বশীর আহমেদ
১৯৮৬ : ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলকারী সেনাপ্রধান এরশাদ ৩ বছর সামরিক শাসনের অধীনে জাতীয় পার্টি নামের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তারপর সবকিছু গুছিয়ে ’৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উদ্যোগী হলে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল এরশাদের অধীনে যাবতীয় নির্বাচন বর্জনের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এমনকি, এ সিদ্ধান্ত কেউ ভঙ্গ করলে তাকে জাতীয় বেঈমান আখ্যায়িত করা হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনী ক্ষণগননার প্রায় শেষ মুহুর্তে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে জামায়াতও তাতে শরীক হয়ে বেঈমানির ইতিহাস রচনা করে।
যাই হোক, সে নির্বাচনটি ছিল নিয়ন্ত্রিত এবং এরশাদের অনুগ্রহে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করে। আর জামায়াতে ইসলামী মাত্র ১০টি আসনের অধিকারী হয়। বলাবাহুল্য, সেই নির্বাচনী ফলাফল গণসমর্থন নিরূপণের কোন মানদ- তৈরি করতে পারেনি।
১৯৯১ : গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতন হলে বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে তত্তাবধায়ক সরকার সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব গ্রহন করেন। সেই নির্বাচনটতে বিএনপির সাথে জামায়াতের প্রকাশ্য কোন জোটবদ্ধতা ছিল না। অবশ্য বিএনপি কিছু আসনে প্রার্থী না দিলে ছেড়ে দেওয়া সেই আসনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থীরা সহজেই বিজয়ী হয়; যার সংখ্যা ছিল ১৮টি।
১৯৯৬ : চুরানব্বই সালে মাগুরা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে ’৯১ সালে বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে বিজয়ী ১৮ এমপি নিয়ে জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়ে বিএনপি সরকারের বিরূদ্ধে আন্দোলনে শরীক হয়। তারপর ’৯৬-এর পরবর্তী নির্বাচনে জামায়াত একক শক্তি নিয়ে মাঠে নেমে মাত্র ৩ আসনে বিজয় লাভ করে। প্রসংগত, এটাই হলো তাদের একক প্রচেষ্টায় অর্জিত তুমুল রাজনৈতিক শক্তির প্রমাণ।
২০০১ : সাবেক বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন দেশের সর্বশেষ তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজিত নির্বাচনে জামায়াত আবার বিএনপির জোটসঙ্গী হয়। বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে এবার জামায়াতের বিজয়ী এমপির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ জন।
২০০৮ : মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকার আমলে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ট নির্বাচনী জোটসঙ্গী থাকলেও তাদের বিজয়ী এমপি ছিল মাত্র ২ জন। অবশ্য, এ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক সমালেচনা রয়েছে।
গত ২৮ বছরে অনুষ্ঠিত ৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ফলাফলের ধারাবাহিক চিত্র থেকে জামায়াতের প্রকৃত ভোটের শক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। তাতে সমস্ত ফলাফল একত্রিত করলে দেখা যায়, এই জামায়াতের জনসমর্থনের শতকরা হার কমবেশী প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশের কিছু বেশি। এর মধ্যে কেবলমাত্র ’৯৬ সাল ব্যাতীত বাকি ৪টি নির্বাচনী ফলাফল ছিল জামায়াতের ক্ষেত্রে বলতে গেলে অনুদানের। এই হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।
