মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
‘ইংরেজি’ যেন একটি আতঙ্কের নাম। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাঝে মহামারীর মতো ইংরেজি ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের একাংশের মাঝেও উক্ত ভীতি বিদ্যমান।
ইংরেজি ভীতির বেশ কিছু কারণ থাকলেও উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ রয়েছে; এর মাঝে অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে আমাদের ধারণা, যা নিতান্তই ভুল। ইংরেজি, শব্দটি শুনলেই আমাদের কল্পনায় আসে — অনধিক পাঁচ শত পৃষ্ঠা সম্পন্ন একটি মোটা বই, যা আগা হতে গোড়া অবধি একগুচ্ছ ইংরেজি ব্যাকরণিক নিয়ম দ্বারা পরিপূর্ণ। ইংরেজিকে একটি ভাষা হিসেবে গ্রহণ না করে আমরা পুঞ্জীভূত ব্যাকরণিক নিয়ম হিসেবে গ্রহণ করেছি।
ইংরেজি ভীতির আরেকটি প্রধান কারণ হচ্ছেÑ আমরা শেখার জন্য না শিখে শুধু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিখি। আমরা জানি না বিগত সময়ের লব্ধ ইংরেজি জ্ঞান কী করে প্রয়োগ করব। ইংরেজি পরীক্ষায় আকর্ষণীয় নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়াই সেটিকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা নয়। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সিংহভাগ শিক্ষার্থীই বইয়ের বাইরে নতুন কোন পড়া পারবে না, নতুন কোন ইংরেজি বাক্য গঠন, কিংবা বাংলা হতে ইংরেজি অনুবাদ পারবে না। বেশ কিছু বছর আগে ভাইরাল হওয়া ‘আই অ্যাম জিপিএ ফাইভ’ উক্ত বাক্যের সত্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
আমাদের পরীক্ষাকেন্দ্রিক ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করা হতে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে কি আমাদের পরীক্ষার জন্য পড়তে হবে না? আমরা যখন ইংরেজিকে ভাষা হিসেবে গ্রহণ করব, একগুচ্ছ নিয়মের ঊর্ধ্বে গিয়ে বাস্তবতা মিলিয়ে ইংরেজি শিখব, তখন ইংরেজিকে সহজ মনে হবে; সেই সঙ্গে পরীক্ষার পড়াও পূর্ণ হয়ে যাবে। এতে একবার শিখেই বারবার পরীক্ষা দেওয়া যায়, প্রত্যেকবার পরীক্ষার পূর্বে বই হাতে নিয়ে চুল ছিঁড়তে হয় না। শুধু নিয়মিত অনুশীলন করলেই তা আয়ত্তে থাকে।
নিজ মনের দুর্বলতা দূর করতে হবে। ‘আমি পারব না, আমার দ্বারা সম্ভব নয়’ থেকে ‘আমি পারবই’-তে আসতে হবে। যদি মনে করা হয়, ‘ইংরেজি ভুল বললে কিংবা লিখলে অন্যদের সামনে লজ্জিত হতে হবে’ আর এই ভয়ে যদি ইংরেজি বলা বা লেখার কোনও উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয়, তবে জীবনভর এমনই থাকতে হবে। তখন অবস্থাটি অনেকটা এরকম হবে যে, পড়ে যাওয়ার ভয়ে সাইকেল চালানো শিখব না। অথচ সাইকেল চালানো শিখতে হলে গুটিকয়েকবার আছাড় খেতেই হয়। ছোটকালে পড়ে যাওয়ার ভয়ে হাঁটতে না শিখতে দিলে বিশের কোঠা পার করলেও আমাদের হাঁটা হতো না। জাতীয় কবি বলেছেন- ‘ভুলের মধ্য দিয়ে গেলে তবেই সত্যকে পাওয়া যায়’। সুতরাং ভুল করে বিচলিত হওয়া যাবে না। ভুল থেকে এমনভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যেন পুনরায় ভুলটি না হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে একপর্যায়ে ভুলের মাত্রা একেবারে হ্রাস পেয়ে যাবে। ফলে যে কেউ হয়ে উঠতে পারবে ইংরেজিতে সেরা।
হিমেল আহমেদ
