alt

মুক্ত আলোচনা

সাইবার দুনিয়া নিরাপদ তো?

আনন্যামা নাসুহা নুহিন

: সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম ফেইসবুক ব্যবহারকারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর তথ্য ফাঁস হয়েছে। এই সংবাদ দেখে একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে রীতিমতো চমকে গেলাম। মনে মনে প্রশ্ন জাগলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নিজের তথ্য অন্যের হাতে দিয়ে জিম্মি হয়ে গেলাম না তো?

সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আপুর নাচের ভিডিওতে কমেন্ট দেখে আমি খুব অবাক হই। তার নাচের প্রশংসা না করে সে এত মোটা কেন, সে এত কালো কেন, মোটা হয়ে না” করছেন কেন- এই নিয়ে একজন মানুষ তার আগ্রহকে প্রতিনিয়ত নষ্ট করে দিচ্ছে।

সম্প্রতি আমার পরিচিত আনিস নামে একজন একটি অচেনা মেইলে ঢুকলেন এবং স্প্যাম ম্যাসেজে তার পাসওয়ার্ডটি দিয়ে দিলেন। তারপর ব্যাংক থেকে ম্যাসেজ আসছে তার কার্ড ব্যবহার করছেন কেউ।

একদিন অনলাইনে কিছু পণ্য অর্ডার করে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। পণ্য হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল পণ্যগুলোর ছবির সঙ্গে পণ্যের কোন মিল নেই। মানও অনেক খারাপ।

সামান্য মজা পাওয়ার আশায় অথবা সামান্য লাভের আশায় আমরা এভাবেই জেনে অথবা না জেনে কিছু অপরাধের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়ে যাচ্ছি।

বর্তমান যুগ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আমরা ইন্টারনেটের প্রতি ততই আসক্ত হয়ে যাচ্ছি। যত সহজলভ্য হচ্ছে আরও সহজলভ্য করার চেষ্টায় মানুষ ব্যাকুল।

করোনা পরিস্থিতির কারণে আরও ব্যাপকভাবে আসক্তি বাড়ছে ইন্টারনেটের ওপর। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বাজার-সদাই, প্রিয়জনের সঙ্গে ভিডিও কল, চ্যাটিং, অনলাইন গেমস, অনলাইনে বিল পেমেন্ট সব চলছে হরহামেশা। স্কুলের ক্লাসের জন্য বাচ্চাদের হাতে তুলে দিতে হয়েছে মোবাইল ফোন।

এই বদ্ধ জীবনকে থামিয়ে না রেখে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট। এই ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি যে খারাপ দিকটি ভাবাচ্ছে তা হলো সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ। ইন্টারনেটে একই সময় অনেকে নিজেদের মোবাইল বা কম্পিউটারে সক্রিয় থাকেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন।

সাইবার ক্রিমিনাল যারা থাকে তারা তাদের নিজেদের ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইন ট্রাফিক বা অনলাইন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের থেকে বিভিন্ন অবৈধ মাধ্যমে তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, অর্থ চুরি, সাইবার বুলিং, ঠকিয়ে টাকা আদায় ইত্যাদি করে থাকে। একেই সাইবার ক্রাইম বলে। এমনকি সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে আপনার মেইল থেকে যেকোন তথ্য চুরি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য গ্রহণও হয়ে থাকতে পারে।

ইন্টারনেটের ব্যবহার যেমন বাড়ছে তেমনি এর মাধ্যমে হয়রানিও ক্রমেই বাড়ছে। তুলনামূলক নারীরা সাইবার ক্রাইমের শিকার বেশি হচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেউ সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে- তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না জানা, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, আইন সম্পর্কে না জানা কারণগুলোর জন্য এ ধরনের অপরাধে ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যারা সাইবার অপরাধের শিকার,

তারাও সঠিক আইনি ব্যবস্থা নিতে জানেন না। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে আপনাকে তিনটি জিনিস মনে রাখতে হবে ‘থামুন’, ‘চিন্তা করুন’, ‘সিদ্ধান্ত নিন’।

১. সাইবার একটি অন্ধকার জগৎ, যেখানে এমন অনেক কিছু আছে যা আপনি জানেন না, যা স¤পর্কে আপনার ধারণাও নেই। আপনার ব্যক্তিগত কী কী তথ্য দিলে আপনার জন্য পরবর্তীতে বিপদ আসবে না তা আপনাকেই ভাবতে হবে।

৩. কেউ আপনার কাছে একটা লিঙ্ক পাঠিয়েছে। এখন আপনাকে দেখতে হবে সেটায় আপনি ক্লিক করবেন কিনা। ডাউনলোড করবেন কিনা। লিঙ্কটা ক্লিক করার পর দেখা যাচ্ছে তারা পাসওয়ার্ড চাইতে পারে এরপর নাম্বার চাইলো, ই-মেইল চাইলো, এসব দেয়া যাবে না। তারা একটা অ্যাপ বা সফটওয়্যার পাঠিয়েছে, কনটাক্ট নাম্বার চাচ্ছে বুঝতে হবে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন।