বিগত দিনগুলোতে জামায়াতী রাজনীতির নির্মোহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগ জামায়াতকে ব্যবহার করলেও কখনো ঘাড়ে উঠতে দেয়নি। ’৯৬ সালে জামায়াতকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে বিএনপি সরকারের পতন ঘটালেও নির্বাচনে জামায়াতকে জোটসঙ্গী করেনি। বরং জাতীয় সংসদে তাদেরকে মাত্র ৩ এমপির একটি দল বানিয়ে রেখেছিল। এর বিনিময়ে জামায়াত ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিল। পক্ষান্তরে, বারবার লাইফ দিলেও জামায়াত বিএনপিকে নিয়ন্ত্রণ ও বেপথু করতে মুখিয়ে থেকেছে। আর নানা ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াতের গোপন আঁতাতের আলামত হামেশাই চাউর হয়েছে। জামায়াত সব সময় গাছ লাগানোর কষ্ট করতে নারাজ। তবে গাছের ফল খেতে চায় হাতের দুই কনুই ডুবিয়ে।
গত বছর জুলাই আন্দোলন সমাপ্তির পরক্ষণে জামায়াত রাষ্ট্রের সকল আঙিনায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় উঠেপড়ে লাগে। এতে তারা যারপর নাই সাফল্যও পেয়েছে। এখন একদিকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা তীব্র থেকে তীব্র করছে। অপরদিকে, কৌশলী দাবী দাওয়ার অজুহাতে আন্দোলনের মহড়াও চালাচ্ছে সমানে। দেশে নানা রাজনৈতিক সমীকরণে জামায়াতের ভোট বেড়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। সেটা কিছু সত্যও বটে। এর পেছনে জামায়াতের সঙ্ঘবদ্ধ ও সত্যমিথ্যা প্রচারণা অন্যতম অনুঘটক। এই ক্ষেত্রে সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের অচিন্ত্যনীয় বিজয় অনেকেই সংসদ নির্বাচনের আগাম সংকেত বলেও ভাবছেন।
কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, ওই বিজয়ের পেছনে নানা অনৈতিক কারসাজি অবলম্বন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিজয়ের জজবায় জামায়াত তাদের দলীয় লোগো বদল এবং শারদীয় দুর্গাপূজার মন্ডপে যেই অনাসৃষ্টির অবতারণা করেছে তা এই দেশের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখেননি। অনেকের ধারণা, জামায়াতের এই হঠাৎ জ্বলে ওঠা আবার হঠাৎ করেই দম ফুরিয়ে নিভে যেতে পারে। এখন কেউ কিছু না বললেও সেই ড্যামেজ কনট্রোল যে গুরুতর পর্যায়ে তা দলটির নেতৃস্থানীয়দের এলোমেলো কথাবার্তায় বেশ বোঝা যায়। এর অন্যতম উদাহরণ হলো, লোগো চুড়ান্তভাবে প্রদর্শনের পরেও তীব্র সমালোচনার মুখে তা স্থগিত রাখার ঘটনা।
এবার দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ। অতীত অভিজ্ঞতা মতে ভোট প্রদানের হার সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ধরা হলে ৮ কোটি ৮২ লাখ মানুষ ভোট প্রদান করবেন। জামায়াত নানামুখি ধর্ম-অধর্ম আর ছলচাতুরী করে অতীতের সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে ভোটের হার ১৫ শতাংশে বাড়াতে পারলে তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হবে ১ কোটি ৩২ লাখ। এই সংখ্যা ৩শ আসনে বিভক্ত করলে আসনপ্রতি গড় সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৪৪ হাজার। এই ভোট দিয়ে কিভাবে ৩শ এমপি জেতানো সম্ভব? বিশেষত, যেখানে তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আসনপ্রতি ভোটের সংখ্যা হলো গড়ে প্রায় লাখের উপরে। উপরোন্ত, প্রত্যাসন্ন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক একজন ভোটারও যে ঘরে বসে থাকবেন না, সেটা বলাই বাহুল্য। এছাড়া অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অন্য যে কোন দলের মত বিএনপির ভোট করতে কর্মী লাগে না। তাদের ভোটার সমর্থকরাই কর্মীর দায়িত্ব পালন করে থাকে। কাজেই জামায়াতের সাম্প্রতিক হঠাৎ বিজয়ী জজবা এবার অপ্রত্যাশিত কোন দুঃস্বপ্নের মুখে পড়লে মোটেই অবাক হওয়া যাবে না।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
[লেখক: মুক্তিযোদ্ধা]
বশীর আহমেদ
