গাজীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষপ ও ধাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি যানবাহন।শুক্রবার বিকেল ৪টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ডবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মহাসড়কের এক পাশে ছিল ‘আনন্দ’ মিছিল। অন্য পাশে বিক্ষোভ মিছিল। দুই পক্ষের হাজারো নেতা-কর্মীর সড়কে অবস্থান। অন্য পক্ষের উদ্দেশে এক পক্ষের স্লোগান, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। কখনোবা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ গাড়ি ভাঙচুর। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের হস্তক্ষেপ। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ। আতঙ্কে দোকানপাটও বন্ধ।
শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার অর্জন করায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ইউটিসি মাঠে আনন্দ মিছিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন। একই সময় মেয়রকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বড় মসজিদের মাঠে সিটির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্র বলছে, গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে বঙ্গবন্ধু, গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে জাহাঙ্গীর আলমের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বুধবার থেকেই জেলার বিভিন্ন অংশে তাঁর বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদ সমাবেশ। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বনবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে বোর্ডবাজার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়। কিন্তু হঠাৎ মেয়র একই সময়ে একই এলাকায় আনন্দ মিছিল করার ঘোষণা দেন।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মেয়র জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয় বোর্ডবাজারের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নতুন ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে দুপুর থেকেই দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ থেকে ১০০ থেকে দেড় শ মিটার দূরেই বড় মসজিদ এলাকায় আয়োজন করা হয় বিক্ষোভ সমাবেশের। সেখানেও দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে দুই পক্ষই সড়কে অবস্থান নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করছে।
দেখা যায়, মেয়রপক্ষের লোকজন ব্যান্ড বাজিয়ে মিছিল নিয়ে সড়ক ধরে এগোচ্ছেন। অন্যদিক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা মিছিল নিয়ে এগোচ্ছেন আনন্দ মিছিলের দিকে। দুই পক্ষের অনেকের হাতেই ছিল লাঠিসোঁটা। পুলিশ মাঝখানে থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে। এতে সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ হেঁটে রওনা হন গন্তব্যে। আশপাশের ব্যবসায়ীরা সংঘর্ষের আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ করে দেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাড়ি ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন জানান, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আনন্দ মিছিলে যোগ দিতে কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলের দিকে আসছিলেন। এ সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হঠাৎই তাঁদের বাধা হয়ে দাঁড়ান আবদুল্লাহ আল মামুনের লোকজন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এক পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কে থাকা কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করে।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বড় মসজিদের সামনে মিছিল নিয়ে অবস্থান করছিলেন মেয়রের লোকজন। তাঁরা মামুন মণ্ডল বা তাঁর লোকজনের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছিলেন। হঠাৎ মামুন মণ্ডলের লোকজন পুলিশ ও মিছিলের লোকজনের উদ্দেশে ইট ছুড়তে থাকেন। এ সময় পুলিশ আক্রমণাত্মক হলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মোটামুটি সফলভাবেই আমাদের বিক্ষোভ শেষ করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্য করায় তাঁকে (মেয়র) দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে।’ সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর বা ইটপাটকেল নিক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সড়ক অবরোধ করিনি। আমরা কাউকে ঢিল মারিনি। গাড়ি ভাঙচুর করিনি। বরং মেয়রের লোকজন আমাদের উদ্দেশে আক্রমণ চালিয়েছে।’
বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়েই বিকেল পাঁচটার দিকে সমাবেশস্থলে যান জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মিথ্যাই থাকবে। ষড়যন্ত্রকারীরা যত বড় শক্তিশালীই হোক, একসময় তাদের মুখোশ খুলবে। যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে, যত বড় ষড়যন্ত্রকারীই হোক, তাদের মুখোশ খুলে দেব।’
শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষপ ও ধাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি যানবাহন।শুক্রবার বিকেল ৪টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ডবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মহাসড়কের এক পাশে ছিল ‘আনন্দ’ মিছিল। অন্য পাশে বিক্ষোভ মিছিল। দুই পক্ষের হাজারো নেতা-কর্মীর সড়কে অবস্থান। অন্য পক্ষের উদ্দেশে এক পক্ষের স্লোগান, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। কখনোবা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ গাড়ি ভাঙচুর। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের হস্তক্ষেপ। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ। আতঙ্কে দোকানপাটও বন্ধ।
শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার অর্জন করায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ইউটিসি মাঠে আনন্দ মিছিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন। একই সময় মেয়রকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বড় মসজিদের মাঠে সিটির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্র বলছে, গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে বঙ্গবন্ধু, গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে জাহাঙ্গীর আলমের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বুধবার থেকেই জেলার বিভিন্ন অংশে তাঁর বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদ সমাবেশ। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বনবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে বোর্ডবাজার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়। কিন্তু হঠাৎ মেয়র একই সময়ে একই এলাকায় আনন্দ মিছিল করার ঘোষণা দেন।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মেয়র জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয় বোর্ডবাজারের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নতুন ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে দুপুর থেকেই দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ থেকে ১০০ থেকে দেড় শ মিটার দূরেই বড় মসজিদ এলাকায় আয়োজন করা হয় বিক্ষোভ সমাবেশের। সেখানেও দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে দুই পক্ষই সড়কে অবস্থান নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করছে।
দেখা যায়, মেয়রপক্ষের লোকজন ব্যান্ড বাজিয়ে মিছিল নিয়ে সড়ক ধরে এগোচ্ছেন। অন্যদিক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা মিছিল নিয়ে এগোচ্ছেন আনন্দ মিছিলের দিকে। দুই পক্ষের অনেকের হাতেই ছিল লাঠিসোঁটা। পুলিশ মাঝখানে থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে। এতে সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ হেঁটে রওনা হন গন্তব্যে। আশপাশের ব্যবসায়ীরা সংঘর্ষের আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ করে দেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাড়ি ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন জানান, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আনন্দ মিছিলে যোগ দিতে কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলের দিকে আসছিলেন। এ সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হঠাৎই তাঁদের বাধা হয়ে দাঁড়ান আবদুল্লাহ আল মামুনের লোকজন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এক পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কে থাকা কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করে।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বড় মসজিদের সামনে মিছিল নিয়ে অবস্থান করছিলেন মেয়রের লোকজন। তাঁরা মামুন মণ্ডল বা তাঁর লোকজনের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছিলেন। হঠাৎ মামুন মণ্ডলের লোকজন পুলিশ ও মিছিলের লোকজনের উদ্দেশে ইট ছুড়তে থাকেন। এ সময় পুলিশ আক্রমণাত্মক হলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মোটামুটি সফলভাবেই আমাদের বিক্ষোভ শেষ করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্য করায় তাঁকে (মেয়র) দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে।’ সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর বা ইটপাটকেল নিক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সড়ক অবরোধ করিনি। আমরা কাউকে ঢিল মারিনি। গাড়ি ভাঙচুর করিনি। বরং মেয়রের লোকজন আমাদের উদ্দেশে আক্রমণ চালিয়েছে।’
বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়েই বিকেল পাঁচটার দিকে সমাবেশস্থলে যান জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মিথ্যাই থাকবে। ষড়যন্ত্রকারীরা যত বড় শক্তিশালীই হোক, একসময় তাদের মুখোশ খুলবে। যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে, যত বড় ষড়যন্ত্রকারীই হোক, তাদের মুখোশ খুলে দেব।’