মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
গণতন্ত্র বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় শাসনপদ্ধতি, যা রাষ্ট্রের জনগণ কর্তৃক চালিত হয়ে থাকে, যেখানে জনগণ থাকে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার কেন্দ্রীয় উৎস বা মূল শক্তি। জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে গণতন্ত্রের উদ্ভব ও যাত্রা শুরু হয়।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি রাষ্ট্রের মানুষ ভোটাধিকারের মাধ্যমে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা বর্জন করার ক্ষমতা রাখে। গণমানুষের ভোটাধিকারের বিষয়টা স্বস্তির হলেও গণমানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্যতা বিবেচনায় নেয়া উচিত সবার আগে। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের গণসিদ্ধান্তের ফল গোটা দেশের সর্ব শ্রেণীর মানুষ ভোগ করবে।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রকাশ্যে শিরñেদের আইন চাইতে পারে, প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দ-ের বিধান চাইতে পারেÑ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই চাওয়াটা দোষের কিছু নয়; এই চাওয়াটা নাগরিক অধিকার, কিন্তু তাদের চাওয়া এই আইন সর্বজনীন প্রয়োগ করতে গেলে লাভের চাইতে লোকসানই হবে বেশি। কারণ, পৃথিবীর সভ্য দেশগুলো এই আইন বর্জন করেই সভ্য হয়েছে আর বর্বর রাষ্ট্রগুলো এই আইন ধারণ করেই দিন দিন বর্বর হচ্ছে।
সংখ্যার ভিত্তিতে এই আইন গড়তে গেলে অদূর ভবিষ্যতে গোটা রাষ্ট্রের চরম মূল্য দিতে হবে। রাষ্ট্র পাল্লা দিয়ে বর্বরতার মাত্রা ছাড়াতে থাকবে। সে হিসেবে গণতন্ত্রের আপাদমস্তক নিশ্চিত করতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের দর্শন, আদর্শ, চিন্তা-চেতনার বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাই মানুষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্য করে গড়ে তোলা জরুরি। এই দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমে তার দর্শনবীজ নাগরিকদের মাঝে প্রোতিথ করবে এবং নাগরিকরা সেই দর্শন ধারণ করে জীবনযাপন করবে, বিচার-বিবেচনা করবে।
যে দেশের রাস্তা দু মিনিট ট্রাফিক পুলিশ ছাড়া চলতে পারে না সে দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক আদর্শের ওপর ছেড়ে দিলে কতটা ভয়াবহ হবে তা অকল্পনীয়।
শুধু সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয়, সিদ্ধান্ত হবে যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে।
আমেরিকার নাগরিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় তাদের পতাকায় আগুন দিয়েছে; পতাকায় আগুন লাগানোর বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালত বলেছে, ক্ষুব্ধ ব্যক্তি নিজের অধীনে থাকা জাতীয় পতাকা ছিঁড়তে পারবে, আগুন লাগাতে পারবে, কিন্তু অন্যের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে পতাকার অমর্যাদা করতে পারবে না। অর্থাৎ আইনটা অনুভূতির নয়, আইনটা যুক্তির। তাই যে কোনো ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হতে পারে। সংশ্লিষ্ট যোগ্যদের যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করে যে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। গণমানুষের ওপর দায়িত্বের ভার ছেড়ে দিলে রাষ্ট্র অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
রিয়াজ নোমান
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গণতন্ত্র বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় শাসনপদ্ধতি, যা রাষ্ট্রের জনগণ কর্তৃক চালিত হয়ে থাকে, যেখানে জনগণ থাকে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার কেন্দ্রীয় উৎস বা মূল শক্তি। জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে গণতন্ত্রের উদ্ভব ও যাত্রা শুরু হয়।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি রাষ্ট্রের মানুষ ভোটাধিকারের মাধ্যমে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা বর্জন করার ক্ষমতা রাখে। গণমানুষের ভোটাধিকারের বিষয়টা স্বস্তির হলেও গণমানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্যতা বিবেচনায় নেয়া উচিত সবার আগে। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের গণসিদ্ধান্তের ফল গোটা দেশের সর্ব শ্রেণীর মানুষ ভোগ করবে।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রকাশ্যে শিরñেদের আইন চাইতে পারে, প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দ-ের বিধান চাইতে পারেÑ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই চাওয়াটা দোষের কিছু নয়; এই চাওয়াটা নাগরিক অধিকার, কিন্তু তাদের চাওয়া এই আইন সর্বজনীন প্রয়োগ করতে গেলে লাভের চাইতে লোকসানই হবে বেশি। কারণ, পৃথিবীর সভ্য দেশগুলো এই আইন বর্জন করেই সভ্য হয়েছে আর বর্বর রাষ্ট্রগুলো এই আইন ধারণ করেই দিন দিন বর্বর হচ্ছে।
সংখ্যার ভিত্তিতে এই আইন গড়তে গেলে অদূর ভবিষ্যতে গোটা রাষ্ট্রের চরম মূল্য দিতে হবে। রাষ্ট্র পাল্লা দিয়ে বর্বরতার মাত্রা ছাড়াতে থাকবে। সে হিসেবে গণতন্ত্রের আপাদমস্তক নিশ্চিত করতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের দর্শন, আদর্শ, চিন্তা-চেতনার বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাই মানুষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্য করে গড়ে তোলা জরুরি। এই দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমে তার দর্শনবীজ নাগরিকদের মাঝে প্রোতিথ করবে এবং নাগরিকরা সেই দর্শন ধারণ করে জীবনযাপন করবে, বিচার-বিবেচনা করবে।
যে দেশের রাস্তা দু মিনিট ট্রাফিক পুলিশ ছাড়া চলতে পারে না সে দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক আদর্শের ওপর ছেড়ে দিলে কতটা ভয়াবহ হবে তা অকল্পনীয়।
শুধু সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয়, সিদ্ধান্ত হবে যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে।
আমেরিকার নাগরিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় তাদের পতাকায় আগুন দিয়েছে; পতাকায় আগুন লাগানোর বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালত বলেছে, ক্ষুব্ধ ব্যক্তি নিজের অধীনে থাকা জাতীয় পতাকা ছিঁড়তে পারবে, আগুন লাগাতে পারবে, কিন্তু অন্যের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে পতাকার অমর্যাদা করতে পারবে না। অর্থাৎ আইনটা অনুভূতির নয়, আইনটা যুক্তির। তাই যে কোনো ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হতে পারে। সংশ্লিষ্ট যোগ্যদের যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করে যে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। গণমানুষের ওপর দায়িত্বের ভার ছেড়ে দিলে রাষ্ট্র অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
রিয়াজ নোমান