হাজারীবাগ, ঢাকা-১২০৯।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
‘ইংরেজি’ যেন একটি আতঙ্কের নাম। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাঝে মহামারীর মতো ইংরেজি ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের একাংশের মাঝেও উক্ত ভীতি বিদ্যমান।
ইংরেজি ভীতির বেশ কিছু কারণ থাকলেও উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ রয়েছে; এর মাঝে অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে আমাদের ধারণা, যা নিতান্তই ভুল। ইংরেজি, শব্দটি শুনলেই আমাদের কল্পনায় আসে — অনধিক পাঁচ শত পৃষ্ঠা সম্পন্ন একটি মোটা বই, যা আগা হতে গোড়া অবধি একগুচ্ছ ইংরেজি ব্যাকরণিক নিয়ম দ্বারা পরিপূর্ণ। ইংরেজিকে একটি ভাষা হিসেবে গ্রহণ না করে আমরা পুঞ্জীভূত ব্যাকরণিক নিয়ম হিসেবে গ্রহণ করেছি।
ইংরেজি ভীতির আরেকটি প্রধান কারণ হচ্ছেÑ আমরা শেখার জন্য না শিখে শুধু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিখি। আমরা জানি না বিগত সময়ের লব্ধ ইংরেজি জ্ঞান কী করে প্রয়োগ করব। ইংরেজি পরীক্ষায় আকর্ষণীয় নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়াই সেটিকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা নয়। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সিংহভাগ শিক্ষার্থীই বইয়ের বাইরে নতুন কোন পড়া পারবে না, নতুন কোন ইংরেজি বাক্য গঠন, কিংবা বাংলা হতে ইংরেজি অনুবাদ পারবে না। বেশ কিছু বছর আগে ভাইরাল হওয়া ‘আই অ্যাম জিপিএ ফাইভ’ উক্ত বাক্যের সত্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
আমাদের পরীক্ষাকেন্দ্রিক ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করা হতে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে কি আমাদের পরীক্ষার জন্য পড়তে হবে না? আমরা যখন ইংরেজিকে ভাষা হিসেবে গ্রহণ করব, একগুচ্ছ নিয়মের ঊর্ধ্বে গিয়ে বাস্তবতা মিলিয়ে ইংরেজি শিখব, তখন ইংরেজিকে সহজ মনে হবে; সেই সঙ্গে পরীক্ষার পড়াও পূর্ণ হয়ে যাবে। এতে একবার শিখেই বারবার পরীক্ষা দেওয়া যায়, প্রত্যেকবার পরীক্ষার পূর্বে বই হাতে নিয়ে চুল ছিঁড়তে হয় না। শুধু নিয়মিত অনুশীলন করলেই তা আয়ত্তে থাকে।
নিজ মনের দুর্বলতা দূর করতে হবে। ‘আমি পারব না, আমার দ্বারা সম্ভব নয়’ থেকে ‘আমি পারবই’-তে আসতে হবে। যদি মনে করা হয়, ‘ইংরেজি ভুল বললে কিংবা লিখলে অন্যদের সামনে লজ্জিত হতে হবে’ আর এই ভয়ে যদি ইংরেজি বলা বা লেখার কোনও উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয়, তবে জীবনভর এমনই থাকতে হবে। তখন অবস্থাটি অনেকটা এরকম হবে যে, পড়ে যাওয়ার ভয়ে সাইকেল চালানো শিখব না। অথচ সাইকেল চালানো শিখতে হলে গুটিকয়েকবার আছাড় খেতেই হয়। ছোটকালে পড়ে যাওয়ার ভয়ে হাঁটতে না শিখতে দিলে বিশের কোঠা পার করলেও আমাদের হাঁটা হতো না। জাতীয় কবি বলেছেন- ‘ভুলের মধ্য দিয়ে গেলে তবেই সত্যকে পাওয়া যায়’। সুতরাং ভুল করে বিচলিত হওয়া যাবে না। ভুল থেকে এমনভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যেন পুনরায় ভুলটি না হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে একপর্যায়ে ভুলের মাত্রা একেবারে হ্রাস পেয়ে যাবে। ফলে যে কেউ হয়ে উঠতে পারবে ইংরেজিতে সেরা।
হিমেল আহমেদ
হাজারীবাগ, ঢাকা-১২০৯।