কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী সেনাক্যাম্প এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ -সংবাদ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহি মারছা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীতমুখী নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ নারী পর্যটক নিহত হয়েছেন। এ সময় নোহা মাইক্রোবাস চালক, তার বাবা ও শিশু ছেলেসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী হাঁসের দিঘিস্থ সেনাক্যাম্পের অদুরে ঢালা এলাকায় ঘটেছে এ সড়ক দুর্ঘটনা।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা এলাকার এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আকতার (৬২), তার মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২৪), ছেলে আমিনুল হকের স্ত্রী লিজা মজুমদার (২৮), লিজার মা রাশেদা বেগম শিল্পী (৫০), তার বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা মজুমদার (২৪)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন এনামুল হক (৭২), তার ছেলে মাইক্রোবাসের চালক আমিনুল হক (৪০) এবং আমিনুলের শিশু সন্তান সাদমান (৬)।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, নিহতদের একজন নিকটআত্মীয় জান্নাতুল ফেরদৌসের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে। তিনি বুধবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে নিহতদের পরিচয় সনাক্ত করেছেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৮) নামের ওই নারী জানিয়েছে, বুধবার ভোরে আমিনুল হক তার স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা-বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি নিজেই (আমিনুল হক) তার ব্যক্তিগত নোহা মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী সেনাক্যাম্পের অদুরে ঢালা এলাকায় পৌঁছালে চট্টগ্রামমুখী মারছা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলে এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আমিনুল হকের স্ত্রী, মা-বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকা মারা যান। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আমিনুল, তার বাবা এনামুল হক ও তার শিশু সন্তান সাদমান। তাদেরকে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার জানিয়েছেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল হক তার স্ত্রী, শিশু মেয়ে, বৃদ্ধা মা-বাবা ও শ্বাশুড়ি, বিশ্বিবদ্যালয়ে পড়ুয়া বোন ও শ্যালিকাকে নিয়ে নিজের নোহা মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজারের বেড়াতে যাবার পথে এ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
চকরিয়া থানা পুলিশ, মালুঁমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীবাহি মারছা পরিবহনের একটি বাস বুধবার সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে চকরিয়ার ফাসিয়াখালী সেনাক্যাম্প এলাকা অতিক্রমকালে বাসের সঙ্গে কক্সবাজারমুখী পর্যটকবাহি প্রাইভেট নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নোহা মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
এসময় ঘটনাস্থলে ৩ নারী এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও ২ নারী মারা যায়। চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা সবাই কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একই পরিবারের সদস্য। তারা একটি নোহা মাইক্রোবাস যোগে কক্সবাজার বেড়াতে যাচ্ছিলেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী, চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে মহাসড়কে দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ঘণ্টার বেশি সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে সড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে অবশ্য হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে নিলে মহাসড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও হাসপাতালে নেয়ার পর দুই নারী মারা গেছেন। নিহতরা সবাই নোহা মাইক্রোবাসের যাত্রী। তারা স্ব পরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। মরদেহগুলো আমাদের হেফাজতে রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, নিহত পাঁচ নারীর মরদেহগুলোর প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এরইমধ্যে নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ঢাকা থেকে চকরিয়া এসে পৌঁছলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী সেনাক্যাম্প এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ -সংবাদ
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহি মারছা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীতমুখী নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ নারী পর্যটক নিহত হয়েছেন। এ সময় নোহা মাইক্রোবাস চালক, তার বাবা ও শিশু ছেলেসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী হাঁসের দিঘিস্থ সেনাক্যাম্পের অদুরে ঢালা এলাকায় ঘটেছে এ সড়ক দুর্ঘটনা।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা এলাকার এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আকতার (৬২), তার মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২৪), ছেলে আমিনুল হকের স্ত্রী লিজা মজুমদার (২৮), লিজার মা রাশেদা বেগম শিল্পী (৫০), তার বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা মজুমদার (২৪)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন এনামুল হক (৭২), তার ছেলে মাইক্রোবাসের চালক আমিনুল হক (৪০) এবং আমিনুলের শিশু সন্তান সাদমান (৬)।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, নিহতদের একজন নিকটআত্মীয় জান্নাতুল ফেরদৌসের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে। তিনি বুধবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে নিহতদের পরিচয় সনাক্ত করেছেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৮) নামের ওই নারী জানিয়েছে, বুধবার ভোরে আমিনুল হক তার স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা-বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি নিজেই (আমিনুল হক) তার ব্যক্তিগত নোহা মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী সেনাক্যাম্পের অদুরে ঢালা এলাকায় পৌঁছালে চট্টগ্রামমুখী মারছা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলে এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আমিনুল হকের স্ত্রী, মা-বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকা মারা যান। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আমিনুল, তার বাবা এনামুল হক ও তার শিশু সন্তান সাদমান। তাদেরকে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার জানিয়েছেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল হক তার স্ত্রী, শিশু মেয়ে, বৃদ্ধা মা-বাবা ও শ্বাশুড়ি, বিশ্বিবদ্যালয়ে পড়ুয়া বোন ও শ্যালিকাকে নিয়ে নিজের নোহা মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজারের বেড়াতে যাবার পথে এ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
চকরিয়া থানা পুলিশ, মালুঁমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীবাহি মারছা পরিবহনের একটি বাস বুধবার সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে চকরিয়ার ফাসিয়াখালী সেনাক্যাম্প এলাকা অতিক্রমকালে বাসের সঙ্গে কক্সবাজারমুখী পর্যটকবাহি প্রাইভেট নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নোহা মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
এসময় ঘটনাস্থলে ৩ নারী এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও ২ নারী মারা যায়। চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা সবাই কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একই পরিবারের সদস্য। তারা একটি নোহা মাইক্রোবাস যোগে কক্সবাজার বেড়াতে যাচ্ছিলেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী, চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে মহাসড়কে দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ঘণ্টার বেশি সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে সড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে অবশ্য হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে নিলে মহাসড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও হাসপাতালে নেয়ার পর দুই নারী মারা গেছেন। নিহতরা সবাই নোহা মাইক্রোবাসের যাত্রী। তারা স্ব পরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। মরদেহগুলো আমাদের হেফাজতে রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, নিহত পাঁচ নারীর মরদেহগুলোর প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এরইমধ্যে নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ঢাকা থেকে চকরিয়া এসে পৌঁছলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।