সিরাজগঞ্জে বোরো ধান আবাদে জমিতে পানি সেচে অল্টারনেট ওয়েটিং এন্ড ড্রায়িং (এডাব্লিউ ডি) প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে । এই প্রযুক্তিতে সব কিছুতেই সাশ্রয় হয় বলে জানা গেছে। ধান জমিতে দরকার মতো পানি সেচ দেওয়ায় জলাবদ্ধতা হয় না। সেচ বাবদ টাকা খরচ কম হয়। আর ফসলে পোকা লাগে না ।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৫৪টি কৃষি ব্লকেই প্রাথমিকভাবে করা হয়েছে। জানা গেছে, এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি পদ্ধতি বলতে সেচ নির্ভর বোরো ও রোপা আমন ধান জমি দরকার হলে পানি সেচ দিয়ে ভেজানো ও দরকার কালে শুকানোয় সেচ ব্যবস্থা বলা হয়। এটি নিয়ন্ত্রিত সেচ ব্যবস্থা বোঝায়। এ পদ্ধতিতে বোরো ধান আবাদ করা জমিতে পচিশ সেন্টিমিটার লম্বা ও সাত থেকে দশ সেণ্টিমিটার ব্যাসের প্লাস্টিকের পাইপের পনেরো সেন্টিমিটার ধান জমিতে মাটিতে পুতে দেওয়া হয়। মাটির নিচে পুতে রাখা পাইপের পনেরো সেন্টিমিটারে তিনটি ছিদ্র রাখা হয়। এর মাধ্যমে পাইপের ভেতরের পানির স্তর দেখে দরকার মতো জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়ে থাকে। জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে বোরো ধান জমিতে পানি সেচ বাবদ খরচ কম হয়।
সেচ নির্ভর বোরো ও রোপা আমন ধান জমিতে সেচের পানি বেশি মাত্রায় হলে ও জমিতে তা বেশি দিন জমে থাকলে ফসলের ফলনে ক্ষতি হতে পারে। এর সাথে ফসলে পোকা লাগা ও তা বেড়ে যেতে পারে।
চলতি বোরো আবাদ মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান জমিতে এ ডাব্লিউ ডি পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের পাগলা দক্ষিণপাড়ায় ও সলঙ্গা ইউনিয়নের নাইমুড়ির দিয়ারপাড়া আবাদী মাঠ এলাকায় বোরো ধান জমিতে এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি পদ্ধতিতে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিনিয়েনস ইন বাংলাদেশ
(পার্টনার) প্রকল্পে এ ডাব্লিউ ডি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে ।
এই উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া মাঠে একটি ব্লকে দুই একর জমিতে পাঁচজন কৃষকের একটি দল গঠন করে পরীক্ষামূলকভাবে এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি প্রদর্শনী করা হয়েছে। মাঠে আবাদ করা ব্রি ধান ১০২ এর প্রদর্শনী প্লটটি করা হয়েছে। কৃষকরা হলেন তারা সরকার, ফারুক সরকার, তামান্না খাতুন, দেলোয়ারা খাতুন ও সদর আলী।
কৃষক তারা সরকার জানান, তিনি এবারে প্রায় বারো বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এর মধ্যে ছয় বিঘা জমিতে এ ডাব্লিউ ডি পদ্ধতিতে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। তিনি গত বছর মৌসুমে বিঘা দুয়েক জমিতে এ পদ্ধতিতে পানি সেচ দিয়েছেন। এতে জমিতে পানি সেচ বাবদ টাকা খরচ কম হয়েছে।
যখন পানি দরকার তখন সেচ দেওয়া হয়েছে । জমিতে জলাবদ্ধতা না হওয়ায় পোকায় ফসলের ক্ষতি হয়নি বলা চলে। তিনি আরো বলেন, এ পদ্ধতি নিয়ে তার এলাকায় আশেপাশের অনেক কৃষকের মাঝে বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে । অনেকেই এর সবকিছু জানছেন। জমিতে নেমে পুতে রাখা পাইপ দেখছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে সেচ নির্ভর বোরো ধান আবাদে জমিতে এ সেচ প্রযুক্তি পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এ ডাব্লিউ ডি সেচ প্রযুক্তি পদ্ধতিতে করা হয়েছে প্রদর্শনী প্লট। এ পদ্ধতিতে কৃষকদেরকে আগ্রহী করতে বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের নিয়ে ফিল্ড টেকনোলজি ওরিয়েন্টেশন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, জেলার ১৫৪টি কৃষি ব্লকেই এ পদ্ধতিতে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে । এতে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর ঠিক থাকবে । এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে খরচ কম হবে ধানের উৎপাদনও বাড়বে ।
