সুলতান আহমদ
একুশ শতকের প্রথম দশক পর্যন্ত বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়গুলো ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের অনুরূপ। ২০১১ তে শুরু হলো ভাঙার খেলা। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে কেটে টুকরো টুকরো করে বানানো হলো একাধিক মন্ত্রণালয়। একটি মন্ত্রণালয় নিয়েই শুরু হোক আলোচনা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে কেটে করা হলোÑ (১) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, (২) রেলপথ মন্ত্রণালয়, (৩) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, (৪) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
প্রথমে আলোচনা করা যাক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নিয়ে। নতুন সড়ক তৈরিতে খরচ বেড়ে হলো প্রতি কিলোমিটারে পৃথিবীর সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, কোন প্রকল্পই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। মনে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেইন প্রকল্পের কাজ। নির্ধারিত সময়ের ৬-৭ বছর পর শেষ হলো প্রকল্পের কাজ। মানে দাঁড়াল, জনগণকে ওই প্রকল্পের সুবিধাবঞ্চিত রাখা হলো ৬-৭ বছর। অপর দিকে, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার বছর-দুইয়ের মধ্যেই শুরু করতে হলো মেরামত। কী চমৎকার!
পুরান রাস্তা মেরামতের পর বছর না ঘুরতেই খানা-খন্দক দেখা দেয়। পিচ ঢালাই করার পর নিচে হাত ঢুকিয়েই ফড় ফড় করে উঠান যায় (ফেসবুকের কল্যাণে জনগণ উন্নয়নের সে চেহারা দেখে মুখ টিপে হাসে)। বড় বড় সেতুর মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে অন্যান্য দেশের তুলনায় ৩-৪ গুনের অধিক অর্থ খরচের মাধ্যমে ‘মেগা দুর্নীতি’র অপবাদ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ৭-৮ বছর পর কাজ শেষ হয়। ঢাকা মেট্রোরেলের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের আগে। মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের ২০১৮ এর নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেছিলেন, ওই নির্বাচনের আগের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মেট্রোরেল চালু করা হবে। তা চালু হলো ২০২৪ সালে।
সড়ক পরিবহনের বিশৃঙ্খলা সর্বজনবিদিত। ছাল-বাকলা ওঠা ফিটনেস ও রোড পারমিটবিহীন লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস ঢাকার রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, বায়ুদূষণে ঢাকা শহরের স্থান পৃথিবীর ১ নম্বরে থাকা নিশ্চিত করা হয়েছে। আর সড়কে চাঁদাবাজিত নির্বিঘেœ দলীয় ক্যাডার বাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্বৃত্ত বাস-ট্রাক মালিক সমিতিগুলোর কাছে পরিবহন খাত পুরোপুরি জিম্মি অবস্থায় দশক দশক ধরে। সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে পরিকল্পনার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনাকে ভাগ্যলিপি মেনে নিয়েই জনগণ চলাচল করছে।
এস আলম গ্রুপ দশক তিন আগে দুটি বাস নিয়ে পরিবহন ব্যবসায় নেমে, এখন কয়েকটি ব্যাংকের মালিক। অপরদিকে, সরকারি বিআরটিসির পরিবহন ব্যবসা বহু আগেই লালবাতি জ্বালিয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে এ পরিবহন ব্যবসাকে টাটা কোম্পানির বাজেটে আর্থিক সহায়তা দানের সেবা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ব্যর্থ ও অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত।
রেলপথ মন্ত্রণালয় :
ফেইসবুকের সৌজন্যে বিগত রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর একটি কথোপকথন নিম্নরূপ : ‘মনে হয় এই প্রথম বিনা টিকেটে ট্রেনে চড়লাম।’ মন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের বিনা টিকেটে ভ্রমণ প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধার আওতায় পড়ে কিনা জানা নেই। সে যাকগে। ট্রেনের দুর্ঘটনা, টিকেট কেলেঙ্কারি, সিডিউল বিপর্যয়, লোকশান দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। যাত্রীসেবার মান নিম্নমুখী। বিনা টিকেটধারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্নীতি যেন পিছু ছাড়ছে না।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় :
