alt

সারাদেশ

ঈদ ও বৈশাখে ৪শ’ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

এ বছর ঈদে ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে যা উৎপাদন করেছি তা আমরা বাজারে ছেড়ে দিয়েছি। পাইকারি বিক্রিও মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। আমরা আশাবাদী গত বছরের চেয়ে এবার আমাদের বিক্রিটা ভালো হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই, মানুষের মাঝে ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এজন্য আমরা আশাবাদী বিক্রি ভালো হবে। এ বছর আমাদের রপ্তানিটাও বেশি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানিটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। শুধু আমাদের দেশে বাজার দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। এই শিল্পটাকে যেন আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এজন্য সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা অত্যন্ত দরকার। টাঙ্গাইল জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক এমন কথাই বললেন। এদিকে প্রায় ৪শ’ কোটি টাকার

শাড়ি ও তাঁতের নানা পোষাক বিক্রির আশা করছে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স। এজন্য কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধিতে উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতের শাড়ি ও পোষাক তৈরির নানা ধাপের কারিগরাও। দেশের পাশাপাশি অন্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। গত বছর ভারতেই রপ্তানি হয়েছে ৭৪ লাখ পিস শাড়ি। এবার তা ছাড়িয়ে ৭৫ পিস লাখ শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। নতুন ও বাহারি ডিজাইনের সুতি শাড়ি ৬শ’ থেকে ২৫ হাজার টাকা, জামদানি, হাফ সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক ও সফট সিল্ক ১ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম রয়েছে।

ঈদ ও পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সামনে রেখে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা করছে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ব্যবসায়ীরা। এ দুই উৎসব ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে তাঁতপল্লীতে। ক্রেতার চাহিদা মেটাতে দিনরাত বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। গরমের কথা মাথায় রেখে এবার শাড়িতে এসেছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব। আলো আঁধারের ছোট-বড় তাঁত শাড়ির কারখানায় এখন কারিগরদের ব্যস্ততা। ভোর থেকে চলছে মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির শব্দ। তাঁতীর হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হচ্ছে এক একটি বর্ণিল শাড়ি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় এখন তাঁতপল্লীতে। অর্ডার অনুযায়ী শাড়ির যোগান দিতে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন কারিগররা।

তাঁত শ্রমিক রশিদ মিয়া বলেন, বর্তমানে তাঁতের অবস্থা তেমন ভালো না। পরিবার নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। সব কিছুর দাম বৃদ্ধি। আমাদের যে মজুরি দেয় তা দিয়ে আমাদের সংসার তেমন চলে না। তারপরও আমরা সংসার চালাতে কাজ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি সামনে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তাঁতের শাড়ি ভালো বিক্রি হবে। মুসলিম মিয়া বলেন, একটা শাড়ি তৈরি দুই দিন সময় লাগে। আমরা বর্তমানে পৌনে ৭শ’ টাকা মজুরি পাচ্ছি। এ দিয়ে আর সংসার চলে না। এ পেশা যে ছেড়ে দিব অন্য কাজও পারি না। পেটের তাগিদে এ পেশাকে ধরে রেখেছি। মহাজনে ঠিকমতো কাপড় বিক্রি করতে পারলে আমাদের কাজ দেয়। আর বিক্রি করতে না পারলে আমাদের কাজ দেয় না। এভাবেই চলছে আমাদের কাজকর্ম। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের সহযোগিতা করা হোক।

আরফান আলী বলেন, আমি এ পেশায় কাজ করি ৩৫ বছর ধরে। আমাদের টাঙ্গাইলের তাঁতে শাড়ি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি হয়। একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে তিন-চারদিন। বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। মজুরি দেয় মাত্র এক হাজার টাকা। ছেলে- মেয়ে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। বেশির ভাগই এ পেশা থেকে চলে গেছেন। আমি অন্য কোনো কাজ আর শিখি নাই। এজন্য আমি যেতে পারি নাই। এভাবে আর আমাদের সংসার চলছে না। আমাদের মজুরি বাড়ানো হলে পরিবার নিয়ে একটু ভালোভাবে চলতে পারবো। ঢাকা থেকে শাড়ি কিনতে এসেছেন রাবিয়া খাতুন। তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কোয়ালিটি ভালো। গতবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি তারপরও টাঙ্গাইলের শাড়ি অনেক ভালো মানের সেজন্য নিয়ে যাচ্ছি। আরেক ক্রেতা সুমাইয়া শিমু বলেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দুটি তাঁতের শাড়ি নিয়ে গেলাম ও পরিবারের জন্য তিনটি নিয়েছি। শাড়ির মান ও ডিজাইন অনেক ভালো। এজন্য প্রতিবছর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কিনতে আসি। আগের থেকে এবার দাম বেশি রাখছে। দাম একটু কম হলে ভালো হতো।

