চকরিয়া (কক্সবাজার) : মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খনন কাজ করছে বিএডিসি -সংবাদ
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বুকচিরে প্রবাহিত দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে পলি জমে ভরাট হয়ে পড়া অনেকটা মৃতপ্রায় হারবাংছড়া শাখাখাল খনন কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে। বর্তমানে খালের উভয় তীরে দুই কিলোমিটার অংশে খনন কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
জানা গেছে, সেচ সুবিধা অনিশ্চিতার কারণে বছরের পর বছর ধরে এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে থাকার বিষয়টি আমলে নিয়ে স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খালটি খননের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মুলত ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান পলি জমে ভরাট হয়ে পড়া হারবাংছড়া শাখাখালটি খননে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চকরিয়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেন।
এরই প্রেক্ষিতে বিএডিসি চকরিয়া উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিন হারবাংছড়া খাল ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন শেষে খালটি খননের প্রয়োজনীতা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠান।
এরই আলোকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) প্রাথমিকপর্যায়ে হারবাংছড়া খালের দুই কিলোমিটার অংশে খননের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল ইসলাম কামরানকে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে।
পরবর্তীতে বিএডিসি কার্যাদেশ দিয়ে গত সপ্তাহে স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান, বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে হারবাংছড়া খাল খনন কাজ শুরু করেছেন।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান বলেন, বরইতলীর গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘদিনের মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খননের কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে।
এই খাল খননের মাধ্যমে বৃহত্তর হারবাং বিলসহ আশপাশের আরও চারটি বিলের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে। এতে বন্যা দুর্যোগের সময় পহরচাঁদা গ্রামসহ বরইতলী ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলীয় এলাকা থেকে পানি সহজে মাতামুহুরী নদীতে নেমে যাবে।
তিনি বলেন, মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খননের ফলে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের জনসাধারণ বন্যার ক্ষতিসাধন থেকে অনেকাংশে নিস্তার পাবে। পাশাপাশি দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে ভরাট হয়ে পড়া হারবাংছড়া খালটি খননে পানি (সেচ) সুবিধা নিশ্চিত হতে চলছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের ফসল উৎপাদন নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চিততা কেটে গেছে।
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহনাজ ফেরদৌসী বলেন, বছরের বেশিরভাগ সময় চকরিয়া উপজেলার হারবাং বড়বিলের বিপুল পরিমাণ চাষের জমি জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে। কারণ ওই বিলের পানি নিস্কাশনের খালটি পলি জমে ভরাট হয়ে পড়ার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে হারবাং বড়বিলের বেশিরভাগ জমি অনাবাদি পড়ে থাকে বছরের পর বছর ধরে।
একইভাবে হারবাংছড়া খালটি ভরাট হয়ে পড়ায় সেচ সুবিধার অভাবে বরইতলী ইউনিয়নের বেসুমার জমিতে চাষাবাদ করা কঠিন হয়ে পড়েছে কৃষকদের। এ অবস্থায় বিএডিসি কতৃক হারবাংছড়া খালটি খননের কাজ শুরু হওয়ায় কৃষকেরা চাষাবাদ নিয়ে নতুন করে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) চকরিয়া উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, হারবাংছড়া খালটি বন্যার পানির সঙ্গে পলি জমে দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে ভরাট হয়ে যায়। এ অবস্থায় ওই খালের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা একেবারে অচল হয়ে পড়ে। এতে সেচ সুবিধা অনিশ্চয়তায় স্থানীয় কৃষকের চাষাবাদ কমে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও চকরিয়া মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ওই খালটি খননের জন্য নির্দেশনা দেন।
গত সপ্তাহে বিএডিসি কতৃক আনুষ্ঠানিক ভাবে হারবাংছড়া খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকপর্যায়ে খালের উভয়তীরে দুই কিলোমিটার অংশে খননের কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, হারবাংছড়া খালটি খনন কাজের ফলে বর্তমানে হারবাং বড়বিলের বেশিরভাগ অংশ এবং বরইতলী ইউনিয়নের সিকদার খাল, বাইন্যারবিল খাল, পহরচাঁদা বিল লাগোয়া ছড়াখালে পানির গতিপথ সচল হতে চলছে। এতেকরে চাষাবাদ নিয়ে স্থানীয় কৃষকের সেচ সুবিধা অনিশ্চয়তা কেটে গেছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছে, হারবাংছড়া ভরাট খালটি খননের ফলে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের অন্তত ১২০০ একর অনাবাদি কৃষিজমি এবছর থেকে চাষের আওতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে চাষাবাদ করতে পারার পরিবেশ ফিরে আসায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
