alt

মতামত » চিঠিপত্র

পরিবেশ বিপর্যয়ের অজানা মুখ

: শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

ঢাকা শহর হলো দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত নগরী, যেখানে বাস করে প্রায় তিন কোটি মানুষ। নগরায়নের অবিচ্ছিন্ন চাপ, শিল্পকারখানার বর্জ্য, পরিবহন থেকে উঠা বিষাক্ত ধোঁয়া ও অপরিকল্পিত বাসস্থান বেড়ে ওঠার ফলে শহরের পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বিশেষত শহরের বায়ুদূষণ, জলজীবন হ্রাস এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া বিষয়ের মধ্যে অন্যতম।

শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত মূল সড়কের পাশে কিছু গাছ দেখা গেলেও আশেপাশের বেশিরভাগ জায়গায় গাছের মূলে এবং রাস্তার ধারে মলমূত্র ত্যাগ এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালিবাগ মৌচাক মার্কেট থেকে খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার ধারের গাছের নিচে ও ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভারের পিলারের নিচে যত্রতত্র মানুষ প্রস্রাব করছেÑযেন সেখানে গণপরিষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে তীব্র দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, যা পথচারীদের জন্য খুবই কষ্টকর।

বৃষ্টির সময় এই প্রস্রাব ও মল বৃষ্টির জলে মিশে জলাবদ্ধতা সমস্যা আরও তীব্র করে তোলে। এই পরিস্থিতি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মারাত্মক হুমকি, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও কার্যকর মনোযোগ বা উদ্যোগ চোখে পড়ে না।

এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, শহরের জনবহুল এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের অভাব। সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টয়লেট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, আর মসজিদের টয়লেট নামাজের সময় ছাড়া বন্ধ থাকে, যা সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় জায়গায় টয়লেট নির্মাণ ও পরিচ্ছন্নতার জন্য যথাযথ লোকবল নিয়োগ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ঢাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরির পরীক্ষা অধিকাংশ ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রতিদিন নতুন মানুষের ঢাকায় আগমন বাড়ছে। এই বিকেন্দ্রিকরণের অভাব জনসংখ্যা ও চাপ বাড়াচ্ছে।

তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কাজ না করায় অব্যবস্থাপনা এবং অগোছালো পরিস্থিতি চলছে। নাগরিক সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের অভাবও সমস্যাকে গভীর করছে।

পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের কাজ নয়, নাগরিকদেরও নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। চারপাশের পরিবেশকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি, না হলে ঢাকা শহরের এই পরিবেশগত সংকট আরও প্রকট হবে।

কামরুল হাসান

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

নিরাপদ শিশু খাদ্য: জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়: প্রতিদিনের দুঃস্বপ্ন

পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা

হেমন্ত আসে হিম কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে

জীবনের অভিধানে প্রবীণদের স্থান কোথায়?

নীরবতা নয়, বলতে শেখ

সুন্দরবনে টেকসই পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও করণীয়

প্রথার নামে প্রথাগত শোষণ: উচ্চ কাবিনের ফাঁদ

শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা

tab

মতামত » চিঠিপত্র

পরিবেশ বিপর্যয়ের অজানা মুখ

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা শহর হলো দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত নগরী, যেখানে বাস করে প্রায় তিন কোটি মানুষ। নগরায়নের অবিচ্ছিন্ন চাপ, শিল্পকারখানার বর্জ্য, পরিবহন থেকে উঠা বিষাক্ত ধোঁয়া ও অপরিকল্পিত বাসস্থান বেড়ে ওঠার ফলে শহরের পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বিশেষত শহরের বায়ুদূষণ, জলজীবন হ্রাস এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া বিষয়ের মধ্যে অন্যতম।

শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত মূল সড়কের পাশে কিছু গাছ দেখা গেলেও আশেপাশের বেশিরভাগ জায়গায় গাছের মূলে এবং রাস্তার ধারে মলমূত্র ত্যাগ এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালিবাগ মৌচাক মার্কেট থেকে খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার ধারের গাছের নিচে ও ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভারের পিলারের নিচে যত্রতত্র মানুষ প্রস্রাব করছেÑযেন সেখানে গণপরিষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে তীব্র দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, যা পথচারীদের জন্য খুবই কষ্টকর।

বৃষ্টির সময় এই প্রস্রাব ও মল বৃষ্টির জলে মিশে জলাবদ্ধতা সমস্যা আরও তীব্র করে তোলে। এই পরিস্থিতি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মারাত্মক হুমকি, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও কার্যকর মনোযোগ বা উদ্যোগ চোখে পড়ে না।

এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, শহরের জনবহুল এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের অভাব। সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টয়লেট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, আর মসজিদের টয়লেট নামাজের সময় ছাড়া বন্ধ থাকে, যা সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় জায়গায় টয়লেট নির্মাণ ও পরিচ্ছন্নতার জন্য যথাযথ লোকবল নিয়োগ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ঢাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরির পরীক্ষা অধিকাংশ ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রতিদিন নতুন মানুষের ঢাকায় আগমন বাড়ছে। এই বিকেন্দ্রিকরণের অভাব জনসংখ্যা ও চাপ বাড়াচ্ছে।

তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কাজ না করায় অব্যবস্থাপনা এবং অগোছালো পরিস্থিতি চলছে। নাগরিক সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের অভাবও সমস্যাকে গভীর করছে।

পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের কাজ নয়, নাগরিকদেরও নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। চারপাশের পরিবেশকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি, না হলে ঢাকা শহরের এই পরিবেশগত সংকট আরও প্রকট হবে।

কামরুল হাসান

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

back to top