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
১৯৮৬ : ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলকারী সেনাপ্রধান এরশাদ ৩ বছর সামরিক শাসনের অধীনে জাতীয় পার্টি নামের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তারপর সবকিছু গুছিয়ে ’৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উদ্যোগী হলে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল এরশাদের অধীনে যাবতীয় নির্বাচন বর্জনের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এমনকি, এ সিদ্ধান্ত কেউ ভঙ্গ করলে তাকে জাতীয় বেঈমান আখ্যায়িত করা হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনী ক্ষণগননার প্রায় শেষ মুহুর্তে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে জামায়াতও তাতে শরীক হয়ে বেঈমানির ইতিহাস রচনা করে।
যাই হোক, সে নির্বাচনটি ছিল নিয়ন্ত্রিত এবং এরশাদের অনুগ্রহে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করে। আর জামায়াতে ইসলামী মাত্র ১০টি আসনের অধিকারী হয়। বলাবাহুল্য, সেই নির্বাচনী ফলাফল গণসমর্থন নিরূপণের কোন মানদ- তৈরি করতে পারেনি।
১৯৯১ : গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতন হলে বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে তত্তাবধায়ক সরকার সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব গ্রহন করেন। সেই নির্বাচনটতে বিএনপির সাথে জামায়াতের প্রকাশ্য কোন জোটবদ্ধতা ছিল না। অবশ্য বিএনপি কিছু আসনে প্রার্থী না দিলে ছেড়ে দেওয়া সেই আসনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থীরা সহজেই বিজয়ী হয়; যার সংখ্যা ছিল ১৮টি।
১৯৯৬ : চুরানব্বই সালে মাগুরা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে ’৯১ সালে বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে বিজয়ী ১৮ এমপি নিয়ে জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়ে বিএনপি সরকারের বিরূদ্ধে আন্দোলনে শরীক হয়। তারপর ’৯৬-এর পরবর্তী নির্বাচনে জামায়াত একক শক্তি নিয়ে মাঠে নেমে মাত্র ৩ আসনে বিজয় লাভ করে। প্রসংগত, এটাই হলো তাদের একক প্রচেষ্টায় অর্জিত তুমুল রাজনৈতিক শক্তির প্রমাণ।
২০০১ : সাবেক বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন দেশের সর্বশেষ তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজিত নির্বাচনে জামায়াত আবার বিএনপির জোটসঙ্গী হয়। বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে এবার জামায়াতের বিজয়ী এমপির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ জন।
২০০৮ : মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকার আমলে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ট নির্বাচনী জোটসঙ্গী থাকলেও তাদের বিজয়ী এমপি ছিল মাত্র ২ জন। অবশ্য, এ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক সমালেচনা রয়েছে।
গত ২৮ বছরে অনুষ্ঠিত ৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ফলাফলের ধারাবাহিক চিত্র থেকে জামায়াতের প্রকৃত ভোটের শক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। তাতে সমস্ত ফলাফল একত্রিত করলে দেখা যায়, এই জামায়াতের জনসমর্থনের শতকরা হার কমবেশী প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশের কিছু বেশি। এর মধ্যে কেবলমাত্র ’৯৬ সাল ব্যাতীত বাকি ৪টি নির্বাচনী ফলাফল ছিল জামায়াতের ক্ষেত্রে বলতে গেলে অনুদানের। এই হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।
