# ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন
#গবেষণায় বরাদ্দ ২.১২ শতাংশ
#ধনী সন্তানদের বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা অযৌক্তিক : কোষাধ্যক্ষ
#পেনশন স্কিম প্রত্যাখানের প্রস্তাব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বাজেট পাশ করা হয়েছে। এবছরের বাজেটে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৬৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ। গবেষণা মঞ্জুরী বাবদ ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ২.১২ শতাংশ। বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে পাওয়া যাবে ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। এবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৫.৩৭%।
গত বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট প্রস্তাব করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। দুদিনব্যাপী আলোচনা শেষে গতকাল সন্ধ্যায় বাজেট অনুমোদন করা হয়। বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষ সাধন, মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মপ্রয়াস ও উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা প্রদান এবং শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে অধিবেশনের প্রথমদিন তার বক্তব্যে উঠে আসে আবাসন সংকট, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, র্যাগিং ইত্যাদি বিষয়। এদিন তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয় নজর দেওয়া আজকের সামাজিক বাস্তবতায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক অসচ্ছলতা, আবাস্থলের সংকট, বৈষম্য, যৌন হয়রানি, র্যাগিং ইত্যাদি শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এজন্য প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের চার হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
অধিবেশনের প্রথমদিন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ বিমক তার অনুদান যথাযথভাবে বৃদ্ধি করছে না, যা অপ্রত্যাশিত। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে তুলনা করলে এই যৎসামান্য বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির চাইতেও কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেকের জন্য গবেষণায় গড়ে বরাদ্দ হয়েছে ১ লাখ টাকা। এটি পর্যাপ্ত নয়৷ এটি আরও বহুলাংশে বৃদ্ধি করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ধনী সন্তানদের বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা অযৌক্তিক দাবি করে কোষাধ্যক্ষ বলেন, দরিদ্রদের প্রদেয় পরোক্ষ করের টাকায় ধনী পরিবারের সন্তানদের প্রায় বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান অযৌক্তিক। সমাজের বিত্তবান অভিভাবকগণ তাঁদের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার যুক্তিসঙ্গত ব্যয় বহন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে যা থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করো সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করা গেলে সরকারের উপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে কমবে।
শিক্ষক প্রতিনিধির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে শিক্ষকদের বাইরে রাখার দাবি জানান। তার দাবির পক্ষে সমর্থন জানান সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া। এ সময় শিক্ষামন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে শিক্ষকদের দাবি সংবলিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মূল্যায়ন রিপোর্ট তুলে দেওয়া হলে তিনি সংসদীয় কমিটি এটিকে বিশ্লেষণ করে সুপারিশ করবে বলে জানান।
বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪
# ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন
#গবেষণায় বরাদ্দ ২.১২ শতাংশ
#ধনী সন্তানদের বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা অযৌক্তিক : কোষাধ্যক্ষ
#পেনশন স্কিম প্রত্যাখানের প্রস্তাব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বাজেট পাশ করা হয়েছে। এবছরের বাজেটে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৬৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ। গবেষণা মঞ্জুরী বাবদ ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ২.১২ শতাংশ। বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে পাওয়া যাবে ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। এবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৫.৩৭%।
গত বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট প্রস্তাব করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। দুদিনব্যাপী আলোচনা শেষে গতকাল সন্ধ্যায় বাজেট অনুমোদন করা হয়। বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষ সাধন, মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মপ্রয়াস ও উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা প্রদান এবং শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে অধিবেশনের প্রথমদিন তার বক্তব্যে উঠে আসে আবাসন সংকট, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, র্যাগিং ইত্যাদি বিষয়। এদিন তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয় নজর দেওয়া আজকের সামাজিক বাস্তবতায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক অসচ্ছলতা, আবাস্থলের সংকট, বৈষম্য, যৌন হয়রানি, র্যাগিং ইত্যাদি শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এজন্য প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের চার হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
অধিবেশনের প্রথমদিন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ বিমক তার অনুদান যথাযথভাবে বৃদ্ধি করছে না, যা অপ্রত্যাশিত। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে তুলনা করলে এই যৎসামান্য বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির চাইতেও কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেকের জন্য গবেষণায় গড়ে বরাদ্দ হয়েছে ১ লাখ টাকা। এটি পর্যাপ্ত নয়৷ এটি আরও বহুলাংশে বৃদ্ধি করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ধনী সন্তানদের বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা অযৌক্তিক দাবি করে কোষাধ্যক্ষ বলেন, দরিদ্রদের প্রদেয় পরোক্ষ করের টাকায় ধনী পরিবারের সন্তানদের প্রায় বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান অযৌক্তিক। সমাজের বিত্তবান অভিভাবকগণ তাঁদের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার যুক্তিসঙ্গত ব্যয় বহন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে যা থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করো সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করা গেলে সরকারের উপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে কমবে।
শিক্ষক প্রতিনিধির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে শিক্ষকদের বাইরে রাখার দাবি জানান। তার দাবির পক্ষে সমর্থন জানান সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া। এ সময় শিক্ষামন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে শিক্ষকদের দাবি সংবলিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মূল্যায়ন রিপোর্ট তুলে দেওয়া হলে তিনি সংসদীয় কমিটি এটিকে বিশ্লেষণ করে সুপারিশ করবে বলে জানান।