মিয়ানমারের আরাকানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। এত সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ইতিহাস বাংলাদেশের মতো অধিক জনবহুল দেশের জন্য বিশ্বদরবারে নজির সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের এই মানবিক মূল্যবোধের স্বীকৃতি মূল্যায়ন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো করলেও দীর্ঘদিন সাহায্য সহযোগিতা করেনি বা তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় ২০২৩ সালে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। এসব কার্যক্রমের পরও প্রায় সাত বছর চলা এ সংকট সমাধানের মুখ দেখছে না। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাড়ছে ঋণ-নির্ভরতার চাপ। সর্বশেষ ২০২৩ সালে মোট চাহিদার ৪৭ ভাগ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের ক্ষেত্রে যখন কোনো দেশে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শরণার্থী অবস্থান করে তখন তাদের সমাধানের ক্ষেত্রে নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করাকে সর্বোচ্চ টেকসই সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রত্যাবাসন ছাড়াও আর্ন্তজাতিক আইনে শরণার্থীরা বর্তমানে অবস্থানকালীন দেশে নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে অথবা তৃতীয় অন্য কোনো দেশে গিয়ে নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারে।
রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় থাকার সম্ভাবনার বিষয়টিও জটিল। যেহেতু এক মিলিয়নের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে, এ বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্ভব নয়, কেননা এত সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিকভাবে আশ্রয় দিতে কোনো রাষ্ট্র রাজি হবে না।
প্রকৃতির অন্যতম দান বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের পর্যটন, প্রকৃতি, পরিবেশ, পাহাড়ের অপূর্ব সৌন্দর্য ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে। বান্দরবানের বন, পাহাড় কেটে উজাড় করা হচ্ছে রোহিঙ্গা বসতির জন্য। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশে শুধু পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রদত্ত পাহাড়, বনরাজিই ধ্বংস হচ্ছে না কক্সবাজার, বান্দরবানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন জ্বালানি সংকট মেটাতে গাছ পুড়ছে ৬০০ টন। ৫০ দিনে বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি টাকা।
কাজেই দেশের এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি দিতে সামগ্রিকভাবেই প্রত্যাবাসনের বিষয়টির ওপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করে অনতিবিলম্বে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন।
সুমাইয়া আকতার
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            বুধবার, ২৯ মে ২০২৪
মিয়ানমারের আরাকানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। এত সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ইতিহাস বাংলাদেশের মতো অধিক জনবহুল দেশের জন্য বিশ্বদরবারে নজির সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের এই মানবিক মূল্যবোধের স্বীকৃতি মূল্যায়ন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো করলেও দীর্ঘদিন সাহায্য সহযোগিতা করেনি বা তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় ২০২৩ সালে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। এসব কার্যক্রমের পরও প্রায় সাত বছর চলা এ সংকট সমাধানের মুখ দেখছে না। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাড়ছে ঋণ-নির্ভরতার চাপ। সর্বশেষ ২০২৩ সালে মোট চাহিদার ৪৭ ভাগ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের ক্ষেত্রে যখন কোনো দেশে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শরণার্থী অবস্থান করে তখন তাদের সমাধানের ক্ষেত্রে নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করাকে সর্বোচ্চ টেকসই সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রত্যাবাসন ছাড়াও আর্ন্তজাতিক আইনে শরণার্থীরা বর্তমানে অবস্থানকালীন দেশে নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে অথবা তৃতীয় অন্য কোনো দেশে গিয়ে নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারে।
রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় থাকার সম্ভাবনার বিষয়টিও জটিল। যেহেতু এক মিলিয়নের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে, এ বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্ভব নয়, কেননা এত সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিকভাবে আশ্রয় দিতে কোনো রাষ্ট্র রাজি হবে না।
প্রকৃতির অন্যতম দান বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের পর্যটন, প্রকৃতি, পরিবেশ, পাহাড়ের অপূর্ব সৌন্দর্য ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে। বান্দরবানের বন, পাহাড় কেটে উজাড় করা হচ্ছে রোহিঙ্গা বসতির জন্য। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশে শুধু পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রদত্ত পাহাড়, বনরাজিই ধ্বংস হচ্ছে না কক্সবাজার, বান্দরবানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন জ্বালানি সংকট মেটাতে গাছ পুড়ছে ৬০০ টন। ৫০ দিনে বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি টাকা।
কাজেই দেশের এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি দিতে সামগ্রিকভাবেই প্রত্যাবাসনের বিষয়টির ওপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করে অনতিবিলম্বে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন।
সুমাইয়া আকতার
