মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
হেমন্ত বলতে বিষণœতা বোঝায়। হেমন্ত বলতে বোঝায় নিবিড় একাকীত্ব। হেমন্ত ক্ষণস্থায়ী হয়েও এত বেশি স্বতন্ত্র যে, হেমন্তের অস্তিত্ব সম্বন্ধে একবার সজাগ হয়ে গেলে, তাকে অবহেলা করা মুশকিল। ছিন্নপত্রের হেমন্ত সন্ধ্যার বর্ণনা রয়েছে। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় তো অঝোর ব্যাপ্তিতে হেমন্ত ধরা দিয়েছে। সেসব বিবরণে প্রকৃতির শূন্যতা যতখানি ধরা পড়ে, তার বাইরে কিন্তু অন্য কোনও সূচক প্রবল হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন যদি কেউ হেমন্তের বিশ্বাস্য কথা-চিত্র ধরে রাখতে চায়, তাকে বিষণœতা বা নিঃসঙ্গতার পাশাপাশি দূষণের উল্লেখও করতে হবে। যে-দূষণ মূলত আচ্ছন্ন করে বাতাসকে। প্রতিবারই প্রাক-শীতে ঢাকার দূষণ দৃশ্য আমাদের চোখে কমবেশি ধরা পড়ে। তাই হেমন্তের সময়ে ঢাকা কেমন করে তিলে তিলে বাস-অযোগ্য হয়ে ওঠে কমবেশি। কথাটি কারও চোখে পড়ে, আবার কারও বা চোখে দেখা যায় না। ঢাকার সর্বত্রই ধুলোবালির ছড়াছড়ি- এ যেন এক ধরনের বিষে ভরা রাজপথ। ধুলোবালি আর ধুলোবালি, সমস্যাটি রয়ে গেছে। কতদিন আর? দূষণ, প্রকৃতির বিপর্যয়ের কথা বলে। বিশ্বজুড়েই প্রকৃতির স্বাস্থ্য খারাপতর হচ্ছে এই বিষয়ে সন্দেহ নেই।
দূষণ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায়-সচেতনতা বৃদ্ধি। এটি সম্পর্কে সবাইই কমবেশি জানেন, বোঝেন, স্বীকারও করেন। কিন্তু ফলিত প্রয়োগে সচেতনতা কি প্রদর্শিত হয়, বা কোনও একজনের চূড়ান্ত সতর্কতাও কি গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ উপকারী সাব্যস্ত হতে পারে? দূষণ নিয়ে প্রতিবছর কমবেশি উৎকণ্ঠা কমবেশি শোনা যায়, কিন্তু তারপরে? কোথায় কী-কী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে তা কি জনগণ জানতে পারে, না তা জানতে উৎসাহী হয়? মানতে হবে, কোথাও একটা মানিয়ে নেয়ার অপারগতা চলে এসেছে, জাঁকিয়ে বসেছে। সবাই ধরে নিয়েছে-কিছু কথা বলার জন্যই। তা বলে যে বিরাট ফল পাওয়া যাবে এমন নয়, কিন্তু না-বললে যেন বিবেকের কামড় একটু বেশি জোরে চামড়ায় ফুটে উঠবে। আর, একবার বলে ফেললে-দায়িত্ব পালনের একঘেয়ে শ্লাঘা মনকে দখল করে। এই হেমন্তের দূষণ যদি বছরের পর বছর ধরে দেখা যায়, বুঝতে হবে, পৃথিবী যে-নিয়মে ঘোরে, পৃথিবীর মানুষ তার ‘অ আ ক খ গ, এ বি সি ডি’ কিছুই জানে না, বুঝে না।
লিয়াকত হোসেন খোকন,
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
হেমন্ত বলতে বিষণœতা বোঝায়। হেমন্ত বলতে বোঝায় নিবিড় একাকীত্ব। হেমন্ত ক্ষণস্থায়ী হয়েও এত বেশি স্বতন্ত্র যে, হেমন্তের অস্তিত্ব সম্বন্ধে একবার সজাগ হয়ে গেলে, তাকে অবহেলা করা মুশকিল। ছিন্নপত্রের হেমন্ত সন্ধ্যার বর্ণনা রয়েছে। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় তো অঝোর ব্যাপ্তিতে হেমন্ত ধরা দিয়েছে। সেসব বিবরণে প্রকৃতির শূন্যতা যতখানি ধরা পড়ে, তার বাইরে কিন্তু অন্য কোনও সূচক প্রবল হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন যদি কেউ হেমন্তের বিশ্বাস্য কথা-চিত্র ধরে রাখতে চায়, তাকে বিষণœতা বা নিঃসঙ্গতার পাশাপাশি দূষণের উল্লেখও করতে হবে। যে-দূষণ মূলত আচ্ছন্ন করে বাতাসকে। প্রতিবারই প্রাক-শীতে ঢাকার দূষণ দৃশ্য আমাদের চোখে কমবেশি ধরা পড়ে। তাই হেমন্তের সময়ে ঢাকা কেমন করে তিলে তিলে বাস-অযোগ্য হয়ে ওঠে কমবেশি। কথাটি কারও চোখে পড়ে, আবার কারও বা চোখে দেখা যায় না। ঢাকার সর্বত্রই ধুলোবালির ছড়াছড়ি- এ যেন এক ধরনের বিষে ভরা রাজপথ। ধুলোবালি আর ধুলোবালি, সমস্যাটি রয়ে গেছে। কতদিন আর? দূষণ, প্রকৃতির বিপর্যয়ের কথা বলে। বিশ্বজুড়েই প্রকৃতির স্বাস্থ্য খারাপতর হচ্ছে এই বিষয়ে সন্দেহ নেই।
দূষণ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায়-সচেতনতা বৃদ্ধি। এটি সম্পর্কে সবাইই কমবেশি জানেন, বোঝেন, স্বীকারও করেন। কিন্তু ফলিত প্রয়োগে সচেতনতা কি প্রদর্শিত হয়, বা কোনও একজনের চূড়ান্ত সতর্কতাও কি গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ উপকারী সাব্যস্ত হতে পারে? দূষণ নিয়ে প্রতিবছর কমবেশি উৎকণ্ঠা কমবেশি শোনা যায়, কিন্তু তারপরে? কোথায় কী-কী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে তা কি জনগণ জানতে পারে, না তা জানতে উৎসাহী হয়? মানতে হবে, কোথাও একটা মানিয়ে নেয়ার অপারগতা চলে এসেছে, জাঁকিয়ে বসেছে। সবাই ধরে নিয়েছে-কিছু কথা বলার জন্যই। তা বলে যে বিরাট ফল পাওয়া যাবে এমন নয়, কিন্তু না-বললে যেন বিবেকের কামড় একটু বেশি জোরে চামড়ায় ফুটে উঠবে। আর, একবার বলে ফেললে-দায়িত্ব পালনের একঘেয়ে শ্লাঘা মনকে দখল করে। এই হেমন্তের দূষণ যদি বছরের পর বছর ধরে দেখা যায়, বুঝতে হবে, পৃথিবী যে-নিয়মে ঘোরে, পৃথিবীর মানুষ তার ‘অ আ ক খ গ, এ বি সি ডি’ কিছুই জানে না, বুঝে না।
লিয়াকত হোসেন খোকন,
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।