alt

মতামত » চিঠিপত্র

মতিঝিল-গুলিস্তান রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস : শৃঙ্খল ও স্বস্তির সম্ভাবনা

: শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

মতিঝিলকে ঢাকার অফিসপাড়া বলা হয়। এখানে রয়েছে বড় বড় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, কর্পোরেট অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। গুলিস্তান ও পল্টনের সঙ্গে মিলে এটি দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও পুরান ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের একটি প্রধান পথও এটি। এখান থেকে দূরপাল্লার বাসও ছাড়ে, ফলে পরিবহন খাতে এর গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তবে খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী ও বাসাবো এলাকা থেকে প্রতিদিন মতিঝিল-গুলিস্তান অভিমুখে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি অসহনীয়। ফুটপাতে অবৈধ দখল, রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোর আধিপত্য জনজীবন বিপর্যস্ত করছে। মালিবাগ থেকে খিলগাঁও ও শাহজাহানপুর হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যেকোনো পথে ফুটপাত দখল এবং চলাচলের অযোগ্য অবস্থা পথচারীদের হাঁটার সুযোগও নষ্ট করেছে। এ পরিস্থিতিতে হাতিরঝিলের মতো চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করলে যাতায়াতে আধুনিকতা, স্বস্তি ও পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা সম্ভব।

হাতিরঝিল প্রকল্পের সাফল্য আমাদের সামনে উদাহরণ হয়ে আছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মাত্র চারটি বাস দিয়ে শুরু হওয়া হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিস এখন ঢাকার অন্যতম সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা। খিলগাঁও-মালিবাগ থেকে মতিঝিল-গুলিস্তান পর্যন্ত অনুরূপ সার্ভিস চালু করতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। এতে শুধু পরিবহন নয়, এলাকার জীবনযাত্রার মান, পরিবেশ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পরিবর্তন বিবেচনায় নিতে হবে।

বাসিন্দাদের মতামত ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা দরকার, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা এ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে নেবেন বলেই ধারণা। প্রকল্প বাস্তবায়নে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ব্যাটারিচালিত যান ও টেম্পু অপসারণ, এবং বাস সার্ভিসের বিকল্প হিসেবে কার্যকর বিধিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য। এতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

রুট হতে পারে খিলগাঁও (মালিবাগ) কমিউনিটি সেন্টার থেকে শহীদ বাকি সড়ক হয়ে খিলগাঁও রেলক্রসিং, শাহজাহানপুর, তারপর একটি রুট ফকিরাপুল-দৈনিক বাংলা-রাজউক অভিমুখে, আরেকটি রুট নটর ডেম কলেজ হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত। এতে অফিসগামীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকও উপকৃত হবেন, যানজট ও জনদুর্ভোগ কমবে, সময় বাঁচবে এবং পরিবেশ হবে স্বাস্থ্যকর।

অবকাঠামো উন্নয়নে সড়ক সংস্কার, ফুটপাত উপযোগীকরণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ, রিকশা ও টেম্পো চলাচল বন্ধ, যাত্রীছাউনি, টিকিট কাউন্টার, ওয়ার্কশপ ও প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন জরুরি। পাশাপাশি টেম্পু মালিক-চালকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ রাখা উচিতÑতাদের বাস সার্ভিসে নিয়োগ বা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

গণপরিবহন আধুনিকায়নের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার শৃঙ্খলা, সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমজীবী শ্রেণিকে সম্পৃক্ত করলে প্রকল্পটি হবে আরও জনবান্ধব। পরিকল্পিত তদারকিÑযেমন ফুটপাত হেঁটে চলার উপযোগী রাখা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পরিচ্ছন্নতা, সৌন্দর্য বর্ধন ও নিরাপত্তাÑবাস সার্ভিসের মান ধরে রাখতে সহায়ক হবে।

সব দিক বিবেচনায়, মালিবাগ-খিলগাঁও থেকে মতিঝিল-গুলিস্তান পর্যন্ত চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করা গেলে এটি রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর আরেকটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। কঠোর তদারকি ও সব পক্ষের সহযোগিতা পেলে এ রুটকে দেশের অন্যতম সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থায় রূপ দেওয়া সম্ভব।

সাজ্জাদ হোসেন রিজু

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

নিরাপদ শিশু খাদ্য: জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়: প্রতিদিনের দুঃস্বপ্ন

পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা

হেমন্ত আসে হিম কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে

জীবনের অভিধানে প্রবীণদের স্থান কোথায়?

নীরবতা নয়, বলতে শেখ

সুন্দরবনে টেকসই পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও করণীয়

প্রথার নামে প্রথাগত শোষণ: উচ্চ কাবিনের ফাঁদ

শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা

মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক জায়ান্টদের মাস্টার প্ল্যান

গার্মেন্টস শ্রমিকের মৃত্যু কেন কেবলই সংখ্যা?