পাথরাইল এলাকার তাঁতশিল্পের মালিক গোবিন্দ সূত্রধর বলেন, বর্তমানে আমাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। পাওয়ার লুমের কারণে হ্যান্ড লুমের তৈরি শাড়ি কম চলে। হ্যান্ড লুমের শাড়ির দাম বেশি। এগুলো এখন খুব কম চলে। ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকায় পাওয়ার লুমের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। হ্যান্ড লুমের শাড়ি তৈরি করতেই মজুরি দিতে হয় ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। এজন্য আমাদের শাড়ি কম চলে। আমরা তারপরও আশা করছি এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি আমাদের বিক্রি ভালো হবে। গতবারের থেকে এবার বেশি বিক্রি হবে।

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি এবার নতুনত্ব এসছে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এবার মোটামুটি সবাই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁতীদের আমরা চলমান প্রক্রিয়ায় ঋণ প্রদান করি। প্রণোদনা মূলক ঋণ হিসেবে ৫% ঋণ সার্ভিস চার্জে আমরা তাঁতীদেরকে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা ঋণ দিতে পারি।

ছবি

খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ট্রাকচাপায় অটোভ্যানের চালকসহ নিহত ৩

ছবি

তালাক দেওয়া স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় ছেলের হাতে বাবা খুন

ছবি

শাহ আমানতে ২৭ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রাসহ যাত্রী আটক

ছবি

পরিত্যক্ত বস্তায় মিলল ২৪ বোতল বিদেশি মদ

ছবি

৭৬ বছরের রেকর্ড ভাঙলো তাপপ্রবাহ

সেনবাগে কলেজছাএ ও সুধারামে প্রবাসী খুনের পর বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

ছবি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

দুর্বৃত্তের হামলায় ‘গুরুতর’ আহত যুবলীগ নেতা

ছবি

গাজীপুরে কাভার্ড ভ্যানে সিএনজির ধাক্কা নিহত-১ আহত-৪

ছবি

হাসপাতালে হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, ৫ দিনে ২২ জনের মৃত্যু

ছবি

লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

ছবি

গাজীপুরে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু

ছবি

পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

ছবি

গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

প্রিলি পরীক্ষায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার প্রার্থী বসেছে পরীক্ষায়

ছবি

মায়ানমার ফেরতঃ কারাগারে দুপুরে এক বেলা খাবার, সারাদিন ব্যস্ত ভারি কাজে

ছবি

বারিতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষণ

ছবি

গাজীপুরের কোনাবাড়ী জোনাল অফিসে পাওয়ার ট্রান্সফরমারে আগুন

ছবি

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি

ছবি

মেহেরপুরে মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন জেল

ছবি

দাবদাহে গলে যাচ্ছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের পিচ

ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কার্যালয়ে তালা

ছবি

হরিরামপুরে পূর্ব শত্রতার জেরে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা, মেয়াদ আরও বাড়লো

হিটস্ট্রোকে ৪ জনের মৃত্যু

ছবি

ঈদযাত্রা : মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ৫১ শতাংশ, সাড়ে ৪২ শতাংশ নিহত

ছবি

১৫ শ্রমিক নিয়ে সাজেকের খাদে ট্রাক, নিহত ৯

ছবি

রাজধানীতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত

ছবি

থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

ছবি

বাসের ধাক্কায় চুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু নরসিংদীর বাড়িতে কান্নার রোল

ছবি

অপহরণ ও মারধরের শিকার দেলোয়ার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিংড়া উপজেলার চেয়ারম্যান

ছবি

রাজশাহীতে বৃষ্টি নামাতে বিয়ের পিঁড়িতে দুই ব্যঙ

ছবি

রংপুরে সাজাপ্রাপ্ত দুই যুবদল নেতাকে কারাগাওে পাঠানোর নির্দেশে বিক্ষোভ

ছবি

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ

ছবি

পরিবার পাবে ১০ লাখ টাকা চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, আল্টিমেটাম

তিস্তাসহ ৫৪ অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা দাবিতে বাসদের লং মার্চ

tab

সারাদেশ

ঈদ ও বৈশাখে ৪শ’ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

এ বছর ঈদে ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে যা উৎপাদন করেছি তা আমরা বাজারে ছেড়ে দিয়েছি। পাইকারি বিক্রিও মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। আমরা আশাবাদী গত বছরের চেয়ে এবার আমাদের বিক্রিটা ভালো হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই, মানুষের মাঝে ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এজন্য আমরা আশাবাদী বিক্রি ভালো হবে। এ বছর আমাদের রপ্তানিটাও বেশি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানিটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। শুধু আমাদের দেশে বাজার দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। এই শিল্পটাকে যেন আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এজন্য সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা অত্যন্ত দরকার। টাঙ্গাইল জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক এমন কথাই বললেন। এদিকে প্রায় ৪শ’ কোটি টাকার

