alt

উপ-সম্পাদকীয়

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

আব্দুল্লাহ আল হিমেল

: রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

সিরিয়ায় দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে গত ১ এপ্রিল ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলায় ওজএঈ এর তিন শীর্ষ ব্যক্তিসহ ৮ জন ইরানি কর্মকতা নিহত হন। এতে তীব্র ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, সিরিয়া এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেÑএমন বর্বরতা কখনো মেনে নেয়া হবে না। এ হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করার চাপ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে বাড়তে থাকে তেহরানের ওপর।

হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকেই ইরান- ইসরায়েলের মধ্যে উত্তাপ ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল। গত নভেম্বরে ইসরায়েল প্রশাসনÑহামাস, হিজবুল্লাহ, হুত্থিকে তিন প্রান্তে মোকাবিলায় কূল-কিনারা করতে না পেরে বলে ঘোষণা দেয়, ‘এসবের অভিভাবক সাপের মাথা ইরানকে দেখে নেয়া হবে’ তারই একটি বহিঃপ্রকাশ ছিল দূতাবাসে হামলা। এর জবাবে বহু হুঁশিয়ারি ও হুমকি ও উত্তপ্ত বার্তা বিনিময়ের পর অবশেষে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলের আকাশসীমায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রবেশ করে, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোমকে মোকাবিলা করে আঘাত হানতে শুরু করে তেল আবিবসহ ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহরের স্থাপনাগুলোতে, এবং দুটি বিমানবন্দরে। উল্লেখ্য যে আক্রমণে মধ্যে ৩৭টি ক্রুজ মিসাইল ও ৫ শতাধিক ড্রোন ব্যবহৃত হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইসরায়েল গোপন রেখেছে, তবে জানা যায় আকাশ প্রতিরক্ষায় মিসাইলগুলো ঠেকাতে ১ বিলিয়নের ও বেশি ডলার ব্যয় হয়েছে এক রাতেই। এ প্রতিবাদী হামলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণমানুষের কাছে হিরো বনে গেছে ইরান।

আমেরিকা তাদের অস্ত্র ব্যবসার জন্য নতুন যুদ্ধের বাজার হিসেবে ইরানকে যুদ্ধে নামাতে চাইছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ই একমাত্র শক্তি যারা আমেরিকার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে পারার ক্ষমতা রাখে, এবং তেলের খনিগুলোও আমেরিকার নিয়ন্ত্রণহীন, সেই সঙ্গে রাশিয়ার সুহৃদ বন্ধু। ইরানের সিরিয়া দূতাবাসে হামলায় ইসরায়েলকে যে জবাব দিয়েছে তা ছিল নামমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ব্যবহার। শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বে ২০১৬ সালে সিরিয়ার শহর আলেপ্পোকে এমনভাবে ধ্বংস করেছিল ইরান যে বসবাসযোগ্য একটা উন্নত শহর থেকে বিরাণভূমিতে পরিণত করেছিল, হাজার হাজার মানুষের অবারিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

আক্রমণের আগেই ইরান তার মিত্র রাশিয়া ও তাদের জোটের দ্বারা সমর্থিত হয়েছে, পুতিন সর্তক করে বলেন যদি ইরানে মার্কিনিরা কোনো হামলা চালায় রাশিয়া সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে যা বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে, সেই সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তার জন্য নৌমহড়ার অজুহাতে ভূমধ্যসাগরে কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ধারণকারী নৌবহর মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে আবার ইরানের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াবে না বলছে। মার্কিন প্রশাসন ইরানে হামলার বৈধতার বদলে রাফাতে হামলার অনুমতি দিয়েছে যেখানে বাস্তুচ্যুত দেড় মিলিয়ন ফিলিস্তিনি অবস্থান করছে, ফলে এরা নিশ্চিত গণহত্যার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রখেছে এবং আকাশকে নো ফ্লাই জোন ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল যে কোনো মুহূর্তে আক্রমণ করতে পারে এমন ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে বলে দাবি করে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো। ইস্পাহানসহ আর বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করেছে বলে জানায় ইরান। ইরান-ইসরায়েলকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং উভয়েই সর্তক অবস্থানে রয়েছে। ইসরায়েল একদিকে হামাস, হিজবুল্লাহ অন্যদিকে হুত্থিকে মোকাবিলা করছে, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর ও আমেরিকার অবারিতভাবে সমর্থন ক্রমহ্রাসমান, এমতাবস্থায় ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ বাধালে কতক্ষণ টিকতে পারবে? সেই সঙ্গে ইরান কতটা বিচক্ষণতার সঙ্গে আসন্ন যুদ্ধ ঠেকাতে পারে সেটাই এখন প্রশ্ন!

[লেখক : শিক্ষার্থী, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে রক্ষা করুন

তরুণদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও মনঃসমীক্ষণ

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ও বাস্তবতা

স্বামী কিংবা স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ের আইনি প্রতিকার ও বাস্তবতা

তথ্য-উপাত্তের গরমিলে বাজারে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে বিভ্রান্তি

দেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব

ইরানে কট্টরপন্থার সাময়িক পরাজয়

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার ভবিষ্যৎ কী

ক্ষমতার সাতকাহন

জলবায়ু সংকট : আমাদের উপলব্ধি

নারী-পুরুষ চুড়ি পরি, দেশের অন্যায় দূর করি!

ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার

ছবি

সাধারণ মানুষেরা বড় অসাধারণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও কারিগরি শিক্ষা

মাদক রুখতে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ

পারিবারিক অপরাধপ্রবণতা ও কয়েকটি প্রশ্ন

ডারউইনকে খুঁজে পেয়েছি

চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফসল উৎপাদন করা জরুরি

পিএসসি প্রশ্নফাঁসের দায় এড়াবে কীভাবে

এত উন্নয়নের পরও বাসযোগ্যতায় কেন পিছিয়েই থাকছে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য কি কেউ নেই?