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
সিরাজগঞ্জে বোরো ধান আবাদে জমিতে পানি সেচে অল্টারনেট ওয়েটিং এন্ড ড্রায়িং (এডাব্লিউ ডি) প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে । এই প্রযুক্তিতে সব কিছুতেই সাশ্রয় হয় বলে জানা গেছে। ধান জমিতে দরকার মতো পানি সেচ দেওয়ায় জলাবদ্ধতা হয় না। সেচ বাবদ টাকা খরচ কম হয়। আর ফসলে পোকা লাগে না ।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৫৪টি কৃষি ব্লকেই প্রাথমিকভাবে করা হয়েছে। জানা গেছে, এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি পদ্ধতি বলতে সেচ নির্ভর বোরো ও রোপা আমন ধান জমি দরকার হলে পানি সেচ দিয়ে ভেজানো ও দরকার কালে শুকানোয় সেচ ব্যবস্থা বলা হয়। এটি নিয়ন্ত্রিত সেচ ব্যবস্থা বোঝায়। এ পদ্ধতিতে বোরো ধান আবাদ করা জমিতে পচিশ সেন্টিমিটার লম্বা ও সাত থেকে দশ সেণ্টিমিটার ব্যাসের প্লাস্টিকের পাইপের পনেরো সেন্টিমিটার ধান জমিতে মাটিতে পুতে দেওয়া হয়। মাটির নিচে পুতে রাখা পাইপের পনেরো সেন্টিমিটারে তিনটি ছিদ্র রাখা হয়। এর মাধ্যমে পাইপের ভেতরের পানির স্তর দেখে দরকার মতো জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়ে থাকে। জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে বোরো ধান জমিতে পানি সেচ বাবদ খরচ কম হয়।
সেচ নির্ভর বোরো ও রোপা আমন ধান জমিতে সেচের পানি বেশি মাত্রায় হলে ও জমিতে তা বেশি দিন জমে থাকলে ফসলের ফলনে ক্ষতি হতে পারে। এর সাথে ফসলে পোকা লাগা ও তা বেড়ে যেতে পারে।
চলতি বোরো আবাদ মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান জমিতে এ ডাব্লিউ ডি পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের পাগলা দক্ষিণপাড়ায় ও সলঙ্গা ইউনিয়নের নাইমুড়ির দিয়ারপাড়া আবাদী মাঠ এলাকায় বোরো ধান জমিতে এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি পদ্ধতিতে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিনিয়েনস ইন বাংলাদেশ
(পার্টনার) প্রকল্পে এ ডাব্লিউ ডি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে ।
এই উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া মাঠে একটি ব্লকে দুই একর জমিতে পাঁচজন কৃষকের একটি দল গঠন করে পরীক্ষামূলকভাবে এ ডাব্লিউ ডি প্রযুক্তি প্রদর্শনী করা হয়েছে। মাঠে আবাদ করা ব্রি ধান ১০২ এর প্রদর্শনী প্লটটি করা হয়েছে। কৃষকরা হলেন তারা সরকার, ফারুক সরকার, তামান্না খাতুন, দেলোয়ারা খাতুন ও সদর আলী।
কৃষক তারা সরকার জানান, তিনি এবারে প্রায় বারো বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এর মধ্যে ছয় বিঘা জমিতে এ ডাব্লিউ ডি পদ্ধতিতে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। তিনি গত বছর মৌসুমে বিঘা দুয়েক জমিতে এ পদ্ধতিতে পানি সেচ দিয়েছেন। এতে জমিতে পানি সেচ বাবদ টাকা খরচ কম হয়েছে।
যখন পানি দরকার তখন সেচ দেওয়া হয়েছে । জমিতে জলাবদ্ধতা না হওয়ায় পোকায় ফসলের ক্ষতি হয়নি বলা চলে। তিনি আরো বলেন, এ পদ্ধতি নিয়ে তার এলাকায় আশেপাশের অনেক কৃষকের মাঝে বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে । অনেকেই এর সবকিছু জানছেন। জমিতে নেমে পুতে রাখা পাইপ দেখছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে সেচ নির্ভর বোরো ধান আবাদে জমিতে এ সেচ প্রযুক্তি পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এ ডাব্লিউ ডি সেচ প্রযুক্তি পদ্ধতিতে করা হয়েছে প্রদর্শনী প্লট। এ পদ্ধতিতে কৃষকদেরকে আগ্রহী করতে বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের নিয়ে ফিল্ড টেকনোলজি ওরিয়েন্টেশন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, জেলার ১৫৪টি কৃষি ব্লকেই এ পদ্ধতিতে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে । এতে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর ঠিক থাকবে । এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে খরচ কম হবে ধানের উৎপাদনও বাড়বে ।