দেশের পতাকাবাহী সংস্থা বাংলাদেশ বিমান সিডিউল অনুযায়ী চলাচল করার ঘটনা বিরল। বিমানে টিকেট কাটতে গেলে টিকেট পাওয়া যায় না। অথচ লক্ষ্য করা যায়, বিমানটি চলাচল করছে অনেক খালি সিট নিয়ে। বিমানের অনেক এজেন্টই রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বলে তারা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। অনেক এজেন্ট বছরের পর বছর বিক্রীত টিকেটের টাকা পরিশোধ করছে না। অনেক এজেন্ট অন্যান্য দেশের বিমানের দালাল হিসেবে কাজ করে। যাত্রীসেবার মান সন্তোষজনক নয়।
ঢাকা বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীসেবার মান জঘন্য। যারা নিজেদের শ্রম দিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সচল রাখে, তারা ঢাকা বিমানবন্দরে সব সময়ই দুর্ব্যবহারের শিকার হন। দুর্বৃত্ত ঋণখেলাপি, রাজনীতিবিদ, তথাকথিত বড় লোকরা পায় ভিআইপি মর্যাদা, সেখান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শ্রমিক ভাইয়েরা পাওয়ার কথা ছিল ভিআইপি মর্যাদা। আর ল্যাগেজ কেটে তাদের কষ্টার্জিত অর্থে কেনা মালামাল লুট করার সচিত্র প্রতিবেদন প্রচারিত হয় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। এ ধরনের নিকৃষ্ট ও লজ্জাকর ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। অথচ এটা বন্ধ করার কোন পরিকল্পিত উদ্যোগ কখনও নিতে দেখা যায়নি। ঢাকা বিমানবন্দর যেন দুর্বৃত্তদের স্বর্গরাজ্য। আর বিমান কেনার নামে চলছে দুর্নীতির হরিলুট।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় :
নদ-নদীত দুর্বৃত্ত অবৈধ দখলদাররা গিলে খাচ্ছে। আর পানির দূষণ এমন পর্যায়ে যে, খাওয়াত দূরের কথা, ওই পানিতে এমনকি গোসল করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। লঞ্চ-ফেরি-বার্জ দুর্র্ঘটনা কি কমেছে? ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল কি বন্ধ হয়েছে? কিছুই হয়নি।
মন্ত্রণালয়কে ভাগ করে নতুন মন্ত্রণালয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা সৃষ্টি ও উন্নতমানের যাত্রী ও জণসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে; উপরোল্লেখিত পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, সে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। শৃঙ্খলা ও সেবার মান দুটোই আগের একক ‘যোগাযোগ’ মন্ত্রণালয় হতে ক্রমান্নয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে।
বাংলাদেশে পরিবহনের একটা খাত আছে, যেখানে যানবাহনের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। এ খাতটিতে চালকের সংখ্যা যানবাহনের সংখ্যার ন্যূনতম দ্বিগুণ। খাতটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এ বাহনটির নাম হল রিকশা। তাই রিকশা মন্ত্রণালয় গঠন এখন সময়ের দাবি।
তাহলে এতে লাভ হয়েছে কাদের? লাভ হয়েছে রাজনীতবিদ (মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়েছে), আর আমলাতন্ত্রের (আমলার সংখ্যা বাড়াতে হয়েছে)।
[লেখক : চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক ও ডিন]
সুলতান আহমদ
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
একুশ শতকের প্রথম দশক পর্যন্ত বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়গুলো ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের অনুরূপ। ২০১১ তে শুরু হলো ভাঙার খেলা। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে কেটে টুকরো টুকরো করে বানানো হলো একাধিক মন্ত্রণালয়। একটি মন্ত্রণালয় নিয়েই শুরু হোক আলোচনা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে কেটে করা হলোÑ (১) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, (২) রেলপথ মন্ত্রণালয়, (৩) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, (৪) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
প্রথমে আলোচনা করা যাক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নিয়ে। নতুন সড়ক তৈরিতে খরচ বেড়ে হলো প্রতি কিলোমিটারে পৃথিবীর সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, কোন প্রকল্পই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। মনে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেইন প্রকল্পের কাজ। নির্ধারিত সময়ের ৬-৭ বছর পর শেষ হলো প্রকল্পের কাজ। মানে দাঁড়াল, জনগণকে ওই প্রকল্পের সুবিধাবঞ্চিত রাখা হলো ৬-৭ বছর। অপর দিকে, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার বছর-দুইয়ের মধ্যেই শুরু করতে হলো মেরামত। কী চমৎকার!
