চাঁদপুরের কচুয়ায় আলু চাষিরা ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছেন। হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর অর্ধেকেরও বেশি এখনও অবিক্রিত রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যে হিমাগার থেকে আলু বের করার কথা থাকলেও রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে আগাম জাতের আলু বাজারজাত শুরু হওয়ায় সংরক্ষিত আলুর ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আলু ব্যবসায়ী, হিমাগার মালিক এবং আলু চাষিরা।
কৃষকের জমিতে আলু উৎপাদন হতে হিমাগারে সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজি আলু দর ২৮-২৯ টাকা পড়লেও ভালো মানের আলু ৭-৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লাভের আশায় সংরক্ষিত এসব আলু বিক্রি করতে না পারলে প্রধান অর্থকরী ফসল আলুতে এ বছর অধিক লোকসানের সম্মুখীন হবেন আলু চাষে সংশিষ্টরা। ফলে আলু চাষে রাজধানী হিসেবে খ্যাত কচুয়ার রবি মৌসুমে আবাদ করতে পারবেন না। আলু চাষির অনেকেই আসন্ন এতে অনেক জমি অনাবাদি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর এ উপজেলায় আলুর আবাদ লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮২৫ হেক্টর। অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় কচুয়ার ৩টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেছেন। তন্মধ্যে কচুয়ার বাতাপুকুরীয়া মনার্ক কোল্ড স্টোরেজে চলতি বছর ২ লাখ ৮৪ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে পরে রয়েছে। এতে আলুর দাম কম হওয়ায় মালিক ও ব্যবসায়ীরা কঠিন লসের মুখে পড়বেন। এছাড়াও কচুয়ার দুটি হিমাগারে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯শ’ ৯৫ বস্তার মধ্যে প্রায় অর্ধ লাখ বস্তা আলু অবিক্রিত রয়েছে।
ক্ষতির কারণ জানতে চাইলে কৃষক, সরেজমিন ঘুরে আলুর দাম পড়ে যাওয়া ব্যবসায়ী এবং হিমাগার সংশিষ্টরা জানান, সারাদেশে এবার চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। তাছাড়া বছরজুড়ে নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। এতে আলুর চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। এছাড়া এক সময় আলু উৎপাদনে কচুয়ার একক আধিপত্য থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ এ উপজেলায় ভালো মানের আলু উৎপাদন হচ্ছে এর ফলে অন্যান্য জেলায় কচুয়ার আলুর তেমন চাহিদা নেই। অধিকাংশ উপজেলায় উৎপাদিত আলু স্থানীয় চাহিদা পূরণ করছে। অন্য বছর উলেখযোগ্য পরিমাণ আলু বিদেশে রপ্তানি হতো, এ বছর খুবই স্বল্প পরিমাণ আলু বিদেশে রপ্তানি হয়েছে।
গ্রামের কৃষক ও ব্যবসায়ী নবীর হোসেন, আলী হোসেন, মহসিন পাটওয়ারী জানান, প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলুর সংরক্ষণে খরচ হয়েছে ১ হাজার ২শত টাকা থেকে ১ হাজার ৪শত টাকা আর বর্তমানে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫০-৬৫০ টাকা। তাই কৃষকরা আলু নিতে হিমাগারমুখী হচ্ছেন না।
মনার্ক হিমাগারের আলু চাষি ও ব্যবসায়ী ইব্রাহীম হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে আলু বেচার চেষ্টা করছি, ক্রেতা নেই। এ অবস্থা চললে কৃষকরা আগামীতে আর আলু রোপন করবেনা।
মনার্ক কোল্ড স্টোরোজের ম্যানেজার কাজী মো. মিজানুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পারলে কোম্পানি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে। হননি, নভেম্বরের মধ্যে আলু বের করতে না কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার তপু আহমেদ বলেন, চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন বেশি হওয়ায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট পূরণে ভালো জাতের আলু রোপণের জন্য কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
