alt

মুক্ত আলোচনা

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

: মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ১৯৯২ সনের ৩৮ নং আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রথম একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মহান জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতক্রমে প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সেই থেকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে দেশে বাংলাদেশ দূরশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাহিরে অবস্থানকারী যে কেউ সাধারণ কিছু শিক্ষা লাভ করার ব্যবস্থা কার্যকর ছিল। দেশে ক্রমবর্ধমান শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দূঢ়শিক্ষণ পদ্ধতিকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য সকল মহল থেকে তাগিদ অনুভুত হতে থাকে। বিশ্বে এরই মধ্যে শুধু দূরশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমেই নয় বরং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ বহুমাত্রিক করার ব্যবস্থা চালু হওয়ায় বাংলাদেশেও বিশেষ এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসে। তাদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়েই বাংলাদেশ সরকার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ গ্রহণ করে।

এটি প্রথাগত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ক্যাম্পাসভিত্তিক নয়, বরং দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় থাকায় সেখানকার শিক্ষার্থীরাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করে থাকে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ক্যা¤পাস গাজীপুরে ৩৫ একর জমির ওপর স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া এর ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রসহ দেশে আরো ১১টি আঞ্চলিক এবং ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিকল্পনা মোতাবেক স্থাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত এইসব আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধীন নিকটস্থ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংযুক্ত করার মাধ্যমে সপ্তাহে ১/২ দিন শ্রেণি পাঠদান এবং অন্যান্য সহায়ক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে।

মূলত যারা চাকরিজীবী কিংবা পারিবারিক ও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে লেখাপড়া সমাপ্ত করতে পারেননি তারা এবং যেকোনো বয়সের যেকোনো নাগরিকই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার রাখেন । এর ফলে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি করা ছাড়াও আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের সুযোগ লাভ করার ব্যবস্থাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। একারণে এটিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। দেশের যেকোনো অঞ্চলে অবস্থান করেও যেকেউ এর শিক্ষাক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ এখানে অবারিত থাকে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি পাঠদান যেমন রয়েছে , আবার তথ্যপ্রযুক্তি, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহার করার মাধ্যমেও শিক্ষার্থীগণ লেখা পড়া করার সুযোগ ব্যবহার করতে পারেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সেকারণে পাঠদানের সব ধরণের উপায় ও মাধ্যমকে ব্যবহার করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পাঠসামগ্রী তথা বইপুস্তক যেমন সরবরাহ করে থাকেন, একইভাবে অডিও, ভিডিও, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদিও মাধ্যমেও শুরু থেকেই পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি আধুনিক মিডিয়া সেন্টার। ফলে বহু উপায়ে শিক্ষার সুযোগকে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাঁধা নিষেধ নেই।

১৯৯২ সাল থেকেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বাংলাদেশে প্রচারিত হতে থাকে এবং নানা অঞ্চলের নানা বয়সের শিক্ষার্থীগণ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা লাভের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কিছু ভাষা শিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট অর্জনের প্রোগ্রাম চালু করেছিলো যেগুলো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চতর ডিগ্রী লাভের প্রোগ্রামও চালু করতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি অনুষদ, সামাজিক, মানবিক ও ভাষা অনুষদ, শিক্ষা অনুষদ, ওপেন স্কুল এবং আইন বিভাগও চালু করা হয়।

এইসব অনুষদের মাধ্যমে কিছু সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম ছাড়াও স্নাতক /স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভের প্রোগ্রাম গত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। একসময় সার্টিফিকেট প্রোগ্রামগুলোতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেছিলো। এখন দেশের বাস্তব অবস্থা ও শিক্ষাব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন আশায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর পেশাভিত্তিক কারিগরি , ব্যবসা, শিক্ষা প্রশিক্ষণ, কৃষি, চিকিৎসা , সামাজিক ও মানবিক বিষয়ে স্নাতক /স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করতে হয়েছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে বেশিরভাগ প্রোগ্রাম চলছে। তবে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণও পাঠদানের কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় শিক্ষার্থীগণ উপকৃত হচ্ছেন।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রায় বেশির ভাগ রাষ্ট্রে ২০ শতকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বহু মাধ্যমে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে তাদের পছন্দ ও চাহিদা মোতাবেক বিষয়ে যেকোন স্তরের শিক্ষাদানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হয়ে উঠে বহুমুখি মাধ্যমে আগ্রহি শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য শিক্ষা লাভের একটি অপার সুযোগ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি পাঠদানের বাহিরে উন্মুক্ত পদ্ধতিতেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ইংল্যান্ডে ১৯৬৯ সালে দ্য ওপেন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে এটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭২২ জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি গবেষণার সঙ্গে ছাত্র শিক্ষকদের গভীর সর্ক রয়েছে। আমাদের উপমহাদেশে পাকিস্তানে আল্লামা ইকবাল উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রীলংকা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্দিরাগান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ভারতে আরো বেশ কিছু সংখ্যক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশেও প্রায় একইসময়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেও পাকিস্তান ভারত ও শ্রীলংকার মতো উন্মুক্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে মান ও বিস্তারের ক্ষেত্রে আমরা ততটা চ্যালেঞ্জ নিতে পারিনি।

