মা ইলিশ রক্ষায় উপজেলার প্রশাসনিক অভিযান শেষ হয়েছে ॥ ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২১ দিন মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা-যমুনায় প্রশাসনিক অভিযান চলেছে। এসব অভিযানে প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্তেও উপজেলা প্রশাসন গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২১ দিনে শিবালয়,হরিরামপুর,দৌলতপুর নৌ পথের পদ্মা-যমুনায় ২৮৭ টি অভিযান পরিচালনা করে ৭৭ টি মোবাইল কোর্ট করেছেন। এতে মা ইলিশ নিধনে মামলা হয়েছে ১২৩ টি এবং বিভিন্ন মেয়াদে জেলে দেওয়া হয়েছে ৭২ জনকে। একই সময়ে নিষিদ্ধ জাল পোড়ানো হয়েছে ১২৪.৩৩০ লক্ষ মিটার। যার মূল্য ৩২ লক্ষ ১ হাজার ৮২০ টাকা। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ লক্ষ ২৯৭ টাকা। এসব অভিযানে উদ্ধারকৃত ৩ দশমিক ৪৬১ মেট্রিকটন ইলিশ এলাকার বিভিন্ন এতিম খানায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে জেলা মৎস্য অফিসার সাইফুর রহমান জানিয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে কত টন মা ইলিশ মাছ শিকারীদের হাতে অবৈধ উপায়ে নিধন হয়েছে এমন পরিসংখ্যান তাদের নিকট নেই বললেন তিনি।
বিগত বছর ২০ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ৭০ টি অভিযান পরিচালনা করে ১৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৪.৩৫ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংশ করা হয়েছে। যার মূল্য ৭৯.৭৪ লক্ষ টাকা। একই সাথে .৩২ মেট্রিকটন ইলিশ মাছ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং ২০ টি মামলা করে ৬ জনকে জেলে প্রেরণ করে অন্যান্যদের জরিমানা করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষে অধিকাংশ অভিযানে পরিত্যাক্ত জাল, নৌকা ও ইলিশ জব্দের কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন বলে অনেকেই বিরুপ মন্তব্য করেছেন। যমুনা নদী সিকস্তি শিবালয়ের তেওতার আলোকদিয়া গ্রামের সন্তোষ অভিযোগের সুরে বলেছেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নদীতে একদিকে চলে মা ইলিশ নিধনজজ্ঞ অপরদিকে চলে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান।“মা ইলিশ নিধন বন্ধ ঘোষনার আগেই যদি নদী তীরবর্তী এলাকায় ও চরাঞ্চলে বিশেষভাবে তৈরী ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো জব্দ করা যেত” তাহলে মা ইলিশ নিধন কিছুটা হলেও বন্ধ হতো বলে মনে করেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক শাহজাহান বিশ্বাসসহ সচেতন এলাকাবাসী।
এদিকে অভিয়ান শেষ হওয়ায় আরিচা মাছ বাজার ও পাটুরিয়া এবং দাশকান্দি এলাকায় প্রচুর পরিমানে ইলিশ মাছ উঠেছে। একই সাথে এলাকার সাধারণ ক্রেতারা এসব এলাকায় হুমড়ি ক্ষেয়ে পড়েছেন মাছ কেনার জন্য। মানুষের ভীড়ে মাছ বাজারে পা ফেলার জায়গাও যেন নেই। মাছ বাজারে মাত্র ৫ শত টাকা কেজি দরেও ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে মাছের আকার কিছুটা ছোট। প্রতিটার ওজন ২ শ গ্রাম হতে ৩ শ গ্রাম। মাঝারিড় আকারের মাছও বিক্রি হচ্ছে ১২/১৩ শত টাকা কেজি দরে। বড় আকারের মাছ অর্থাৎ প্রতিটা ১ কেজির উপরে যেগুলো আছে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২২ শ হতে ২৫ শ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি। সব মিলিয়ে বাজারে যেন ঈদের আনন্দ লেগেছে। কোথাও পা ফেলার সামান্য জায়গাও নেই। চারিদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। যেন মাছের চেয়ে মানুষ বেশী !! দামি ইলিশ মাছ গুলো হাতের নাগালে আসায় সব শ্রেনীর মানুষই মাছ বাজারে এসেছেন ইলিশ কিনতে। ইলিশ ক্রেতা দিনমজুর মোহাম্মদ আলী, জাহাংগীর, হোসেন, ছানোয়ার, রিক্সাচালক মানিক মিয়া, আনছার আলী, ইশার আলী, আফজাল হোসেনসহ শতাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা বললে তারা তাদের সাধ্যের মধ্যে ইলিশ কেনার আনন্দের কথা বলেছেন। তারা আরো বলেছেন, ছোট হোক। ইলিশ মাছতো। এতো কম দামে মাছ কেনার এই সুয়োগ আর পাওয়া যাবে না। তাই সময় থাকতেই এক কেজি ইলিশ কিনে রাখি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