চাঁদপুরের কচুয়ায় আলু চাষিরা ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছেন। হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর অর্ধেকেরও বেশি এখনও অবিক্রিত রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যে হিমাগার থেকে আলু বের করার কথা থাকলেও রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে আগাম জাতের আলু বাজারজাত শুরু হওয়ায় সংরক্ষিত আলুর ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আলু ব্যবসায়ী, হিমাগার মালিক এবং আলু চাষিরা।
কৃষকের জমিতে আলু উৎপাদন হতে হিমাগারে সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজি আলু দর ২৮-২৯ টাকা পড়লেও ভালো মানের আলু ৭-৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লাভের আশায় সংরক্ষিত এসব আলু বিক্রি করতে না পারলে প্রধান অর্থকরী ফসল আলুতে এ বছর অধিক লোকসানের সম্মুখীন হবেন আলু চাষে সংশিষ্টরা। ফলে আলু চাষে রাজধানী হিসেবে খ্যাত কচুয়ার রবি মৌসুমে আবাদ করতে পারবেন না। আলু চাষির অনেকেই আসন্ন এতে অনেক জমি অনাবাদি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর এ উপজেলায় আলুর আবাদ লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮২৫ হেক্টর। অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় কচুয়ার ৩টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেছেন। তন্মধ্যে কচুয়ার বাতাপুকুরীয়া মনার্ক কোল্ড স্টোরেজে চলতি বছর ২ লাখ ৮৪ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে পরে রয়েছে। এতে আলুর দাম কম হওয়ায় মালিক ও ব্যবসায়ীরা কঠিন লসের মুখে পড়বেন। এছাড়াও কচুয়ার দুটি হিমাগারে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯শ’ ৯৫ বস্তার মধ্যে প্রায় অর্ধ লাখ বস্তা আলু অবিক্রিত রয়েছে।
ক্ষতির কারণ জানতে চাইলে কৃষক, সরেজমিন ঘুরে আলুর দাম পড়ে যাওয়া ব্যবসায়ী এবং হিমাগার সংশিষ্টরা জানান, সারাদেশে এবার চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। তাছাড়া বছরজুড়ে নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। এতে আলুর চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। এছাড়া এক সময় আলু উৎপাদনে কচুয়ার একক আধিপত্য থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ এ উপজেলায় ভালো মানের আলু উৎপাদন হচ্ছে এর ফলে অন্যান্য জেলায় কচুয়ার আলুর তেমন চাহিদা নেই। অধিকাংশ উপজেলায় উৎপাদিত আলু স্থানীয় চাহিদা পূরণ করছে। অন্য বছর উলেখযোগ্য পরিমাণ আলু বিদেশে রপ্তানি হতো, এ বছর খুবই স্বল্প পরিমাণ আলু বিদেশে রপ্তানি হয়েছে।
গ্রামের কৃষক ও ব্যবসায়ী নবীর হোসেন, আলী হোসেন, মহসিন পাটওয়ারী জানান, প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলুর সংরক্ষণে খরচ হয়েছে ১ হাজার ২শত টাকা থেকে ১ হাজার ৪শত টাকা আর বর্তমানে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫০-৬৫০ টাকা। তাই কৃষকরা আলু নিতে হিমাগারমুখী হচ্ছেন না।
মনার্ক হিমাগারের আলু চাষি ও ব্যবসায়ী ইব্রাহীম হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে আলু বেচার চেষ্টা করছি, ক্রেতা নেই। এ অবস্থা চললে কৃষকরা আগামীতে আর আলু রোপন করবেনা।
মনার্ক কোল্ড স্টোরোজের ম্যানেজার কাজী মো. মিজানুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পারলে কোম্পানি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে। হননি, নভেম্বরের মধ্যে আলু বের করতে না কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার তপু আহমেদ বলেন, চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন বেশি হওয়ায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট পূরণে ভালো জাতের আলু রোপণের জন্য কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।