর রিশকাওয়ালারে গাড়ি কিন্না দিছে, এ তো বিরাট ব্যাপার, হালার রিশকাওয়ালার চৌদ্দগুষ্টির কপাল।”

“হ, গাড়ি পাওয়া রিশকাওয়ালার চৌদ্দগুষ্টির কপাল। এখন মনে কর ওই রিশকাওয়ালা যদি নিজেই ড্রাইভিং করতে যায় তাইলে গাড়ি চলবো??”

“না না, রিশকাওয়ালা ক্যেমনে গাড়ি চালাইবো! হালায় তো ড্রাইভিং জানে না। হালায় চালাইলে অ্যাকসিডেন্টতো হইবোই!!”

“কিন্তু রিশকাওয়ালা যদি গাড়ি চালাতে যেয়ে অ্যাক্সিডেন্ট করে তাহলে যে প্রতিবেশী গাড়িটা কিনে দিলো, তার কি দোষ হবে, না কি গাড়িটার দোষ হবে??”

“না না, দোষ হালা ওই রিশকাওয়ালার, হালা ড্রাইভার না রাইক্কা নিজে চালাইতে গেলো ক্যান! যেই কাজ যে পারে তারে সেই কাজ দেন। যোগ্য লোক আনেন। গাড়ি চালাইতে পারে না, এইডা হালা পুরা রিশকাওয়ালার দুষ।”

“জি, তুমি যদি গাড়ি চালাতে না পারো, তাহলে সেটা গাড়িরও দোষ না, আর যারা তোমাকে গাড়ি কিনতে সাহায্য করেছে, এটা তাদেরও দোষ না। দোষ তোমার। তুমি বুকা...”

“ওরে বাব্বারে এইটা আপনে কি বললেন, তার মানে আমাদের স্বাধীনতা একটা বিরাট ব্যাপার, আমরা দেশ পরিচালনা মানে গাড়ি ঠিকমতো চালাতে না পারলে, স্বাধীনতার কি দোষ!! আরে এই সামান্য জিনিস না বুইজ্যা আমরা রিশকাওয়ালার মতুন কোই, হে হে পাকিস্তানই ভালো আছিলো!! আসলেই ভাই কবি ঠিকই কইছেন, বাঙালি আমরা নহিতো মেষ।”

“তুই মেষ মোষ, যাই হোস না ক্যেনো, এমনি অযোগ্য অভব্য অশিক্ষিত আনপড় পুঁপ...পুঁপ-এর পোলা দিয়া দেশ চালাইলে, দেশ এ্যমনেই চলবো। ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় যারা প্রাণ হারালেন, তাদের হত্যাকরীদের পুলিশ আজও ধরতে পারলো না। মাঝখান থ্যেইক্কা খামাখায় কতগুলা নিরীহ বাঙালি ধইরা জেলে পচায়া মারলো!! প্রথম প্রথম খুব ফুটানী মারছিলা, “আমরা সাগর রুনি, ত্বকী, তনু, শেফালী, কাশফিয়া, বাবলী, ননী, মুনিরা, মোব্বাসেরা সায়রা, আঁখিসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার করমুই করমু।

ও হো রে কি লম্বা আস্ফালন, কি রকম ফালটানা পাড়লো। অহন হালায় ব্যবহার করা পোত্যাইন্না রাবার ক্যাপের মতো, ল্যাত-প্যাতা হয়া ডাস্টবিনে হুয়া আছে। হালায় ইলিয়াডের হেক্টারের মতো লম্বা লম্বা কথা, আর কামের নামে ঢু ঢু। হালায় পুঁপ... পুঁপের পোলা। হালায় জিদ্দে গা জ্বলে।”

“কি করবেন কন, বাস্তব আপনে মাইন্না নিবেন না!! আইজ বাঙালি হয়া বাঙালি মারতাছেন, খালি কিছু ট্যাকার লাইগ্গা, আপনেরা আর মানুষ হোইবেন না। ট্যাকা দিয়া কি করবেন তাও জানেন না, খাটের নিচে বস্তায় ভইরা ট্যাকা রাইখা দিলে তয় ট্যাকা কামায়া লাভ কী??”

“থাক ভাই আর মন খারাপ করিস না, আয় আমরা সবাই মিলে সেই ব্রিটিশ আমলের সুকুমার রায়ের লেখা, আবোল তাবোলের একুশে আইন কবিতার মতো কোরাশে গাই, “শিব ঠাকুরের আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে, যে সব লোকে পদ্য লেখে, তাদের ধরে খাঁচায় রেখে, কানের কাছে নানান সুরে নামতা শোনায় এক’শ উড়ে, সামনে রেখে মুদির খাতা হিসাব কষায় একু’শ পাতা...”।

“ভাই আপনে ঠিকই কোইছেন সুকুমার রায়ের কবিতার মতো, বর্তমানে আমাদের দেশের আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

back to top