alt

জাতীয়

রাজাকারের তালিকা

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বললেন, শাহজাহান খান বলতে পারবেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ২৪ মার্চ ২০২৪

রাজাকারের তালিকা তৈরিতে কিছু সমস্যা আছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি আগামী বছরের মার্চে রাজাকারের পুরো তালিকা প্রকাশ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। যদিও এক বছর আগে এই মন্ত্রীই ২০২৪ সালের মার্চে রাজাকারের তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

রাজাকারের তালিকা তৈরির সর্বশেষ অবস্থা বলতে পারছেন না মন্ত্রী। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান ভালো বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।

এই তালিকা তৈরির কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে তো দুই ধরনের লোক ছিল। এক ধরনের মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য হয়ত তালিকাভুক্ত হয়েছে। আরেক ধরনের লোক পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার জন্য করেছে। সেটাই হচ্ছে মূল সমস্যা। আমাদের কাছে একাত্তর সালের তালিকা আছে, কাগজ আছে।’

মোজাম্মেল হক রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবীর চতুর্থ পর্বের তালিকা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব ইশরাত চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের নাম লিখে দিয়েছে, তারা হয়ত অ্যাক্টিভলি পার্ট করেনি, কাজ করেনি। পরবর্তীতে দেখা গেল তারা হয়ত অ্যাক্টিভলি গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জীবন বাঁচানোর জন্য অনেকে হয়ত নাম লিখে রাখছে। তখন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যানদের বলেছে, তালিকা দাও। বানানোর জন্য বলেছে, বানাও।’ কবে নাগাদ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হতে পারে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘তালিকার বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা বলতে পারছি না। আমি মনে করি, শাহজাহান খানের কাছ থেকে এই বিষয়ে আপনারা শুনলে ভালো হয়।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য শাহজাহান খানের সঙ্গে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এক বছর আগে বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া রাজাকারদের তালিকা আসবে ২০২৪ সালের মার্চে। এক বছর পর সেই মন্ত্রী জানালেন, রাজাকারের কোনো তালিকা তার মন্ত্রণালয় করে উঠতে পারেনি।

রাজাকারের তালিকা করার জন্য বিদায়ী সরকারের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের নেতৃত্বে একটা ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উনাকে আহ্বায়ক করে এটা করা হয়েছে যে, রাজাকারের সংজ্ঞা এবং তালিকা প্রয়নের জন্য। অদ্যাবধি আমাদের কাছে উনারা তালিকা হ্যান্ডওভার করেননি, হস্তান্তর করেনি, কোনো লিখিত তালিকা আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।’

গত বছর রাজশাহীর বাগমারায় এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোজ্জামেল হক বলেছিলেন, ‘যারা ঘোষণা দিয়ে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তালিকা প্রকাশের জন্য ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরি হয়েছে।’

তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে হবে কিনা ঠিক নিশ্চিত না। তবে আগামী বছরের মার্চ মাসে পুরো তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’

‘একাত্তর সালের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রক্ষিত আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন তালিকা বানানো অর্থ এটা ফেব্রিকেটেড হতে পারে। তালিকা যদি আমি আজকে তৈরি করি, আমি আপনাকে অপছন্দ করি আপনার নাম ঢুকিয়ে দিতে পারি। আবার উনাকে পছন্দ করি উনি একজন রাজাকার দ্য গ্রেট ছিল; তো উনি আমার ভগ্নিপতি, আপনি বাদ, এরকম সমস্যা তো হতে পারে।’

২০১৯ সালের বিজয় দিবসের আগের দিন দশ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতাবিরোধীর’ তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। ওই তালিকায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের নামও আসে।

এতে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ও সমালোচনা হয়। এরপর সংশোধনের জন্য ওই তালিকা স্থগিত করা হয়। পরে রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা তৈরির সুযোগ রেখে ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ সংসদে পাস হয়।

ওই তালিকার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ইয়েস আই ডিড ইট। বাট আমাদের অ্যাপোলজি করে প্রত্যাহার করতে হয়েছে। আপনি ডকুমেন্ট দেখেন। সেই ডকুমেন্ট আমাদের তৈরি না, একাত্তর সালের ডিসি স্বাক্ষর করা সাইন, এসডিও স্বাক্ষরিত সাইন। একাত্তর সালে হোম মিনিস্ট্রির কাছে যে কাগজ আছে সেগুলো আমাদের কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পাকিস্তানিদের ডকুমেন্ট আছে, আমাদের না। একাত্তর সালে কি আমরা সরকার চালাইছি? কেউ না কেউ চালাইছে তো। তাদের তালিকা আছে না? তারা বেতন দিছে না? তারা অস্ত্র দিছে না? তাদের রেকর্ড আছে না? হোম মিনিস্ট্রিতে সেই রেকর্ড আছে। আমার কাছে সেটা একটা কপি নিয়ে আসছে।’

