alt

মুক্ত আলোচনা

রণেশ মৈত্র: আপাদমস্তক সাংবাদিক

আলাউদ্দিন আহমেদ

: বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

কলম থেমে গেল বর্ষিয়াণ সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক একুশে পদকপ্রাপ্ত আমাদের প্রিয় কাকা রণেশ মৈত্রের। আমার অভিভাবকতুল্য ছিলেন তিনি। ৯০ বছর বয়সেও তিনি লেখা থামাননি। মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও তিনি লিখেছেন। গত আগস্ট’২২ মাসে একাধিক দিন তাঁর সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। ফেসবুকেও সংযুক্ত ছিলাম। দীর্ঘদিনেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।

ভাষা সংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কলামিষ্ট রণেশ মৈত্র সোমবার(২৬ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা পুরবী মৈত্র, দুই ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

আশির দশকে দৈনিক সংবাদে আমি কাজ শুরু করার পর থেকে রণেশ কাকার সাথে আমার যোগাযোগ বাড়ে। এর আগে অ্যাডওয়ার্ড কলেজে অধ্যায়ন ও ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকে তাঁকে জানতাম ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। রাজনীতির প্রতি আস্থা. বিশ্বাস আর অবিচল এগিয়ে চলার প্রেরণা তিনি ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেন নতুন প্রজন্মের মধ্যে।

আমি সংবাদে জেলা বার্তা পরিবেশকের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রায়ই কাকার সাথে দেখা করতাম পাবনা উকিল বারে। তিনি তখন ওকালতি করতেন। অনেক কথা বলতেন তিনি। রাজনীতি আর সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই তাঁর কথাবার্তায় উঠে আসতো। এসব জ্ঞানগর্ব আলোচনার শিক্ষা পরবর্তী জীবনে আমার কাজে লেগেছে।

১৯৭৭ সালে দৈনিক সংবাদে লেখা শুরু করি। তখন ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। পরে ১৯৭৯ সালে সংবাদে ঈশ্বরদী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ লাভ করি। ১৯৮৮ সালে আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে সংবাদ কর্তৃপক্ষ আমাকে ‘জেলা বার্তা পরিবেশক’ হিসেবে নিয়োগ দেন। জেলার সবগুলো উপজেলায় নিয়মিত সফর করে রিপোর্ট করতে হতো। এই অবস্থায় আমি স্বেচ্ছায় জেলার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলার দায়িত্বে থাকি। তবে অন্য কোন যায়গার রিপোর্ট করলেও তা আস্থার সাথে সংবাদ কর্তৃপক্ষ ছাপতেন।

এক সময় ঈশ্বরদীতে স্থানীয় সংবাদপত্র ছিলনা বললেই চলে। তখন ১৯৯১ সালে চেতনা সমৃদ্ধ পাঠকের সংবাদপত্র-সাপ্তাহিক জনদাবী সরকারি অনুমোদন নিয়ে প্রকাশনা শুরু করি। সরকারের সাথে যে চুক্তিনামা করতে হয় সেখানেও রণেশ কাকা নিজে উপস্থিত ছিলেন। আমার অনাগ্রহ সত্ত্বেও জনদাবী প্রকাশের পিছনে ঈশ্বরদীর প্রয়াত ও বর্তমান একাধিক শীর্ষ নেতাদের উৎসাহ ছিল। গঠনমূলক নিউজ পরিবেশনায় এই পত্রিকাটি স্বল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, ক্রীড়া প্রভৃতি অঙ্গনে সাপ্তাহিক জনদাবী এখনো তার সঠিক দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট রয়েছে।

সাপ্তাহিক জনদাবীর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রণেশ কাকা বিশেষ অতিথি ছিলেন। ঈশ্বরদী বাজারে জনদাবীর নতুন অফিস উদ্বোধনে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। তাছাড়া জনদাবীতে তিনি নিয়মিত কলাম লিখতেন। তাঁর মত বড় মাপের লেখক একটি সাপ্তাহিক কাগজে নিয়মিত লেখা দেয়ার যে মানসিকতা ছিল তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

রণেশ কাকা মফস্বল সাংবাদিকদের অধিকার কায়েমে অনেকদিন কাজ করেছেন। তিনি পাবনায় গড়ে তুলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক সমিতি। পরবর্তীতে এটি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি নামকরণ করা হয় যা এখনো আছে। তবে অনেকটাই নিষ্ক্রীয়। আদর্শভিত্তিক সংগঠনগুলো এখন টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন।

