alt

সম্পাদকীয়

বনাঞ্চলের ধ্বংসের দায় কার

: রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে অবৈধ করাতকলগুলোর কার্যক্রম পরিবেশ ধ্বংসের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে ও আশপাশে দুই শতাধিক অবৈধ করাতকল প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ চেরাই করছে। এসব করাতকল লাইসেন্সবিহীন হলেও বনবিভাগের নির্লিপ্ততা এবং করাতকল মালিকদের সংগঠিত সিন্ডিকেট তাদের কার্যক্রম নির্বিঘেœ পরিচালনার সুযোগ করে দিচ্ছে।

সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে বসানো এসব করাতকল থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভরে কাঠ পাচার করা হচ্ছে। বনবিভাগের নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন নিষিদ্ধ। তবে নিয়ম লঙ্ঘন করে এসব করাতকল শুধু স্থাপনই হয়নি, অবৈধ কাঠ চোরাই কার্যক্রমের মাধ্যমে বনাঞ্চলের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।

এ সমস্যা সমাধানে বনবিভাগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্মী জানিয়েছেন, মাসোহারা প্রদান ও মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করাতকল মালিকরা লাইসেন্সবিহীন করাতকল পরিচালনা করছে। নতুন করাতকল স্থাপনের ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের ঘুষ প্রদান বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, করাতকল মালিকরা উচ্চ আদালতের রিট মামলা দিয়ে অভিযান ঠেকিয়ে রাখে। কিন্তু আদালতে রিট মামলার অবস্থা অজানা থাকলেও করাতকল মালিকরা অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বনবিভাগ কেন এসব কার্যক্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না?

বনাঞ্চল ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি অঞ্চলটি বন্যপ্রাণী এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত। এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে বনাঞ্চল উজাড় হওয়ায় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। জলবায়ুর ওপর এর প্রভাবও অত্যন্ত নেতিবাচক। বৃক্ষনিধনের ফলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ছে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম কারণ।

উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, বনবিভাগ সহযোগিতা চাইলে তারা অবৈধ করাতকল বন্ধে সহায়তা করবে। তবে গত এক বছরে বনবিভাগ এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বনবিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, বনাঞ্চলের সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সব করাতকল উচ্ছেদ করা। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কার্যক্রম এবং অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করে কঠোর শাস্তি প্রদান।

বনাঞ্চল পর্যবেক্ষণে ড্রোন বা স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে করাতকলগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করা। স্থানীয় জনগণকে বনাঞ্চলের গুরুত্ব বোঝানো এবং পরিবেশ রক্ষায় তাদের সম্পৃক্ত করা দরকার।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ধ্বংস রোধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ বিপর্যয়ের দায়ভার বহন করতে হবে। প্রশাসন, বনবিভাগ এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগই একমাত্র সমাধান হতে পারে।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কার করুন

নির্মাণ কাজের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত

খাল-বিল দখল : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

ইটভাটার দৌরাত্ম্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী

বোয়ালখালী রেললাইন বাজার : জীবন ও নিরাপত্তার চরম সংকট

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি

আঠারোবাড়ী হাওরের সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

সংরক্ষিত বনের গাছ রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ আমলে নিন

চালের দাম বাড়ছে: সংকট আরও বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নিন

বারইখালী ও বহরবুনিয়ার মানুষের দুর্ভোগ কবে দূর হবে

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

সময়ের সমীকরণে বেকারত্বের নতুন চিত্র

বরুড়ায় খালের দুর্দশা

টেকনাফে অপহরণ: স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের প্রয়োজনীয়তা

স্কুল মাঠে মাটি কাটার অভিযোগ

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

বই বিতরণে স্বচ্ছতা প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

tab

সম্পাদকীয়

বনাঞ্চলের ধ্বংসের দায় কার

রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে অবৈধ করাতকলগুলোর কার্যক্রম পরিবেশ ধ্বংসের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে ও আশপাশে দুই শতাধিক অবৈধ করাতকল প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ চেরাই করছে। এসব করাতকল লাইসেন্সবিহীন হলেও বনবিভাগের নির্লিপ্ততা এবং করাতকল মালিকদের সংগঠিত সিন্ডিকেট তাদের কার্যক্রম নির্বিঘেœ পরিচালনার সুযোগ করে দিচ্ছে।

সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে বসানো এসব করাতকল থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভরে কাঠ পাচার করা হচ্ছে। বনবিভাগের নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন নিষিদ্ধ। তবে নিয়ম লঙ্ঘন করে এসব করাতকল শুধু স্থাপনই হয়নি, অবৈধ কাঠ চোরাই কার্যক্রমের মাধ্যমে বনাঞ্চলের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।

এ সমস্যা সমাধানে বনবিভাগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্মী জানিয়েছেন, মাসোহারা প্রদান ও মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করাতকল মালিকরা লাইসেন্সবিহীন করাতকল পরিচালনা করছে। নতুন করাতকল স্থাপনের ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের ঘুষ প্রদান বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, করাতকল মালিকরা উচ্চ আদালতের রিট মামলা দিয়ে অভিযান ঠেকিয়ে রাখে। কিন্তু আদালতে রিট মামলার অবস্থা অজানা থাকলেও করাতকল মালিকরা অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বনবিভাগ কেন এসব কার্যক্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না?

বনাঞ্চল ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি অঞ্চলটি বন্যপ্রাণী এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত। এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে বনাঞ্চল উজাড় হওয়ায় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। জলবায়ুর ওপর এর প্রভাবও অত্যন্ত নেতিবাচক। বৃক্ষনিধনের ফলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ছে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম কারণ।

উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, বনবিভাগ সহযোগিতা চাইলে তারা অবৈধ করাতকল বন্ধে সহায়তা করবে। তবে গত এক বছরে বনবিভাগ এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বনবিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, বনাঞ্চলের সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সব করাতকল উচ্ছেদ করা। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কার্যক্রম এবং অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করে কঠোর শাস্তি প্রদান।

বনাঞ্চল পর্যবেক্ষণে ড্রোন বা স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে করাতকলগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করা। স্থানীয় জনগণকে বনাঞ্চলের গুরুত্ব বোঝানো এবং পরিবেশ রক্ষায় তাদের সম্পৃক্ত করা দরকার।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ধ্বংস রোধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ বিপর্যয়ের দায়ভার বহন করতে হবে। প্রশাসন, বনবিভাগ এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগই একমাত্র সমাধান হতে পারে।

back to top