ময়মনসিংহের ভালুকায় একের পর এক ফসলি জমি, খাল-বিল এবং জলাভূমি ভরাটের মাধ্যমে প্রভাবশালী মহল যে পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অথবা আইনকে পাশ কাটিয়ে এসব জলাভূমি ভরাট করে কারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জলাভূমি ও বিলগুলো শুধু কৃষি উৎপাদনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এসব এলাকায় মাছ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। বোরো ধানের জন্য পরিচিত কীর্তনখোলা বিল এখন বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। একইভাবে নিশিন্দা বিল এবং গারোইল বিলের একাংশ ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। বিল ভরাটের ফলে গ্রামের মানুষ যেমন মাছ ও ধানের উৎস হারাচ্ছে, তেমনি বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়ছে।
বিল ও খাল-বিল ভরাটের আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হলো পরিবেশের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলাভূমি ভরাট হলে প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হয়ে পানির অভাব দেখা দেবে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংকটে ফসলি জমি চাষাবাদের উপযোগিতা হারাবে। তাছাড়া জলীয়বাষ্পের ঘাটতির কারণে অনাবৃষ্টি, খরা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে। পশুপাখির আবাসস্থল হারানো এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির কারণে জীববৈচির্ত্যের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এসব নির্দেশনা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন অবৈধ ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খাল-বিল পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
ভালুকার জলাভূমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ আন্দোলনকারী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষায় আইনের প্রয়োগ বাড়াতে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
জলাভূমি আমাদের পরিবেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। এগুলো রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। বর্তমান অব্যবস্থাপনা ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে পরিচালিত কার্যক্রম বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা একটি বিপর্যস্ত পরিবেশ উপহার দেব। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দেশের খাল-বিল এবং পরিবেশ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।
রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
ময়মনসিংহের ভালুকায় একের পর এক ফসলি জমি, খাল-বিল এবং জলাভূমি ভরাটের মাধ্যমে প্রভাবশালী মহল যে পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অথবা আইনকে পাশ কাটিয়ে এসব জলাভূমি ভরাট করে কারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জলাভূমি ও বিলগুলো শুধু কৃষি উৎপাদনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এসব এলাকায় মাছ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। বোরো ধানের জন্য পরিচিত কীর্তনখোলা বিল এখন বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। একইভাবে নিশিন্দা বিল এবং গারোইল বিলের একাংশ ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। বিল ভরাটের ফলে গ্রামের মানুষ যেমন মাছ ও ধানের উৎস হারাচ্ছে, তেমনি বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়ছে।
বিল ও খাল-বিল ভরাটের আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হলো পরিবেশের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলাভূমি ভরাট হলে প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হয়ে পানির অভাব দেখা দেবে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংকটে ফসলি জমি চাষাবাদের উপযোগিতা হারাবে। তাছাড়া জলীয়বাষ্পের ঘাটতির কারণে অনাবৃষ্টি, খরা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে। পশুপাখির আবাসস্থল হারানো এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির কারণে জীববৈচির্ত্যের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এসব নির্দেশনা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন অবৈধ ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খাল-বিল পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
ভালুকার জলাভূমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ আন্দোলনকারী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষায় আইনের প্রয়োগ বাড়াতে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
জলাভূমি আমাদের পরিবেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। এগুলো রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। বর্তমান অব্যবস্থাপনা ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে পরিচালিত কার্যক্রম বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা একটি বিপর্যস্ত পরিবেশ উপহার দেব। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দেশের খাল-বিল এবং পরিবেশ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।