এখন বিপরীত ধারার তড়িৎ ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ পদ্ধতি চালু হয়েছে। ধীরস্থির ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোন কিছু অর্জনে নিবেদিতপ্রান কর্মী পাওয়া মুশকিল। আমরা তো এখন কোন প্রতিষ্ঠানের ভাল গঠনতন্ত্র থাকা সত্ত্বেও তা মেনে চলতে আগ্রহী নই। যেনতেন প্রকারে একটি চেয়ারের প্রত্যাশায় সাংবাদিকতার যে নীতি-আদর্শ তা বারবার পদদলিত ও ক্ষতবিক্ষত করছি। এতে আমাদের বিবেকের কোন দংশন হচ্ছেনা। অর্থাৎ আমরা ‘মন-মানসিকতায় সাংবাদিক’ হয়ে উঠতে পারিনি। রণেশ কাকা সব সময়ই এই ধারার বিপরীতে ছিলেন। যারফলে তাঁর পিছনে দলবল ছিলনা। তিনি নিজের লড়াইটা নিজেই করতেন। যা এখন আমাদের মত অধমদেরও করতে হয়। কারনে-অকারনে কিছু বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা এখন স্বাভাবিক কাজে পরিনত হয়েছে।

সংবাদপত্রের মুলধারার কর্মীদের নানান কায়দায় একশ্রেনীর দুর্নীতিবাজ অপকর্মকারীরা বাধাগ্রস্থ করবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সমাজের কথিত ভাল মানুষগুলো অনেক কিছু দেখেও চুপ করে থাকে অর্থাৎ নিষ্ক্রীয় ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে অপরাধীরা একজনের সমস্যা দেখলে চারিদিক থেকে হুক্কা-হুয়া রব তোলে। এরা সংখ্যায় কম হলেও সংগঠিত। ফলে ভালদের নিষ্ক্রীয়তায় অপকর্মকারীরা সমাজে মাথা উঁচু করে চলার সুযোগ পায়।

সামাজিক এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রয়াত রণেশ মৈত্রদের লেখা. কথা বলার বিশেষ প্রয়োজন। তাঁর মত মানুষদের চলে যাওয়ার শুন্যতা পূরণ হয়না সহজে। এ কারনে হুক্কা-হুয়াদের মাঠ আরও নিষ্কন্টক হয়ে যায়। তাদের থামানোর জন্য মুলধারার সংবাদকর্মীদের সাহসের সাথে এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। সেই প্রত্যাশাটুকু রেখে প্রয়াত রণেশ কাকার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

[লেখক: গণমাধ্যমকর্মী, সাবেক সভাপতি, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব]

রেসলিং

কোটা সমাচার

বাজেট ২০২৪-২৫: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের যাত্রা শুরু হোক এবার

সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১: উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়

ছবি

নাটোরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

রিলিফ

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

tab

মুক্ত আলোচনা

রণেশ মৈত্র: আপাদমস্তক সাংবাদিক

আলাউদ্দিন আহমেদ

বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

কলম থেমে গেল বর্ষিয়াণ সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক একুশে পদকপ্রাপ্ত আমাদের প্রিয় কাকা রণেশ মৈত্রের। আমার অভিভাবকতুল্য ছিলেন তিনি। ৯০ বছর বয়সেও তিনি লেখা থামাননি। মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও তিনি লিখেছেন। গত আগস্ট’২২ মাসে একাধিক দিন তাঁর সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। ফেসবুকেও সংযুক্ত ছিলাম। দীর্ঘদিনেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।

ভাষা সংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কলামিষ্ট রণেশ মৈত্র সোমবার(২৬ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা পুরবী মৈত্র, দুই ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

আশির দশকে দৈনিক সংবাদে আমি কাজ শুরু করার পর থেকে রণেশ কাকার সাথে আমার যোগাযোগ বাড়ে। এর আগে অ্যাডওয়ার্ড কলেজে অধ্যায়ন ও ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকে তাঁকে জানতাম ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। রাজনীতির প্রতি আস্থা. বিশ্বাস আর অবিচল এগিয়ে চলার প্রেরণা তিনি ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেন নতুন প্রজন্মের মধ্যে।

আমি সংবাদে জেলা বার্তা পরিবেশকের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রায়ই কাকার সাথে দেখা করতাম পাবনা উকিল বারে। তিনি তখন ওকালতি করতেন। অনেক কথা বলতেন তিনি। রাজনীতি আর সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই তাঁর কথাবার্তায় উঠে আসতো। এসব জ্ঞানগর্ব আলোচনার শিক্ষা পরবর্তী জীবনে আমার কাজে লেগেছে।

১৯৭৭ সালে দৈনিক সংবাদে লেখা শুরু করি। তখন ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। পরে ১৯৭৯ সালে সংবাদে ঈশ্বরদী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ লাভ করি। ১৯৮৮ সালে আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে সংবাদ কর্তৃপক্ষ আমাকে ‘জেলা বার্তা পরিবেশক’ হিসেবে নিয়োগ দেন। জেলার সবগুলো উপজেলায় নিয়মিত সফর করে রিপোর্ট করতে হতো। এই অবস্থায় আমি স্বেচ্ছায় জেলার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলার দায়িত্বে থাকি। তবে অন্য কোন যায়গার রিপোর্ট করলেও তা আস্থার সাথে সংবাদ কর্তৃপক্ষ ছাপতেন।

