মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে দুই দিন ধরে শ্রেণি কক্ষে তালা ঝুলছে। বন্ধ রয়েছে পাঠদান। দ্রুত সমাধান না হলে দুই পক্ষের লোকদের মধ্যে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন নদীর দুই পারের বাসিন্দারা। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশুনা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
সরেজমিনে গত সোমবার দুপুরে ওই বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দুটি টিনশেডের প্রত্যেক ক্লাসরুমে ঝুলছে তালা। শিক্ষার্থীরা চট, মাধুর বিছিয়ে বারান্দায় ও খোলা মাঠে বসে আছে। বন্ধ রয়েছে পাঠদান। আর অভিভাবকরা উৎকণ্ঠা নিয়ে বাহিরে বসে আছেন। হাজিরা খাতা অনুযায়ী ১৩৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত দেখা যায়।
বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার বলেন, আমরা স্কুল নিয়ে রাজনীতি চাই না। আমারা ক্লাস করতে চাই। আমরা নদীর পূর্ব পারে বসবাস করে আসছি। আমরা কেন নদী সাতরে পশ্চিম পাড়ে যাব। চরের স্কুল চরেই থাকবে।
১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, আমরা রোববার ও সোমাবর দুই দিন ধরে রৌদ্রে কষ্ট করে ক্লাসের বাইরে বসে আছি ক্লাস করব বলে কিন্তু সব ক্লাস রুমেই তালা ঝুলছে। আমরা ক্লাস করতে চাই।
একই ক্লাসের আমিনুর রহমান বলেন, আমাকে স্যাররা বলছে, আমরা স্কুল নদীর পশ্চিম পাশেই করব। এখন থেকে এখানে নতুন স্থানে ক্লাস করবা। নইলে তোমাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেব না।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুদ বলেন, প্রধান শিক্ষক সালাম স্যার আমাকে ডেকে গত বৃহস্পতিবার শেষ ক্লাসের সময় বলেছেন, তোরা যদি নতুন ভবনে ক্লাস না করস তাহলে তোদের সবাইকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেব।
তারেক আহমেদ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২৫ সালের বই অনেক দেরিতে পাইছি। তারপর আবার দুই দিন ধরে ক্লাস রুমে তালা, পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এখন আমাদের কবে ক্লাস রুম খোলব আমরা জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নটি ধলেশ্বরী নদী দ্বারা শাসিত। এখানকার বেশিরভাগ এলাকা চরাঞ্চল। বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে আশপাশে কোন বিদ্যালয় নেই। সেই আলোকে ২০১৫ সনে সর্বস্তরের জনসাধারণের কথা চিন্তা করে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেতে শুরু করে। পরবর্তীতে বিদ্যলয়টি ২০২২ এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শাহজাহান এবং প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম মিলে এলাকার মানুষের সাথে কথা কাটা কাটির একপর্যায় বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে নেবার পায়তারা করে। বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে থাকলে বরাইদ ইউয়িনের ৫টি ওয়ার্ডের মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। আর পশ্চিম পাশে নিয়ে মাত্র ১টি ওয়ার্ডের আংশিক লোক সুবিধা পাবে। কতিপয় স্বার্থান্বেষীমহল, নদীর পশ্চিম পাশে বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য জমি ক্রয় করে এবং নতুন একাডেমিক ভবন তৈরি করার জন্য পায়তারা করছে। পরে গত শুক্রবার রাতারাতি কোনো রকম একটি টিনসেড ঘর তৈরি করে গত রোববার থেকে আগের ভবনে তালা ও নথিপত্র চুরি করে নিয়ে নতুন স্থানে জোড়া তালি দিয়ে ক্লাস করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর যাতে না হয়, এর জন্য মানিকগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে বিগত ২৩-০২-২০২৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং- ২১/২০২৫। মামলা থাকার পরও চক্রটি বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য কাজ করেই যাচ্ছে।
সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন বলেন, বিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তন করতে চাইলে বিদ্যালয় বিলীন হতে হয়। এবং নীতিমালা ২০২২ (সংশোধিত-২০২৩) এর অনুচ্ছেদ ৫.৮ আলোকে বিদ্যালয় ভবন অক্ষত আছে। বরং নদী থেকে ২৫০ ফিট দূরে। তাছাড়া বিগত ৫ বছরে ওই স্থানে কোনো ভাঙন দেখা দেয়নি। বরং চলতি মৌসুমে নদী শাসন চলছে। নদীর তীর ভাঙন রোধে কাজ চলছে। আর বিদ্যালয় স্থানান্তরের আবেদন করা হয় অনেক আগে। আর তদন্ত করা হয় সেটা গোপনে। আর চিঠি আসে ১২ ফেব্রুয়ারি । আর এখন স্কুলে তালা দেওয়াতে এ পারের ১৫০ জন শিক্ষার্থীরা দুই দিন ধরে নদীর পশ্চিম পাশে যাচ্ছে না। তারা পুরাতন বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই অবস্থান করছেন।