বাল্যবিয়ে: সমাজের এক নীরব অভিশাপ

মনোস্বাস্থ্যের সংকটে তরুণরা: নীরবতার আড়ালে এক ভয়াবহ বাস্তবতা

ধূমপানের প্রভাব

ইসলামী ব্যাংকগুলোতে সার্ভিস রুল অনুযায়ী নিয়োগ

শিশুর হাতে মোবাইল নয়, চাই জীবনের মাঠে ফেরার ডাক

ভাঙ্গা-খুলনা সড়ক দ্রুত চার লেনে উন্নীত করুন

ডিজিটাল উপনিবেশ : অদৃশ্য শৃঙ্খলের শাসন

tab

মতামত » চিঠিপত্র

মতিঝিল-গুলিস্তান রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস : শৃঙ্খল ও স্বস্তির সম্ভাবনা

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫

মতিঝিলকে ঢাকার অফিসপাড়া বলা হয়। এখানে রয়েছে বড় বড় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, কর্পোরেট অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। গুলিস্তান ও পল্টনের সঙ্গে মিলে এটি দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও পুরান ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের একটি প্রধান পথও এটি। এখান থেকে দূরপাল্লার বাসও ছাড়ে, ফলে পরিবহন খাতে এর গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তবে খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী ও বাসাবো এলাকা থেকে প্রতিদিন মতিঝিল-গুলিস্তান অভিমুখে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি অসহনীয়। ফুটপাতে অবৈধ দখল, রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোর আধিপত্য জনজীবন বিপর্যস্ত করছে। মালিবাগ থেকে খিলগাঁও ও শাহজাহানপুর হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যেকোনো পথে ফুটপাত দখল এবং চলাচলের অযোগ্য অবস্থা পথচারীদের হাঁটার সুযোগও নষ্ট করেছে। এ পরিস্থিতিতে হাতিরঝিলের মতো চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করলে যাতায়াতে আধুনিকতা, স্বস্তি ও পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা সম্ভব।

হাতিরঝিল প্রকল্পের সাফল্য আমাদের সামনে উদাহরণ হয়ে আছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মাত্র চারটি বাস দিয়ে শুরু হওয়া হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিস এখন ঢাকার অন্যতম সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা। খিলগাঁও-মালিবাগ থেকে মতিঝিল-গুলিস্তান পর্যন্ত অনুরূপ সার্ভিস চালু করতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। এতে শুধু পরিবহন নয়, এলাকার জীবনযাত্রার মান, পরিবেশ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পরিবর্তন বিবেচনায় নিতে হবে।

বাসিন্দাদের মতামত ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা দরকার, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা এ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে নেবেন বলেই ধারণা। প্রকল্প বাস্তবায়নে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ব্যাটারিচালিত যান ও টেম্পু অপসারণ, এবং বাস সার্ভিসের বিকল্প হিসেবে কার্যকর বিধিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য। এতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

রুট হতে পারে খিলগাঁও (মালিবাগ) কমিউনিটি সেন্টার থেকে শহীদ বাকি সড়ক হয়ে খিলগাঁও রেলক্রসিং, শাহজাহানপুর, তারপর একটি রুট ফকিরাপুল-দৈনিক বাংলা-রাজউক অভিমুখে, আরেকটি রুট নটর ডেম কলেজ হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত। এতে অফিসগামীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকও উপকৃত হবেন, যানজট ও জনদুর্ভোগ কমবে, সময় বাঁচবে এবং পরিবেশ হবে স্বাস্থ্যকর।

অবকাঠামো উন্নয়নে সড়ক সংস্কার, ফুটপাত উপযোগীকরণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ, রিকশা ও টেম্পো চলাচল বন্ধ, যাত্রীছাউনি, টিকিট কাউন্টার, ওয়ার্কশপ ও প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন জরুরি। পাশাপাশি টেম্পু মালিক-চালকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ রাখা উচিতÑতাদের বাস সার্ভিসে নিয়োগ বা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

গণপরিবহন আধুনিকায়নের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার শৃঙ্খলা, সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমজীবী শ্রেণিকে সম্পৃক্ত করলে প্রকল্পটি হবে আরও জনবান্ধব। পরিকল্পিত তদারকিÑযেমন ফুটপাত হেঁটে চলার উপযোগী রাখা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পরিচ্ছন্নতা, সৌন্দর্য বর্ধন ও নিরাপত্তাÑবাস সার্ভিসের মান ধরে রাখতে সহায়ক হবে।

সব দিক বিবেচনায়, মালিবাগ-খিলগাঁও থেকে মতিঝিল-গুলিস্তান পর্যন্ত চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করা গেলে এটি রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর আরেকটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। কঠোর তদারকি ও সব পক্ষের সহযোগিতা পেলে এ রুটকে দেশের অন্যতম সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থায় রূপ দেওয়া সম্ভব।

সাজ্জাদ হোসেন রিজু

back to top