মুক্ত সংস্কৃতির পরিবেশ আর কোথায়?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় এবারের ‘শরৎ উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়নি। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী প্রায় দুই দশক ধরে এই উৎসব আয়োজন করে আসছে। কিন্তু এবারের উৎসবের দিন সকালে জানা গেল, অনুমতি স্থগিত করা হয়েছে। কারণ ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’দের উপস্থিতি নাকি ‘গ-গোল’ সৃষ্টি করতে পারে। পরের দিন গেন্ডারিয়ায় সেই অনুষ্ঠান করতে গিয়েও পারেননি আয়োজকরা। পুলিশ তাদের জানায়, ‘অনুমতি নেই, অভিযোগ আছে’। শেষ পর্যন্ত শিল্পীরা জাতীয় সংগীত গেয়ে, নীরবতা পালন করে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
ঘটনাটি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর মতো পুরোনো ও স্বীকৃত সংগঠন, যারা বছর বছর চারুকলার বকুলতলায় মৌসুমি উৎসব আয়োজন করে, তাদের অনুষ্ঠান ঘিরে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বিতর্ক কেন উঠল সেটা একটা প্রশ্ন। চারুকলা কর্তৃপক্ষ বলেছে, অনেকে ফোনে আপত্তি জানিয়েছে। ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত’ কেউ এই আয়োজনের সঙ্গে আছেন, এ কারণে গ-গোলের আশঙ্কায় অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। আমরা জানতে চাইব, এই যুক্তি কি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আপত্তি উঠলেই কি কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন থেমে যাবে?
কবিতা, গান, নাটক বা উৎসবের মাধ্যমে প্রকৃতি ও জীবনের সৌন্দর্য উদযাপন করে মানুষ। এমন আয়োজনে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে বাধা দেওয়া মানে সাংস্কৃতিক পরিসরকে সংকুচিত করা। কোনো সংগঠন যদি কারও অভিযোগের প্রেক্ষিতে বা কোনো আশঙ্কায় উৎসব করতে না পারে, তখন প্রশ্ন ওঠে যে, দেশে মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ কি নেই। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলে সেই শঙ্কা দূর করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। অনুষ্ঠান বন্ধ করা কোনো সমাধান হতে পারে না।
সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা গণতন্ত্রেরই একটি রূপ। নানা মতের সহাবস্থানই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি। আমরা আশা করব, শরৎ উৎসব আয়োজনের পথে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে। প্রতিবারের মতো এবারও এই উৎসব আয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।
মুক্ত সংস্কৃতির পরিবেশ আর কোথায়?
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় এবারের ‘শরৎ উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়নি। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী প্রায় দুই দশক ধরে এই উৎসব আয়োজন করে আসছে। কিন্তু এবারের উৎসবের দিন সকালে জানা গেল, অনুমতি স্থগিত করা হয়েছে। কারণ ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’দের উপস্থিতি নাকি ‘গ-গোল’ সৃষ্টি করতে পারে। পরের দিন গেন্ডারিয়ায় সেই অনুষ্ঠান করতে গিয়েও পারেননি আয়োজকরা। পুলিশ তাদের জানায়, ‘অনুমতি নেই, অভিযোগ আছে’। শেষ পর্যন্ত শিল্পীরা জাতীয় সংগীত গেয়ে, নীরবতা পালন করে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
ঘটনাটি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর মতো পুরোনো ও স্বীকৃত সংগঠন, যারা বছর বছর চারুকলার বকুলতলায় মৌসুমি উৎসব আয়োজন করে, তাদের অনুষ্ঠান ঘিরে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বিতর্ক কেন উঠল সেটা একটা প্রশ্ন। চারুকলা কর্তৃপক্ষ বলেছে, অনেকে ফোনে আপত্তি জানিয়েছে। ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত’ কেউ এই আয়োজনের সঙ্গে আছেন, এ কারণে গ-গোলের আশঙ্কায় অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। আমরা জানতে চাইব, এই যুক্তি কি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আপত্তি উঠলেই কি কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন থেমে যাবে?
কবিতা, গান, নাটক বা উৎসবের মাধ্যমে প্রকৃতি ও জীবনের সৌন্দর্য উদযাপন করে মানুষ। এমন আয়োজনে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে বাধা দেওয়া মানে সাংস্কৃতিক পরিসরকে সংকুচিত করা। কোনো সংগঠন যদি কারও অভিযোগের প্রেক্ষিতে বা কোনো আশঙ্কায় উৎসব করতে না পারে, তখন প্রশ্ন ওঠে যে, দেশে মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ কি নেই। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলে সেই শঙ্কা দূর করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। অনুষ্ঠান বন্ধ করা কোনো সমাধান হতে পারে না।
সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা গণতন্ত্রেরই একটি রূপ। নানা মতের সহাবস্থানই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি। আমরা আশা করব, শরৎ উৎসব আয়োজনের পথে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে। প্রতিবারের মতো এবারও এই উৎসব আয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।