পুরান রাস্তা মেরামতের পর বছর না ঘুরতেই খানা-খন্দক দেখা দেয়। পিচ ঢালাই করার পর নিচে হাত ঢুকিয়েই ফড় ফড় করে উঠান যায় (ফেসবুকের কল্যাণে জনগণ উন্নয়নের সে চেহারা দেখে মুখ টিপে হাসে)। বড় বড় সেতুর মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে অন্যান্য দেশের তুলনায় ৩-৪ গুনের অধিক অর্থ খরচের মাধ্যমে ‘মেগা দুর্নীতি’র অপবাদ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ৭-৮ বছর পর কাজ শেষ হয়। ঢাকা মেট্রোরেলের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের আগে। মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের ২০১৮ এর নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেছিলেন, ওই নির্বাচনের আগের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মেট্রোরেল চালু করা হবে। তা চালু হলো ২০২৪ সালে।
সড়ক পরিবহনের বিশৃঙ্খলা সর্বজনবিদিত। ছাল-বাকলা ওঠা ফিটনেস ও রোড পারমিটবিহীন লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস ঢাকার রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, বায়ুদূষণে ঢাকা শহরের স্থান পৃথিবীর ১ নম্বরে থাকা নিশ্চিত করা হয়েছে। আর সড়কে চাঁদাবাজিত নির্বিঘেœ দলীয় ক্যাডার বাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্বৃত্ত বাস-ট্রাক মালিক সমিতিগুলোর কাছে পরিবহন খাত পুরোপুরি জিম্মি অবস্থায় দশক দশক ধরে। সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে পরিকল্পনার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনাকে ভাগ্যলিপি মেনে নিয়েই জনগণ চলাচল করছে।
এস আলম গ্রুপ দশক তিন আগে দুটি বাস নিয়ে পরিবহন ব্যবসায় নেমে, এখন কয়েকটি ব্যাংকের মালিক। অপরদিকে, সরকারি বিআরটিসির পরিবহন ব্যবসা বহু আগেই লালবাতি জ্বালিয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে এ পরিবহন ব্যবসাকে টাটা কোম্পানির বাজেটে আর্থিক সহায়তা দানের সেবা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ব্যর্থ ও অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত।
রেলপথ মন্ত্রণালয় :
ফেইসবুকের সৌজন্যে বিগত রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর একটি কথোপকথন নিম্নরূপ : ‘মনে হয় এই প্রথম বিনা টিকেটে ট্রেনে চড়লাম।’ মন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের বিনা টিকেটে ভ্রমণ প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধার আওতায় পড়ে কিনা জানা নেই। সে যাকগে। ট্রেনের দুর্ঘটনা, টিকেট কেলেঙ্কারি, সিডিউল বিপর্যয়, লোকশান দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। যাত্রীসেবার মান নিম্নমুখী। বিনা টিকেটধারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্নীতি যেন পিছু ছাড়ছে না।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় :
দেশের পতাকাবাহী সংস্থা বাংলাদেশ বিমান সিডিউল অনুযায়ী চলাচল করার ঘটনা বিরল। বিমানে টিকেট কাটতে গেলে টিকেট পাওয়া যায় না। অথচ লক্ষ্য করা যায়, বিমানটি চলাচল করছে অনেক খালি সিট নিয়ে। বিমানের অনেক এজেন্টই রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বলে তারা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। অনেক এজেন্ট বছরের পর বছর বিক্রীত টিকেটের টাকা পরিশোধ করছে না। অনেক এজেন্ট অন্যান্য দেশের বিমানের দালাল হিসেবে কাজ করে। যাত্রীসেবার মান সন্তোষজনক নয়।
ঢাকা বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীসেবার মান জঘন্য। যারা নিজেদের শ্রম দিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সচল রাখে, তারা ঢাকা বিমানবন্দরে সব সময়ই দুর্ব্যবহারের শিকার হন। দুর্বৃত্ত ঋণখেলাপি, রাজনীতিবিদ, তথাকথিত বড় লোকরা পায় ভিআইপি মর্যাদা, সেখান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শ্রমিক ভাইয়েরা পাওয়ার কথা ছিল ভিআইপি মর্যাদা। আর ল্যাগেজ কেটে তাদের কষ্টার্জিত অর্থে কেনা মালামাল লুট করার সচিত্র প্রতিবেদন প্রচারিত হয় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। এ ধরনের নিকৃষ্ট ও লজ্জাকর ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। অথচ এটা বন্ধ করার কোন পরিকল্পিত উদ্যোগ কখনও নিতে দেখা যায়নি। ঢাকা বিমানবন্দর যেন দুর্বৃত্তদের স্বর্গরাজ্য। আর বিমান কেনার নামে চলছে দুর্নীতির হরিলুট।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় :
নদ-নদীত দুর্বৃত্ত অবৈধ দখলদাররা গিলে খাচ্ছে। আর পানির দূষণ এমন পর্যায়ে যে, খাওয়াত দূরের কথা, ওই পানিতে এমনকি গোসল করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। লঞ্চ-ফেরি-বার্জ দুর্র্ঘটনা কি কমেছে? ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল কি বন্ধ হয়েছে? কিছুই হয়নি।
মন্ত্রণালয়কে ভাগ করে নতুন মন্ত্রণালয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা সৃষ্টি ও উন্নতমানের যাত্রী ও জণসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে; উপরোল্লেখিত পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, সে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। শৃঙ্খলা ও সেবার মান দুটোই আগের একক ‘যোগাযোগ’ মন্ত্রণালয় হতে ক্রমান্নয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে।
বাংলাদেশে পরিবহনের একটা খাত আছে, যেখানে যানবাহনের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। এ খাতটিতে চালকের সংখ্যা যানবাহনের সংখ্যার ন্যূনতম দ্বিগুণ। খাতটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এ বাহনটির নাম হল রিকশা। তাই রিকশা মন্ত্রণালয় গঠন এখন সময়ের দাবি।
তাহলে এতে লাভ হয়েছে কাদের? লাভ হয়েছে রাজনীতবিদ (মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়েছে), আর আমলাতন্ত্রের (আমলার সংখ্যা বাড়াতে হয়েছে)।
[লেখক : চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক ও ডিন]