এক সময় ঈশ্বরদীতে স্থানীয় সংবাদপত্র ছিলনা বললেই চলে। তখন ১৯৯১ সালে চেতনা সমৃদ্ধ পাঠকের সংবাদপত্র-সাপ্তাহিক জনদাবী সরকারি অনুমোদন নিয়ে প্রকাশনা শুরু করি। সরকারের সাথে যে চুক্তিনামা করতে হয় সেখানেও রণেশ কাকা নিজে উপস্থিত ছিলেন। আমার অনাগ্রহ সত্ত্বেও জনদাবী প্রকাশের পিছনে ঈশ্বরদীর প্রয়াত ও বর্তমান একাধিক শীর্ষ নেতাদের উৎসাহ ছিল। গঠনমূলক নিউজ পরিবেশনায় এই পত্রিকাটি স্বল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, ক্রীড়া প্রভৃতি অঙ্গনে সাপ্তাহিক জনদাবী এখনো তার সঠিক দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট রয়েছে।

সাপ্তাহিক জনদাবীর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রণেশ কাকা বিশেষ অতিথি ছিলেন। ঈশ্বরদী বাজারে জনদাবীর নতুন অফিস উদ্বোধনে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। তাছাড়া জনদাবীতে তিনি নিয়মিত কলাম লিখতেন। তাঁর মত বড় মাপের লেখক একটি সাপ্তাহিক কাগজে নিয়মিত লেখা দেয়ার যে মানসিকতা ছিল তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

রণেশ কাকা মফস্বল সাংবাদিকদের অধিকার কায়েমে অনেকদিন কাজ করেছেন। তিনি পাবনায় গড়ে তুলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক সমিতি। পরবর্তীতে এটি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি নামকরণ করা হয় যা এখনো আছে। তবে অনেকটাই নিষ্ক্রীয়। আদর্শভিত্তিক সংগঠনগুলো এখন টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন।

এখন বিপরীত ধারার তড়িৎ ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ পদ্ধতি চালু হয়েছে। ধীরস্থির ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোন কিছু অর্জনে নিবেদিতপ্রান কর্মী পাওয়া মুশকিল। আমরা তো এখন কোন প্রতিষ্ঠানের ভাল গঠনতন্ত্র থাকা সত্ত্বেও তা মেনে চলতে আগ্রহী নই। যেনতেন প্রকারে একটি চেয়ারের প্রত্যাশায় সাংবাদিকতার যে নীতি-আদর্শ তা বারবার পদদলিত ও ক্ষতবিক্ষত করছি। এতে আমাদের বিবেকের কোন দংশন হচ্ছেনা। অর্থাৎ আমরা ‘মন-মানসিকতায় সাংবাদিক’ হয়ে উঠতে পারিনি। রণেশ কাকা সব সময়ই এই ধারার বিপরীতে ছিলেন। যারফলে তাঁর পিছনে দলবল ছিলনা। তিনি নিজের লড়াইটা নিজেই করতেন। যা এখন আমাদের মত অধমদেরও করতে হয়। কারনে-অকারনে কিছু বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা এখন স্বাভাবিক কাজে পরিনত হয়েছে।

সংবাদপত্রের মুলধারার কর্মীদের নানান কায়দায় একশ্রেনীর দুর্নীতিবাজ অপকর্মকারীরা বাধাগ্রস্থ করবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সমাজের কথিত ভাল মানুষগুলো অনেক কিছু দেখেও চুপ করে থাকে অর্থাৎ নিষ্ক্রীয় ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে অপরাধীরা একজনের সমস্যা দেখলে চারিদিক থেকে হুক্কা-হুয়া রব তোলে। এরা সংখ্যায় কম হলেও সংগঠিত। ফলে ভালদের নিষ্ক্রীয়তায় অপকর্মকারীরা সমাজে মাথা উঁচু করে চলার সুযোগ পায়।

সামাজিক এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রয়াত রণেশ মৈত্রদের লেখা. কথা বলার বিশেষ প্রয়োজন। তাঁর মত মানুষদের চলে যাওয়ার শুন্যতা পূরণ হয়না সহজে। এ কারনে হুক্কা-হুয়াদের মাঠ আরও নিষ্কন্টক হয়ে যায়। তাদের থামানোর জন্য মুলধারার সংবাদকর্মীদের সাহসের সাথে এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। সেই প্রত্যাশাটুকু রেখে প্রয়াত রণেশ কাকার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

[লেখক: গণমাধ্যমকর্মী, সাবেক সভাপতি, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব]

back to top