মা ইলিশ রক্ষায় উপজেলার প্রশাসনিক অভিযান শেষ হয়েছে ॥ ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২১ দিন মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা-যমুনায় প্রশাসনিক অভিযান চলেছে। এসব অভিযানে প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্তেও উপজেলা প্রশাসন গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২১ দিনে শিবালয়,হরিরামপুর,দৌলতপুর নৌ পথের পদ্মা-যমুনায় ২৮৭ টি অভিযান পরিচালনা করে ৭৭ টি মোবাইল কোর্ট করেছেন। এতে মা ইলিশ নিধনে মামলা হয়েছে ১২৩ টি এবং বিভিন্ন মেয়াদে জেলে দেওয়া হয়েছে ৭২ জনকে। একই সময়ে নিষিদ্ধ জাল পোড়ানো হয়েছে ১২৪.৩৩০ লক্ষ মিটার। যার মূল্য ৩২ লক্ষ ১ হাজার ৮২০ টাকা। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ লক্ষ ২৯৭ টাকা। এসব অভিযানে উদ্ধারকৃত ৩ দশমিক ৪৬১ মেট্রিকটন ইলিশ এলাকার বিভিন্ন এতিম খানায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে জেলা মৎস্য অফিসার সাইফুর রহমান জানিয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে কত টন মা ইলিশ মাছ শিকারীদের হাতে অবৈধ উপায়ে নিধন হয়েছে এমন পরিসংখ্যান তাদের নিকট নেই বললেন তিনি।
বিগত বছর ২০ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ৭০ টি অভিযান পরিচালনা করে ১৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৪.৩৫ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংশ করা হয়েছে। যার মূল্য ৭৯.৭৪ লক্ষ টাকা। একই সাথে .৩২ মেট্রিকটন ইলিশ মাছ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং ২০ টি মামলা করে ৬ জনকে জেলে প্রেরণ করে অন্যান্যদের জরিমানা করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষে অধিকাংশ অভিযানে পরিত্যাক্ত জাল, নৌকা ও ইলিশ জব্দের কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন বলে অনেকেই বিরুপ মন্তব্য করেছেন। যমুনা নদী সিকস্তি শিবালয়ের তেওতার আলোকদিয়া গ্রামের সন্তোষ অভিযোগের সুরে বলেছেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নদীতে একদিকে চলে মা ইলিশ নিধনজজ্ঞ অপরদিকে চলে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান।“মা ইলিশ নিধন বন্ধ ঘোষনার আগেই যদি নদী তীরবর্তী এলাকায় ও চরাঞ্চলে বিশেষভাবে তৈরী ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো জব্দ করা যেত” তাহলে মা ইলিশ নিধন কিছুটা হলেও বন্ধ হতো বলে মনে করেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক শাহজাহান বিশ্বাসসহ সচেতন এলাকাবাসী।
এদিকে অভিয়ান শেষ হওয়ায় আরিচা মাছ বাজার ও পাটুরিয়া এবং দাশকান্দি এলাকায় প্রচুর পরিমানে ইলিশ মাছ উঠেছে। একই সাথে এলাকার সাধারণ ক্রেতারা এসব এলাকায় হুমড়ি ক্ষেয়ে পড়েছেন মাছ কেনার জন্য। মানুষের ভীড়ে মাছ বাজারে পা ফেলার জায়গাও যেন নেই। মাছ বাজারে মাত্র ৫ শত টাকা কেজি দরেও ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে মাছের আকার কিছুটা ছোট। প্রতিটার ওজন ২ শ গ্রাম হতে ৩ শ গ্রাম। মাঝারিড় আকারের মাছও বিক্রি হচ্ছে ১২/১৩ শত টাকা কেজি দরে। বড় আকারের মাছ অর্থাৎ প্রতিটা ১ কেজির উপরে যেগুলো আছে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২২ শ হতে ২৫ শ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি। সব মিলিয়ে বাজারে যেন ঈদের আনন্দ লেগেছে। কোথাও পা ফেলার সামান্য জায়গাও নেই। চারিদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। যেন মাছের চেয়ে মানুষ বেশী !! দামি ইলিশ মাছ গুলো হাতের নাগালে আসায় সব শ্রেনীর মানুষই মাছ বাজারে এসেছেন ইলিশ কিনতে। ইলিশ ক্রেতা দিনমজুর মোহাম্মদ আলী, জাহাংগীর, হোসেন, ছানোয়ার, রিক্সাচালক মানিক মিয়া, আনছার আলী, ইশার আলী, আফজাল হোসেনসহ শতাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা বললে তারা তাদের সাধ্যের মধ্যে ইলিশ কেনার আনন্দের কথা বলেছেন। তারা আরো বলেছেন, ছোট হোক। ইলিশ মাছতো। এতো কম দামে মাছ কেনার এই সুয়োগ আর পাওয়া যাবে না। তাই সময় থাকতেই এক কেজি ইলিশ কিনে রাখি।