খাদ্যে ভেজাল দেশের এক দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ সংকট। রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই ভেজালের ভয়াল ছায়া বিস্তৃত। সম্প্রতি চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদীতে এক আইসক্রিম কারখানায় ক্ষতিকর রং ও রাসায়নিক ব্যবহার, নোংরা পরিবেশে উৎপাদন এবং পণ্যের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকাÑএসব অভিযোগে কারখানা মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এক অর্থে এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কিন্তু একইসঙ্গে এটি দেশের সার্বিক খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতির দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্তও।
চাঁদপুরের এই ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। দেশের বহু স্থানে এমন অনিয়মে ভরা খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। শিশুদের প্রিয় আইসক্রিমের মতো একটি পণ্যে ক্ষতিকর কেমিক্যাল রং ব্যবহার নিঃসন্দেহে ভয়ানক। এতে করে শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনও হুমকির মুখে পড়ছে। খাদ্যে ভেজাল আজ আর শুধু একটি নৈতিক বা বাণিজ্যিক অপরাধ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য সরাসরি হুমকি।
এই ধরনের অপরাধে যখন মাত্র ১০ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়, তখন প্রশ্ন উঠেÑএই শাস্তি কি অপরাধের ভয়াবহতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও প্রশ্ন থেকে যায়, কেন এই অভিযানগুলো ধারাবাহিক ও পর্যাপ্ত নয়? কেন প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকারের দিকেই প্রশাসনের নজর বেশি?
বাজারে খাবার কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষ আজ শঙ্কিত। দুধে ফরমালিন, ফলে কার্বাইড, মসলায় রঙ, এমনকি শিশু খাদ্যেও বিষাক্ত উপাদানÑএসব খবর এখন আর বিস্ময় জাগায় না, বরং রুটিন সংবাদ হয়ে উঠেছে। অথচ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনো সরকারের মৌলিক দায়িত্বের বাইরে নয়। আইন আছে, সংস্থা আছে, জনবল আছেÑতবু কেন এত শৈথিল্য?
সরকারকে এখন মৌসুমি অভিযান নয়, বরং সারা বছরজুড়ে কাঠামোগত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। জরিমানা যেন কেবল অর্থদ-ে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং প্রয়োজনে কারাদ-সহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীদের প্রশিক্ষণ এবং নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
খাদ্যে ভেজাল দেশের এক দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ সংকট। রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই ভেজালের ভয়াল ছায়া বিস্তৃত। সম্প্রতি চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদীতে এক আইসক্রিম কারখানায় ক্ষতিকর রং ও রাসায়নিক ব্যবহার, নোংরা পরিবেশে উৎপাদন এবং পণ্যের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকাÑএসব অভিযোগে কারখানা মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এক অর্থে এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কিন্তু একইসঙ্গে এটি দেশের সার্বিক খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতির দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্তও।
চাঁদপুরের এই ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। দেশের বহু স্থানে এমন অনিয়মে ভরা খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। শিশুদের প্রিয় আইসক্রিমের মতো একটি পণ্যে ক্ষতিকর কেমিক্যাল রং ব্যবহার নিঃসন্দেহে ভয়ানক। এতে করে শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনও হুমকির মুখে পড়ছে। খাদ্যে ভেজাল আজ আর শুধু একটি নৈতিক বা বাণিজ্যিক অপরাধ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য সরাসরি হুমকি।
এই ধরনের অপরাধে যখন মাত্র ১০ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়, তখন প্রশ্ন উঠেÑএই শাস্তি কি অপরাধের ভয়াবহতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও প্রশ্ন থেকে যায়, কেন এই অভিযানগুলো ধারাবাহিক ও পর্যাপ্ত নয়? কেন প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকারের দিকেই প্রশাসনের নজর বেশি?
বাজারে খাবার কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষ আজ শঙ্কিত। দুধে ফরমালিন, ফলে কার্বাইড, মসলায় রঙ, এমনকি শিশু খাদ্যেও বিষাক্ত উপাদানÑএসব খবর এখন আর বিস্ময় জাগায় না, বরং রুটিন সংবাদ হয়ে উঠেছে। অথচ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনো সরকারের মৌলিক দায়িত্বের বাইরে নয়। আইন আছে, সংস্থা আছে, জনবল আছেÑতবু কেন এত শৈথিল্য?
সরকারকে এখন মৌসুমি অভিযান নয়, বরং সারা বছরজুড়ে কাঠামোগত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। জরিমানা যেন কেবল অর্থদ-ে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং প্রয়োজনে কারাদ-সহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীদের প্রশিক্ষণ এবং নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।