বাংলাদেশ ১(৩) : ভারত ১ (২)
সাম্প্রতিক সময়ে মেয়েদের সব বিভাগের ফুটবলেই শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে থাকে বাংলাদেশ- ভারত। তুমুল উত্তেজনা রোমাঞ্চ মিশে থাকে সেই লড়াইয়ে। রোববার অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফ ফুটবলের ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারিয়ে আরও একটি শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ।
১৭ মাস পর হিমালয়ের দেশটিতে আবার উড়ল লাল সবুজের পতাকা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিনিয়র সাফে দাপটের সঙ্গে খেলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাবিনারা। এবার অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টেও দাপটের সঙ্গে খেলে ট্রফি জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে টসকা-ে ভারতের সঙ্গে ট্রফি ভাগাভাগি করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এবার আর সেই সুযোগ ভারতকে দেয়নি কিশোরীরা। তেরঙ্গাদের হারিয়েই শিরোপা জয়ের উল্লাস করেছেন অর্পিতা বিশ্বাস, সুরভী আকন্দরা।
এবার চার দলের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের পুরোটা জুড়েই ফেবারিট ছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে নেপালকে ২-০ গোলে, ভারতকে ৩-১ গোলে এবং ভুটানকে ৬-০ গোলে হারিয়ে সেরা দল হিসেবেই ফাইনালে উঠে এসেছিলেন অর্পিতা বিশ্বাসরা। আর ফাইনালে সমানে সমান লড়ে টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করেছে লাল-সবুজের মেয়েরা। দলীয় সাফল্যের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত অর্জনও রয়েছে অনেক। চার দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সুরভী আকন্দ প্রীতি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পাঁচ গোলের পাশাপাশি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটাও অল্পের জন্য মিস করেছেন প্রীতি। ভারতের আনুষ্কা শর্মা ছয় গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার স্বীকৃতি পেয়েছেন। সর্বোচ্চ গোলদাতা ভারত পেলেও সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের গোলকিপার ইয়ারজান। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দু’টি গোল হজম করেছে। পাশাপাশি ফাইনালে টাইব্রেকারে দুর্দান্ত সেভ করেছেন বাংলাদেশের এই গোলকিপার। তাই সেরা গোলকিপারের পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন তিনি।
ফাইনাল ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশ এলোমেলো ফুটবল খেললেও আস্তে আস্তে গুছিয়ে ওঠে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে। ক্রানুচিংয়ের বদলে অনন্যা মুরমু বিথি ও ফাতেমা আক্তারের জায়গায় মমিতাকে নামানোর পর বাংলাদেশের খেলার গতি বদলে যায়। ভারতের ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করে পরে সফল হয় মেয়েরা। ফাইনালে বাংলাদেশকে সেরার খেতাব জেতানোর কারিগর গোলকিপার ইয়ারজান বেগম। টাইব্রেকারে দিবানির শট ঠেকিয়েই হাত উঁচিয়ে দৌঁড় দিলেন ইয়ারজান। তখন পুরো বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য গোলকিপারকে ছোঁয়া। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপনের মধ্যমনি হয়ে গেলেন তিনি।
ম্যাচ শেষে আনন্দে আত্মহারা ইয়ারজান বেগম বলেন, ‘আমার অনেক ভালো লাগছে। প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেললাম। সেরা গোলকিপার হওয়ার অনুভূতিই আলাদা। কোচকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে এ পর্যন্ত আনার জন্য। অনেক খুশি আজকে আমি। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলে সেরা হলাম।’ এই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেন তার বাবা ও গোলকিপার কোচ আরিফুর রহমান পান্নুকে। এই উৎসর্গ করার কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। পরে আর প্রতিক্রিয়াই দিতে পারেননি।
এক নজরে সাফ অ-১৬ নারী ফুটবল
চ্যাম্পিয়ন : বাংলাদেশ
রানার্সআপ : ভারত
ফেয়ার প্লে : ভুটান
সর্বোচ্চ গোলদাতা : আনুষ্কা কুমারী-৬ গোল (ভারত)
সেরা খেলোয়াড় : সুরভী আকন্দ (বাংলাদেশ)
সেরা গোলকিপার: ইয়ারজান বেগম (বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ১(৩) : ভারত ১ (২)
