রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের ওয়ার্ডসহ সিসিইউতে হাজার হাজার ছারপোকা আর তেলাপোকা। এদের আক্রমণে দিশেহারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। অন্যদিকে ওয়াশ রুমের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। পরিস্কার না করায় পুরোপুরি ব্যাবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। মশা ও পোকার আক্রমণে চিকিৎসা না নিয়েই চলে যাচ্ছেন অনেক রোগী। হাসপাতাল কতৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা বলে রোগীদের অভিযোগ।
রোগী ও তাদের স্বজন এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে সব সময় দুশর বেশি রোগী থাকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ভর্তি থাকা হৃদরোগীদের সার্বক্ষনিক তেলাপোকা আর ছারপোকার কামড় সহ্য করতে হয়।
রোগীদের অভিযোগ পুরো ওয়ার্ড জুড়ে তেলাপোকা ছাড়া পোকার বাসা। কোটি কোটি পোকা প্রকাশ্যেই বাসা বেধেছে। রোগীদের শরীরের ওপর দিয়ে চলাচল করে পোকাগুলো, এছাড়া খাওয়ার থালাতে, পানি রাখার গ্লাসে, বোতলে সর্বত্র তেলাপোকা আর ছারপোকার অবাধ বিচরণ। ছাড় পোকার কামড় সহ্য করাই মুসকিল বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।
হাসপাতাল কতৃপক্ষকে খোদ কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে বারবার জানানোর পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে মশার উৎপাতও মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ ছাড়াও ল্যাট্রিন আর ওয়াশরুম মাসেও একদিন পরিস্কার না করায় ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে চিকিৎসা নিতে আসা কুড়িগ্রামের নাগেশ^রীর সালাম মিয়ার ছেলে বাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন আমার বাবার অবস্থা খুবই সংকটনাপন্ন দুদিন ধরে তার জ্ঞান নেই। এমন অবস্থায় তার শরীরের ওপর মুখের ওপর দিয়ে তেলাপোকা আর ছারপোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবে পোকার আক্রমণ এসব কি মানা যায়?। হাসপাতাল কতৃপক্ষ কি করে তারা কেন পদক্ষেপ নেয় না।
একই কথা জানালেন লালমনিরহাটের আদিতমারী থেকে আসা রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোরশেদ জানান আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছে ৫ দিন হলো। এখানে পোকার আক্রমণে আমরাই অতীষ্ঠ। খাবার প্লেটে বাবার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাতে বাবা ঘুমাতে পারেন না পোকার আক্রমণে। অন্যদিকে মশার উৎপাত তো আছেই। এ ছাড়াও ওয়ার্ডের ওয়াশ রুম আর ল্যাট্রিনগুলো এক মাসেও পরিষ্কার না করায় ব্যবহার করা যায় না। সেখানে দুগন্ধে যাওয়াই যায় না।
রংপুরের স্টেশন এলাকার মমতাজ বেগম জানালেন পোকার জালা আর মশার উৎপাতে রাতে ঘুমাতে পারি না। তিনি দেখিয়ে দিয়ে বললেন দেয়ালে, ওয়ার্ডের বেডের পাশের্^সহ বিভিন্ন স্থানে তেলাপোকা আর ছাড় পোকার বাসা। তিনি বলেন বাধ্য হয়ে পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই বাসায় চলে যাচ্ছি।
নীলফামারীর জলঢাকা থেকে আসা বৃদ্ধ মোনাব্বর মিয়া জানান ১২ দিন ধরে কার্ডিওলজি বিভাগে আছি রাতে তো পোকার অত্যাচারে ঘুমাতে পারি না। অন্যদিকে ল্যাট্রিনের দুরবস্থার কারণে সুইপার নিয়ে এসে পরিষ্কার করিয়ে নাক-মুখ ঢেকে ২/৩ দিন পর একবার ল্যাট্রিনে যাচ্ছি এভাবে এতবড় হাসপাতাল চলে কিভাবে? এরা আমাদের মানুষ মনে করে না।
এ ব্যাপারে ডা. হরিপদ সরকার সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান কার্ডিওলজি বিভাগ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালের চেম্বারে গেলে তিনি নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন কার্ডিওলজি বিভাগটি এখন তেলাপোকা আর ছাড়পোকার আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। ল্যাট্রিনের সমস্যা মশার উৎপাত সব বিষয়ে স্বীকার করে বলেন সব বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালককে জানানো হয়েছে। তারা কোনো পদক্ষেপ না নিলে আমাদের করার কি আছে? বলে জানান তিনি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.ইউনুছ আলী ছারপোকা আর তেলাপোকার আক্রমণের কথা স্বীকার করলেও এগুলো রোগীরাই বহন করে আনে বলে উল্টো অভিযোগ করেন। কিন্তু পোকার অবস্থানের ছবি দেখানোর পর বললেন ব্যবস্থা নেয়া হবে। পোকার আক্রমণ আর ল্যাট্রিনের বেহাল দশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা মাঝে মাঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। পোকা নির্মূলে ক্রাস প্রোগ্রাম নেয়া হবে। কবে জানতে চাইলে তিনি কবে হবে তা বলেননি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে পোকার আক্রমণ থেকে রোগীদের রক্ষা করতে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবি চিকিৎসক, রোগী ও তাদের স্বজনদের।
বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের ওয়ার্ডসহ সিসিইউতে হাজার হাজার ছারপোকা আর তেলাপোকা। এদের আক্রমণে দিশেহারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। অন্যদিকে ওয়াশ রুমের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। পরিস্কার না করায় পুরোপুরি ব্যাবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। মশা ও পোকার আক্রমণে চিকিৎসা না নিয়েই চলে যাচ্ছেন অনেক রোগী। হাসপাতাল কতৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা বলে রোগীদের অভিযোগ।
রোগী ও তাদের স্বজন এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে সব সময় দুশর বেশি রোগী থাকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ভর্তি থাকা হৃদরোগীদের সার্বক্ষনিক তেলাপোকা আর ছারপোকার কামড় সহ্য করতে হয়।
রোগীদের অভিযোগ পুরো ওয়ার্ড জুড়ে তেলাপোকা ছাড়া পোকার বাসা। কোটি কোটি পোকা প্রকাশ্যেই বাসা বেধেছে। রোগীদের শরীরের ওপর দিয়ে চলাচল করে পোকাগুলো, এছাড়া খাওয়ার থালাতে, পানি রাখার গ্লাসে, বোতলে সর্বত্র তেলাপোকা আর ছারপোকার অবাধ বিচরণ। ছাড় পোকার কামড় সহ্য করাই মুসকিল বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।
হাসপাতাল কতৃপক্ষকে খোদ কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে বারবার জানানোর পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে মশার উৎপাতও মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ ছাড়াও ল্যাট্রিন আর ওয়াশরুম মাসেও একদিন পরিস্কার না করায় ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে চিকিৎসা নিতে আসা কুড়িগ্রামের নাগেশ^রীর সালাম মিয়ার ছেলে বাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন আমার বাবার অবস্থা খুবই সংকটনাপন্ন দুদিন ধরে তার জ্ঞান নেই। এমন অবস্থায় তার শরীরের ওপর মুখের ওপর দিয়ে তেলাপোকা আর ছারপোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবে পোকার আক্রমণ এসব কি মানা যায়?। হাসপাতাল কতৃপক্ষ কি করে তারা কেন পদক্ষেপ নেয় না।
একই কথা জানালেন লালমনিরহাটের আদিতমারী থেকে আসা রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোরশেদ জানান আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছে ৫ দিন হলো। এখানে পোকার আক্রমণে আমরাই অতীষ্ঠ। খাবার প্লেটে বাবার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাতে বাবা ঘুমাতে পারেন না পোকার আক্রমণে। অন্যদিকে মশার উৎপাত তো আছেই। এ ছাড়াও ওয়ার্ডের ওয়াশ রুম আর ল্যাট্রিনগুলো এক মাসেও পরিষ্কার না করায় ব্যবহার করা যায় না। সেখানে দুগন্ধে যাওয়াই যায় না।
রংপুরের স্টেশন এলাকার মমতাজ বেগম জানালেন পোকার জালা আর মশার উৎপাতে রাতে ঘুমাতে পারি না। তিনি দেখিয়ে দিয়ে বললেন দেয়ালে, ওয়ার্ডের বেডের পাশের্^সহ বিভিন্ন স্থানে তেলাপোকা আর ছাড় পোকার বাসা। তিনি বলেন বাধ্য হয়ে পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই বাসায় চলে যাচ্ছি।
নীলফামারীর জলঢাকা থেকে আসা বৃদ্ধ মোনাব্বর মিয়া জানান ১২ দিন ধরে কার্ডিওলজি বিভাগে আছি রাতে তো পোকার অত্যাচারে ঘুমাতে পারি না। অন্যদিকে ল্যাট্রিনের দুরবস্থার কারণে সুইপার নিয়ে এসে পরিষ্কার করিয়ে নাক-মুখ ঢেকে ২/৩ দিন পর একবার ল্যাট্রিনে যাচ্ছি এভাবে এতবড় হাসপাতাল চলে কিভাবে? এরা আমাদের মানুষ মনে করে না।
এ ব্যাপারে ডা. হরিপদ সরকার সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান কার্ডিওলজি বিভাগ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালের চেম্বারে গেলে তিনি নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন কার্ডিওলজি বিভাগটি এখন তেলাপোকা আর ছাড়পোকার আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। ল্যাট্রিনের সমস্যা মশার উৎপাত সব বিষয়ে স্বীকার করে বলেন সব বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালককে জানানো হয়েছে। তারা কোনো পদক্ষেপ না নিলে আমাদের করার কি আছে? বলে জানান তিনি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.ইউনুছ আলী ছারপোকা আর তেলাপোকার আক্রমণের কথা স্বীকার করলেও এগুলো রোগীরাই বহন করে আনে বলে উল্টো অভিযোগ করেন। কিন্তু পোকার অবস্থানের ছবি দেখানোর পর বললেন ব্যবস্থা নেয়া হবে। পোকার আক্রমণ আর ল্যাট্রিনের বেহাল দশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা মাঝে মাঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। পোকা নির্মূলে ক্রাস প্রোগ্রাম নেয়া হবে। কবে জানতে চাইলে তিনি কবে হবে তা বলেননি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে পোকার আক্রমণ থেকে রোগীদের রক্ষা করতে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবি চিকিৎসক, রোগী ও তাদের স্বজনদের।