৪. কোন ই-মেইল আসলে অবিশ্বস্ত কোন কিছুতে ক্লিক দেয়া যাবে না। এর মাধ্যমে নিজের সব তথ্য অন্যের কাছে চলে যাবে। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৫. ফেইসবুকে অনেকেই এখন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এজন্য আপনাকেই ঠিক করতে হবে আপনার ফেইসবুক আইডি কতটুকু অপেন রাখবেন আর কতটুকু বন্ধ রাখবেন। সব ধরনের পদ্ধতি দেয়া আছে। এখন নিজেকেই সেটা ঠিক করতে হবে আমি কী করবো।

সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে করণীয় :

১. কোন কারণে আপনি যদি সাইবার অপরাধের শিকার হন, তাহলে আপনার নজরে আসা মাত্রই আপনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বিষয়টি অবগত করে রাখতে পারেন।

২. আপনি যদি সাইবার অপরাধের গুরুতর শিকার হন এবং প্রতিকার পেতে চান, তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর আশ্রয় নিতে পারেন।

৩. যদি সাইবার অপরাধের অভিযোগে মিথ্যাভাবে ফেঁসে যান, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বুঝিয়ে বলতে হবে যে আপনি পরিস্থিতির শিকার। যদি আদালতে আপনাকে প্রেরণ করা হয় তাহলে আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করে যেতে হবে।

৪. গত ২০ নভেম্বর ২০২০ সালে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন্ একটি সেবা চালু হয়। এটি মূলত একটি তথ্য জানানোর সেবা, যেখানে অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত এবং পরামর্শ প্রদানসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা থাকবেন পুলিশের নারী সদস্যরা। আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হলে সেক্ষেত্রেও অভিযোগকারীর পরিচয় প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ গোপনীয়তার আশ্বাস দিয়েছে। ২০২০ সালে সাইবার ক্রাইম সচেতনতা মাসের ক্যাম্পেইনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল-If you connect it, protect it.

অর্থাৎ আপনি যদি ইন্টারনেটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে থাকেন তাহলে এর সুরক্ষাও দিন। কারণ এর সঙ্গে আপনার সুরক্ষাও জড়িত। ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইমের যে আইন রয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখা খুব জরুরি। কোনভাবে আপনি যদি সাইবার ক্রাইমের শিকার ও হয়ে থাকেন কেবল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই আপনি আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। তাই আসুন ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করি এবং নিজেদের ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে অন্যকে কটূকথা না বলে তার কাজে উৎসাহিত করি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

সাইবার দুনিয়া নিরাপদ তো?

আনন্যামা নাসুহা নুহিন

সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম ফেইসবুক ব্যবহারকারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর তথ্য ফাঁস হয়েছে। এই সংবাদ দেখে একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে রীতিমতো চমকে গেলাম। মনে মনে প্রশ্ন জাগলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নিজের তথ্য অন্যের হাতে দিয়ে জিম্মি হয়ে গেলাম না তো?

সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আপুর নাচের ভিডিওতে কমেন্ট দেখে আমি খুব অবাক হই। তার নাচের প্রশংসা না করে সে এত মোটা কেন, সে এত কালো কেন, মোটা হয়ে না” করছেন কেন- এই নিয়ে একজন মানুষ তার আগ্রহকে প্রতিনিয়ত নষ্ট করে দিচ্ছে।

সম্প্রতি আমার পরিচিত আনিস নামে একজন একটি অচেনা মেইলে ঢুকলেন এবং স্প্যাম ম্যাসেজে তার পাসওয়ার্ডটি দিয়ে দিলেন। তারপর ব্যাংক থেকে ম্যাসেজ আসছে তার কার্ড ব্যবহার করছেন কেউ।

একদিন অনলাইনে কিছু পণ্য অর্ডার করে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। পণ্য হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল পণ্যগুলোর ছবির সঙ্গে পণ্যের কোন মিল নেই। মানও অনেক খারাপ।

সামান্য মজা পাওয়ার আশায় অথবা সামান্য লাভের আশায় আমরা এভাবেই জেনে অথবা না জেনে কিছু অপরাধের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়ে যাচ্ছি।

বর্তমান যুগ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আমরা ইন্টারনেটের প্রতি ততই আসক্ত হয়ে যাচ্ছি। যত সহজলভ্য হচ্ছে আরও সহজলভ্য করার চেষ্টায় মানুষ ব্যাকুল।

করোনা পরিস্থিতির কারণে আরও ব্যাপকভাবে আসক্তি বাড়ছে ইন্টারনেটের ওপর। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বাজার-সদাই, প্রিয়জনের সঙ্গে ভিডিও কল, চ্যাটিং, অনলাইন গেমস, অনলাইনে বিল পেমেন্ট সব চলছে হরহামেশা। স্কুলের ক্লাসের জন্য বাচ্চাদের হাতে তুলে দিতে হয়েছে মোবাইল ফোন।