এখন বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। আধুনিক দক্ষ জনবল সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। সেকারণে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে বর্তমান শতাব্দীর চাহিদা পূরণে শিক্ষাক্রমকে ঢেলে সাজাতেই হবে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোতে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে নানা বিষয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, কারিগরি, নার্সিং, সেবামূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে অসংখ্য কিশোর , তরুণ ও যুবক কর্মদক্ষতার জ্ঞানলাভের সুযোগ পেতে পারে। নিকটস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও প্রশিক্ষকগণকে কাজে লাগিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষাক্রম অনায়াসে পরিচালিত করতে পারে।

এছাড়া অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় উপজেলা, জেলা এবং বিভাগগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের উচ্চতর বিভিন্ন শাখার পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ এর সঙ্গে যুক্ত হতে কোনো বাঁধা নেই। উন্নত দেশগুলোতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞদের শিক্ষাক্রম এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শ্রেণিপাঠদানের পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যমও গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহার করে থাকে। আমাদের দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেভাবে প্রস্তুত হয়নি। করোনাকালে বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেই শিক্ষাক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পদ্ধতির সহায়তা নিয়েছিলো। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বর্তমানে এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ছাপ থাকা আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এর প্রোগ্রাম , শিক্ষাক্রম এবং অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী ও গবেষণার সুযোগ করে দিতে পারে। এর কারিগরি সুযোগসুবিধাকে ব্যবহারের মাধ্যমেই দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষালাভের সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয়টি অনায়াসেই গ্রহণ করতে পারে।

৩০ বছর হয়তো খুব বেশি সময় নয়। তবে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে শিক্ষার ধ্যান ধারণা ও প্রয়োগগত চাহিদা অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন ভিশন ও মিশন গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা ছাড়া টিকে থাকার ক্ষেত্রে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুযোগসুবিধার ওপর নিভর করে নয় বরং নিজেদের অবকাঠামোকে পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউটর , শিক্ষক ও প্রশিক্ষকদের মেধা এবং শ্রমকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া অনলাইন পদ্ধতিকে আরো কীভাবে সবার জন্য সহজ ও সুলভ্য করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত করা যাবে সেটিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। তবেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী হয়ে উঠবে সফল এবং গৌরবমন্ডিত।

[লেখক: সাবেক ডিন , বাউবি]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

বিশ্ব শিক্ষক দিবস : শিক্ষা পুনরুদ্ধারে শিক্ষকদের চ্যালেঞ্জ

tab

মুক্ত আলোচনা

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ১৯৯২ সনের ৩৮ নং আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রথম একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মহান জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতক্রমে প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সেই থেকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে দেশে বাংলাদেশ দূরশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাহিরে অবস্থানকারী যে কেউ সাধারণ কিছু শিক্ষা লাভ করার ব্যবস্থা কার্যকর ছিল। দেশে ক্রমবর্ধমান শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দূঢ়শিক্ষণ পদ্ধতিকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য সকল মহল থেকে তাগিদ অনুভুত হতে থাকে। বিশ্বে এরই মধ্যে শুধু দূরশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমেই নয় বরং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ বহুমাত্রিক করার ব্যবস্থা চালু হওয়ায় বাংলাদেশেও বিশেষ এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসে। তাদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়েই বাংলাদেশ সরকার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ গ্রহণ করে।

এটি প্রথাগত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ক্যাম্পাসভিত্তিক নয়, বরং দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় থাকায় সেখানকার শিক্ষার্থীরাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করে থাকে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ক্যা¤পাস গাজীপুরে ৩৫ একর জমির ওপর স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া এর ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রসহ দেশে আরো ১১টি আঞ্চলিক এবং ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিকল্পনা মোতাবেক স্থাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত এইসব আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধীন নিকটস্থ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংযুক্ত করার মাধ্যমে সপ্তাহে ১/২ দিন শ্রেণি পাঠদান এবং অন্যান্য সহায়ক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে।

মূলত যারা চাকরিজীবী কিংবা পারিবারিক ও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে লেখাপড়া সমাপ্ত করতে পারেননি তারা এবং যেকোনো বয়সের যেকোনো নাগরিকই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার রাখেন । এর ফলে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি করা ছাড়াও আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের সুযোগ লাভ করার ব্যবস্থাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। একারণে এটিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। দেশের যেকোনো অঞ্চলে অবস্থান করেও যেকেউ এর শিক্ষাক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ এখানে অবারিত থাকে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি পাঠদান যেমন রয়েছে , আবার তথ্যপ্রযুক্তি, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহার করার মাধ্যমেও শিক্ষার্থীগণ লেখা পড়া করার সুযোগ ব্যবহার করতে পারেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সেকারণে পাঠদানের সব ধরণের উপায় ও মাধ্যমকে ব্যবহার করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পাঠসামগ্রী তথা বইপুস্তক যেমন সরবরাহ করে থাকেন, একইভাবে অডিও, ভিডিও, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদিও মাধ্যমেও শুরু থেকেই পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি আধুনিক মিডিয়া সেন্টার। ফলে বহু উপায়ে শিক্ষার সুযোগকে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাঁধা নিষেধ নেই।

