নিউইয়কের উপকণ্ঠে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রচারণা
নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনের প্রচার শেষ। আজ ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগে সর্বশেষ পাওয়া নতুন কয়েক জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। তবে অন্তত একটি জরিপ বলছে, প্রধান তিন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জোহরান ও কুমোর মধ্য যে কারও জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জরিপ দেখলে মনে হয়, বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের উত্তরসূরি কে হবেন- সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশ জমে উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এমারসন কলেজ/পিআইএক্স ১১/দ্য হিলের জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে প্রায় ২৫ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। এ জরিপে জোহরানের প্রতি ৫০ শতাংশ এবং কুমোর প্রতি ২৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন।
রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া কুমোর থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে আছেন। স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন রয়েছে ২১ শতাংশ ভোটারের এবং ৪ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন, এখনও সেই সিদ্ধান্ত নেননি। অর্থাৎ কুমোর খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছেন স্লিওয়া। জোহরানের সমর্থন গত মাসের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়েছে, কুমোর জনসমর্থন ৩ শতাংশ কমেছে, আর স্লিওয়ার সমর্থন বেড়েছে ১১ শতাংশ। এ জরিপ গত ২৫-২৭ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এতে সম্ভাব্য ভোটার ও যারা ইতোমধ্যে ভোট দিয়েছেন, তারা অংশ নিয়েছেন। ক্টএতে এরর অব মার্জিন বা ভুলের পরিমাণ ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এমারসন কলেজ পোলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক স্পেনসার কিমবলের ভাষায়, জোহরান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি জোট গড়ে তুলেছেন। কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন গত মাসে ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে কুমোর সমর্থন ১০ পয়েন্ট কমেছে। জোহরান তরুণ ভোটারদের মধ্যেও শক্ত অবস্থানে আছেন। ৫০ বছরের নিচের ৬৯ শতাংশ ভোটার তাকে সমর্থন করছেন। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সী ভোটারদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ জোহরানকে, ৩১ শতাংশ কুমোকে এবং ২৮ শতাংশ স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মারিস্ট নিউইয়র্ক সিটি জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জোহরান স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমোর চেয়ে ১৬ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়ার তুলনায় জোহরান মামদানি প্রায় ৩২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
জরিপে দেখা যায়, কাকে ভোট দেবেন, সে ব্যাপারে যারা এখনও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেননি- তবে এক প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে আছেন, তাদের মধ্যে জোহরানের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৮ শতাংশ ভোটারের। আর কুমোর প্রতি ৩২ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি ১৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে। এ জরিপ ২৪-২৮ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এতে ত্রুটির সীমা হতে পারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ পয়েন্ট।
এই ফল সেপ্টেম্বরের মারিস্ট জরিপের সঙ্গে প্রায় মিলে গেছে। তখনো বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। ওই সময় জোহরানকে ৪৬ শতাংশ, কুমোকে ৩০ শতাংশ ও স্লিওয়াকে ১৮ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সর্বশেষ মারিস্টের জরিপে দেখা গেছে, স্লিওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালে জোহরানের প্রতি সমর্থন বেড়ে দাঁড়াবে ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে কুমো সমর্থন পাবেন ৪৪ শতাংশ ভোটারের। যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে কুমো ২০২১ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের গত বুধবার প্রকাশিত জরিপে দেখা যায়, জোহরান ৪৩ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটারের সমর্থন পাচ্ছেন। অন্যদিকে কুমোর প্রতি ৩৩ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি মাত্র ১৪ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে।