ছনকা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি যেখানে রাতের আধারে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে, সেখানে ছনকা বাজার আছে। সেখানে আমাদের মেয়েদের বখাটেদের খপ্পরে পড়তে হবে। তাছাড়া খেয়া পারা পার হতে হবে। খেয়া পারাপার হতে গেলে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশি সময় লাগবে। তাই আমরা চাই বিদ্যালয়টি এখানেই থাকুক।
ছনকা গ্রামের রোখসানা বলেন, বিদ্যালয়টি আমাদের জমিতে গড়ে উঠা। আমাদের ঘাম, রক্ত মিশে আছে। তারা বিদ্যলয়টি তালা মারল, আর আরেক স্থানে নিয়ে জোর করে ক্লাস করতে চাচ্ছে। সেটাতো রেজুলেশন করা লাগবে। আমাদের চরাঞ্চল দেখিয়ে বিদ্যালয় অনুমোদন আনল। আর এখন এমপিওভুক্ত হল। আর অন্য স্থানে নিয়ে যাবে সেটা ত হয় না। আর যে রাজনীতি শুরু হয়েছে। যে কোনো সময় আমাদের পুরাতন ভবনে আগুন লাগাতে পারে। আবার এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলে, তার দায় কে নিবে। তাই প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন, আমাদের বিষয়টি সমাধান যাতে করে দেয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম বলেন, বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ২৬০ জন। ছনক উচ্চ বিদ্যলয় হলেও এমপিওভুক্ত হয়েছে নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে। সেই হিসাব অনুযায়ী ১১ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী আছে। নিয়ম মেনেই বিদ্যালয়ের স্থানান্তরের কাজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারা যেভাবে স্থানান্তর করেছেন, সেটা সঠিক হয়নি। নদীর দুই পারের অভিভাবকদের সঙ্গে সমাঝোতা মাধ্যমে যেতে হবে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেটা করেনি। এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি । এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সকল শিক্ষক নতুন স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ বিষয়ে আমি নিজে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে বর্তমান স্থানে নদীর পূর্ব পাশেই বিদ্যালয় থাকুক। প্রধান শিক্ষককে আমি নিষেধ করেছিলাম আইন মেনে কাজ করতে। কিন্তু সে আইন অমান্য করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয় সেখানে যৌথবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে দুই দিন ধরে শ্রেণি কক্ষে তালা ঝুলছে। বন্ধ রয়েছে পাঠদান। দ্রুত সমাধান না হলে দুই পক্ষের লোকদের মধ্যে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন নদীর দুই পারের বাসিন্দারা। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশুনা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
সরেজমিনে গত সোমবার দুপুরে ওই বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দুটি টিনশেডের প্রত্যেক ক্লাসরুমে ঝুলছে তালা। শিক্ষার্থীরা চট, মাধুর বিছিয়ে বারান্দায় ও খোলা মাঠে বসে আছে। বন্ধ রয়েছে পাঠদান। আর অভিভাবকরা উৎকণ্ঠা নিয়ে বাহিরে বসে আছেন। হাজিরা খাতা অনুযায়ী ১৩৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত দেখা যায়।
বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার বলেন, আমরা স্কুল নিয়ে রাজনীতি চাই না। আমারা ক্লাস করতে চাই। আমরা নদীর পূর্ব পারে বসবাস করে আসছি। আমরা কেন নদী সাতরে পশ্চিম পাড়ে যাব। চরের স্কুল চরেই থাকবে।
১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, আমরা রোববার ও সোমাবর দুই দিন ধরে রৌদ্রে কষ্ট করে ক্লাসের বাইরে বসে আছি ক্লাস করব বলে কিন্তু সব ক্লাস রুমেই তালা ঝুলছে। আমরা ক্লাস করতে চাই।
একই ক্লাসের আমিনুর রহমান বলেন, আমাকে স্যাররা বলছে, আমরা স্কুল নদীর পশ্চিম পাশেই করব। এখন থেকে এখানে নতুন স্থানে ক্লাস করবা। নইলে তোমাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেব না।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুদ বলেন, প্রধান শিক্ষক সালাম স্যার আমাকে ডেকে গত বৃহস্পতিবার শেষ ক্লাসের সময় বলেছেন, তোরা যদি নতুন ভবনে ক্লাস না করস তাহলে তোদের সবাইকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেব।