১৯৯২ সাল থেকেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বাংলাদেশে প্রচারিত হতে থাকে এবং নানা অঞ্চলের নানা বয়সের শিক্ষার্থীগণ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা লাভের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কিছু ভাষা শিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট অর্জনের প্রোগ্রাম চালু করেছিলো যেগুলো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চতর ডিগ্রী লাভের প্রোগ্রামও চালু করতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি অনুষদ, সামাজিক, মানবিক ও ভাষা অনুষদ, শিক্ষা অনুষদ, ওপেন স্কুল এবং আইন বিভাগও চালু করা হয়।

এইসব অনুষদের মাধ্যমে কিছু সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম ছাড়াও স্নাতক /স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভের প্রোগ্রাম গত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। একসময় সার্টিফিকেট প্রোগ্রামগুলোতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেছিলো। এখন দেশের বাস্তব অবস্থা ও শিক্ষাব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন আশায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর পেশাভিত্তিক কারিগরি , ব্যবসা, শিক্ষা প্রশিক্ষণ, কৃষি, চিকিৎসা , সামাজিক ও মানবিক বিষয়ে স্নাতক /স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করতে হয়েছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে বেশিরভাগ প্রোগ্রাম চলছে। তবে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণও পাঠদানের কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় শিক্ষার্থীগণ উপকৃত হচ্ছেন।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রায় বেশির ভাগ রাষ্ট্রে ২০ শতকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বহু মাধ্যমে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে তাদের পছন্দ ও চাহিদা মোতাবেক বিষয়ে যেকোন স্তরের শিক্ষাদানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হয়ে উঠে বহুমুখি মাধ্যমে আগ্রহি শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য শিক্ষা লাভের একটি অপার সুযোগ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি পাঠদানের বাহিরে উন্মুক্ত পদ্ধতিতেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ইংল্যান্ডে ১৯৬৯ সালে দ্য ওপেন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে এটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭২২ জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি গবেষণার সঙ্গে ছাত্র শিক্ষকদের গভীর সর্ক রয়েছে। আমাদের উপমহাদেশে পাকিস্তানে আল্লামা ইকবাল উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রীলংকা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্দিরাগান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ভারতে আরো বেশ কিছু সংখ্যক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশেও প্রায় একইসময়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেও পাকিস্তান ভারত ও শ্রীলংকার মতো উন্মুক্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে মান ও বিস্তারের ক্ষেত্রে আমরা ততটা চ্যালেঞ্জ নিতে পারিনি।

এখন বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। আধুনিক দক্ষ জনবল সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। সেকারণে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে বর্তমান শতাব্দীর চাহিদা পূরণে শিক্ষাক্রমকে ঢেলে সাজাতেই হবে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোতে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে নানা বিষয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, কারিগরি, নার্সিং, সেবামূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে অসংখ্য কিশোর , তরুণ ও যুবক কর্মদক্ষতার জ্ঞানলাভের সুযোগ পেতে পারে। নিকটস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও প্রশিক্ষকগণকে কাজে লাগিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষাক্রম অনায়াসে পরিচালিত করতে পারে।

এছাড়া অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় উপজেলা, জেলা এবং বিভাগগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের উচ্চতর বিভিন্ন শাখার পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ এর সঙ্গে যুক্ত হতে কোনো বাঁধা নেই। উন্নত দেশগুলোতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞদের শিক্ষাক্রম এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শ্রেণিপাঠদানের পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যমও গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহার করে থাকে। আমাদের দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেভাবে প্রস্তুত হয়নি। করোনাকালে বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেই শিক্ষাক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পদ্ধতির সহায়তা নিয়েছিলো। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বর্তমানে এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ছাপ থাকা আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এর প্রোগ্রাম , শিক্ষাক্রম এবং অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী ও গবেষণার সুযোগ করে দিতে পারে। এর কারিগরি সুযোগসুবিধাকে ব্যবহারের মাধ্যমেই দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষালাভের সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয়টি অনায়াসেই গ্রহণ করতে পারে।

৩০ বছর হয়তো খুব বেশি সময় নয়। তবে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে শিক্ষার ধ্যান ধারণা ও প্রয়োগগত চাহিদা অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন ভিশন ও মিশন গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা ছাড়া টিকে থাকার ক্ষেত্রে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুযোগসুবিধার ওপর নিভর করে নয় বরং নিজেদের অবকাঠামোকে পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউটর , শিক্ষক ও প্রশিক্ষকদের মেধা এবং শ্রমকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া অনলাইন পদ্ধতিকে আরো কীভাবে সবার জন্য সহজ ও সুলভ্য করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত করা যাবে সেটিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। তবেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী হয়ে উঠবে সফল এবং গৌরবমন্ডিত।

[লেখক: সাবেক ডিন , বাউবি]

back to top