কুইনিপিয়াকের সহকারী পরিচালক মেরি স্নো বলেন, ‘প্রার্থীরা তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন, আগাম ভোট শুরু হয়েছে, কুমোর চেয়ে জোহরান ১০ পয়েন্ট এগিয়ে, স্লিওয়া অনেক পিছিয়ে। তবে এখনও একটি ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ আছে- সেটি হচ্ছে সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, যা শেষ পর্যায়ে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা গত ৯ অক্টোবরের পর থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সর্বশেষ কুইনিপিয়াক জরিপে দেখা যায়, ২৩-২৭ অক্টোবর সময়ে ৬ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্তহীন ছিলেন, আগের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ৩ শতাংশ। তখন জোহরানের প্রতি ৪৬ শতাংশ, কুমোর প্রতি ৩৩ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি ১৫ শতাংশ সমর্থন ছিল।
তবে গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে দেখা গেছে, প্রতিযোগিতা আগের তুলনায় কিছুটা কাছাকাছি এসেছে। ২৩-২৬ অক্টোবরের জরিপে জোহরানের সঙ্গে কুমোর সমর্থনের পার্থক্য ১০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ জরিপে দেখা গেছে, ৪৪ শতাংশ ভোটার জোহরানের প্রতি এবং ৩৪ শতাংশ কুমোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ১১ শতাংশ ভোটার। গত সেপ্টেম্বরে কুমোর চেয়ে জোহরান ২০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।
সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ডেভিড প্যালিওলোগাস বলেন, এই নির্বাচনে এক ব্যক্তির ভোটাররাই ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি হচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া। তার ১১ শতাংশ ভোট কুমোর জয়ের পথে বড় বাধা। দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে সেই ভোটারদের ৩৬ শতাংশ কুমোকে এবং মাত্র ২ শতাংশ জোহরানকে পছন্দ করেন।
কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া এলাকা থেকে রাজ্যের আইনসভার সদস্য জোহরান প্রচারের বড় অংশ ব্যয় করেছেন মাঝারি ও রক্ষণশীল ভোটারদের আশ্বস্ত করতে। কারণ, তিনি একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট। তিনি পুলিশের বাজেট কমানোর সমর্থক এবং প্যালেস্টাইপন্থি হিসেবে পরিচিত। সাফোক জরিপটি চালিয়েছিল মেয়র এরিক অ্যাডামস কুমোকে সমর্থন জানানোর পর। এই জরিপের ত্রুটির সীমাক্ট ৪ দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট।
স্লিওয়া অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন। এমনকি তার সাবেক নিয়োগকর্তা ও প্রভাবশালী রাজনীতিক ডব্লিউএবিসি রেডিওর মালিক জন ক্যাটসিমাটিডিসও তাকে সরে যেতে বলেছেন। অন্যদিকে কুমো জুনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রাইমারিতে জোহরানের কাছে হেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন।
মারিস্টের অক্টোবর জরিপ অনুযায়ী, শুধু মামদানি ও কুমোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে রিপাবলিকান ভোটারদের ৭৭ শতাংশ কুমোকে এবং মাত্র ১৩ শতাংশ জোহরানকে ভোট দেবেন। এছাড়া রিপাবলিকান অন্য কাউকে ভোট দেবেন এবং ৬ শতাংশ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।
কোনো রাজনৈতিক দলে নিবন্ধিত নন- এমন ভোটারের মধ্যে কুমো পেয়েছেন ৫১ শতাংশ ও জোহরান পেয়েছেন ৪১ শতাংশ।
আগাম ভোটের পরিস্থিতি
মারিস্টের জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য ভোটারদের ৫১ শতাংশ বলেছেন, তারা নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। ৩৮ শতাংশ বলেছেন, তারা কেন্দ্রে গিয়ে আগাম ভোট দেবেন, আর ১২ শতাংশ ডাকযোগে ভোট দেবেন।
ডেমোক্র্যাটদের (৪৮ শতাংশ) তুলনায় রিপাবলিকান (৫৭ শতাংশ) ও অরাজনৈতিক ভোটাররা (৫৬ শতাংশ) বলেছেন, তারা নির্বাচনের দিন ভোট দেবেন। কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়া সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জোহরানের সমর্থন ৫২ শতাংশ, কুমোর ৩২ শতাংশ। স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন মাত্র ১৫ শতাংশ।
নির্বাচনের দিন সরাসরি ভোট দেবেন এমন ভোটার মধ্যে ৪৩ শতাংশ জোহরান মামদানিকে, ৩৩ শতাংশ কুমোকে এবং ১৮ শতাংশ স্লিওয়াকে ভোট দেবেন।