রোববার, ১০ মার্চ ২০২৪
সাম্প্রতিক সময়ে মেয়েদের সব বিভাগের ফুটবলেই শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে থাকে বাংলাদেশ- ভারত। তুমুল উত্তেজনা রোমাঞ্চ মিশে থাকে সেই লড়াইয়ে। রোববার অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফ ফুটবলের ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারিয়ে আরও একটি শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ।
১৭ মাস পর হিমালয়ের দেশটিতে আবার উড়ল লাল সবুজের পতাকা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিনিয়র সাফে দাপটের সঙ্গে খেলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাবিনারা। এবার অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টেও দাপটের সঙ্গে খেলে ট্রফি জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে টসকা-ে ভারতের সঙ্গে ট্রফি ভাগাভাগি করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এবার আর সেই সুযোগ ভারতকে দেয়নি কিশোরীরা। তেরঙ্গাদের হারিয়েই শিরোপা জয়ের উল্লাস করেছেন অর্পিতা বিশ্বাস, সুরভী আকন্দরা।
এবার চার দলের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের পুরোটা জুড়েই ফেবারিট ছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে নেপালকে ২-০ গোলে, ভারতকে ৩-১ গোলে এবং ভুটানকে ৬-০ গোলে হারিয়ে সেরা দল হিসেবেই ফাইনালে উঠে এসেছিলেন অর্পিতা বিশ্বাসরা। আর ফাইনালে সমানে সমান লড়ে টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করেছে লাল-সবুজের মেয়েরা। দলীয় সাফল্যের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত অর্জনও রয়েছে অনেক। চার দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সুরভী আকন্দ প্রীতি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পাঁচ গোলের পাশাপাশি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটাও অল্পের জন্য মিস করেছেন প্রীতি। ভারতের আনুষ্কা শর্মা ছয় গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার স্বীকৃতি পেয়েছেন। সর্বোচ্চ গোলদাতা ভারত পেলেও সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের গোলকিপার ইয়ারজান। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দু’টি গোল হজম করেছে। পাশাপাশি ফাইনালে টাইব্রেকারে দুর্দান্ত সেভ করেছেন বাংলাদেশের এই গোলকিপার। তাই সেরা গোলকিপারের পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন তিনি।
ফাইনাল ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশ এলোমেলো ফুটবল খেললেও আস্তে আস্তে গুছিয়ে ওঠে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে। ক্রানুচিংয়ের বদলে অনন্যা মুরমু বিথি ও ফাতেমা আক্তারের জায়গায় মমিতাকে নামানোর পর বাংলাদেশের খেলার গতি বদলে যায়। ভারতের ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করে পরে সফল হয় মেয়েরা। ফাইনালে বাংলাদেশকে সেরার খেতাব জেতানোর কারিগর গোলকিপার ইয়ারজান বেগম। টাইব্রেকারে দিবানির শট ঠেকিয়েই হাত উঁচিয়ে দৌঁড় দিলেন ইয়ারজান। তখন পুরো বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য গোলকিপারকে ছোঁয়া। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপনের মধ্যমনি হয়ে গেলেন তিনি।
ম্যাচ শেষে আনন্দে আত্মহারা ইয়ারজান বেগম বলেন, ‘আমার অনেক ভালো লাগছে। প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেললাম। সেরা গোলকিপার হওয়ার অনুভূতিই আলাদা। কোচকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে এ পর্যন্ত আনার জন্য। অনেক খুশি আজকে আমি। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলে সেরা হলাম।’ এই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেন তার বাবা ও গোলকিপার কোচ আরিফুর রহমান পান্নুকে। এই উৎসর্গ করার কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। পরে আর প্রতিক্রিয়াই দিতে পারেননি।
এক নজরে সাফ অ-১৬ নারী ফুটবল
চ্যাম্পিয়ন : বাংলাদেশ
রানার্সআপ : ভারত
ফেয়ার প্লে : ভুটান
সর্বোচ্চ গোলদাতা : আনুষ্কা কুমারী-৬ গোল (ভারত)
সেরা খেলোয়াড় : সুরভী আকন্দ (বাংলাদেশ)
সেরা গোলকিপার: ইয়ারজান বেগম (বাংলাদেশ