মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
মানুষের রূপচর্চার ইতিহাস প্রায় ছয় হাজার বছরের পুরনো। তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রসাধনী ব্যবহারের এই ঐতিহ্য বর্তমানে ভেজাল ও নকল প্রসাধনীর কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জনপ্রিয় ব্যান্ডের নামে নকল প্রসাধনী তৈরি করে কম দামে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব পণ্য ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি, চর্মরোগ এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে।
গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে নকল প্রসাধনীর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ কম দামে ভালো পণ্য পাওয়ার লোভে বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ছে। শহরাঞ্চলেও নকল প্রসাধনীর বাজার বড় আকার ধারণ করেছে।
বাজারে ব্যান্ড ও নন-ব্যান্ড প্রসাধনীর সহজলভ্যতা থাকলেও নকল পণ্যের আধিক্য বেশি। ঢাকার চকবাজার, ইসলামপুর, জিনজিরাসহ বিভিন্ন এলাকায় নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় সস্তা রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে শ্যাম্পু, ক্রিম, লিপস্টিক, ফেসওয়াশ এবং চুলের তেল। গ্লিসারিন, লবণ, পাউডার, সুগন্ধি মিশিয়ে তৈরি এসব পণ্য আন্তর্জাতিক মানের বলে বাজারে ছাড়া হয়।
নকল প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয় মার্কারি ও হাইড্রোকুইনোনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক। এগুলো ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে, দীর্ঘমেয়াদে চর্মরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ প্রসাধনীও দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে নকল পণ্য ব্যবহারে ঝুঁকির মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে যে পরিমাণ কসমেটিকসের চাহিদা রয়েছে তার ১৫% পূরণ করছে দেশী কোম্পানি, ১৫% আমদানি পণ্য আর ৭০% নিম্ন মানে ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে তৈরি করা নকল প্রসাধনী।
অন্যদিকে চোরাই পথে আনা মানহীন বিদেশি প্রসাধনীও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব পণ্য দেশের জলবায়ু ও ত্বকের উপযোগী নয়। এসব ব্যবহারে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং চেহারায় স্থায়ী ক্ষতির ঝুঁকি থাকে।
নকল প্রসাধনীর ক্ষতি থেকে বাঁচতে জনগণকে সচেতন হতে হবে। কম দামে প্রলোভনমূলক বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা না দিয়ে মানসম্মত পণ্য কিনতে হবে। পণ্য কেনার সময় বারকোড যাচাই এবং ব্যবহারের পর প্যাকেট বা কৌটা ধ্বংস করা জরুরি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বিএসটিআই ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। ভেজাল পণ্য দেখলে জনগণকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুস্থ ও নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য নকল প্রসাধনী থেকে দূরে থাকা এবং পণ্যের মান যাচাইয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। জনসচেতনতা ও আইনের প্রয়োগের সমন্বয়ে নকল প্রসাধনী রোধ করা সম্ভব।
ইসরাত ইশা
শিক্ষার্থী মার্কেটিং বিভাগ, রাজশাহী কলেজ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫
মানুষের রূপচর্চার ইতিহাস প্রায় ছয় হাজার বছরের পুরনো। তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রসাধনী ব্যবহারের এই ঐতিহ্য বর্তমানে ভেজাল ও নকল প্রসাধনীর কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জনপ্রিয় ব্যান্ডের নামে নকল প্রসাধনী তৈরি করে কম দামে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব পণ্য ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি, চর্মরোগ এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে।
গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে নকল প্রসাধনীর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ কম দামে ভালো পণ্য পাওয়ার লোভে বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ছে। শহরাঞ্চলেও নকল প্রসাধনীর বাজার বড় আকার ধারণ করেছে।
বাজারে ব্যান্ড ও নন-ব্যান্ড প্রসাধনীর সহজলভ্যতা থাকলেও নকল পণ্যের আধিক্য বেশি। ঢাকার চকবাজার, ইসলামপুর, জিনজিরাসহ বিভিন্ন এলাকায় নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় সস্তা রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে শ্যাম্পু, ক্রিম, লিপস্টিক, ফেসওয়াশ এবং চুলের তেল। গ্লিসারিন, লবণ, পাউডার, সুগন্ধি মিশিয়ে তৈরি এসব পণ্য আন্তর্জাতিক মানের বলে বাজারে ছাড়া হয়।
নকল প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয় মার্কারি ও হাইড্রোকুইনোনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক। এগুলো ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে, দীর্ঘমেয়াদে চর্মরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ প্রসাধনীও দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে নকল পণ্য ব্যবহারে ঝুঁকির মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে যে পরিমাণ কসমেটিকসের চাহিদা রয়েছে তার ১৫% পূরণ করছে দেশী কোম্পানি, ১৫% আমদানি পণ্য আর ৭০% নিম্ন মানে ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে তৈরি করা নকল প্রসাধনী।
অন্যদিকে চোরাই পথে আনা মানহীন বিদেশি প্রসাধনীও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব পণ্য দেশের জলবায়ু ও ত্বকের উপযোগী নয়। এসব ব্যবহারে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং চেহারায় স্থায়ী ক্ষতির ঝুঁকি থাকে।
নকল প্রসাধনীর ক্ষতি থেকে বাঁচতে জনগণকে সচেতন হতে হবে। কম দামে প্রলোভনমূলক বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা না দিয়ে মানসম্মত পণ্য কিনতে হবে। পণ্য কেনার সময় বারকোড যাচাই এবং ব্যবহারের পর প্যাকেট বা কৌটা ধ্বংস করা জরুরি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বিএসটিআই ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। ভেজাল পণ্য দেখলে জনগণকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুস্থ ও নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য নকল প্রসাধনী থেকে দূরে থাকা এবং পণ্যের মান যাচাইয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। জনসচেতনতা ও আইনের প্রয়োগের সমন্বয়ে নকল প্রসাধনী রোধ করা সম্ভব।
ইসরাত ইশা
শিক্ষার্থী মার্কেটিং বিভাগ, রাজশাহী কলেজ