মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
ঢাকা শহর হলো দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত নগরী, যেখানে বাস করে প্রায় তিন কোটি মানুষ। নগরায়নের অবিচ্ছিন্ন চাপ, শিল্পকারখানার বর্জ্য, পরিবহন থেকে উঠা বিষাক্ত ধোঁয়া ও অপরিকল্পিত বাসস্থান বেড়ে ওঠার ফলে শহরের পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বিশেষত শহরের বায়ুদূষণ, জলজীবন হ্রাস এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া বিষয়ের মধ্যে অন্যতম।
শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত মূল সড়কের পাশে কিছু গাছ দেখা গেলেও আশেপাশের বেশিরভাগ জায়গায় গাছের মূলে এবং রাস্তার ধারে মলমূত্র ত্যাগ এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালিবাগ মৌচাক মার্কেট থেকে খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার ধারের গাছের নিচে ও ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভারের পিলারের নিচে যত্রতত্র মানুষ প্রস্রাব করছেÑযেন সেখানে গণপরিষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে তীব্র দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, যা পথচারীদের জন্য খুবই কষ্টকর।
বৃষ্টির সময় এই প্রস্রাব ও মল বৃষ্টির জলে মিশে জলাবদ্ধতা সমস্যা আরও তীব্র করে তোলে। এই পরিস্থিতি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মারাত্মক হুমকি, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও কার্যকর মনোযোগ বা উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, শহরের জনবহুল এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের অভাব। সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টয়লেট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, আর মসজিদের টয়লেট নামাজের সময় ছাড়া বন্ধ থাকে, যা সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় জায়গায় টয়লেট নির্মাণ ও পরিচ্ছন্নতার জন্য যথাযথ লোকবল নিয়োগ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ঢাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরির পরীক্ষা অধিকাংশ ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রতিদিন নতুন মানুষের ঢাকায় আগমন বাড়ছে। এই বিকেন্দ্রিকরণের অভাব জনসংখ্যা ও চাপ বাড়াচ্ছে।
তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কাজ না করায় অব্যবস্থাপনা এবং অগোছালো পরিস্থিতি চলছে। নাগরিক সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের অভাবও সমস্যাকে গভীর করছে।
পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের কাজ নয়, নাগরিকদেরও নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। চারপাশের পরিবেশকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি, না হলে ঢাকা শহরের এই পরিবেশগত সংকট আরও প্রকট হবে।
কামরুল হাসান
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
ঢাকা শহর হলো দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত নগরী, যেখানে বাস করে প্রায় তিন কোটি মানুষ। নগরায়নের অবিচ্ছিন্ন চাপ, শিল্পকারখানার বর্জ্য, পরিবহন থেকে উঠা বিষাক্ত ধোঁয়া ও অপরিকল্পিত বাসস্থান বেড়ে ওঠার ফলে শহরের পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বিশেষত শহরের বায়ুদূষণ, জলজীবন হ্রাস এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া বিষয়ের মধ্যে অন্যতম।
শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত মূল সড়কের পাশে কিছু গাছ দেখা গেলেও আশেপাশের বেশিরভাগ জায়গায় গাছের মূলে এবং রাস্তার ধারে মলমূত্র ত্যাগ এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালিবাগ মৌচাক মার্কেট থেকে খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার ধারের গাছের নিচে ও ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভারের পিলারের নিচে যত্রতত্র মানুষ প্রস্রাব করছেÑযেন সেখানে গণপরিষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে তীব্র দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, যা পথচারীদের জন্য খুবই কষ্টকর।
বৃষ্টির সময় এই প্রস্রাব ও মল বৃষ্টির জলে মিশে জলাবদ্ধতা সমস্যা আরও তীব্র করে তোলে। এই পরিস্থিতি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মারাত্মক হুমকি, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও কার্যকর মনোযোগ বা উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, শহরের জনবহুল এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের অভাব। সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টয়লেট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, আর মসজিদের টয়লেট নামাজের সময় ছাড়া বন্ধ থাকে, যা সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় জায়গায় টয়লেট নির্মাণ ও পরিচ্ছন্নতার জন্য যথাযথ লোকবল নিয়োগ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ঢাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরির পরীক্ষা অধিকাংশ ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রতিদিন নতুন মানুষের ঢাকায় আগমন বাড়ছে। এই বিকেন্দ্রিকরণের অভাব জনসংখ্যা ও চাপ বাড়াচ্ছে।
তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কাজ না করায় অব্যবস্থাপনা এবং অগোছালো পরিস্থিতি চলছে। নাগরিক সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের অভাবও সমস্যাকে গভীর করছে।
পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের কাজ নয়, নাগরিকদেরও নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। চারপাশের পরিবেশকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি, না হলে ঢাকা শহরের এই পরিবেশগত সংকট আরও প্রকট হবে।
কামরুল হাসান
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়