বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, কিছু শিক্ষিত ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে গণভোট ও সনদের মতো বিষয়গুলো দেশের মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েকটা দল বলছে নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আর আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।”
এরপর তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, “আপনারা কি এসব গণভোট বা সনদ বোঝেন? এসব বোঝে শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক, যারা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। আমরাও মেনে নিয়েছি—তাঁরা যত সংস্কার করতে চান, তাতে আমরা রাজি আছি। তবে যেটাতে রাজি হব না, সেটি পার্লামেন্টে যাবে, সেখানে আলোচনা–বিতর্ক হবে, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
‘মানুষ ভোট দিতে চায়’
দেশে চলমান সংকটকে পরিকল্পিত নাটক বলে আখ্যা দেন বিএনপির মহাসচিব। তাঁর ভাষায়, “আজকের সংকট তৈরি করেছে ও নাটক সাজিয়েছে সরকার। সাধারণ মানুষ সব কিছু বুঝে, তবে তারা শুধু ভোট দিতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরে আমরা কোনো নির্বাচন করতে পারিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েও আগের রাতে ভোট নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তিনি পালিয়ে গিয়ে তাঁর দলীয় নেতাকর্মীদের অসহায় অবস্থায় ফেলে গেছেন। এতে বোঝা যায়, জনগণ ও কর্মীদের প্রতি তাঁর কোনো দরদ নেই। আমরা এই মাটির মানুষ, এখানেই জন্ম, এখানেই মৃত্যু—দেশের মাটি ছেড়ে কখনো যাব না।”
‘মানুষের কষ্ট এই সরকার বোঝে না’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “ধানের দাম নেই, আলুতেও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষক লাভবান হতে পারছেন না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমান সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না। অন্তর্বর্তী সরকার ভোট করে আসেনি, আমরা সবাই মিলে এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু সরকারের পেছনে কোনো জনসমর্থন নেই, তাই তারা মানুষের দুঃখ বুঝতে পারে না।”
‘এটা আমার শেষ নির্বাচন’
নিজের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামীর নির্বাচনই তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন হতে পারে।
তিনি বলেন, “আমি আপনাদেরই মানুষ। বয়স হয়েছে, কত দিন বাঁচব জানি না। আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করি—কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি, কিন্তু আপনাদের ছেড়ে যাইনি। এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। নির্বাচনের সময় শক্তি থাকবে কি না জানি না। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমার শেষ নির্বাচনে আমাকে সহযোগিতা করবেন। ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাদের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন।”
মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, কিছু শিক্ষিত ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে গণভোট ও সনদের মতো বিষয়গুলো দেশের মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েকটা দল বলছে নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আর আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।”
এরপর তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, “আপনারা কি এসব গণভোট বা সনদ বোঝেন? এসব বোঝে শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক, যারা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। আমরাও মেনে নিয়েছি—তাঁরা যত সংস্কার করতে চান, তাতে আমরা রাজি আছি। তবে যেটাতে রাজি হব না, সেটি পার্লামেন্টে যাবে, সেখানে আলোচনা–বিতর্ক হবে, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
‘মানুষ ভোট দিতে চায়’
দেশে চলমান সংকটকে পরিকল্পিত নাটক বলে আখ্যা দেন বিএনপির মহাসচিব। তাঁর ভাষায়, “আজকের সংকট তৈরি করেছে ও নাটক সাজিয়েছে সরকার। সাধারণ মানুষ সব কিছু বুঝে, তবে তারা শুধু ভোট দিতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরে আমরা কোনো নির্বাচন করতে পারিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েও আগের রাতে ভোট নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তিনি পালিয়ে গিয়ে তাঁর দলীয় নেতাকর্মীদের অসহায় অবস্থায় ফেলে গেছেন। এতে বোঝা যায়, জনগণ ও কর্মীদের প্রতি তাঁর কোনো দরদ নেই। আমরা এই মাটির মানুষ, এখানেই জন্ম, এখানেই মৃত্যু—দেশের মাটি ছেড়ে কখনো যাব না।”
‘মানুষের কষ্ট এই সরকার বোঝে না’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “ধানের দাম নেই, আলুতেও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষক লাভবান হতে পারছেন না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমান সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না। অন্তর্বর্তী সরকার ভোট করে আসেনি, আমরা সবাই মিলে এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু সরকারের পেছনে কোনো জনসমর্থন নেই, তাই তারা মানুষের দুঃখ বুঝতে পারে না।”
‘এটা আমার শেষ নির্বাচন’
নিজের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামীর নির্বাচনই তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন হতে পারে।
তিনি বলেন, “আমি আপনাদেরই মানুষ। বয়স হয়েছে, কত দিন বাঁচব জানি না। আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করি—কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি, কিন্তু আপনাদের ছেড়ে যাইনি। এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। নির্বাচনের সময় শক্তি থাকবে কি না জানি না। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমার শেষ নির্বাচনে আমাকে সহযোগিতা করবেন। ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাদের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন।”
মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।