জলবায়ু রক্ষায় কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে

অধরার হাতে সমর্পিত ক্ষমতা

প্রসঙ্গ : কোটাবিরোধী আন্দোলন

রম্যগদ্য : যে করিবে চালাকি, বুঝিবে তার জ্বালা কী

একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলার পরিণতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন শ্রেণীকক্ষের বাইরে

মেধা নিয়ে কম মেধাবীর ভাবনা

প্রজাতন্ত্রের সেবক কেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বনে যান

ছবি

বাইডেন কি দলে বোঝা হয়ে যাচ্ছেন?

ছবি

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সাপ উপকারী প্রাণীও বটে!

ছবি

বাস্তববাদী রাজনীতিক জ্যোতি বসু

tab

উপ-সম্পাদকীয়

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

আব্দুল্লাহ আল হিমেল

রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

সিরিয়ায় দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে গত ১ এপ্রিল ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলায় ওজএঈ এর তিন শীর্ষ ব্যক্তিসহ ৮ জন ইরানি কর্মকতা নিহত হন। এতে তীব্র ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, সিরিয়া এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেÑএমন বর্বরতা কখনো মেনে নেয়া হবে না। এ হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করার চাপ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে বাড়তে থাকে তেহরানের ওপর।

হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকেই ইরান- ইসরায়েলের মধ্যে উত্তাপ ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল। গত নভেম্বরে ইসরায়েল প্রশাসনÑহামাস, হিজবুল্লাহ, হুত্থিকে তিন প্রান্তে মোকাবিলায় কূল-কিনারা করতে না পেরে বলে ঘোষণা দেয়, ‘এসবের অভিভাবক সাপের মাথা ইরানকে দেখে নেয়া হবে’ তারই একটি বহিঃপ্রকাশ ছিল দূতাবাসে হামলা। এর জবাবে বহু হুঁশিয়ারি ও হুমকি ও উত্তপ্ত বার্তা বিনিময়ের পর অবশেষে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলের আকাশসীমায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রবেশ করে, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোমকে মোকাবিলা করে আঘাত হানতে শুরু করে তেল আবিবসহ ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহরের স্থাপনাগুলোতে, এবং দুটি বিমানবন্দরে। উল্লেখ্য যে আক্রমণে মধ্যে ৩৭টি ক্রুজ মিসাইল ও ৫ শতাধিক ড্রোন ব্যবহৃত হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইসরায়েল গোপন রেখেছে, তবে জানা যায় আকাশ প্রতিরক্ষায় মিসাইলগুলো ঠেকাতে ১ বিলিয়নের ও বেশি ডলার ব্যয় হয়েছে এক রাতেই। এ প্রতিবাদী হামলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণমানুষের কাছে হিরো বনে গেছে ইরান।

আমেরিকা তাদের অস্ত্র ব্যবসার জন্য নতুন যুদ্ধের বাজার হিসেবে ইরানকে যুদ্ধে নামাতে চাইছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ই একমাত্র শক্তি যারা আমেরিকার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে পারার ক্ষমতা রাখে, এবং তেলের খনিগুলোও আমেরিকার নিয়ন্ত্রণহীন, সেই সঙ্গে রাশিয়ার সুহৃদ বন্ধু। ইরানের সিরিয়া দূতাবাসে হামলায় ইসরায়েলকে যে জবাব দিয়েছে তা ছিল নামমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ব্যবহার। শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বে ২০১৬ সালে সিরিয়ার শহর আলেপ্পোকে এমনভাবে ধ্বংস করেছিল ইরান যে বসবাসযোগ্য একটা উন্নত শহর থেকে বিরাণভূমিতে পরিণত করেছিল, হাজার হাজার মানুষের অবারিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

আক্রমণের আগেই ইরান তার মিত্র রাশিয়া ও তাদের জোটের দ্বারা সমর্থিত হয়েছে, পুতিন সর্তক করে বলেন যদি ইরানে মার্কিনিরা কোনো হামলা চালায় রাশিয়া সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে যা বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে, সেই সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তার জন্য নৌমহড়ার অজুহাতে ভূমধ্যসাগরে কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ধারণকারী নৌবহর মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে আবার ইরানের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াবে না বলছে। মার্কিন প্রশাসন ইরানে হামলার বৈধতার বদলে রাফাতে হামলার অনুমতি দিয়েছে যেখানে বাস্তুচ্যুত দেড় মিলিয়ন ফিলিস্তিনি অবস্থান করছে, ফলে এরা নিশ্চিত গণহত্যার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রখেছে এবং আকাশকে নো ফ্লাই জোন ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল যে কোনো মুহূর্তে আক্রমণ করতে পারে এমন ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে বলে দাবি করে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো। ইস্পাহানসহ আর বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করেছে বলে জানায় ইরান। ইরান-ইসরায়েলকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং উভয়েই সর্তক অবস্থানে রয়েছে। ইসরায়েল একদিকে হামাস, হিজবুল্লাহ অন্যদিকে হুত্থিকে মোকাবিলা করছে, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর ও আমেরিকার অবারিতভাবে সমর্থন ক্রমহ্রাসমান, এমতাবস্থায় ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ বাধালে কতক্ষণ টিকতে পারবে? সেই সঙ্গে ইরান কতটা বিচক্ষণতার সঙ্গে আসন্ন যুদ্ধ ঠেকাতে পারে সেটাই এখন প্রশ্ন!

[লেখক : শিক্ষার্থী, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top