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            নিউইয়কের উপকণ্ঠে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রচারণা
সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনের প্রচার শেষ। আজ ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগে সর্বশেষ পাওয়া নতুন কয়েক জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। তবে অন্তত একটি জরিপ বলছে, প্রধান তিন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জোহরান ও কুমোর মধ্য যে কারও জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জরিপ দেখলে মনে হয়, বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের উত্তরসূরি কে হবেন- সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশ জমে উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এমারসন কলেজ/পিআইএক্স ১১/দ্য হিলের জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে প্রায় ২৫ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। এ জরিপে জোহরানের প্রতি ৫০ শতাংশ এবং কুমোর প্রতি ২৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন।
রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া কুমোর থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে আছেন। স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন রয়েছে ২১ শতাংশ ভোটারের এবং ৪ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন, এখনও সেই সিদ্ধান্ত নেননি। অর্থাৎ কুমোর খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছেন স্লিওয়া। জোহরানের সমর্থন গত মাসের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়েছে, কুমোর জনসমর্থন ৩ শতাংশ কমেছে, আর স্লিওয়ার সমর্থন বেড়েছে ১১ শতাংশ। এ জরিপ গত ২৫-২৭ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এতে সম্ভাব্য ভোটার ও যারা ইতোমধ্যে ভোট দিয়েছেন, তারা অংশ নিয়েছেন। ক্টএতে এরর অব মার্জিন বা ভুলের পরিমাণ ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এমারসন কলেজ পোলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক স্পেনসার কিমবলের ভাষায়, জোহরান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি জোট গড়ে তুলেছেন। কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন গত মাসে ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে কুমোর সমর্থন ১০ পয়েন্ট কমেছে। জোহরান তরুণ ভোটারদের মধ্যেও শক্ত অবস্থানে আছেন। ৫০ বছরের নিচের ৬৯ শতাংশ ভোটার তাকে সমর্থন করছেন। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সী ভোটারদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ জোহরানকে, ৩১ শতাংশ কুমোকে এবং ২৮ শতাংশ স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মারিস্ট নিউইয়র্ক সিটি জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জোহরান স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমোর চেয়ে ১৬ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়ার তুলনায় জোহরান মামদানি প্রায় ৩২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
জরিপে দেখা যায়, কাকে ভোট দেবেন, সে ব্যাপারে যারা এখনও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেননি- তবে এক প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে আছেন, তাদের মধ্যে জোহরানের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৮ শতাংশ ভোটারের। আর কুমোর প্রতি ৩২ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি ১৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে। এ জরিপ ২৪-২৮ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এতে ত্রুটির সীমা হতে পারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ পয়েন্ট।
এই ফল সেপ্টেম্বরের মারিস্ট জরিপের সঙ্গে প্রায় মিলে গেছে। তখনো বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। ওই সময় জোহরানকে ৪৬ শতাংশ, কুমোকে ৩০ শতাংশ ও স্লিওয়াকে ১৮ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সর্বশেষ মারিস্টের জরিপে দেখা গেছে, স্লিওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালে জোহরানের প্রতি সমর্থন বেড়ে দাঁড়াবে ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে কুমো সমর্থন পাবেন ৪৪ শতাংশ ভোটারের। যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে কুমো ২০২১ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের গত বুধবার প্রকাশিত জরিপে দেখা যায়, জোহরান ৪৩ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটারের সমর্থন পাচ্ছেন। অন্যদিকে কুমোর প্রতি ৩৩ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি মাত্র ১৪ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে।