তারেক আহমেদ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২৫ সালের বই অনেক দেরিতে পাইছি। তারপর আবার দুই দিন ধরে ক্লাস রুমে তালা, পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এখন আমাদের কবে ক্লাস রুম খোলব আমরা জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নটি ধলেশ্বরী নদী দ্বারা শাসিত। এখানকার বেশিরভাগ এলাকা চরাঞ্চল। বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে আশপাশে কোন বিদ্যালয় নেই। সেই আলোকে ২০১৫ সনে সর্বস্তরের জনসাধারণের কথা চিন্তা করে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেতে শুরু করে। পরবর্তীতে বিদ্যলয়টি ২০২২ এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শাহজাহান এবং প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম মিলে এলাকার মানুষের সাথে কথা কাটা কাটির একপর্যায় বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে নেবার পায়তারা করে। বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে থাকলে বরাইদ ইউয়িনের ৫টি ওয়ার্ডের মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। আর পশ্চিম পাশে নিয়ে মাত্র ১টি ওয়ার্ডের আংশিক লোক সুবিধা পাবে। কতিপয় স্বার্থান্বেষীমহল, নদীর পশ্চিম পাশে বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য জমি ক্রয় করে এবং নতুন একাডেমিক ভবন তৈরি করার জন্য পায়তারা করছে। পরে গত শুক্রবার রাতারাতি কোনো রকম একটি টিনসেড ঘর তৈরি করে গত রোববার থেকে আগের ভবনে তালা ও নথিপত্র চুরি করে নিয়ে নতুন স্থানে জোড়া তালি দিয়ে ক্লাস করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর যাতে না হয়, এর জন্য মানিকগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে বিগত ২৩-০২-২০২৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং- ২১/২০২৫। মামলা থাকার পরও চক্রটি বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য কাজ করেই যাচ্ছে।
সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন বলেন, বিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তন করতে চাইলে বিদ্যালয় বিলীন হতে হয়। এবং নীতিমালা ২০২২ (সংশোধিত-২০২৩) এর অনুচ্ছেদ ৫.৮ আলোকে বিদ্যালয় ভবন অক্ষত আছে। বরং নদী থেকে ২৫০ ফিট দূরে। তাছাড়া বিগত ৫ বছরে ওই স্থানে কোনো ভাঙন দেখা দেয়নি। বরং চলতি মৌসুমে নদী শাসন চলছে। নদীর তীর ভাঙন রোধে কাজ চলছে। আর বিদ্যালয় স্থানান্তরের আবেদন করা হয় অনেক আগে। আর তদন্ত করা হয় সেটা গোপনে। আর চিঠি আসে ১২ ফেব্রুয়ারি । আর এখন স্কুলে তালা দেওয়াতে এ পারের ১৫০ জন শিক্ষার্থীরা দুই দিন ধরে নদীর পশ্চিম পাশে যাচ্ছে না। তারা পুরাতন বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই অবস্থান করছেন।
ছনকা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি যেখানে রাতের আধারে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে, সেখানে ছনকা বাজার আছে। সেখানে আমাদের মেয়েদের বখাটেদের খপ্পরে পড়তে হবে। তাছাড়া খেয়া পারা পার হতে হবে। খেয়া পারাপার হতে গেলে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশি সময় লাগবে। তাই আমরা চাই বিদ্যালয়টি এখানেই থাকুক।
ছনকা গ্রামের রোখসানা বলেন, বিদ্যালয়টি আমাদের জমিতে গড়ে উঠা। আমাদের ঘাম, রক্ত মিশে আছে। তারা বিদ্যলয়টি তালা মারল, আর আরেক স্থানে নিয়ে জোর করে ক্লাস করতে চাচ্ছে। সেটাতো রেজুলেশন করা লাগবে। আমাদের চরাঞ্চল দেখিয়ে বিদ্যালয় অনুমোদন আনল। আর এখন এমপিওভুক্ত হল। আর অন্য স্থানে নিয়ে যাবে সেটা ত হয় না। আর যে রাজনীতি শুরু হয়েছে। যে কোনো সময় আমাদের পুরাতন ভবনে আগুন লাগাতে পারে। আবার এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলে, তার দায় কে নিবে। তাই প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন, আমাদের বিষয়টি সমাধান যাতে করে দেয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম বলেন, বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ২৬০ জন। ছনক উচ্চ বিদ্যলয় হলেও এমপিওভুক্ত হয়েছে নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে। সেই হিসাব অনুযায়ী ১১ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী আছে। নিয়ম মেনেই বিদ্যালয়ের স্থানান্তরের কাজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারা যেভাবে স্থানান্তর করেছেন, সেটা সঠিক হয়নি। নদীর দুই পারের অভিভাবকদের সঙ্গে সমাঝোতা মাধ্যমে যেতে হবে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেটা করেনি। এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি । এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সকল শিক্ষক নতুন স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ বিষয়ে আমি নিজে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে বর্তমান স্থানে নদীর পূর্ব পাশেই বিদ্যালয় থাকুক। প্রধান শিক্ষককে আমি নিষেধ করেছিলাম আইন মেনে কাজ করতে। কিন্তু সে আইন অমান্য করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয় সেখানে যৌথবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।