alt

সম্পাদকীয়

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী

: রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের সংবিধান প্রতিটি নাগরিকের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগের নিশ্চয়তা দেয়।

পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দসংবলিত গ্রাফিতি অপসারণের প্রতিবাদে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যখন এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার সেই ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল সচিবালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে সংক্ষুব্ধরা মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ, জলকামান এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

কোনো জাতিগোষ্ঠীর প্রতি মারমুখী এমন আচরণ শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয়, এটি গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বলপ্রয়োগ করে কারও মতপ্রকাশে বাধা দেয়া বৈষম্যের নামান্তর।

হামলার ঘটনাগুলো আমাদের সমাজে ভিন্নমত সহ্য করার অভাব এবং জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধার সংকটকে সামনে নিয়ে এসেছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ অপসারণ এবং এর ফলে সৃষ্ট সংঘাত আমাদের জাতিগত পরিচিতি এবং সংবেদনশীলতার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আদিবাসী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল তাদের পরিচিতি এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষার প্রচেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে হামলার নিন্দা এবং অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাস্তবে দেখা গেল, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার’ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে জলকামানের পাশাপাশি টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, অন্তর্বর্তী সরকারকে হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তরিকতার সঙ্গে সব জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি সাম্যভিত্তিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে সমতার প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়টি শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহনশীলতার চর্চা না থাকলে তা শুধু সংঘাতকেই উসকে দেয়। জাতিগত বৈচিত্র্যকে সুরক্ষিত করা এবং ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা শুধু একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাজ গড়ার পূর্বশর্ত।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কার করুন

বনাঞ্চলের ধ্বংসের দায় কার

নির্মাণ কাজের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত

খাল-বিল দখল : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

ইটভাটার দৌরাত্ম্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে

বোয়ালখালী রেললাইন বাজার : জীবন ও নিরাপত্তার চরম সংকট

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি

আঠারোবাড়ী হাওরের সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

সংরক্ষিত বনের গাছ রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ আমলে নিন

চালের দাম বাড়ছে: সংকট আরও বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নিন

বারইখালী ও বহরবুনিয়ার মানুষের দুর্ভোগ কবে দূর হবে

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

সময়ের সমীকরণে বেকারত্বের নতুন চিত্র

বরুড়ায় খালের দুর্দশা

টেকনাফে অপহরণ: স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের প্রয়োজনীয়তা

স্কুল মাঠে মাটি কাটার অভিযোগ

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

বই বিতরণে স্বচ্ছতা প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

tab

সম্পাদকীয়

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী

রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের সংবিধান প্রতিটি নাগরিকের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগের নিশ্চয়তা দেয়।

পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দসংবলিত গ্রাফিতি অপসারণের প্রতিবাদে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যখন এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার সেই ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল সচিবালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে সংক্ষুব্ধরা মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ, জলকামান এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

কোনো জাতিগোষ্ঠীর প্রতি মারমুখী এমন আচরণ শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয়, এটি গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বলপ্রয়োগ করে কারও মতপ্রকাশে বাধা দেয়া বৈষম্যের নামান্তর।

হামলার ঘটনাগুলো আমাদের সমাজে ভিন্নমত সহ্য করার অভাব এবং জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধার সংকটকে সামনে নিয়ে এসেছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ অপসারণ এবং এর ফলে সৃষ্ট সংঘাত আমাদের জাতিগত পরিচিতি এবং সংবেদনশীলতার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আদিবাসী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল তাদের পরিচিতি এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষার প্রচেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে হামলার নিন্দা এবং অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাস্তবে দেখা গেল, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার’ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে জলকামানের পাশাপাশি টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, অন্তর্বর্তী সরকারকে হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তরিকতার সঙ্গে সব জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি সাম্যভিত্তিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে সমতার প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়টি শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহনশীলতার চর্চা না থাকলে তা শুধু সংঘাতকেই উসকে দেয়। জাতিগত বৈচিত্র্যকে সুরক্ষিত করা এবং ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা শুধু একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাজ গড়ার পূর্বশর্ত।

back to top