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ পেলে তারা সেটা চারবার খতিয়ে দেখেন দাবি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাকে যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, আপনি কি করবেন? কারো না কারো ওপরে আপনাকে ডিপেন্ড করতে হয়। বগুড়ায় কে ছিল বা গাজীপুরে কে ছিল? আপনার পক্ষে সম্ভব?’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ২১ বছর ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধের অনেক দালিলিক প্রমাণ ‘নষ্ট করা হয়েছে’ মন্তব্য করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন সেখানে....জামায়াতের ইসলামের যারা রেজ্যুলেশন করে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তারা ক্ষমতায় ছিল।’

সেই সমস্ত দালিলিক প্রমাণ তাদের নষ্ট করার সুযোগ ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে করেন নাই এ কথা মনে করব কেন? রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ওই যারা ছিলেন, তারা অনেক দালিলিক প্রমাণাদি... যেহেতু তাদের স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল, তারা সেগুলো ধ্বংস করেছে, নষ্ট করেছে।’

এ ছাড়া ওই সময় ‘ডিসি অফিসে, এসডিও অফিসে, সার্কেল অফিসারের অফিসে ছিল, যারা সরকারের পক্ষে ওইসব মেনটেইন করেন, তাদের কাছ থেকে সেইসব দালিলিক প্রমাণ’ সরকার পাইনি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী, মুজাহিদরা ক্ষমতায় ছিল।’

ছবি

রোববার থেকে খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিক

ছবি

শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ছবি

থাইল্যান্ডের সঙ্গে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি স্বাক্ষর

ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ

ছবি

বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চায় প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

ছবি

আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

একটানা এতদিন এত তাপ দেখেনি বাংলাদেশ

রোববার খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ‘ভিত্তিহীন’ তথ্য রয়েছে

ছবি

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে বদ্ধপরিকর ইসি

ছবি

থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে ফিরছে দুই বাংলাদেশির লাশ

ছবি

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হলেন এম ইউ কবীর চৌধুরী

বাল্যবিবাহ রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে : মানবাধিকার কমিশন

ছবি

১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি: এলজিআরডি মন্ত্রী

ছবি

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি

ছবি

যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

গ্যাস সংকটে আগামীর ‘ভরসা’ এলএনজি

ছবি

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর : ‘আমার স্বপ্নও ভেঙে গেছে’

ছবি

এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য

ছবি

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

ছবি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ নতুন বিচারক

ছবি

কক্সবাজারে ভোটার হওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা চায় হাই কোর্ট

ছবি

ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

তাপপ্রবাহের এলাকা আরও বাড়বে

ছবি

ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই

ছবি

ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির

ছবি

সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা জব্দ করা জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছে; ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকের সবাই নিরাপদ

ছবি

পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

পদত্যাগ না করেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব

ছবি

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড , আছে লোড শেডিংও

ছবি

বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই

ছবি

ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল

tab

জাতীয়

রাজাকারের তালিকা

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বললেন, শাহজাহান খান বলতে পারবেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ২৪ মার্চ ২০২৪

রাজাকারের তালিকা তৈরিতে কিছু সমস্যা আছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি আগামী বছরের মার্চে রাজাকারের পুরো তালিকা প্রকাশ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। যদিও এক বছর আগে এই মন্ত্রীই ২০২৪ সালের মার্চে রাজাকারের তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

রাজাকারের তালিকা তৈরির সর্বশেষ অবস্থা বলতে পারছেন না মন্ত্রী। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান ভালো বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।

এই তালিকা তৈরির কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে তো দুই ধরনের লোক ছিল। এক ধরনের মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য হয়ত তালিকাভুক্ত হয়েছে। আরেক ধরনের লোক পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার জন্য করেছে। সেটাই হচ্ছে মূল সমস্যা। আমাদের কাছে একাত্তর সালের তালিকা আছে, কাগজ আছে।’

মোজাম্মেল হক রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবীর চতুর্থ পর্বের তালিকা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব ইশরাত চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের নাম লিখে দিয়েছে, তারা হয়ত অ্যাক্টিভলি পার্ট করেনি, কাজ করেনি। পরবর্তীতে দেখা গেল তারা হয়ত অ্যাক্টিভলি গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জীবন বাঁচানোর জন্য অনেকে হয়ত নাম লিখে রাখছে। তখন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যানদের বলেছে, তালিকা দাও। বানানোর জন্য বলেছে, বানাও।’ কবে নাগাদ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হতে পারে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘তালিকার বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা বলতে পারছি না। আমি মনে করি, শাহজাহান খানের কাছ থেকে এই বিষয়ে আপনারা শুনলে ভালো হয়।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য শাহজাহান খানের সঙ্গে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এক বছর আগে বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া রাজাকারদের তালিকা আসবে ২০২৪ সালের মার্চে। এক বছর পর সেই মন্ত্রী জানালেন, রাজাকারের কোনো তালিকা তার মন্ত্রণালয় করে উঠতে পারেনি।

