alt

মতামত » সম্পাদকীয়

খাল-বিল দখল : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

: রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ময়মনসিংহের ভালুকায় একের পর এক ফসলি জমি, খাল-বিল এবং জলাভূমি ভরাটের মাধ্যমে প্রভাবশালী মহল যে পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অথবা আইনকে পাশ কাটিয়ে এসব জলাভূমি ভরাট করে কারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জলাভূমি ও বিলগুলো শুধু কৃষি উৎপাদনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এসব এলাকায় মাছ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। বোরো ধানের জন্য পরিচিত কীর্তনখোলা বিল এখন বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। একইভাবে নিশিন্দা বিল এবং গারোইল বিলের একাংশ ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। বিল ভরাটের ফলে গ্রামের মানুষ যেমন মাছ ও ধানের উৎস হারাচ্ছে, তেমনি বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়ছে।

বিল ও খাল-বিল ভরাটের আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হলো পরিবেশের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলাভূমি ভরাট হলে প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হয়ে পানির অভাব দেখা দেবে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংকটে ফসলি জমি চাষাবাদের উপযোগিতা হারাবে। তাছাড়া জলীয়বাষ্পের ঘাটতির কারণে অনাবৃষ্টি, খরা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে। পশুপাখির আবাসস্থল হারানো এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির কারণে জীববৈচির্ত্যের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এসব নির্দেশনা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন অবৈধ ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খাল-বিল পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।

ভালুকার জলাভূমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ আন্দোলনকারী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষায় আইনের প্রয়োগ বাড়াতে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

জলাভূমি আমাদের পরিবেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। এগুলো রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। বর্তমান অব্যবস্থাপনা ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে পরিচালিত কার্যক্রম বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা একটি বিপর্যস্ত পরিবেশ উপহার দেব। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দেশের খাল-বিল এবং পরিবেশ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।

জয়ন্তীপুর ঘাটে সেতু নির্মাণে বিলম্ব কাম্য নয়

শিক্ষকদের আন্দোলন, সরকারের কঠোরতা এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ

রায়গঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি ব্রিজ দ্রুত সংস্কার করুন

সওজের জমি দখল : ব্যবস্থা নিন

পার্বত্য চুক্তি: পাহাড়ে শান্তি কি ফিরল?

রাজধানী কি অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুত?

সেতু নির্মাণের কাজ কবে শেষ হবে

খুলনায় আদালতের সামনে হত্যাকাণ্ড

মীরসরাইয়ে বন রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

পুরান ঢাকায় রাসায়নিক ঝুঁকি

মহেশপুরে অনুমোদনহীন করাত কল

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

থমকে আছে সেতু নির্মাণের কাজ

হাকালুকি হাওরে মাছ লুট: প্রশাসন কী করছে

রাঙ্গাবালীর সংরক্ষিত বন ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

টিসিবির পণ্য নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি কাম্য নয়

কক্সবাজারে পাহাড়ের মাটি কাটা বন্ধ করুন

দারিদ্র্যের নতুন ঢেউ

তাজরীনের ১৩ বছরের ক্ষত ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার কোথায়?

অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

চরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান নিশ্চিত করুন

অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি থামাতে হবে

কাঠ পাচার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

ফিরে এল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে জিও ব্যাগ ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ

দুই দফা ভূমিকম্প: এখনই প্রস্তুতির সময়

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি

গভীর রাতে সাংবাদিককে তুলে নেয়ার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে হবে

সাময়িকী কবিতা

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ

স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম কাম্য নয়

ছবি

শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

গাজনার বিলে জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যবস্থা নিন

বাল্যবিয়ে: সংকট এখনো গভীর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সব প্রশ্নের কি মীমাংসা হলো?

কুষ্টিয়ায় গাছ কাটার ‘গোপন টেন্ডার’ নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

খাল-বিল দখল : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ময়মনসিংহের ভালুকায় একের পর এক ফসলি জমি, খাল-বিল এবং জলাভূমি ভরাটের মাধ্যমে প্রভাবশালী মহল যে পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অথবা আইনকে পাশ কাটিয়ে এসব জলাভূমি ভরাট করে কারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জলাভূমি ও বিলগুলো শুধু কৃষি উৎপাদনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এসব এলাকায় মাছ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। বোরো ধানের জন্য পরিচিত কীর্তনখোলা বিল এখন বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। একইভাবে নিশিন্দা বিল এবং গারোইল বিলের একাংশ ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। বিল ভরাটের ফলে গ্রামের মানুষ যেমন মাছ ও ধানের উৎস হারাচ্ছে, তেমনি বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়ছে।

বিল ও খাল-বিল ভরাটের আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হলো পরিবেশের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলাভূমি ভরাট হলে প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হয়ে পানির অভাব দেখা দেবে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংকটে ফসলি জমি চাষাবাদের উপযোগিতা হারাবে। তাছাড়া জলীয়বাষ্পের ঘাটতির কারণে অনাবৃষ্টি, খরা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে। পশুপাখির আবাসস্থল হারানো এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির কারণে জীববৈচির্ত্যের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এসব নির্দেশনা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন অবৈধ ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খাল-বিল পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।

ভালুকার জলাভূমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ আন্দোলনকারী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষায় আইনের প্রয়োগ বাড়াতে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

জলাভূমি আমাদের পরিবেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। এগুলো রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। বর্তমান অব্যবস্থাপনা ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে পরিচালিত কার্যক্রম বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা একটি বিপর্যস্ত পরিবেশ উপহার দেব। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দেশের খাল-বিল এবং পরিবেশ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।

back to top