কুইনিপিয়াকের সহকারী পরিচালক মেরি স্নো বলেন, ‘প্রার্থীরা তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন, আগাম ভোট শুরু হয়েছে, কুমোর চেয়ে জোহরান ১০ পয়েন্ট এগিয়ে, স্লিওয়া অনেক পিছিয়ে। তবে এখনও একটি ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ আছে- সেটি হচ্ছে সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, যা শেষ পর্যায়ে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা গত ৯ অক্টোবরের পর থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সর্বশেষ কুইনিপিয়াক জরিপে দেখা যায়, ২৩-২৭ অক্টোবর সময়ে ৬ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্তহীন ছিলেন, আগের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ৩ শতাংশ। তখন জোহরানের প্রতি ৪৬ শতাংশ, কুমোর প্রতি ৩৩ শতাংশ ও স্লিওয়ার প্রতি ১৫ শতাংশ সমর্থন ছিল।
তবে গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে দেখা গেছে, প্রতিযোগিতা আগের তুলনায় কিছুটা কাছাকাছি এসেছে। ২৩-২৬ অক্টোবরের জরিপে জোহরানের সঙ্গে কুমোর সমর্থনের পার্থক্য ১০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ জরিপে দেখা গেছে, ৪৪ শতাংশ ভোটার জোহরানের প্রতি এবং ৩৪ শতাংশ কুমোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ১১ শতাংশ ভোটার। গত সেপ্টেম্বরে কুমোর চেয়ে জোহরান ২০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।
সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ডেভিড প্যালিওলোগাস বলেন, এই নির্বাচনে এক ব্যক্তির ভোটাররাই ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি হচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া। তার ১১ শতাংশ ভোট কুমোর জয়ের পথে বড় বাধা। দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে সেই ভোটারদের ৩৬ শতাংশ কুমোকে এবং মাত্র ২ শতাংশ জোহরানকে পছন্দ করেন।
কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া এলাকা থেকে রাজ্যের আইনসভার সদস্য জোহরান প্রচারের বড় অংশ ব্যয় করেছেন মাঝারি ও রক্ষণশীল ভোটারদের আশ্বস্ত করতে। কারণ, তিনি একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট। তিনি পুলিশের বাজেট কমানোর সমর্থক এবং প্যালেস্টাইপন্থি হিসেবে পরিচিত। সাফোক জরিপটি চালিয়েছিল মেয়র এরিক অ্যাডামস কুমোকে সমর্থন জানানোর পর। এই জরিপের ত্রুটির সীমাক্ট ৪ দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট।
স্লিওয়া অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন। এমনকি তার সাবেক নিয়োগকর্তা ও প্রভাবশালী রাজনীতিক ডব্লিউএবিসি রেডিওর মালিক জন ক্যাটসিমাটিডিসও তাকে সরে যেতে বলেছেন। অন্যদিকে কুমো জুনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রাইমারিতে জোহরানের কাছে হেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন।
মারিস্টের অক্টোবর জরিপ অনুযায়ী, শুধু মামদানি ও কুমোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে রিপাবলিকান ভোটারদের ৭৭ শতাংশ কুমোকে এবং মাত্র ১৩ শতাংশ জোহরানকে ভোট দেবেন। এছাড়া রিপাবলিকান অন্য কাউকে ভোট দেবেন এবং ৬ শতাংশ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।
কোনো রাজনৈতিক দলে নিবন্ধিত নন- এমন ভোটারের মধ্যে কুমো পেয়েছেন ৫১ শতাংশ ও জোহরান পেয়েছেন ৪১ শতাংশ।
আগাম ভোটের পরিস্থিতি
মারিস্টের জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য ভোটারদের ৫১ শতাংশ বলেছেন, তারা নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। ৩৮ শতাংশ বলেছেন, তারা কেন্দ্রে গিয়ে আগাম ভোট দেবেন, আর ১২ শতাংশ ডাকযোগে ভোট দেবেন।
ডেমোক্র্যাটদের (৪৮ শতাংশ) তুলনায় রিপাবলিকান (৫৭ শতাংশ) ও অরাজনৈতিক ভোটাররা (৫৬ শতাংশ) বলেছেন, তারা নির্বাচনের দিন ভোট দেবেন। কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়া সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জোহরানের সমর্থন ৫২ শতাংশ, কুমোর ৩২ শতাংশ। স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন মাত্র ১৫ শতাংশ।
নির্বাচনের দিন সরাসরি ভোট দেবেন এমন ভোটার মধ্যে ৪৩ শতাংশ জোহরান মামদানিকে, ৩৩ শতাংশ কুমোকে এবং ১৮ শতাংশ স্লিওয়াকে ভোট দেবেন।