রাজাকারের তালিকা করার জন্য বিদায়ী সরকারের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের নেতৃত্বে একটা ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উনাকে আহ্বায়ক করে এটা করা হয়েছে যে, রাজাকারের সংজ্ঞা এবং তালিকা প্রয়নের জন্য। অদ্যাবধি আমাদের কাছে উনারা তালিকা হ্যান্ডওভার করেননি, হস্তান্তর করেনি, কোনো লিখিত তালিকা আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।’

গত বছর রাজশাহীর বাগমারায় এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোজ্জামেল হক বলেছিলেন, ‘যারা ঘোষণা দিয়ে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তালিকা প্রকাশের জন্য ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরি হয়েছে।’

তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে হবে কিনা ঠিক নিশ্চিত না। তবে আগামী বছরের মার্চ মাসে পুরো তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’

‘একাত্তর সালের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রক্ষিত আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন তালিকা বানানো অর্থ এটা ফেব্রিকেটেড হতে পারে। তালিকা যদি আমি আজকে তৈরি করি, আমি আপনাকে অপছন্দ করি আপনার নাম ঢুকিয়ে দিতে পারি। আবার উনাকে পছন্দ করি উনি একজন রাজাকার দ্য গ্রেট ছিল; তো উনি আমার ভগ্নিপতি, আপনি বাদ, এরকম সমস্যা তো হতে পারে।’

২০১৯ সালের বিজয় দিবসের আগের দিন দশ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতাবিরোধীর’ তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। ওই তালিকায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের নামও আসে।

এতে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ও সমালোচনা হয়। এরপর সংশোধনের জন্য ওই তালিকা স্থগিত করা হয়। পরে রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা তৈরির সুযোগ রেখে ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ সংসদে পাস হয়।

ওই তালিকার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ইয়েস আই ডিড ইট। বাট আমাদের অ্যাপোলজি করে প্রত্যাহার করতে হয়েছে। আপনি ডকুমেন্ট দেখেন। সেই ডকুমেন্ট আমাদের তৈরি না, একাত্তর সালের ডিসি স্বাক্ষর করা সাইন, এসডিও স্বাক্ষরিত সাইন। একাত্তর সালে হোম মিনিস্ট্রির কাছে যে কাগজ আছে সেগুলো আমাদের কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পাকিস্তানিদের ডকুমেন্ট আছে, আমাদের না। একাত্তর সালে কি আমরা সরকার চালাইছি? কেউ না কেউ চালাইছে তো। তাদের তালিকা আছে না? তারা বেতন দিছে না? তারা অস্ত্র দিছে না? তাদের রেকর্ড আছে না? হোম মিনিস্ট্রিতে সেই রেকর্ড আছে। আমার কাছে সেটা একটা কপি নিয়ে আসছে।’

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ পেলে তারা সেটা চারবার খতিয়ে দেখেন দাবি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাকে যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, আপনি কি করবেন? কারো না কারো ওপরে আপনাকে ডিপেন্ড করতে হয়। বগুড়ায় কে ছিল বা গাজীপুরে কে ছিল? আপনার পক্ষে সম্ভব?’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ২১ বছর ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধের অনেক দালিলিক প্রমাণ ‘নষ্ট করা হয়েছে’ মন্তব্য করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন সেখানে....জামায়াতের ইসলামের যারা রেজ্যুলেশন করে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তারা ক্ষমতায় ছিল।’

সেই সমস্ত দালিলিক প্রমাণ তাদের নষ্ট করার সুযোগ ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে করেন নাই এ কথা মনে করব কেন? রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ওই যারা ছিলেন, তারা অনেক দালিলিক প্রমাণাদি... যেহেতু তাদের স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল, তারা সেগুলো ধ্বংস করেছে, নষ্ট করেছে।’

এ ছাড়া ওই সময় ‘ডিসি অফিসে, এসডিও অফিসে, সার্কেল অফিসারের অফিসে ছিল, যারা সরকারের পক্ষে ওইসব মেনটেইন করেন, তাদের কাছ থেকে সেইসব দালিলিক প্রমাণ’ সরকার পাইনি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী, মুজাহিদরা ক্ষমতায় ছিল।’

back to top