চকরিয়া (কক্সবাজার) : মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খনন কাজ করছে বিএডিসি -সংবাদ
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বুকচিরে প্রবাহিত দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে পলি জমে ভরাট হয়ে পড়া অনেকটা মৃতপ্রায় হারবাংছড়া শাখাখাল খনন কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে। বর্তমানে খালের উভয় তীরে দুই কিলোমিটার অংশে খনন কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
জানা গেছে, সেচ সুবিধা অনিশ্চিতার কারণে বছরের পর বছর ধরে এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে থাকার বিষয়টি আমলে নিয়ে স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খালটি খননের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মুলত ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান পলি জমে ভরাট হয়ে পড়া হারবাংছড়া শাখাখালটি খননে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চকরিয়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেন।
এরই প্রেক্ষিতে বিএডিসি চকরিয়া উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিন হারবাংছড়া খাল ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন শেষে খালটি খননের প্রয়োজনীতা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠান।
এরই আলোকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) প্রাথমিকপর্যায়ে হারবাংছড়া খালের দুই কিলোমিটার অংশে খননের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল ইসলাম কামরানকে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে।
পরবর্তীতে বিএডিসি কার্যাদেশ দিয়ে গত সপ্তাহে স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান, বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে হারবাংছড়া খাল খনন কাজ শুরু করেছেন।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান বলেন, বরইতলীর গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘদিনের মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খননের কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে।
এই খাল খননের মাধ্যমে বৃহত্তর হারবাং বিলসহ আশপাশের আরও চারটি বিলের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে। এতে বন্যা দুর্যোগের সময় পহরচাঁদা গ্রামসহ বরইতলী ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলীয় এলাকা থেকে পানি সহজে মাতামুহুরী নদীতে নেমে যাবে।
তিনি বলেন, মৃতপ্রায় হারবাংছড়া খাল খননের ফলে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের জনসাধারণ বন্যার ক্ষতিসাধন থেকে অনেকাংশে নিস্তার পাবে। পাশাপাশি দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে ভরাট হয়ে পড়া হারবাংছড়া খালটি খননে পানি (সেচ) সুবিধা নিশ্চিত হতে চলছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের ফসল উৎপাদন নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চিততা কেটে গেছে।
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহনাজ ফেরদৌসী বলেন, বছরের বেশিরভাগ সময় চকরিয়া উপজেলার হারবাং বড়বিলের বিপুল পরিমাণ চাষের জমি জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে। কারণ ওই বিলের পানি নিস্কাশনের খালটি পলি জমে ভরাট হয়ে পড়ার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে হারবাং বড়বিলের বেশিরভাগ জমি অনাবাদি পড়ে থাকে বছরের পর বছর ধরে।
একইভাবে হারবাংছড়া খালটি ভরাট হয়ে পড়ায় সেচ সুবিধার অভাবে বরইতলী ইউনিয়নের বেসুমার জমিতে চাষাবাদ করা কঠিন হয়ে পড়েছে কৃষকদের। এ অবস্থায় বিএডিসি কতৃক হারবাংছড়া খালটি খননের কাজ শুরু হওয়ায় কৃষকেরা চাষাবাদ নিয়ে নতুন করে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) চকরিয়া উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, হারবাংছড়া খালটি বন্যার পানির সঙ্গে পলি জমে দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে ভরাট হয়ে যায়। এ অবস্থায় ওই খালের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা একেবারে অচল হয়ে পড়ে। এতে সেচ সুবিধা অনিশ্চয়তায় স্থানীয় কৃষকের চাষাবাদ কমে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও চকরিয়া মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ওই খালটি খননের জন্য নির্দেশনা দেন।
গত সপ্তাহে বিএডিসি কতৃক আনুষ্ঠানিক ভাবে হারবাংছড়া খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকপর্যায়ে খালের উভয়তীরে দুই কিলোমিটার অংশে খননের কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, হারবাংছড়া খালটি খনন কাজের ফলে বর্তমানে হারবাং বড়বিলের বেশিরভাগ অংশ এবং বরইতলী ইউনিয়নের সিকদার খাল, বাইন্যারবিল খাল, পহরচাঁদা বিল লাগোয়া ছড়াখালে পানির গতিপথ সচল হতে চলছে। এতেকরে চাষাবাদ নিয়ে স্থানীয় কৃষকের সেচ সুবিধা অনিশ্চয়তা কেটে গেছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছে, হারবাংছড়া ভরাট খালটি খননের ফলে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের অন্তত ১২০০ একর অনাবাদি কৃষিজমি এবছর থেকে চাষের আওতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে চাষাবাদ করতে পারার পরিবেশ ফিরে আসায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়েছে।