এই বদ্ধ জীবনকে থামিয়ে না রেখে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট। এই ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি যে খারাপ দিকটি ভাবাচ্ছে তা হলো সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ। ইন্টারনেটে একই সময় অনেকে নিজেদের মোবাইল বা কম্পিউটারে সক্রিয় থাকেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন।

সাইবার ক্রিমিনাল যারা থাকে তারা তাদের নিজেদের ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইন ট্রাফিক বা অনলাইন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের থেকে বিভিন্ন অবৈধ মাধ্যমে তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, অর্থ চুরি, সাইবার বুলিং, ঠকিয়ে টাকা আদায় ইত্যাদি করে থাকে। একেই সাইবার ক্রাইম বলে। এমনকি সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে আপনার মেইল থেকে যেকোন তথ্য চুরি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য গ্রহণও হয়ে থাকতে পারে।

ইন্টারনেটের ব্যবহার যেমন বাড়ছে তেমনি এর মাধ্যমে হয়রানিও ক্রমেই বাড়ছে। তুলনামূলক নারীরা সাইবার ক্রাইমের শিকার বেশি হচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেউ সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে- তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না জানা, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, আইন সম্পর্কে না জানা কারণগুলোর জন্য এ ধরনের অপরাধে ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যারা সাইবার অপরাধের শিকার,

তারাও সঠিক আইনি ব্যবস্থা নিতে জানেন না। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে আপনাকে তিনটি জিনিস মনে রাখতে হবে ‘থামুন’, ‘চিন্তা করুন’, ‘সিদ্ধান্ত নিন’।

১. সাইবার একটি অন্ধকার জগৎ, যেখানে এমন অনেক কিছু আছে যা আপনি জানেন না, যা স¤পর্কে আপনার ধারণাও নেই। আপনার ব্যক্তিগত কী কী তথ্য দিলে আপনার জন্য পরবর্তীতে বিপদ আসবে না তা আপনাকেই ভাবতে হবে।

৩. কেউ আপনার কাছে একটা লিঙ্ক পাঠিয়েছে। এখন আপনাকে দেখতে হবে সেটায় আপনি ক্লিক করবেন কিনা। ডাউনলোড করবেন কিনা। লিঙ্কটা ক্লিক করার পর দেখা যাচ্ছে তারা পাসওয়ার্ড চাইতে পারে এরপর নাম্বার চাইলো, ই-মেইল চাইলো, এসব দেয়া যাবে না। তারা একটা অ্যাপ বা সফটওয়্যার পাঠিয়েছে, কনটাক্ট নাম্বার চাচ্ছে বুঝতে হবে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন।

৪. কোন ই-মেইল আসলে অবিশ্বস্ত কোন কিছুতে ক্লিক দেয়া যাবে না। এর মাধ্যমে নিজের সব তথ্য অন্যের কাছে চলে যাবে। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৫. ফেইসবুকে অনেকেই এখন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এজন্য আপনাকেই ঠিক করতে হবে আপনার ফেইসবুক আইডি কতটুকু অপেন রাখবেন আর কতটুকু বন্ধ রাখবেন। সব ধরনের পদ্ধতি দেয়া আছে। এখন নিজেকেই সেটা ঠিক করতে হবে আমি কী করবো।

সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে করণীয় :

১. কোন কারণে আপনি যদি সাইবার অপরাধের শিকার হন, তাহলে আপনার নজরে আসা মাত্রই আপনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বিষয়টি অবগত করে রাখতে পারেন।

২. আপনি যদি সাইবার অপরাধের গুরুতর শিকার হন এবং প্রতিকার পেতে চান, তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর আশ্রয় নিতে পারেন।

৩. যদি সাইবার অপরাধের অভিযোগে মিথ্যাভাবে ফেঁসে যান, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বুঝিয়ে বলতে হবে যে আপনি পরিস্থিতির শিকার। যদি আদালতে আপনাকে প্রেরণ করা হয় তাহলে আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করে যেতে হবে।

৪. গত ২০ নভেম্বর ২০২০ সালে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন্ একটি সেবা চালু হয়। এটি মূলত একটি তথ্য জানানোর সেবা, যেখানে অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত এবং পরামর্শ প্রদানসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা থাকবেন পুলিশের নারী সদস্যরা। আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হলে সেক্ষেত্রেও অভিযোগকারীর পরিচয় প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ গোপনীয়তার আশ্বাস দিয়েছে। ২০২০ সালে সাইবার ক্রাইম সচেতনতা মাসের ক্যাম্পেইনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল-If you connect it, protect it.

অর্থাৎ আপনি যদি ইন্টারনেটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে থাকেন তাহলে এর সুরক্ষাও দিন। কারণ এর সঙ্গে আপনার সুরক্ষাও জড়িত। ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইমের যে আইন রয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখা খুব জরুরি। কোনভাবে আপনি যদি সাইবার ক্রাইমের শিকার ও হয়ে থাকেন কেবল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই আপনি আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। তাই আসুন ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করি এবং নিজেদের ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে অন্যকে কটূকথা না বলে তার কাজে উৎসাহিত করি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top