শাড়ি ও তাঁতের নানা পোষাক বিক্রির আশা করছে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স। এজন্য কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধিতে উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতের শাড়ি ও পোষাক তৈরির নানা ধাপের কারিগরাও। দেশের পাশাপাশি অন্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। গত বছর ভারতেই রপ্তানি হয়েছে ৭৪ লাখ পিস শাড়ি। এবার তা ছাড়িয়ে ৭৫ পিস লাখ শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। নতুন ও বাহারি ডিজাইনের সুতি শাড়ি ৬শ’ থেকে ২৫ হাজার টাকা, জামদানি, হাফ সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক ও সফট সিল্ক ১ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম রয়েছে।

ঈদ ও পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সামনে রেখে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা করছে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ব্যবসায়ীরা। এ দুই উৎসব ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে তাঁতপল্লীতে। ক্রেতার চাহিদা মেটাতে দিনরাত বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। গরমের কথা মাথায় রেখে এবার শাড়িতে এসেছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব। আলো আঁধারের ছোট-বড় তাঁত শাড়ির কারখানায় এখন কারিগরদের ব্যস্ততা। ভোর থেকে চলছে মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির শব্দ। তাঁতীর হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হচ্ছে এক একটি বর্ণিল শাড়ি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় এখন তাঁতপল্লীতে। অর্ডার অনুযায়ী শাড়ির যোগান দিতে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন কারিগররা।

তাঁত শ্রমিক রশিদ মিয়া বলেন, বর্তমানে তাঁতের অবস্থা তেমন ভালো না। পরিবার নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। সব কিছুর দাম বৃদ্ধি। আমাদের যে মজুরি দেয় তা দিয়ে আমাদের সংসার তেমন চলে না। তারপরও আমরা সংসার চালাতে কাজ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি সামনে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তাঁতের শাড়ি ভালো বিক্রি হবে। মুসলিম মিয়া বলেন, একটা শাড়ি তৈরি দুই দিন সময় লাগে। আমরা বর্তমানে পৌনে ৭শ’ টাকা মজুরি পাচ্ছি। এ দিয়ে আর সংসার চলে না। এ পেশা যে ছেড়ে দিব অন্য কাজও পারি না। পেটের তাগিদে এ পেশাকে ধরে রেখেছি। মহাজনে ঠিকমতো কাপড় বিক্রি করতে পারলে আমাদের কাজ দেয়। আর বিক্রি করতে না পারলে আমাদের কাজ দেয় না। এভাবেই চলছে আমাদের কাজকর্ম। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের সহযোগিতা করা হোক।

আরফান আলী বলেন, আমি এ পেশায় কাজ করি ৩৫ বছর ধরে। আমাদের টাঙ্গাইলের তাঁতে শাড়ি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি হয়। একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে তিন-চারদিন। বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। মজুরি দেয় মাত্র এক হাজার টাকা। ছেলে- মেয়ে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। বেশির ভাগই এ পেশা থেকে চলে গেছেন। আমি অন্য কোনো কাজ আর শিখি নাই। এজন্য আমি যেতে পারি নাই। এভাবে আর আমাদের সংসার চলছে না। আমাদের মজুরি বাড়ানো হলে পরিবার নিয়ে একটু ভালোভাবে চলতে পারবো। ঢাকা থেকে শাড়ি কিনতে এসেছেন রাবিয়া খাতুন। তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কোয়ালিটি ভালো। গতবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি তারপরও টাঙ্গাইলের শাড়ি অনেক ভালো মানের সেজন্য নিয়ে যাচ্ছি। আরেক ক্রেতা সুমাইয়া শিমু বলেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দুটি তাঁতের শাড়ি নিয়ে গেলাম ও পরিবারের জন্য তিনটি নিয়েছি। শাড়ির মান ও ডিজাইন অনেক ভালো। এজন্য প্রতিবছর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কিনতে আসি। আগের থেকে এবার দাম বেশি রাখছে। দাম একটু কম হলে ভালো হতো।

পাথরাইল এলাকার তাঁতশিল্পের মালিক গোবিন্দ সূত্রধর বলেন, বর্তমানে আমাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। পাওয়ার লুমের কারণে হ্যান্ড লুমের তৈরি শাড়ি কম চলে। হ্যান্ড লুমের শাড়ির দাম বেশি। এগুলো এখন খুব কম চলে। ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকায় পাওয়ার লুমের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। হ্যান্ড লুমের শাড়ি তৈরি করতেই মজুরি দিতে হয় ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। এজন্য আমাদের শাড়ি কম চলে। আমরা তারপরও আশা করছি এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি আমাদের বিক্রি ভালো হবে। গতবারের থেকে এবার বেশি বিক্রি হবে।

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি এবার নতুনত্ব এসছে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এবার মোটামুটি সবাই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁতীদের আমরা চলমান প্রক্রিয়ায় ঋণ প্রদান করি। প্রণোদনা মূলক ঋণ হিসেবে ৫% ঋণ সার্ভিস চার্জে আমরা তাঁতীদেরকে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা ঋণ দিতে পারি।

back to top