বিগত দিনগুলোতে জামায়াতী রাজনীতির নির্মোহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগ জামায়াতকে ব্যবহার করলেও কখনো ঘাড়ে উঠতে দেয়নি। ’৯৬ সালে জামায়াতকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে বিএনপি সরকারের পতন ঘটালেও নির্বাচনে জামায়াতকে জোটসঙ্গী করেনি। বরং জাতীয় সংসদে তাদেরকে মাত্র ৩ এমপির একটি দল বানিয়ে রেখেছিল। এর বিনিময়ে জামায়াত ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিল। পক্ষান্তরে, বারবার লাইফ দিলেও জামায়াত বিএনপিকে নিয়ন্ত্রণ ও বেপথু করতে মুখিয়ে থেকেছে। আর নানা ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াতের গোপন আঁতাতের আলামত হামেশাই চাউর হয়েছে। জামায়াত সব সময় গাছ লাগানোর কষ্ট করতে নারাজ। তবে গাছের ফল খেতে চায় হাতের দুই কনুই ডুবিয়ে।
গত বছর জুলাই আন্দোলন সমাপ্তির পরক্ষণে জামায়াত রাষ্ট্রের সকল আঙিনায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় উঠেপড়ে লাগে। এতে তারা যারপর নাই সাফল্যও পেয়েছে। এখন একদিকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা তীব্র থেকে তীব্র করছে। অপরদিকে, কৌশলী দাবী দাওয়ার অজুহাতে আন্দোলনের মহড়াও চালাচ্ছে সমানে। দেশে নানা রাজনৈতিক সমীকরণে জামায়াতের ভোট বেড়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। সেটা কিছু সত্যও বটে। এর পেছনে জামায়াতের সঙ্ঘবদ্ধ ও সত্যমিথ্যা প্রচারণা অন্যতম অনুঘটক। এই ক্ষেত্রে সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের অচিন্ত্যনীয় বিজয় অনেকেই সংসদ নির্বাচনের আগাম সংকেত বলেও ভাবছেন।
কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, ওই বিজয়ের পেছনে নানা অনৈতিক কারসাজি অবলম্বন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিজয়ের জজবায় জামায়াত তাদের দলীয় লোগো বদল এবং শারদীয় দুর্গাপূজার মন্ডপে যেই অনাসৃষ্টির অবতারণা করেছে তা এই দেশের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখেননি। অনেকের ধারণা, জামায়াতের এই হঠাৎ জ্বলে ওঠা আবার হঠাৎ করেই দম ফুরিয়ে নিভে যেতে পারে। এখন কেউ কিছু না বললেও সেই ড্যামেজ কনট্রোল যে গুরুতর পর্যায়ে তা দলটির নেতৃস্থানীয়দের এলোমেলো কথাবার্তায় বেশ বোঝা যায়। এর অন্যতম উদাহরণ হলো, লোগো চুড়ান্তভাবে প্রদর্শনের পরেও তীব্র সমালোচনার মুখে তা স্থগিত রাখার ঘটনা।
এবার দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ। অতীত অভিজ্ঞতা মতে ভোট প্রদানের হার সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ধরা হলে ৮ কোটি ৮২ লাখ মানুষ ভোট প্রদান করবেন। জামায়াত নানামুখি ধর্ম-অধর্ম আর ছলচাতুরী করে অতীতের সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে ভোটের হার ১৫ শতাংশে বাড়াতে পারলে তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হবে ১ কোটি ৩২ লাখ। এই সংখ্যা ৩শ আসনে বিভক্ত করলে আসনপ্রতি গড় সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৪৪ হাজার। এই ভোট দিয়ে কিভাবে ৩শ এমপি জেতানো সম্ভব? বিশেষত, যেখানে তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আসনপ্রতি ভোটের সংখ্যা হলো গড়ে প্রায় লাখের উপরে। উপরোন্ত, প্রত্যাসন্ন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক একজন ভোটারও যে ঘরে বসে থাকবেন না, সেটা বলাই বাহুল্য। এছাড়া অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অন্য যে কোন দলের মত বিএনপির ভোট করতে কর্মী লাগে না। তাদের ভোটার সমর্থকরাই কর্মীর দায়িত্ব পালন করে থাকে। কাজেই জামায়াতের সাম্প্রতিক হঠাৎ বিজয়ী জজবা এবার অপ্রত্যাশিত কোন দুঃস্বপ্নের মুখে পড়লে মোটেই অবাক হওয়া যাবে না।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
[লেখক: মুক্তিযোদ্ধা]